সিমাহীন দূর্ভোগ মাজার জিয়ারত কারীদের। ছন্দবেশী ও ভিক্ষুরা লাগামহীন।

কোন মন্তব্য নেই
দেশের ভিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাজারের ভক্তরা ছুটে আসেন মাজার জিয়ারত করতে। আসেন ওলি আউলিয়াদের দোয়া নিতে। কিন্তু যখন মাজারে এসে পৌছে তখন নানান প্রতরণায় তারা পড়ে। এই পোস্টে সব কিছু তুলে ধরবো। বাত্তি গোলাপ জল বিক্রয়তাদের ঘেরাও । গাড়ী থেকে নামার আগেই একদল এসে ঘেরাও করে বাত্তি গোলাপজল বিক্রয় করতে। এক আগরবাতি এক গোলাপ জল দিয়ে বলতে থাকে ভাই লন ১০ টাকা আপা লন ১০ টাকা। কেউ না নিলে জোড় করে হাঁতে দিয়ে দেয় অথবা পকেটে ডূকিয়ে দেয়। আবার বলে দে ভাই নিয়ে যান যাবার সময় টাকা দিয়ে যাবেন। এরপর ও কেও না নিলে জোড় করে দিয়ে দেয়। তখন তাঁরা বাধ্য নিতে । আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে এক আগরবাতি এক গোলাপজল মাত্র ১০ টাকায় কিভাবে বিক্রয় করে এই ডিজিটাল বাংলাদেশে। যারা স্বইচ্ছে দোকান থেকে বাত্তি গোলাপজল কিনতে যা সেই একই বাত্তি গোলাপজল কিনতে হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা দিয়ে। আর সব চেয়ে বড় কথা হল এই সব বাত্তি গোলাপজল কোনও ঘ্রাণ নেই। এমন কি এইসব গোলাপজল যে পানি দিয়ে বানানো হয়েছে সেই পানি ও পবিত্র না। এইসব গোলাপ জলের ভিতরে ময়লাও পাওয়া যায়। অথচ এইসব গোলাপজল ছিটানো হচ্ছে আল্লাহর ওলিদের মাজারে । এইসব গোলাপ জল মাজার ভিক্তিক দোকান দারেরা বানিয়ে বিক্রয় করে। সারা দিনে মাজারে যেসব গোলাপ জলের খালি বোতল জমা হয় ? তা সন্ধ্যা পর মাজারের দোকানদার দের কাছে শ হিসাবে বিক্রয় করা হয়। এইসব গোলাপ জলের গাঁয়ে লেখা আসে রি্গার্ড আর লেভেলে লেখা আসে আজমির। তবে কিছু দোকানে রি্গার্ডের গোলাপ জল আসে। যারা চায় তাদের কে দেয়া হয়। ছন্দবেশী ও ভিক্ষুরা লাগামহীন। মাজার গুলোতে আছে অসংখ্য ছন্দবেশী ও ভিক্ষুক। তাদের কাছে অসহায় মাজার জিয়ারত কারীরা। ছন্দবেশীরা মাজার জিয়ারত কারীদের হাত থেকে নান্নান কৌশলে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা। তারা ভিভিন্ন ছন্দবেসে থাকে। তাদের এক মাত্র কাজ হল শলে কৌশলে মানুষদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া। যদি কেউ টাকা না দিতে চায়লে তাকে ভিভিন্ন ভয় ভীতি দেখানো হয়। এমন কি এই সব ছন্দবেসে লম্পটেরা মেয়েদের গায়েও হাত দেয়। আপনি যতক্ষন পর্যন্ত তাদেরকে টাকা না দিবেন ততক্ষন পর্যন্ত তারা আপনার পিছনে সুপার গু আঠার মতো লেগেই থাকবে। এমন কি আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার ও করবে। আপনি তাদের কে ১০_২০ টাকা দিয়ে মন ভরাতে পারবেন না। নিম্ননে ৫০ থেকে ১০০ টাকা দিতে হয়। এখানেই শেষ নয় তারা আপনাকে বলবে আমাকে এইটা কিনে দে ওটা কিনে দে। একটা সাদা লুঙ্গী কিনেদে; এক টা গামছা কিনেদে, এক টা বড় মোম বাত্তি কিনেদে,একতা তসবিহ কিনেদে। এমন ভাবে বলবে মনে হবে আপনি তার গোলাম। আপনি তাকে যা কিছু কিনে দিবেন ? কিছু ক্ষন বাদে তা ফেরত দিয়ে টাকা নিয়ে আসবে। কারন তারা আপনার আমার চেয়ে অনেক বড় লোক। তারা স্বভাবের ফকির অভাবের না। এরা এক ওয়াক্ত নামাজ ও পড়েনা। প্রশাব করে পানিও নেয়না। এমন কি তারা নটি বেশ্যাদের নিয়ে আমোদ ফুর্তিতে বেস্ত। এমন কি ঘরে বসে গাজা ও খায় আবার ঘরের বউ কে গরুর মতো পিটায় । আমার নিজ চোখে দেখা। এদের মাঝে অনেকে আছে দেড় হাত লম্বা দাড়ী এক হাত লম্বা মুছ। লাঠি দিয়ে গুতিয়ে পথ বাহির করা লাগে। আপনারা এতো ক্ষণ ছন্দবেশী লম্পটদের কথা শুনলেন। এবার আসুন ভিক্ষুকদের কথা বলি। ভিক্ষুকদের অবস্তান তো আরও করুণ। বড় বড় নারী পুরুষের সাথে ছুটো বাচ্ছারাও আছে। আপনি তাদের কে ভিক্ষা না দিয়ে যতোটুক বিপদে পরবেন ? বরং তাদের কে ভিক্ষা দিয়ে এর চেয়ে শত গুণ বেশি বিপদে পরবেন। আপনি তাদের কে যত ক্ষণ পর্যন্ত ভিক্ষা না দিবেন? তারা ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার পিছনে ঘুরবে। এমন কি গাড়ী তে ওঠেও আপনি রেখায় পাবেন না। তারা আপনার গাড়ীর পিছনে ও দৌড়াবে যতক্ষণ পর্যন্ত ভিক্ষা না দিবেন। ২ টাকা ৫ টাকা দিলে নিবেনা। ১০ টাকার কমে দিলে ছুড়ে ফেলে দিবে। এক জন কে দিলে সাথে আরও ২০ থেকে ৩০ জন আপনাকে ঘেরাও করবে। আপনাকে নিয়ে টানা খেঁচড়া শুরু হয়ে যাবে। মাজারের এলাকাতে এই সব চিত্র নিত্য দিনের। ছন্দবেশী ও ভিক্ষুদের লাগামহীনের কথা সবই জানে মাজার কর্তৃপক্ষ। এর পরও তারা কোন ব্যবস্তা নেয় না। অথচ মাজার গুলোতে প্রতি মাসে মানতের কোটি কোটি টাকা ওঠে। আর এইসব টাকা মাজারের দায়িত্ব রত খাদিমরা লুটে পুটে খায়। একটি টাকাও মাজারে ব্যয় করে না। যাবতীয় কাজ সরকারে করে। তারপরে ও মানুষ মাজারে বস্তা ভর্তি টাকা ঢালে। কোনো ফকির মিসকিন ২ টাকা চাইলে তার পেটে লাঠি মারে। এই সব নির্বোদের কাছে জীবিত মানুষদের চেয়ে মৃত ব্যক্তিদের কদর বেশি। বস্তা ভর্তি টাকা মাজারে না ঢেলে যদি গরীবদের পিছনে ঢালা হতো? এই দেশ কবেই উন্নত হয়ে যেতো। কোনো বিদেশী লাল কুত্তা দালালদের সাহায্য সহযোগিতার প্রয়োজন হতো না। জানিনা এই সব নির্বোধের বোধ হবে কবে? ব্লগার-সৈয়দ রুবেল। ব্লগ_জানার আছে অনেক কিছু। *********************************************** এই লেখাটি শেয়ার করে অন্যদের কে জানতে দিন । সবাই কে ধন্যবাদ। আপনি যদি কোনো পেইজের অথবা কোনো ব্লগ বা ওয়েব সাইটের প্রশাসক হয়ে থাকেন? তা হলে নিজ দায়িত্তে শেয়ার করুণ আপনার পেইজে অথবা আপনার ব্লগে। আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনি ও ভালো থাকুন। এই কামনাই- আল্লাহ হাফেজ। প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

বাকী লাশ গেলো কোথায়?

কোন মন্তব্য নেই
প্রিয় পাঠক গত শনি বারে দেশে ঘটে গেলো ভয়ংকর ২ টি দুর্ঘটনা। একটি হল ঢাকা আশুলিয়ার গার্মেনসে ভয়াভহ আগুন। ২য় টি হল চট্রগ্রামে বহদ্দার হাটে নতুন ওভার ব্রিজ ধসে পড়া। আশুলিয়ার গার্মেনসে ভয়াভহ আগুন লেগেছে। তখন কাজ করতে ছিল ৩হাজার শ্রমিক। রাতের ১০ টার সংবাদে শুনলাম ২০০ জন কে উদ্দার করে হাসপাতালে পাঠান হয়েছে। সকাল ১০ টার সংবাদে দেখলাম ১২৫ জনের পুড়ে যাওয়া লাশ উদ্দার করা হয়েছে। তা হলে এখানে ৩২৫ জন হল। আমার প্রশ্ন হল বাকী ২ হাজার ৬শ ৭৫ জন শ্রমিক গেলো কোথায়? তারা কি এদেশের কেউ নয়? নাকি তারা গরীব হয়ে জম্ম নেয়া ছিল অপরাধ? আমাদের সরকার বলে তিনি দুনিতি করে না। সরকার যদি দুনিতি না করে থাকে তা হলে নির্মাণ করা নতুন ওভার ব্রিজ ধসে পড়ে কেনো? ১৫ মিটার করে ৩ টি গার্ডার ভেঙ্গে পড়েছে। গার্ডার ভেঙ্গে পড়ার সময় ৪৫ মিটার জায়গাতে অনেক লোক ছিল। না হলেও ২ থেকে ৩ শ মানুষ গার্ডারের নিচে পড়ে নিহত হয়েছে। অথচ আমাদের মিডিয়ারা মাত্র ৫ জন নিহত হয়েছে বলে প্রচার করতেছে। আমি বুঝতে পারতেছি না মিডিয়ার সত্য প্রকাশ করতে বাধা কোথায়? যে মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষ সত্য জানতে পারবে? সেই মিডিয়া যদি মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে তা হলে দেশ এগিয়ে যাবে কি করে। দেশের চেয়ে আমাদের মিডিয়ারা বেশি দুনিতি গ্রস্ত। এই কথা বলাতে যদি মিডিয়ারা আমার পিছনে লেগে যায়? এতে আমি ব্লগার সৈয়দ রুবেল এর কোনো সমস্যা নেই। কয়েক হাজার মানুষের সাথে আমি না হয় চালান হয়ে যাবো । এক দিন আগে পরে সবাই কে মরতে হবে। ফেসবুকে অনেকে বলতেছে ৩০ লক্ষ লোক দিয়ে এই দেশ পেয়েছি। মাত্র ৩০০শ লোক দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে পারবোনা। ফেসবুকে একটি পেজে একটি জোকস পড়ে ছিলাম গত কিছু দিন আগে। জোকস টি ছিল_ভাগনে মামা কে বলতেছে মামা রাতে মামির কি হয়ে ছিল? মামঃ কয়টা বাজে? ভাগনেঃ রাত ১২ টার পড়ে। মামাঃএইসব বুঝার বয়স তোর হয় নাই? ভাগনেঃ বললেই বুঝবো। মামাঃঠিক আছে আমি রাতে জানালা খুলে রাখবো তুই দেখে নিস। তবে মনে রাখবি আমি হলাম সরকার, তোর মামি হল দেশ, তুই জনগন। পরের দিনঃ মামাঃ কি বুঝলি? ভাগনেঃ হুম,সরকার দেশ কে মারে আর জনগন তাকিয়ে দেখে। আমাদের ও সেই একই অবস্তা। আমাদের সরকার দেশ কে শাসন নয় বরং লুটে পুটে খাচ্ছে। কারন চোর চোরকে চিনে। সরকার যদি দুনিতি না করতো তা হলে নতুন ওভার ব্রিজ নির্মাণ হওয়ার পরেই কয়েন তা ভেঙ্গে পরবে? যে ব্রিজ নিজের ভার নিজেই বহন করতে পারেনা ? সে ব্রিজ কি ভাবে হাজার হাজার যান বাহনের বহন করবে? এই বিষয় টি অনুসন্ধান করলেই বুঝা যাবে দেশে কি পরিমান দুনিতি হচ্ছে। পদ্না সেতুর বেলায় যে এই রকম হতনা এইটি বাদ দেয়া যায় না। কারন এটা হওয়ার আগে ধরা পরেছে। আর এ দিকে দুদক তাদের কে ফেরেস্তা বলে অভিহিত করতেছে। এতে বুঝা যায় দুদক নিজেই দুনিতি গ্রস্ত । যারা দুনিতি করে? আবার তারাই দুনিতির বিরদ্দে কথা বলে। অর্থাৎ নিজের পায়খানা নিজেয় খায়। যারা জনগনের টাকায় খেয়ে সোনার খাটে ঘুমায়? তারা কি করে সাধারন জনগনের কষ্ট বুঝবে। কারন তারা মহা দুনিতি বাজ। দুনিতি করতে নাহি লাজ। আমার আর কিছু বলার নাই। বাকী যা কিছু বলার আপনাই বলুন। আল্লাহ হাফেজ। ব্লগার_ সৈয়দ রুবেল। লেখক_জানার আছে অনেক কিছু। শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

১.১ সাধারণ কথা

কোন মন্তব্য নেই
কামসূত্রের উৎপত্তি ও বিকাশ আমাদের দেশের প্রাচীন শাস্ত পাঠে জানা যায় যে, খ্রীষ্টের জন্মের শত শত বৎসর আগেও ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিরাট উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত ছিল। সেই প্রাচীন দিনে বিশ্বের বিভিন্ন জাতির আত্নিক উন্নতি, সামাজিক ও বৈষয়িক ধ্যান জ্ঞান সব কিছুর সার্থক সাধনার জন্যেই ভারতের শাস্ত্রের দিকে দৃষ্টিপাত করতেন। সে ছিল একটা স্বর্ণ যুগ- একটি অতুলনীয় যুগ। একদিকে বেদ, উপনিষদ, প্রভৃতি ধর্ম গ্রন্থ, অন্য দিকে বিভিন্ন জ্ঞান- বিজ্ঞানের বিষয় নিয়ে সার্থক সব গ্রন্থ রচিত হয়েছিল। মানুষ যাতে ধর্মীয় ভাবে জীবন যাপন করতে পারেন তাই তাঁদের জীবনে চারটি সাধনের স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়। তা হলো-ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ। মানুষের সমস্ত কাজের পেছনে চাই অর্থ। চারটি সাধনের স্পষ্ট সাহচর্য দেখা যেত। মানুষের জীবন যাত্রাকে নিয়ন্ত্রিত করার জন্যে বিভিন্ন অংশে ভাগ করা হতো-তা হলো ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বাণপ্রস্থ ও সন্ন্যাস। তাই দেখা যাচ্ছে সাধনার মধ্যে ধর্মের পর অর্থ, তারপরই কাম-ছাত্র জীবনে বা ব্রহ্মচর্যের পরই গার্হস্থ্য বা দাম্পত্য জীবন স্থান পেয়েছে। কামশাস্ত্র আলোচনার স্তর পুরাণ মতে ব্রহ্ম বা পূর্ণব্রহ্ম সারা বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। তারপর তিনি বিভিন্ন জ্ঞান-বিজ্ঞান নানা ঋষি বা মুনির মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করে থাকেন। তাই ঋষি বা মুনিদের প্রাচীন ভারতে বিরাট একটা সম্মানের আসন দেওয়া হতো। এই মত অনুযায়ী নর-নারীদের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে সমস্ত বিধান রচনা করেন মনু-যাঁকে ভারতীয় আইন শাস্ত্রের পিতা বলা হয়ে থাকে। তারপর বৃহস্পতি রচনা করেন অর্থশাস্ত্র। মহাদেবের অনুচর নন্দী হরপার্বতীর কথোপকথন শুনে রচনা করেন রতিশাস্ত্র। এ গ্রন্থের নাম মনুসংহিতা। মহর্ষি উদ্দালিকের পুত্র শ্বেতকেতু তা থেকে একটি সুন্দর প্রন্থ রচনা করেন। তাপর বাভ্রব্য নামে উত্তর ভারতের একজন ঋষি তাকে সুন্দরভাবে ১৫০টি পরিচ্ছেদে ভাগ করে তা বিশ্লেষণ করেন। বাভ্রব্যের বিভিন্ন বিভাগ রচনা বাভ্রব্য তাঁর গ্রন্থে কামশাস্ত্রকে মোট সাতটি ভাগ করে রচনা করেছিলেনঃ ১। সাধারণ কথ। ২। নর-নারীর যৌনমিলন ও তৃপ্তি। ৩। যুবতী নারীদের কাম জাগরণ। ৪। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দৈহিক আনন্দ। ৫। পরস্ত্রীর সঙ্গে সম্বন্ধ ও পরস্ত্রীর সঙ্গে কাম। ৬। বারাঙ্গনামের কাম বৃত্তান-। ৭। শারীরিক সৌন্দর্য ও কামশক্তি বৃদ্ধির উপায়। বাভ্রব্য এইভাবে তাঁর গ্রন্থে কামশক্তিকে একটা সুনির্দিষ্ট পথে চালিত করেন ও তার একটি বিভাগ করে দেন। বাভ্রব্যের এই পুস্তক সারা বিশ্বের পণ্ডিত ও লেখক সমাজে বিশেষ প্রশংসা লাভ করে। বাভ্রব্যের পর কামশাস্ত্র বাভ্রব্যের গ্রন্থটির বিভিন্ন অধ্যায়কে আরও বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে ভারতের ঋষিরা বিভিন্ন গ্রন্থ রচনা করেন। ১। চারায়ণ লেখেন-সাধারণ কাম বিচার। ২। সুবর্ণাভ নামক লেখক-যৌন কাম বিচার। ৩। ঘোটকমুখ লেখেন- যুবতী নারীর বিচার। ৪। গোমার্দীয় লেখেন-স্বামী-স্ত্রীর সম্বন্ধের বিচার। ৫। গণিকাপুত্র লেখন-পরস্ত্রীগমন বিচার। ৬। দত্তক লেখেন-পতিতাদের কাম বিচার। ৭। কুচুমার লেখেন-দেহ সৌন্দর্য ও যৌনিক বৃদ্ধির উপায় বিচার। কিন্তু এই সব গ্রন্থ প্রত্যেকটি উৎকৃষ্ট হলেও, পরস্পর পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল বলে লোকের মনকে তা আকর্ষণ করতে পারেনি। তাই ঋষি বাৎস্যায়ন এই শাস্ত্র একত্রিত করে তাঁর ‘কামসূত্রম’ নামক গ্রন্থটি রচনা করলেন। এই গ্রন্থে তিনি বিভিন্ন ভাগে সব রকম কাম উদ্রেকের তত্ত্ববিষয়ে সুন্দর ভাষায় ও স্পষ্ট করে আলোচনা করেছেন। কামশাস্ত্রের ধারা বাৎস্যায়নের কামসূত্রের বাভ্রব্যের মতই সাতটি অংশ। এই গ্রন্থ তিনি ছত্রিশটি অধ্যায়ে ভাগ করেন। মোট ৬৪টি বিষয়ে তিনি এ গ্রন্থের মধ্যে বিশদভাবে আলোচনা করেন। এই গ্রন্থের আলোচনা তিনি সম্পূর্ণ করেন মো ১২৫০টি শ্লোকের মাধ্যমে। কিন্তু তাঁর শ্লোকগুলি অপূর্ব। প্রতিটি শ্লোকের বক্তব্য এত সুন্দর যে তার ব্যাখ্যা করলে প্রচুর লেখা যায়। কিন্তু আমরা অতি সংক্ষেপে অথচ সুস্পষ্ট ভাবে কি করে তা ব্যাখ্যা করা যায় সেই চেষ্টা করেছি। বাৎস্যায়ন তাঁর বইতে তৎকালীন সমাজের সুন্দর স্পষ্ট ছবি এঁকে গেছেঁন। তিনি যে কালে গ্রন্থ রচনা করেন, তখন আমাদের দেশ বাইরের মুসলমান দ্বারা আক্রান- হয়নি। তাই এ দেশে স্ত্রী-স্বাধীনতা বিদ্যমান ছিল। স্ত্রী-পুরুষ স্বাধীনভাবে মেলামেশা করত-এমন কি নানা ঠাট্টা তামাশা বা কৌশলে শ্লোকের মাধ্যমে যৌনতার ইংগিত দেওয়াকে তারা ঘৃনা মনে করত না। সত্যিকারের রুচি জ্ঞান ছিল তাদের মনে। কামশস্ত্রে সমাজ ব্যবস্থা বাৎস্যায়নের কামশাস্ত্রে সমাজ ব্যবস্থার বিষয়ে সুন্দর বর্ণনা আছে। পুরুষেরা পুঁথিপাঠ,গ্রন্থরচনা, দেশ-বিদেশে গমন নানা প্রকার ব্যবসা বাণিজ্য করত। আর্থিক, ধর্মবিষয়ক ও সম্ভোগাদি বিষয়ে তাঁরা যথেষ্ট উন্নতি করেছিলেন। নারীরা, তেমনি স্বাধীনভাবে নানা শিল্পকলা ও সঙ্গীতকলায় পারদর্শিনী হয়ে সংসারের নানাবিধ সুখ সম্পদ উপভোগ করত। এইভাবে সুন্দর জীবন তাঁরা উপভোগ করতেন-জীবনকে প্রকৃত শিল্পকলার মত ভাবে তাঁরা গ্রহণ করতেন। বিলাস ব্যসন সে আমলে দেশের রাজকর্মচারী ও ধনী, অভিজাত শ্রেণীর লোকেরা নৃত্যগীত ও বিলাস ব্যসনে বেশ সময় কাটাতেন-এইভাবে তাঁরা জীবনকে ভোগ করতেন। নৃত্যগীত নিপুনা ও বিলাস ব্যসন সংযুক্ত নানা কৃষ্টিসম্পন্ন গণিকা ছিল সে আমলে। তারা অধিকাংশই ছিল সুন্দরী নর্তকী ও গায়িকা। এদের সংস্পর্শে এসে তাঁরা জীবনটিকে ভোগ করতেন ঠিক ইন্দ্রপুরীর মত। জীবনকে ভোগ করতেন ধর্ম, অর্থ, কামের প্রতীক রূপে। সে এমন একদিন ছিল, যখন পুরুষ ও রমণীর উপভোগে কোন বাধা ছিল না। কামতৃপ্তি ছিল বিরাট বড় বস্থ, তাতে কোন সামাজিক বাধা মাথা তুলতে পারত না। কামশাস্ত্রে যথেষ্ট সঙ্গম কামশাস্ত্রে যথেষ্ট সঙ্গম বা ইচ্ছামত নর-নারীর তৃপ্তিকে উচ্চ আসন দেওয়া হয়েছে। তাই তৎকালীন পরিপ্রেক্ষিতেই পরস্ত্রীগমন পতিতাগমন প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। নারী যেমন খুশিভাবে পুরুষদের সঙ্গে মেলামেশা কত, তেমন ইচ্ছামত নিজের মনোমত পুরুষ উপভোগ করতেও পারত। পুরুষ অর্থ ও উচ্চপদের অধিকারী হলে ইচ্ছানুযায়ী নারীকে যথেষ্ট ভোক করতে পারত- কিন্তু বলপ্রয়োগ ছিল অশাস্ত্রীয়। সে আমলে দরিদ্রা নারী যদি গুণবতী বা রূপবতী হতেন তা হলে রাজ্যের প্রধান পুরুষকেও ধন্য করতে পারতেন। যদি কোন পুরুষ বংশদোষে হীনপদস্থ বা অর্থাবাবে পথের কাঙালও হতেন, তা হলেও শিল্প বা কলার প্রভাবে বা বাণিজ্যের অর্থাগমে রাজ্যের রাজকন্যাকেও শয্যাসঙ্গিনী করতে পারতেন। সেকালে ইন্দ্রিয়-সেবা, উল্লসিত জীবন ও যৌবন চরিতার্থতা ছিল মানুষের কাম্য পদার্থ। শুধু মাত্র মোক্ষ বা মুক্তির জন্যেই মানুষ পাগল ছিল না। ধর্ম, অর্থ, কাম এই তিন বস্থর জন্যেও লালায়িত ছিল। আমরা সমাজের এই সব অনেক দৃষ্টান- অন্যান্য সংস্কৃত গ্রন্থেও দেখতে পাই। বাৎস্যায়নের দেশ ও কাল বাৎস্যায়নের কামসূত্র পড়লে বোঝা যায়, ঐরূপ কাম বিলাস সম্পন্ন পুরুষ ও নারীদের যুগে তাঁর আবির্ভাব হয়েছিল। কোথায় এবং কোন দেশে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন তার ঐতিহাসিক বৃত্তান- বিশেষ পাওয়া যায় না। তবে মনে হয়, তিনি গুপ্ত সম্রাটদের সময়েই আবির্ভূত হয়েছিলেন। এই গুপ্ত সম্রাটদের সময়েই মহাকবি কালিদাস, জ্যোতির্বিদ বরাহমিহির ইত্যাদি মনীষা সম্পন্ন ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বাৎস্যায়নের সাহিত্যের মত তাঁদের সাহিত্যেও অনেক অধুনা সমাজ বিরুদ্ধ ও তথাকথিত বর্তমান অশ্লীল আখ্যা বিশিষ্ট কবিতাও লেখা দেখতে পাওয়া যায়। নাট্য লেখক শূদ্রক রাজাও ঐ সময়ে তাঁর মৃচ্ছকটিক নামে সংস্কৃত নাটক লেখেন। তবে অনেকে বলেন বাৎস্যায়ন খ্রীষ্ট পূর্ব যুগে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কেউ কেউ বলেন খ্রীষ্ট জন্মের পরবর্তী যুগে তিনি জন্মগ্রহণ করেন দাক্ষিণাত্য দেশে। এ বিষয়ে অনেক মতানৈক্য আছে। তবে আমরা এ কথা অনেকটা বিশ্বাস করি যে মহর্ষি বাৎস্যায়ন গুপ্ত রাজাদিগের সময়েই জন্মগ্রহণ করেছিলেণ। বহু দেশ-বিদেশ ঘুরে যৌনক্রিয়ার বিভিন্ন প্রচলন দেখে জ্ঞান লাভ করে কামসূত্র নামে এই পুস্তকটি রচনা করেন। তাঁর পুস্তক পড়লে বুঝতে পারা যায় যে, তিনি যখন জীবন যাপন করেছিলেন, সেই সময় ভারতের অধিকাংশ লোক গীত বাদ্য ও নানা কামশাস্ত্রে ব্যুৎপন্ন ছিলেন। কামসূত্রকালে সামাজিক জীবন কামসূত্র যে কালে রচিত হয়, সে আমলে লেখাপড়া সাধারণ লোকের মধ্যে খুব বেশি পরিমাণে চালু ছিল। স্ত্রী-স্বাধীনতা, স্ত্রীলোকদের আদর যত্ন করা সমাজে বেশ প্রচলিত ছিল। কামশাস্ত্র পাঠ করলে বোঝা যায় তখনকার সমাজের ব্যবস্থা মদ্যপায় নিজেদের একত্র বিহার ও উল্লসিত আচরণ উদ্যান যাত্রা অর্থাৎ বহু প্রস্ফুটিত ও সুগন্ধি পুষ্পদল শোভিত উদ্যান বীথিকায় নর-নারীর একত্রে ভ্রমণ, লেখাপড়া, শিল্প কার্য, বাণিজ্য ইত্যাদি যথেষ্ট উন্নতি লাভ করেছিল। তৎকালীন নানা সাহিত্যে (যেমন প্রাচীন নাট্য লেখক কালিদাস প্রভৃতির গ্রন্থে) সেই সমাজের জীবন ধারার অনেক ইতিহাস পড়তে পারা যায়। যা বাৎস্যায়ন লিখে গেছেন তার সঙ্গে এর অনেকটা মিল পাওয়া যায়। অশ্লীল কথাটায় বহু ব্যাপকতা আজকাল ঘটেছে, কিন্তু ঋষি বাৎস্যায়নের সময়ে এই কথাটার এত প্রচলন হয়নি। রসপূর্ণ বাক্য সে আমলে রাজদরবার থেকে সুরু করে সাধারণ মানুষ সকলের কাছেই ছিল আদরণীয়। অবশ্য বাক্য নগ্ন হতো না- কিন্তু এমনভাবে তা বলা হতো যে তার অর্থ দুভাবে ব্যবহার করা যায়। সে আমলে শালীনতা বোধ ছিল ঠিকই- কিন্তু রসবোধ ছিল এবং যৌনতা রস বলে গণ্য হতো। NEXT ১.২ ত্রিবর্গের প্রতিপত্তি শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

১.২ ত্রিবর্গের প্রতিপত্তি

কোন মন্তব্য নেই
মানবজীবনের সর্বাপেক্ষা অপরিহার্য প্রাচীনযুগের ইতিহাস পড়লে দেখা যায় তখন মানুষ সাধারণতঃ একশত বৎসর বাঁচতেন। প্রথম ষোল বছর বাল্য ও শৈশবকাল বিদ্যার্জনে ব্যয়িত হতো। তারপর আরম্ভ হতো সংসার জীবন। সেটা চলত পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত। তারপর আসত বানপ্রস্থ-শেষ জীবনে অর্থাৎ ষাটের ওপরে হতো সন্ন্যাস। তখন ভগবানের ধ্যান্-ধারণা করতে করতে শেষ জীবনটুকু কাটাতেন তাঁরা। বাল্য ও কৈশোরে বাল্য ও কৈশোরে ছেলেরা প্রথম অভিভাবদের অধীন থেকে বিদ্যাশিক্ষা করত। তারপর তারা যেত গুরুগৃহে। গুরুগৃহে থেকে তারা অঙ্কন বিদ্যা, গণিত শাস্ত্র, শিল্পকলা, সাহিত্য, ব্যাকরণ, ন্যায়, বাণিজ্য প্রভৃতিতে জ্ঞানলাভ করত। আর ষোল বছর বয়েস পার হয়ে গেলে গুরুগৃহের পাঠ শেষ করে ফিরত। তখন কেউ বা বিবাহ করত কেউ বা করত না। যৌবনে গুরুগৃহে যে বিদ্যা অর্জন করত তার অনুশীলন করে তারপর তারা নানা শিল্প, বাণিজ্য, কাব্য, সাহিত্য, ব্যবসায় ইত্যাদি নানাভাবে অর্থ উপার্জনের চেষ্ট করত। সঙ্গে সঙ্গে যৌবন আগমনে তাদের মধ্যে কামবৃত্তি স্ফুরিত হওয়ায় তারা হয় বিবাহের পর স্ত্রীসঙ্গ করত। আর তা না হলে সুন্দরী কলাবিদ্যানিপুণ্য নারীদের সঙ্গ লাভ করত। তাছাড়া নানা প্রকার জীবন আনন্দকর উৎসবে যোগদান করে সঙ্গীত, নৃত্য, বাদ্য ইত্যাদিতে পারদর্শিতা লাভ করে জীবনটাকে পরম সুখে অতিবাহিত করার চেষ্টা করত। তখনকার দিনে বহু নারীকে বিবাহ করা এবং বহু নারীকে একসঙ্গে সম্ভোগ করা অসামাজিক ও নিন্দনীয় বলে পরিগণিত হতো না। সেটা ছিল সামাজিক রীতি। এমন কি কোন ভদ্রসন্তান বা অভিজাত বংশের লোক যদি পতিতা সম্ভোগ করত, তখনকার দিনে তা পাপ বলে লোকে মনে করত না। তাদের দুশ্চরিত্র বা অপবাদ দেওয়া হতো না। বারনারী বা পতিতারা শিল্পবিদ্যা, সঙ্গীতবিদ্যা, বাদ্যযন্ত্র প্রভৃতিতে বিশেষ পারদর্শিতা লাভ করত। শূদ্রক রাজার রচিত ‘মৃচ্ছকটিক’ নাটকে সে আমলের এক অপূর্ব চিত্র পাওয়া যায়। এটি কবি কালিদাসের বা বাৎস্যায়নের সমসাময়িক কালেই রচিত। এই নাটকে দেখা যায় চারুদত্ত নামে একজন সম্ভ্রান্ত ও উচ্চ শিক্ষিত ব্যাক্তি বসন্তসেনা নামে এক বারাঙ্গনার জন্যে শূলে মৃত্যু পর্যন্ত বরণ করতে গিয়েছিলেন। তখনকার দিনে কি যুবক, কি যুবতী সকলেই যৌবন মদে মত্ত হয়ে পরস্পর উল্লাস, কাম ও যৌন আনন্দ ইত্যাদি সম্ভোগ করতেন। কামশাস্ত্র ও ধর্ম যুবক বা যুবতীরা সংসার ধর্ম পালন করতে বা যৌবন মদে মত্ত হয়ে যে হিন্দু শাস্ত্রের বিধিনিষেধগুলি অবজ্ঞা করতেন তা কখনো নয়। পুরুষেরা দেখতেন, নারীর সঙ্গে পূর্ণ বিলাস, পূর্ণ কামচর্চা করলে তাতে কোন ধর্মশাস্ত্র ব্যবস্থা লঙ্ঘন করা হয় না। বরং যে কোন নায়িকা অধিকাংশ স্থানে ধর্মকার্যে বা সৎপথে নায়ককে চলতে প্ররোচিত করত। তখনকার দিনে ব্রাহ্মণদিগের কর্তব্য ছিল- ইষ্যাধ্যয়ন দানামিং তপঃ শান্তিং ধৃতিঃ ক্ষমা। অলোভ ইতি অষ্টানি ব্রাহ্মণানাৎ! -মনুসংহিতা অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের কর্তব্য ছিল যজ্ঞ, পড়াশুনা, দান, তপস্যা, ক্ষমা, সহ্যগুণ বা ধৃতি প্রভৃতি। ক্ষত্রিয়দের কর্তব্য ছিল- প্রজাদিগের রক্ষা, যুদ্ধ বিগ্রহ, যজ্ঞকার্যের উদ্যোগ প্রভৃতি। বৈশ্যদের কর্তব্য ছিল- বাণিজ্য, অর্থ উপার্জন। আর শূদ্রদের কর্তব্য ছিল অন্য জাতিদের সেবা। এই সব কাজে নারী পুরষদের উৎসাহ দিত এবং কামচর্চা করতে করতে তাঁরা প্রিয় বংশবদ পুরুষকেও সৎ উদ্দীপনায় প্ররোচিত করত। নারীর ধর্ম ছিল স্বামী- স্বামীর ধর্মই নারীর ধর্ম বলে গণ্য হতো। তাই স্ত্রীর নাম ছিল সহধর্মিণী। অর্থ ও কাম বাৎস্যায়ন বলেন যতো কামে উন্মত্ত হবে ততো অর্থ উপার্জন করবার প্রবৃত্তি ও কৌশল সৃষ্টি করতে পারবে- তার অর্থ উপার্জন ততো বাড়বে। তার কেবলই ইচ্ছা হবে কিসে বেশি অর্থ উপার্জন করে সে স্ত্রী পরিনীতা বা অভীপ্সীতা বা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নারীকে উজ্জ্বল মণিমাণিক্যাদি কচিত অলংকার দিয়ে তৃপ্ত করতে পারবে। তার সঙ্গে প্রেমানন্দ ততো বৃদ্ধি পাবে। নায়িকা এতে তৃপ্ত হবে, তাই সে পুরুষকে সুখপূর্ণ আলিঙ্গন, চুম্বন, সুরত ইত্যাদি দ্বারা তার জীবনকে স্বর্গতুল্য করে তুলবে। জীবন হবে সুখ পূর্ণ- জীবন হবে প্রকৃতই আনন্দময় ও তৃপ্তিকর। এইভাবে বাৎস্যায়নের মত- কাম এবং কাম পরিতৃপ্তিই মানুষকে ধর্ম ও অর্থ উপার্জনের পথে নিয়ে যায়। কামই মানুষকে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে এগিয়ে যাবার ক্ষমতা দেয়। কামই জীবনের পথকে প্রকৃতই সুগম্য ও কুসুমে আত্তীর্ণ করে তোলে। NEXT ১.৩ কলাবিদ্যা শিক্ষা শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

১.৩ কলাবিদ্যা শিক্ষা

কোন মন্তব্য নেই
কমের চৌষট্টি কলা বাৎস্যায়নের মতে কামের পথে প্রকৃতই অগ্রসর হতে হলে নারী বা পুরুষ উভয়ের কতকগুলি কলাবিদ্যা শিক্ষা করা উচিত। কলাবিদ্যা একটি নয়-একাধিক। মোট ৬৪টি কলা বাৎস্যায়ন দেখিয়ে গেছেন। এই সব কলায় একজন লোক হয়ত শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারে না-তবে কয়েকটি কলায় সে ব্যুৎপত্তি লাভ করতে পারে। আর কলা ছাড়া জীবন ও কাম কিছুই মধুময় হতে পারে না। নারী ও কলা নারী যে শুধু সুন্দরী হলেই পুরুষের মন জয় করতে পারে বা তাকে আকর্ষণ করতে পারে, একথা ঠিক নয়। এমন অনেক সময় দেখা যায় যে নারীর যথেষ্ট গাত্রবর্ণ উজ্জ্বল না হলেও বা যথেষ্ট সুগঠন না থাকলেও যদি তার কণ্ঠস্বর মিষ্ট হয়, ব্যবহার খুব সনে-াষজনক হয়, নানাপ্রকার কলা বিদ্যা তার আয়ত্তে থাকে, তা হলেও সে জীবনে উন্নতি করতে পারে। অনেক গুনগ্রাহী, বিদগ্ধ পুরুষ হয়ত সেই নারীকে পাবার জন্যে আকুল হতে পারে। তাই বাৎস্যায়নের চৌষট্টি কলা বিষয়ে জ্ঞান লাভ করা নারীদেরও অবশ্য উচিত। চৌষট্টি কলার প্রয়োজনীয়তা নিুলিখিত কলাগুলি চৌষট্টি কলার মধ্যে গণ্য। তাদের প্রত্যেকটির কথা বলা হচ্ছেঃ ১। কণ্ঠ সংঙ্গীত চর্চা। ২। যন্ত্র সংঙ্গীত পারদর্শিতা। ৩। নৃত্য-কলা বা নাচ। ৪। অঙ্কন বিদ্যা বা ছবি আঁকা। ৫। নিজ সীমন্ত বা চুলকে সুসজ্জিত করা। ৬। নানাবিধ পুষ্পে শয্যা সুশোভিত করা। ৭। নানাবিধ বর্ণে গৃহ সুসজ্জিত করা। ৮। আপন দন্ত, পোষাক-পরিচ্ছদ, কেশ নখ প্রত্যক্ষ বর্ণের দ্বারা সুসজ্জিত করা। ৯। বর্ণাঠ্য প্রস্তরে ও ধাতব পদার্থে ঘর ও শয্যা সুশোভিত করা। ১০। ভিন্ন ভিন্ন উৎসবে বা আনন্দে শয্যা নানাভাবে আস্তরণ দেওয়া। ১১। সাঁতার ও জলকেলি। ১২। প্রিয় লোককে আকর্ষণ করার জন্য মন্ত্রতন্ত্র অনুশীলন। ১৩। ফুল নিয়ে মালা গাঁথা ও অঙ্গাদি সুশোভিত করা। ১৪। ফুল নিয়ে মালার মুকুট ও বেষ্টন। ১৫। নিজের শোভন বেশভুষা করা-এক উৎসবে এক প্রকার, অন্য উৎসবে অন্য প্রকার। ১৬। চিত্তহারী প্রথায় কানের দুল পরিধান করা। ১৭। সুগন্ধি দ্রব্য তৈরী করা। তৈজস পত্রাদি তৈরী সম্বন্ধে শিক্ষা করা। ১৮। নূতন ভূষণ তৈরী বা পুরানো বিভিন্ন ধরনের অলঙ্কার নতুন করে গড়া। ১৯। অতিথিবর্গের সন্থষ্ট করবার বিদ্যা। ২০। পরিচ্ছদ রচনার সুচারুতা। ২১। হস্ত কৌলশ। ২২। রান্না করার পারদর্শিতা। ২৩। পানীয় দ্রব্য তৈরী করা, বিভন্ন মিষ্টান্ন তৈরী করা, অম্ল, চাটনি, প্রভৃতি তৈরীতে পারদশিতা। ২৪। সেলাই ও দেহের বস্ত্রাবরণ করতে সুদক্ষতা। ২৫। বস্ত্রখণ্ড ও সুতা দিয়ে পাখি, পাতা, ফুল ইত্যাদি তৈরী করা। ২৬। বীণা ও ডমরুর শব্দ অনুকরণ। ২৭। নানাবিধ হেঁয়ালী রচনা। ২৮। সঙ্গে সঙ্গে না ভেবে চিনে- কবিতা রচনা করা বা কবিতার পাদপূরণ করা। ২৯। কঠিন অর্থপূর্ণ দুরূহ শব্দের অর্থ নিরূপণ করা। ৩০। সুমধুর কণ্ঠে শাস্ত্রীয় শ্লোক পাঠ করা। ৩১। নাটক অভিনয় দর্শন ও নাটকের বিভিন্ন চরিত্রের প্রকৃত সমালোচনা। ৩২। কোনও কবিতার হারানো পংক্তির পুনরুদ্ধার করা বা তা পুনরায় নতুন করে লেখা। ৩৩। বেত বা তৃণ থেকে নানাবিধ নতুন নতুন আসবাবপত্র রচনা বা বোনা। ৩৪। কাঠ থেকে কুঁদে ছবি বা দৃশ্য রচনা। ৩৫। ছুতারের কাজ এবং বাড়ি ঘর তৈরী। ৩৬। সোনা বা রূপা ও দামী পাথর বসিয়ে নানা কাজ করা। ৩৭। রসায়ন বা ধাতব শাস্ত্র অধ্যয়ন। ৩৮। উজ্জ্বল পাথর ও দামী ধাতুর বস্তু রচনা। ৩৯। বাগানের কাজ করা। ৪০। ভেড়া, মোরগ এবং পায়রাদের নিয়ে কৌতুকপূর্ণ খেলা করার উৎসাহ দান। ৪১। শুক, ময়না প্রভৃতি পাকিকে কথা শেখানো ও তাদের দিয়ে নানা কৌতুককার্য করানো। ৪২। গাত্র মর্দন করতে শেখা, বেশভূষা রচনা করা, কাজের শিল্প শিক্ষা করা। ৪৩। সংবাদ প্রাপ্তির নমুনা স্বরূপ আঙ্গুলের দাগ বোঝা। ৪৪। গুপ্ত সংবাদ বোঝার জন্যে ভাষা শিক্ষা। ৪৫। বিভিন্ন দেশের লিখিত ভাষা ও কথাবার্তা বোঝা। ৪৬। ঘোড়া হাতী ও যানবাহন সুসজ্জিত করা। ৪৭। সংকেত চিহ্ন বা গুপ্ত বার্তা বোঝা। ৪৮। নানা ধরণের যন্ত্রে জ্ঞানলাভ করা। ৪৯। স্মৃতিশক্তি বা স্মরণশক্তি বৃদিধ করার অভ্যাস বা কি করতে পারলে বেশি কথা মনে রাখা যায়। ৫০। নানাবিধ পুস্তক পাঠ। ৫১। নানাবিধ পুস্তক রচনা। ৫২। অভিধান ও বিশ্বকোষ সংগ্রহ। ৫৩। ছন্দের নিয়ম এবং বক্তৃতা শিল্প শিক্ষা। ৫৪। লুকাবার শিল্প, তুলা রচিত দ্রব্যকে পশমরূপে রূপদান, সাধারণ দ্রব্যকে চিত্তাকর্ষক করে তোলা। নানা বস্ত্র পরিধান করা। ৫৫। দাবা খেলা ও পাশা খেলায় দক্ষতা। ৫৬। বস্ত্র পরিচ্ছদ পরিধান করে নিজেকে অন্যের চোখে আকর্শণীয় করে তোলা। ৫৭। শিশুদের মত পুতুল ও গোলাকার সব বস্তু নিয়ে খেলা করা। ৫৮। নানা প্রকার শারীরিক ব্যায়াম ও কলাকৌশল শিক্ষা করা। ৫৯। রাজনীতি শিক্ষা করা। ৬০। সামরিক রীতিনীতি সম্পর্কে জ্ঞান। ৬১। মুখ দেখে মানুষের চরিত্র বোঝা। ৬২। কৃত্রিম পুষ্প রচনা শিক্ষা করা। ৬৩। কর্দম বা নরম মাটি দ্বারা নানা ধরণের সুন্দর মূর্তি রচনা করা। ৬৪। গণিত বিষয়ে জ্ঞান লাভ। চৌষট্টি কলার প্রয়োজনীয়তা এই চৌষট্টি কলা ছাড়া বাভ্রব্য আরও চৌষট্টি ধরনের শিল্পকাজের কথা বলেছেন। বাভ্রব্য ছিলেন পঞ্চাল দেশের লোক। তাই তিনি এই কথাগুলিকে পাঞ্চালী কথা বলে অভিহিত করেছেন। যে বারাঙ্গনা এই চৌষট্টি কলায় পারদর্শিনী হতে পারতেন তাঁদের বলা হতো ‘রূপ-গণিকা’ সংক্ষিপ্ত ভাষায় গণিকা। সাধারণ মানুষ এই গণিকাকে সম্মান করত-বর্তমানেও গণিকারা পরম আদরণীয়। রাজবংশীয় বা অভিজাতবংশীয় মেয়েরাও এই চৌষট্টি কলা শিক্ষা করলে তারা যতাযথ আদর্শ স্থানীয় বলে গণ্য হতেন ও উত্তম পুরুষকে লাভ করতে পারতেন। NEXT ১.৪ দায়িত্ব ও কর্তব্য শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

১.৩ কলাবিদ্যা শিক্ষা

কোন মন্তব্য নেই
কমের চৌষট্টি কলা বাৎস্যায়নের মতে কামের পথে প্রকৃতই অগ্রসর হতে হলে নারী বা পুরুষ উভয়ের কতকগুলি কলাবিদ্যা শিক্ষা করা উচিত। কলাবিদ্যা একটি নয়-একাধিক। মোট ৬৪টি কলা বাৎস্যায়ন দেখিয়ে গেছেন। এই সব কলায় একজন লোক হয়ত শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারে না-তবে কয়েকটি কলায় সে ব্যুৎপত্তি লাভ করতে পারে। আর কলা ছাড়া জীবন ও কাম কিছুই মধুময় হতে পারে না। নারী ও কলা নারী যে শুধু সুন্দরী হলেই পুরুষের মন জয় করতে পারে বা তাকে আকর্ষণ করতে পারে, একথা ঠিক নয়। এমন অনেক সময় দেখা যায় যে নারীর যথেষ্ট গাত্রবর্ণ উজ্জ্বল না হলেও বা যথেষ্ট সুগঠন না থাকলেও যদি তার কণ্ঠস্বর মিষ্ট হয়, ব্যবহার খুব সনে-াষজনক হয়, নানাপ্রকার কলা বিদ্যা তার আয়ত্তে থাকে, তা হলেও সে জীবনে উন্নতি করতে পারে। অনেক গুনগ্রাহী, বিদগ্ধ পুরুষ হয়ত সেই নারীকে পাবার জন্যে আকুল হতে পারে। তাই বাৎস্যায়নের চৌষট্টি কলা বিষয়ে জ্ঞান লাভ করা নারীদেরও অবশ্য উচিত। চৌষট্টি কলার প্রয়োজনীয়তা নিুলিখিত কলাগুলি চৌষট্টি কলার মধ্যে গণ্য। তাদের প্রত্যেকটির কথা বলা হচ্ছেঃ ১। কণ্ঠ সংঙ্গীত চর্চা। ২। যন্ত্র সংঙ্গীত পারদর্শিতা। ৩। নৃত্য-কলা বা নাচ। ৪। অঙ্কন বিদ্যা বা ছবি আঁকা। ৫। নিজ সীমন্ত বা চুলকে সুসজ্জিত করা। ৬। নানাবিধ পুষ্পে শয্যা সুশোভিত করা। ৭। নানাবিধ বর্ণে গৃহ সুসজ্জিত করা। ৮। আপন দন্ত, পোষাক-পরিচ্ছদ, কেশ নখ প্রত্যক্ষ বর্ণের দ্বারা সুসজ্জিত করা। ৯। বর্ণাঠ্য প্রস্তরে ও ধাতব পদার্থে ঘর ও শয্যা সুশোভিত করা। ১০। ভিন্ন ভিন্ন উৎসবে বা আনন্দে শয্যা নানাভাবে আস্তরণ দেওয়া। ১১। সাঁতার ও জলকেলি। ১২। প্রিয় লোককে আকর্ষণ করার জন্য মন্ত্রতন্ত্র অনুশীলন। ১৩। ফুল নিয়ে মালা গাঁথা ও অঙ্গাদি সুশোভিত করা। ১৪। ফুল নিয়ে মালার মুকুট ও বেষ্টন। ১৫। নিজের শোভন বেশভুষা করা-এক উৎসবে এক প্রকার, অন্য উৎসবে অন্য প্রকার। ১৬। চিত্তহারী প্রথায় কানের দুল পরিধান করা। ১৭। সুগন্ধি দ্রব্য তৈরী করা। তৈজস পত্রাদি তৈরী সম্বন্ধে শিক্ষা করা। ১৮। নূতন ভূষণ তৈরী বা পুরানো বিভিন্ন ধরনের অলঙ্কার নতুন করে গড়া। ১৯। অতিথিবর্গের সন্থষ্ট করবার বিদ্যা। ২০। পরিচ্ছদ রচনার সুচারুতা। ২১। হস্ত কৌলশ। ২২। রান্না করার পারদর্শিতা। ২৩। পানীয় দ্রব্য তৈরী করা, বিভন্ন মিষ্টান্ন তৈরী করা, অম্ল, চাটনি, প্রভৃতি তৈরীতে পারদশিতা। ২৪। সেলাই ও দেহের বস্ত্রাবরণ করতে সুদক্ষতা। ২৫। বস্ত্রখণ্ড ও সুতা দিয়ে পাখি, পাতা, ফুল ইত্যাদি তৈরী করা। ২৬। বীণা ও ডমরুর শব্দ অনুকরণ। ২৭। নানাবিধ হেঁয়ালী রচনা। ২৮। সঙ্গে সঙ্গে না ভেবে চিনে- কবিতা রচনা করা বা কবিতার পাদপূরণ করা। ২৯। কঠিন অর্থপূর্ণ দুরূহ শব্দের অর্থ নিরূপণ করা। ৩০। সুমধুর কণ্ঠে শাস্ত্রীয় শ্লোক পাঠ করা। ৩১। নাটক অভিনয় দর্শন ও নাটকের বিভিন্ন চরিত্রের প্রকৃত সমালোচনা। ৩২। কোনও কবিতার হারানো পংক্তির পুনরুদ্ধার করা বা তা পুনরায় নতুন করে লেখা। ৩৩। বেত বা তৃণ থেকে নানাবিধ নতুন নতুন আসবাবপত্র রচনা বা বোনা। ৩৪। কাঠ থেকে কুঁদে ছবি বা দৃশ্য রচনা। ৩৫। ছুতারের কাজ এবং বাড়ি ঘর তৈরী। ৩৬। সোনা বা রূপা ও দামী পাথর বসিয়ে নানা কাজ করা। ৩৭। রসায়ন বা ধাতব শাস্ত্র অধ্যয়ন। ৩৮। উজ্জ্বল পাথর ও দামী ধাতুর বস্তু রচনা। ৩৯। বাগানের কাজ করা। ৪০। ভেড়া, মোরগ এবং পায়রাদের নিয়ে কৌতুকপূর্ণ খেলা করার উৎসাহ দান। ৪১। শুক, ময়না প্রভৃতি পাকিকে কথা শেখানো ও তাদের দিয়ে নানা কৌতুককার্য করানো। ৪২। গাত্র মর্দন করতে শেখা, বেশভূষা রচনা করা, কাজের শিল্প শিক্ষা করা। ৪৩। সংবাদ প্রাপ্তির নমুনা স্বরূপ আঙ্গুলের দাগ বোঝা। ৪৪। গুপ্ত সংবাদ বোঝার জন্যে ভাষা শিক্ষা। ৪৫। বিভিন্ন দেশের লিখিত ভাষা ও কথাবার্তা বোঝা। ৪৬। ঘোড়া হাতী ও যানবাহন সুসজ্জিত করা। ৪৭। সংকেত চিহ্ন বা গুপ্ত বার্তা বোঝা। ৪৮। নানা ধরণের যন্ত্রে জ্ঞানলাভ করা। ৪৯। স্মৃতিশক্তি বা স্মরণশক্তি বৃদিধ করার অভ্যাস বা কি করতে পারলে বেশি কথা মনে রাখা যায়। ৫০। নানাবিধ পুস্তক পাঠ। ৫১। নানাবিধ পুস্তক রচনা। ৫২। অভিধান ও বিশ্বকোষ সংগ্রহ। ৫৩। ছন্দের নিয়ম এবং বক্তৃতা শিল্প শিক্ষা। ৫৪। লুকাবার শিল্প, তুলা রচিত দ্রব্যকে পশমরূপে রূপদান, সাধারণ দ্রব্যকে চিত্তাকর্ষক করে তোলা। নানা বস্ত্র পরিধান করা। ৫৫। দাবা খেলা ও পাশা খেলায় দক্ষতা। ৫৬। বস্ত্র পরিচ্ছদ পরিধান করে নিজেকে অন্যের চোখে আকর্শণীয় করে তোলা। ৫৭। শিশুদের মত পুতুল ও গোলাকার সব বস্তু নিয়ে খেলা করা। ৫৮। নানা প্রকার শারীরিক ব্যায়াম ও কলাকৌশল শিক্ষা করা। ৫৯। রাজনীতি শিক্ষা করা। ৬০। সামরিক রীতিনীতি সম্পর্কে জ্ঞান। ৬১। মুখ দেখে মানুষের চরিত্র বোঝা। ৬২। কৃত্রিম পুষ্প রচনা শিক্ষা করা। ৬৩। কর্দম বা নরম মাটি দ্বারা নানা ধরণের সুন্দর মূর্তি রচনা করা। ৬৪। গণিত বিষয়ে জ্ঞান লাভ। চৌষট্টি কলার প্রয়োজনীয়তা এই চৌষট্টি কলা ছাড়া বাভ্রব্য আরও চৌষট্টি ধরনের শিল্পকাজের কথা বলেছেন। বাভ্রব্য ছিলেন পঞ্চাল দেশের লোক। তাই তিনি এই কথাগুলিকে পাঞ্চালী কথা বলে অভিহিত করেছেন। যে বারাঙ্গনা এই চৌষট্টি কলায় পারদর্শিনী হতে পারতেন তাঁদের বলা হতো ‘রূপ-গণিকা’ সংক্ষিপ্ত ভাষায় গণিকা। সাধারণ মানুষ এই গণিকাকে সম্মান করত-বর্তমানেও গণিকারা পরম আদরণীয়। রাজবংশীয় বা অভিজাতবংশীয় মেয়েরাও এই চৌষট্টি কলা শিক্ষা করলে তারা যতাযথ আদর্শ স্থানীয় বলে গণ্য হতেন ও উত্তম পুরুষকে লাভ করতে পারতেন। NEXT ১.৪ দায়িত্ব ও কর্তব্য শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

১.৪ দায়িত্ব ও কর্তব্য

কোন মন্তব্য নেই
পুরুষের কর্তব্য যেমন নারী তেমনি পুরুষের পক্ষেও কলাবিদ্যা বা ভালবাসার বিজ্ঞান এমনভাবে শিক্ষা করা উচিত যাতে তার ভার্য্যা বা উপপত্নী সন্তোষের সঙ্গে জীবন যাপন করতে পারে। বাল্যে ও কৈশোরের গুরুগৃহে বা পাঠশালায় বিদ্যা অর্জন করার পর প্রত্যেক নাগরিকের অর্থোপার্জন করায় নিযুক্ত হওয়া অবশ্য উচিত। শাস্ত্রে আছে, ব্রাহ্মণ লোকের কাছ থেকে দান গ্রহণ করবে, ক্ষত্রিয় যুদ্ধে জয়লাভ করে কৃতিত্ব দেখাবে, বৈশ্য যুবক ব্যবসা-বাণিজ্যে অর্থ উপার্জন করবে-আর শূদ্র যুবক পরের সেবা করে জীবন যাপন করবে। অর্থ উপার্জনের পর নাগরিক তার নিজের জন্যে বসত বাড়ি তৈরী করবে। সে সর্ব প্রকার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করবে। মানুষের উচিত রাজধানীতে বা অন্য বড় শহরে বাসগৃহ নির্মাণ করা। তবে বহু গণ্যমান্য লোকের সঙ্গে তার সহৃদয়তা বা বন্ধুত্ব হয়ে থাকে। গৃহ নির্মাণ কলা বাড়ি এমন স্থানে নির্মিত হওয়া উচিত, যাতে জল পাবার কোন কষ্ট না হয়। বাৎস্যায়ন পড়ে মনে হয়, যে সময়ের কথা লেখা হচ্ছে সে সময় শহরে নগরে জল পাবার ব্যবস্থা ভাল ছিল না। এই বাড়ি ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্য সাধন করতে ভিন্ন ভিন্ন অংশে গঠিত হওয়া উচিত। বাড়িতে ফুলবাগান, উদ্যান, লতাকুঞ্জ ইত্যাদি থাকবে। এ অংশের কক্ষগুলি দুই ভাবে বিভক্ত হবে-বহির্বাটী ও অন্তঃপুর। অন্তঃপুর হবে নারীদের আবাস্তবর্হিবটীতে থাকবে, বৈঠকখানা, যেখানে বিভিন্ন সুরসিক জ্ঞানী বা বাণিজ্য সম্পর্কিত লোকেরা বসে কথাবার্তা বলবে। এই বৈঠকখানায় বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে খেলাধুলাও হতে পারে। বৈঠকখানার মেঝে মাদুরের দ্বারা ও জানালা পট্ট বস্ত্রের দ্বারা আবৃত থাকবে। এখানে একটি সুন্দর বিছানা থাকবে-একধারে ফুলদানীতে ফুল থাকবে। বালিশ বেশ নরম হবে। প্রধান পর্যাঙ্কের কাছে থাকবে একটি শয্যা- সেখানে গৃহকর্তা তাঁর প্রিয় নারীদের সঙ্গে রতি কার্য করলেও শয্যা বসন সিক্ত বা কলুষিত হবে না। এর মাথার দিকে থাকবে ব্রাকেট গৃহ দেবতার একটি প্রতিচ্ছবি বা ছবি। এই ছবির নীচে থাকবে একটি টেবিল। এই টেবিলে থাকবে যে দ্রব্য তা হলো- সুগন্ধি দ্রব্য, পুষ্পমাল্য, মোমবাতি, সুগন্ধি পান, দাড়িম্বের খোসা ও তাম্বুল । বিছানার তলায় থাকবে পিকদানী। এছাড়া, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য থাকতে পারে বীণা, ছবি আঁকার পাত্র, ব্রাশ, রঙ, বই, হাতীর দাঁতের তৈরী বস্তু, পুষ্পনির্মিত স্তবক প্রভৃতি। ঘরের বিছানা ছাড়া, বালিশ থাকবে-সব ঘরে মাদুর বিছানা থাকা উচিত। দাবা পাশা থাকবে ঘরে। বাইরের গৃহসজ্জা এই বৈঠকখানা ঘরের বাইরে থাকবে বারান্দায় ময়না, টিয়া প্রভৃতি পাখি। গ্রীষ্মকালের জন্যে থাকবে বাসগৃহের পাশে একটি বাগান। বাগানটি হবে মনোরম। এই বাগানে একটি ছায়াযুক্ত গাছের তলে থাকবে একটি দোলনা। এই দোলনাটি হবে সুদৃশ্য। এই বাগানে ফোয়ারা থাকলে ভাল হয়। না থাকলে, কয়েকটি সুদৃশ্য বেদী থাকবে। বেদীতে থাকবে সুগন্ধি ফুলচন্দন। এর চারিদিকে লতাপাতা ও সুগন্ধি ফুলের বৃক্ষ থাকবে। নাগরিকদের দৈনিক জীবনধারা ১। সকালে উঠে নাগরিক প্রাতঃকৃত্যাদি করবে। তার মধ্যে দাঁতমাজা, মুখ ধুয়ে, ফেলা ইত্যাদি থাকবে। ২। ্লান করবে সুগন্ধি জল দিয়ে। তোয়ালে দিয়ে গা মুছবে। ৩। চন্দনাদি সুগন্ধি দ্রব্য অঙ্গে লেপন করবে। ঠোঁটে একটু লিপষ্টিক লাগাবে। গরায় একটি মালা ঝোলাবে। ৪। একটি আয়নায় ভাল করে মুখ দেখে কেশ রচনা করবে। ৫। অবশেষে নিজের কাজে বের হবে। সম্ভ্রান্ত নাগরিকের উচিত ১। প্রত্যহ একবার ্লান করবে। ২। একদিন অন্তর ভাল করে গাত্রমর্দন বা গাত্র মার্জনা করা। ৩। প্রতি তৃতীয় দিনে মালা দরকার। ৪। প্রত্যেক চতুর্থ দিনে মুখের দাঁড়ি গোঁফ কামানো আরামদায়ক হয়ে থাকে। ৫। প্রত্যেক পঞ্চম দিনে মাথার চুল কাঁটা উচিত। ৬। প্রতি দশদিন অন্তর দেহের গোপনীয় স্থানের কেশ মুণ্ডন করা উচিত। ৭। রোদের সময় বিনা ছাতায় বের হবে না। তা হলে শরীর থেকে বেশী ঘাম বের হতে পারে বেশী ঘাম দুর্গন্ধ যুক্ত হয়। ৮। দিবারাত্রে দুবারের বেশি ভোজন্তদুপুর ও সন্ধ্যা-প্রত্যহ দুবার প্রধান আহারের পর উচিত প্রিয় পাখিদের কথা বলা শেখানো। ভেড়া ইত্যাদি থাকলে তাদের কৌতুক যুদ্ধ শেখানো। ৯। সকালে মুখ, হাত, পা, ধুয়ে কিছু সামান্য খেয়ে বন্ধুবান্ধব প্রভৃতিদের সঙ্গে কথাবার্তা বলবে। দুপুরে খাবার পর দিবানিদ্রা বা ঘুম হবে। ১০। দিবা নিদ্রার পর সংগীত চর্চা বা ক্রীড়া প্রভৃতি চলতে পারে। ১১। তারপর বাইরে কাজ থাকলে বের হয়ে-সন্ধ্যায় ফিরবে। ১২। বাড়ি ফিরে বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা, গল্প প্রভৃতি করতে থাকবে। তারপর বন্ধুদের বিদায় দেব। ১৩। তাপর প্রণয়িনীদের সঙ্গে দেখা করবে-বা তার আগমন প্রতীক্ষা করবে। সে এলে কুসুমাস্তীর্ণ শয্যায় তাকে বসাবে। মধুর নরম বাক্য বলে তাকে আনন্দ দেবে। তার আসতে বিলম্ব হলে তার জন্যে দূত পাঠাবে। ১৪। দূতীর বাক্যেও যদি প্রণয়িনী না আসে তা হলে নিজে তার বাড়ি যাবে, নানা সন্তোষ করে তাকে নিয়ে আসবে। যদি বৃষ্টি থাকে ও তার গা বা বস্ত্র ভিজে যায়, তাকে শুকনো বস্ত্র পরিয়ে দেবে। যেন বন্ধু বান্ধবেরা সে সব কাজে সাহায্য না করে। নিজের বস্ত্রাদি ভিজে গেলেও পরিবর্তন করবে। ১৫। তারপর সবাইকে বিদায় দিয়ে প্রণয়িনীর সঙ্গে সুমধুর সম্ভাষণ করবে। ১৬। প্রণয়িনীকেই সমস্ত রাত্রের সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান দান করা অবশ্য কর্তব্য। যদি এ বিষয়ে কোনও ভুল হয়, তার জন্যে প্রণয়িনীর কছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে কোন দোষ নেই। উপরে সে সব জীবন বৃত্ত লিখিত হলো, তা শুধুমাত্র ধনী ও যার অবসর প্রচুর তাদের পক্ষেই সম্ভব। রাতে প্রণয়িনী নিয়ে সম্ভোগ ঠিক ভাবেই হতে পারে। নৈমিত্তিক নাগরিককৃত বা সামাজিক কর্ম উপরের প্রাত্যহিক কর্ম ছাড়া অনেক সামাজিক কাজ ও অনুষ্ঠান নাগরিকের পালন করা উচিত। এতে নাগরিক সমাজের মধ্যে একটি সম্মানও প্রতিষ্ঠা হয়। বাৎস্যায়ন নিুলিখিত সামাজিক অনুষ্ঠানগুলির অবশ্য পালনীয় বলছেন। ১। ঘটা নিবন্ধক দেবতার উদ্দেশ্য অনুষ্ঠিত সব উৎসবে নাগরিকের অবশ্যই যোগদান করা উচিত। এতে দেশ বা বিদেশ থেকে আগত শিল্পীরা সংগীত ও অন্য নানা কলা উৎসবের নৈপুণ্য দেখাতে পারে। এতে মানব সংস্কৃতি উন্নতি লাভ করে। মাসে অন্ততঃ একবার তা অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। ২। গোষ্ঠী সমন্বয় সমান বয়স্ক বা সমান চরিত্র বা সম চরিত্রবান যুবকদের মিলন ও সমন্বয়। এতে ভাবের আদান্তপ্রদানে প্রচুর সাহায্য হয়ে থাকে। এরূপ জন সমাবেশ কোন সম্ভ্রান্ত রাজকর্মচারীর বৈঠকখানায় বা অলিন্দে, কোন নৃত্যকলয়ে বা বন্ধু-বান্ধবদের বহিঃকক্ষে হওয়া উচিত। এই সম্মিলনীতে নৃত্যগীত বা কোন প্রবন্ধ পাঠ হতে পারে। নানা কলা প্রদর্শনও এখানে হতে পারে। ৩। সমাপালক পালাক্রমে বন্ধুদের বাড়ীতে গিয়ে সেখানে নানা প্রকার সুস্বাদু ফল নিয়ে তার সঙ্গে সুরা পান হয়ে থাকে। এতে আগে সম্মিলিত গণিকাদের সুরাপাত্র দেওয়া হয়-তাদের পান হয়ে গেলে নাগরিকবৃন্দ পান করবে। সেই সঙ্গে নানা রকম ফল খাওয়া হয়। ৪। উদ্যান প্রমোদ ভিন্ন ভিন্ন বন্ধুর বাগানে প্রমোদ উৎসব হয়ে থাকে। যাঁরা অংশ গ্রহণ করেন তাঁরা অশ্বে আরোহণ করে দাসদাসী নিয়ে সেখানে যাবেন। এখানে নানা খেলাধূলা, মোরগ লড়াই, নৃত্যগীত, যাদুবিদ্যা প্রভৃতি হয়ে থাকে। এইভাবে সারাদিন আনন্দে কাঠিয়ে সন্ধ্যাবেলা বাড়ী ফিরবে। ফেরার সময় বাগান থেকে পুষ্পস্তবক ও পুষ্পমালা প্রভৃতি নিয়ে ফিরবে। ৫। উপরে যেসব উৎসব বর্ণনা করা হলো তা ছাড়া সাধারণ নাগরিকদেরও কতকগুলি উৎসবে যোগদান করা অবশ্য কর্তব। তা এবারে একে একে বলা হচ্ছে। (ক) দেওয়ালি উৎসব। (খ) পূর্ণিমা উৎসব বা পূর্ণিমার রাতে নানান উৎসব। (গ) বসন্ত উৎসব-বসন্তকালে। (ঘ) অপক্ক আম্রোৎসব (শেখর লঞ্জলিকা) আম পাকার আগে। (ঙ) পিষ্টক উৎসব বা পিঠে বানানো। (চ) বিশ খাদিকা-ফাল্গুন্তচৈত্র মাসে। (ছ) নব পত্রিকা-বর্ষার প্রথমে। (জ) হোলি উৎসব। (ঝ) পাঞ্চালি উৎসব বা ভাঁড়ামি। (ঞ) শিমুল উৎসব-শিমুল ফুল নিয়ে খেলা। (ট) কদম্ব উৎসব-কদম্ব ফুল নিয়ে খেলা। (ঠ) যব উৎসব-যবের গুঁড়া নিয়ে খেলা। (ড) ঝুলন উৎসব। (ঢ) মদন উৎসব-চৈত্রমাসে মদন দেবের সম্মান। (ণ) দমনকে উৎসব-ফুল নিয়ে খেলা। (ত) অশোক উৎসব-ফুল নিয়ে খেলা। (থ) পুষ্পচয়ণ উৎসব। (দ) আম্রলতিকা-কচি আমপাতা নিয়ে খেলা। (ধ) ইক্ষুমঞ্জিকা-আখ খাবার প্রতিযোগিতা। সম্ভ্রান্ত নাগরিকের সঙ্গী ও কিংকর পীঠ মর্দ নাগরিকের সহযাত্রীদের মধ্যে পীঠ মর্দন সর্ব প্রধান। প্রেম বিজ্ঞানে সে বিশেষ পারদর্শী। তার স্ত্রী নেই পুত্র কন্যা নেই। সংসারে কারও হেপাজত নেবার বাধ্যবাধকতা নেই। দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ানো ও প্রেম বিষয়ে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ই তার জীবনের কাজ। অতি দরিদ্র সে কিন্তু খাওয়া পরা কোনও সম্ভ্রান্ত নাগরিকের দায়িত্বে চলে। বাৎস্যায়নের কালে এরূপ পীঠ মর্দ প্রায়ই সম্ভ্রান্ত নাগরিকের থাকত। বর্তমান যুগে এরূপ লোক খুব অল্পই দেখা যায়। বিট এ আর এক প্রকারের লোক। বেশ লেখা পড়া জানা ও অভিজ্ঞ। এক কালে যথেষ্ট ধন সম্পত্তি ছিল। কিন্তু কাম সম্ভোগে সমস্তই হারিয়েছে। মৃচ্ছকটিক নামক বহু পুরানো সংস্কৃতি নাটকে এরূপ একটি মানুষের অবতারণা দেখা যায়। এ সকল লোক ধনী ও প্রভুত্ব সম্পন্ন ব্যক্তির চিত্ত জয় করে থাকে। নিজে কিছু উপার্জন করে না। বড় লোক সঙ্গীর ব্যয়েই তার বাবুয়ানা চলে যায়। বিদূষক ইংরেজীতে যাবে বলে ‘বাফুন্থ’ বা ‘ক্লাউন’ তাদেরই সে আমলে বিদূষক বলা হতো। এদের অন্য নাম ছিল ভাঁড়। ভাঁড়ামিই তার ব্যবসা। বড় বড় লোকও রাজরাজড়াদের সঙ্গী। কোনও নারীর সঙ্গে প্রেম যুদ্ধে তিনিই হলেন ঐ ধনী রাজার বা সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির সাক্ষী বা দূত। বিদূষক সাধারণতঃ অবিবাহিত এবং ব্রাহ্মণ বংশোদ্ভূত। তিনি তাঁর সম্পত্তি নষ্ট করেছিলেন। এবং সাধারণত এক দরিদ্র ব্যক্তি। রাজার বা সম্ভ্রান্ত নায়কের বড় বড় সভায় বিদূষক অনেক কৌতুকপূর্ণ কতাবার্তা বলেন ও সভাষদবর্গকে বিভিন্ন কৌতুক দ্বারা উল্লাসিত করে থাকেন। সংস্কৃত নাটকে দেখা যায় যে এঁরা নায়কের সহচর-এঁরা অভীষ্টা নারীর প্রতি দৌতকার্য্য করে থাকেন। আধুনিক যুগে গোপাল ভাঁড়ের কতা সকলে জানেন সম্রাট আকবরের সভায় রসিক বীরবল ঐ বিদূষকের একটি দৃষ্টান্ত। বিদূষকের মত কাজ অনেক স্ত্রীলোকেরাও করে থাকে। তারা কেউ কেউ (১) উদাসিনী-সন্ন্যাসিনী যিনি বিজ্ঞানে বিশেষ পারদর্শিনী (২) নারী নাপতানী (৩) অসৎ দরিদ্রা নারী (৪) নিঃসন্তান নারী (৫) কোনও বৃদ্ধ বেশ্যা তপস্বিনী। এঁরা সম্ভ্রান্ত বংশের কুল নারীদের নাগর সংগ্রহে প্রায় দূতীকার কাজ করে থকেন। দূতীর কাজ এই দূতীরা খুব কুশলী হয়ে থাকেন। এরা নায়ক বা নায়িকার গুণাবলী এমন সুন্দর ও বিশদভাবে বা বাড়িয়ে পরস্পরের কাছে বলে থাকেন যে তারা মুগ্ধ হতে বাধ্য হয়। তাই দূতীকাদের সে আমলে বিশেষ কদর ছিল-কারণ সে আমলে লোকে জানত যে দূতীকারা নারীর পক্ষে অপরিহার্য। বিশেষ করে উচ্চ রাজ পরিবারে বা খুব উচ্চ রাজ পরিবারে বা খুব ধনী পরিবারের পক্ষে তারা ছিল অপরিহার্য। এই দূতীকারের গুণাবলীও ছিল অশেষ-তারা হাস্যরস, নাট, গান ইত্যাদি জানত। NEXT ১.৫ দূতী ও দূত কর্ম শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

১.৫ দূতী ও দূত কর্ম

কোন মন্তব্য নেই
কামসাধানায় নারী-পুরুষের বিভিন্ন ধারা শাস্ত্রমতে কামচর্চার জন্য কোনও নারী লাভ করতে গেলে, স্ব-বর্ণীয় বা স্বজাতির কোন অবিবাহিতা কিশোরীকে শাস্ত্র ও সমাজ সম্মতভাবে বিবাহ করে তার সঙ্গে সহবাস করা উচিত। কিন্তু কোনও উচ্চবংশীয় নারী বা নীচ বংশীয়া মেয়েমানুষ অথবা অন্য কোনও লোকের বিবাহিতা পত্নীর সঙ্গে সহবাস নিষিদ্ধ। উপরের শাস্তসম্মতবাবে বিবাহিত নারীর সঙ্গে সহবাস করলে যে সন্তান বা সন্ততি জন্মায় তারাই হলো কুল প্রদীপ। এছাড়া কোনও বারাঙ্গনা বা বিধবার সঙ্গে সহবাসে যে সন্তান হয় তারা পূর্বপুরুষের বংশধারার স্থান পায় না। তাদের সঙ্গে সহবাসে পুরুষ বেশি সুখ উপভোগ করতে পারে, কিন্তু সন্তান বংশের ধারায় স্বীকৃত হয় না। সহবাসের অনুমোদিত নারী তিন প্রকার সাধারণতঃ বাৎস্যায়নের মতে দৈহিক সহবাসের জন্য অনুমোদিত- ১। সমাজসম্মতভাবে বিবাহিতা স্ত্রী। ২। বারাঙ্গনা বা পতিতা নারী ৩। বিধবা নারী। আচার্য গণিকাপুত্র যোনিসুখের জন্য আর একশ্রেণীর নারী কথা লিখেছেন। তিনি (ক) অন্যের স্ত্রী উপভোগ করা যায়; সম্পত্তি বা ধনলাভের সম্ভাবনা থাকলে। (খ) আত্বারক্ষার্থে বা জীবন বাঁচাবার জন্য। (গ) বন্ধুত্ব দৃঢ় করার জন্যে। অন্যের বিবাহিতা স্ত্রীর সঙ্গে যৌনসুখ লাভ করা সাধারণতঃ পাপকার্য। কিন্তু যদি জানা যায় ঐ নারী স্বামী ছাড়া অন্য পুরুষের সঙ্গে এর আগে যৌন সহবাস করেছে বা করে তাহলে সে স্ত্রীলোক উচ্চবংশীয় হলেও সহবাসের পক্ষে সে উপযুক্ত বলে বিবেচিত। এতে ধর্মনাশের কোন প্রশ্ন ওঠে না। নরনারী উপভোগের বিধিসম্মত ব্যবস্থা গণিকাপুত্রের মতে নিুলিখিত অবস্থায় নরনারী উপভোগ বিধিসম্মত। (১) যদি কোনও লোক প্রতাপসম্পন্ন ও ধনবান হয় কিন্তু যদি কোন ব্যক্তির শত্রুর সঙ্গে যোগদান করে থাকে, তা হলে পূর্বোক্ত ধন ও প্রতাপসম্পন্ন ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে সুুবিধা হলে সহবাস করা সংগত। কেননা, তার নারীর সঙ্গে সহবাসে, সে ব্যক্তি শত্রুর দল ছেড়ে উপপতির দলে আসতে পারে-বা স্ত্রী তাকে আসতে প্রলুব্ধ করতে পারে। (২) ঠিক সেই নারীর সঙ্গে অবৈধ প্রণয় করা যেতে পারে, যার স্বামী বহু কালের পরম শত্রু বা শত্রুতা করে আসছে। এরূপ ধর্ষিতা স্ত্রী স্বামীকে বন্ধু পদে আনতে পারে। (৩) সে নারী তার স্বামীকে ভবিষ্যৎ উপপতির বন্ধর দলে আনতে পারে এবং উপপতির শত্রু নাশ করেত প্রলুব্ধ করতে পারে। (৪) কোনও নারীর স্বামী যদি কাও ঘরবাড়ী, সম্পত্তি বা ধনদৌলত কেড়ে নিতে থাকে, তা হলে সঙ্গে শেষোক্ত লোক প্রণয়স্থাপন বা যৌন সহবাস করতে পারে। ফলে হয়তো ঐ ব্যক্তির স্ত্রীর সাহায্যে সে ঘরবাড়ী বা ধনদৌলত ফিরে পেতে পারে। (৫) যে নারীর সাহায্যে কোনও পুরুষ বিপদ ছাড়া কোনও অর্থ উপার্জন করতে পারে ঐ নারীর সঙ্গে যৌন সংসর্গ সে নিঃসন্দেহে করতে পারে। (৬) যে নারী অত্যন্ত কামুক এবং তার কাম পরিতৃপ্তি না হলে উপপতির বিশেষ নিন্দা প্রচার করতে পারে। এরূপ নারীর সঙ্গে ব্যভিচার করতে পারে। (৭) যে নারী তার ঈপ্সিত পর পুরুষের বিশেষ ক্ষতি এমন কি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে, সে নারীকে উপভোগ করে জীবন ধন বাঁচানো যেতে পারে। (৮) যে নারী স্বামীকে শত্রুর সঙ্গে যোগদান করিয়েছে, এমন কি নিজেকে শত্রুর দলে মিশিয়েছে, সুযোগ ঘটলে সে নারীর সঙ্গে কাম সম্পর্ক স্থাপন করা যায়। (৯) যদি কোনও পুরুষ অন্য পুরষের পত্নীর সঙ্গে কাম সম্পর্ক স্থান করে তাকে-তাহলে শেষোক্ত পুরুষ প্রতিশোধ নেবার জন্যে প্রথমোক্ত পুরুষের স্ত্রীর সঙ্গে ইচ্ছামত ব্যভিচার করতে পারে। (১০) রাজ-অন্তঃপুর লুক্কায়িত শত্রুর অনুসন্ধান করতে পারে বলে কোন লোক রাজার অনুগৃহীতা পরস্ত্রীর সঙ্গে কাম সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে। (১১) কোন অভীপ্সতা কুমারীকে বিবাহ করতে হলে যে নারী এ বিবাহ সফল করে দিতে পারে তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক চলতে পারে। (১২) যে নারীর স্বামী কারও পত্নী বা উপপত্নীকে প্রলুব্ধ করে কেড়ে নেয়, তা হলে শেশোক্ত ব্যক্তিও ঐ নারীকে শয্যাশায়িনী করতে পারে। (১৩) শত্রুতা থাকলে যে কোনও লোক শত্রুর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচার করতে পারে। (১৪) চারায়ণ (কামশাস্ত্রের একজন লেখক), আরও বেশী সাহশী! তিনি বলেন, রাজার ভার্য্যা অথবা অন্যান্য রাজকর্মচারীদের নারী বা বিধবাগণ অর্থ উপার্জন সহায়তায় পথের দিক দর্শন করে। তাই তারাও উপভোগ্যা। (১৫) সুর্বণাভ বলেন্তবিধবা সন্ন্যাসীনীরাও উপভোগ্র। পুরুষের শ্রেণীবিভাগ যে কুমারী নারী কখনও কোনও পুরুষের সঙ্গে কামক্রিয়া করেনি, সে কুমারীর নাম অনাঘ্রাত কুমারী। কিন্তু যতোই কোনও নারী বা নারীদের সঙ্গে যৌনক্রিয়া করে থাকুক সে চিরদিন যৌনশক্তি সম্পন্ন ও নারীদের কাম্য। নিষিদ্ধা নারী বাৎস্যায়নের মতে নিম্নলিখিত নারীরা চিরদিন পুরুষের সঙ্গে সঙ্গমে নিষিদ্ধ। ১। কুষ্ঠ রোগ সংক্রান্ত নারী। ২। যক্ষ্মা রোগগ্রস্তা নারী। ৩। উন্মাদ রোগ আক্রান্তা নারী। ৪। জাতি বা সমাজ পরিত্যাগী নারী। ৫। যে নারী প্রেমের গোপন সংবাদ রক্ষণে অসমর্থা। ৬। যে নারী এত কামুকী যে সাধারণের দৃষ্টির সামনেও যৌন সহবাস করতে প্রস্থত। ৭। বয়স্থা নারী। ৮। যে নারীর চোখ পাটকিলে রং কিন্তু অতি শুভ্র চর্ম। ৯। যে নারী অত্যন্ত কালো। ১০। যার মুখে বা যোনিতে অত্যান্ত দুর্গন্থ বের হয়। ১১। নিকটাত্নীয় (যেমন বোন পিসতুতো বোন প্রভৃতি)। ১২। নিজের স্ত্রীর কোনও বান্ধবী। ১৩। সন্ন্যাসিনী বা ব্রহ্মচারিণী নারী। ১৪। কোনও আত্নীয়ের স্ত্রী। ১৫। কোনও বন্ধুর স্ত্রী। ১৬। কোন পণ্ডিত বা গুরু পত্নী। ১৭। রাজপত্নী। বাভ্রব্য বলেন, যে নারী তার পতি ছাড়া আও পাঁচজন পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রয়েছে তার সঙ্গে অবাধে মিলন চলতে পারে। দূতী নির্বাচন প্রেম সম্পর্ক স্থাপন করতে দূতীর প্রয়োজন হয়ে থাকে। এই দূতীর মাধ্যমে অন্য নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা যায়। এই দৌত্য করার জন্য নিুলিখিত ধরণের নারী খুব প্রশস্ত। ১। বাল্যের বান্ধবী। ২। যে লোকের কোন উপকার করা হয়েছে এমন লোক বা তার স্ত্রী। ৩। সম ব্রবসায়ী কোন লোক বা তার স্ত্রী। ৪। সগোত্র বা সহপাঠী বা পাঠিনী। ৫। মনের সব গোপন কথা জানে এমন বন্ধু বা তার স্ত্রী। ৭। যাকে সব কথা বলা চলে এমন বন্ধু বা তার স্ত্রী। ৮। যদি সমবয়সী ধাত্রীপুত্‌ বা ধাত্রী কণ্যা থাকে। ৯। সমবয়সী লোক একসঙ্গে বাস করে বা তার স্ত্রী। দৌত্য কার্য্যে গুণ প্রথম দূত বা দূতীর কতকগুলি গুণ থাকা একান্ত প্রয়োজন। তা হচ্ছে- ১। এরা উচ্চবংশীয় হওয়া উচিত। ২। এরা প্রতারণা পরায়ণ হবে না। ৩। এদের মনসি’র হবে। ৪। এরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হবে। ৫। এরা লোভী বা দূর্নীতি পরায়ণ হবে না। ৬। এরা স্বদেশে থাকবে। ৭। অপরিচিত লোককে গুপ্ত উদ্দেশ্য প্রকাশ করবে না কখনও। নিম্নজাতির দূতী চারায়ণ বলেন, নীচজাতীয় লোকের সঙ্গেও বন্ধুত্ব স্থাপন করা যায়-দূত নির্বাচনও করা যায়। তা হলো- ১। রজক বা ধোপা। ২। নাপিত। ৩। বাগানের মালী! ৪। গন্ধ বা আতর ব্যবসায়ী। ৫। মদ্য বিক্রেতা। ৬। স্বর্ণকার। ৭। পীঠ মর্দ (বিলাস শিক্ষক) ৮। বিট (যে নায়িকা বেশ্যার বিশ্বস্ত) ৯। বিদূষক (ভাঁড় জাতীয় লোক)। এই নয় ধরনের লোকেরা প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে যেতে পারে, তাই সফল হয়। অবশ্য বুদ্ধিমান লোক হওয়া উচিত, এদের পত্নীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলা। এর কারণ হলো নারীই পুরুষদের দোষগুণ সম্পর্কে সংবাদ সহজে সংগ্রহ করে দিতে পারে। বিশেষ দূতীর গূণ যে লোক অতি সহজে বারাঙ্গনাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে আবার বিলাসী লোকদেরও বন্ধু হয়, সেই লোকই সহজে প্রণয়িনী জোগাড় করতে পারে। কিন্তু এ কাজটি খুব সহজ নয়। এর জন্যে যে গুণগুলি অবশ্যই থাকা দরকার তা এখানে বলা হচ্ছে- ১। যে অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা করতে হবে। ২। সে বিশেষ ভাবে সাহসী ও সব কাজে অগ্রসর হবার মত মনের বল রাখবে। ৩। সে লোকদের এমন গুণ থাকবে, যে কোনও লোকের মুখ দেখেই তার মনের ভাব বুঝতে পারবে। ৪। সহজে তার মন দমবে না। ৫। অপরের মনের গোপন কথা না বললেও, বুঝতে পারবে। ৬। স্থান ও কাল বুঝে উচিত মত পরিবর্তনের পারদর্শিতা থাকবে। দৌত্যের প্রয়োজন কেন হয় তা বলা হচ্ছে। যখন কোন নারীর সঙ্গে সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে না পারা যায়, তখন বাধ্য হয়ে এই দৌতের কার্যের সহায়তা নেওয়া উচিত। কিন্তু সব গুন না থাকলে দৌত্য কাজে কখন সফল হবে না- বরং তাতে সুফলের বদলে কু-ফলই ফলতে পারে। NEXT ২.২ বিবাহান্তর কর্তব্য শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

২.১ আদর্শ বধূ নির্বাচন

কোন মন্তব্য নেই
আদর্শ বধূ নির্বাচন আমাদের দেশে একটি প্রকৃত সমস্যা হিসাবে রয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এটি একটি সমস্যা নয়-কিন্তু আমাদের দেশে যেখানে ঠিক ছেলেমেয়ে পরস্পর পছন্দ করে বিয়ে করে না। বিয়ে হয় অনেকটা ভাগ্যকে অবলম্বন করে। তাই আমাদের দেশে প্রাচীন শাস্ত্রে সুলক্ষণযুক্ত নর-নারীর বিচারে এত ঘটা ছিল। শাস্ত্রে আছে পুরুষের ভাগ্য এবং স্ত্রীলোকের চরিত্র দেবতারাও বুঝতে পারেন না। তাই কথার ভিত্তিতেই আমাদের শাস্ত্রে নরনারী নির্বাচন সমস্যাকে এত গুরুত্ব দেওয়া হতো। আদর্শ বধূ নির্বাচন সমস্যার ব্যাপারে যে যে বিষয়গুলি দেখা হতো তা হলোঃ- ১। ভাবী বধূর রূপ ও তাহার চেহারার কথা। ২। বধূর গায়ের রং- সন্তানের দেহে মায়ের রং আসতে পারে, তাই ফর্সা নারীর কদর। ৩। শরীর সুগঠিত কিনা। ৪। হাঁটা চলা ভাল কিনা। ৫। চুল কত লম্বা- মাথা ঠিক আছে কিনা। ৬। বধূর স্বভাব চরিত্র কেমন- ঝগড়াটে কিনা। ৭। বধূর কর্মকুশলতা। ৮। বিদ্যাচর্চা। ৯। অন্যান্য চর্চা-সেলাই, বাদ্য, সঙ্গীত ইত্যাদি। বধূ নির্বাচন সমস্যা বধূ নির্বাচন প্রাচীন যুগেই একটি সমস্যা বলে পরিগণিত হতো। শাস্ত্রে বধূ নির্বাচন সমস্যা সমাধানের জন্য যে যে কথা বলা হয়েছে তা নিম্নে প্রদত্ত হলো। ১। বধূ স্বামীর সঙ্গে একই জাতির ও ধর্মের হবে। প্রাচীন যুগে একশ্রেণীর সঙ্গে অন্য শ্রেণীর বিবাহ প্রচলিত ছিল না। ২। বধূ যে উঁচু বংশের মেয়ে হবে এটা সর্বদাই কাম্য। ৩। মেয়ের চরিত্র বেশ উন্নত হবে। ৪। স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর বয়স অন্ততঃ পাঁচ বছরের ছোট হেব। স্ত্রীর চেয়ে স্বামীর বিদ্যা কিছু বেশী থাকা উচিত। ৫। কোষ্ঠীতে উপযুক্ত যোটক বিচার আমাদের শাস্ত্রমতে করা হ’য়ে থাকে। এ ছাড়া নারীর অন্যান্য গুণের কথা ত আগেই বলা হয়েছে। কিন্তু এই সব গুণগুলি একত্রে কাম্য হলেও একই নারীর মধ্যে তা অনেক সময় দেখা যায় না বা মনোমত পাত্রী মেলে না। এ ছাড়া কন্যা নির্বাচনের সময় অন্য যে সব দিকে নজর রাখা হয়ে থাকে তাও বলা হচ্ছে- আমাদের শাস্ত্রে চেহারা ও গণাগুণ অনুযায়ী নারীকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়- ১। উত্তমা কুমারী। ২। মধ্যমা কুমারী। ৩। অধমা কুমারী। উত্তমা কুমারীর লক্ষণ যে কন্যা শ্যামাঙ্গী, যার কেশ মনোহর, দেহে অল্প অল্প লোম বিরাজমান সে কন্যা মনোহারিনী। মনোহর ভ্রূ-যুক্তা, সুশীলা, মৃদু গতিশালিনী। সুদন্তা, পঙ্কজ নয়না। যার কটি ক্ষীণ, যার কথা অতি উত্তম ও মিষ্টভাষী বলে মনে করবে। যে কন্যা কুলের কল্যাণ কারিণী। যার দেহ নাতিদীর্ঘ, নাতিহ্রাস। যার বর্ণ শ্যাম, দেহ ক্ষীণ, গতি হংসিনীর মত। করতল রক্তপদ্মের মত, স্তন নাতিউচ্চ, নাতি ক্ষুদ্র, যোনিপৃষ্ঠ কচ্ছপাকৃতি, ধর্মপরায়ণ, পতিব্রতা, তাকেই উত্তমা রমনী বলে মনে করা চলে। মধ্যমা কুমারীর লক্ষণ যার শরীর মধ্যবিত্ত, কেশ দীর্ঘ। যে রমনী সর্বদা আলস্য পরিত্যাগ করে। কি সুখ কি দুঃখ উভয় যার সমজ্ঞান। যে সর্বদা হাসি মুখে কথা বলে, যার নাভিদেশ গভীর, যে রমনী সকলের প্রতি মিষ্ট বাক্য প্রয়োগ করে, যে সদাচার পরায়ণ, যার মতি সর্বদা ধর্মে প্রতিষ্ঠিত। অল্পমাত্র আহারেই যার তৃপ্তিবোধ হয়, সর্বজীবে যার আত্নজ্ঞান, যে রমণী গুরুভক্তি পরায়ণ, দেবপূজায় নিযুক্ত ও দ্বিজ সেবায় রত এবং যে রমণী সাধ্বী, তাকেই মধ্যমা রমনী বলে। অধমা কুমারীর লক্ষণ অধমা কুমারী হস্ত ও পদ ক্ষীণ, চক্ষু পিঙ্গলবর্ণ, দন্ত সুদীর্ঘ ও বিরল (ফাঁকা ফাঁকা) এবং উদর বৃহৎ হয়ে থাকে। এর শরীর অধিক লোমে পরিপূর্ণ। এই রমনী অতি উচ্চৈঃস্বরে হাস্য করে এবং বেশি কথা বলে। এই রমণী অতি নির্লজ্জ, সদা ক্রোধর্পূর্ণ এবং চিত্ত সদা বিকল। অধমা কুমারীর হস্ত ও পদে দীর্ঘ এবং কেশ খর্ব হয়ে থাকে। এদের সমস্তই কুলক্ষণে পরিপূর্ণ। অধমা রমণী কদাচ স্বধর্মবিহিত সদাচারের অনুষ্ঠান করে না। সুতরাং রমণীকে পরিত্যাগ করা কর্তব্য। যেখানে অধমা রমণী বাস করে, লক্ষ্মী কখনও সেখানে বিরাজ করেন না। যে-লোক এহেন কন্যাকে বিবাহ করে, তাকে আজীবন মহাদুঃখ ভোজ করতে হয় এতে সন্দেহ নাই। অতএব সব সময় এরূপ নারীর সংসর্গ ত্যাগ করা উচিত। যার সর্বাঙ্গ লোমে পরিপূর্ণ সেরূপ কন্যা কূলে উঁচু হলেও বিবাহযোগ্যা নহে। সে কন্যা কুলক্ষণাযুক্তা। যে কন্যা শুভ্রবর্ণা, অধিকাঙ্গী, রোগিণী, লোমশূন্য অধিক রোমান্বিত, বাচাল, পিঙ্গলবর্ণা, নক্ষত্র নাসিকা, বৃক্ষনাসিকা, নদীনাম্নী, পক্ষীনাম্নী, সর্পনাম্মী, ভীষণনাম্মী, সেরূপ কন্যাকে বিবাহ করা কর্তব্য নহে। সেরূপ লক্ষণযুক্ত কন্যা শাস্ত্রে কুলক্ষণা বলে কথিত হয়ে থাকে। নদীনাম্নী, বৃক্ষনাম্নী ও নক্ষত্রনাম্নী কন্যাকে বিয়ে করা উচিত নয় পূর্বে একথা বলা হয়েছে বটে, কিন্তু গঙ্গা, যমুনা, গোমতী, স্বরস্বতী এই সব নদীর নাম। তুলসী ও মালতী এই দুই বৃক্ষের নাম এবং রেবতী, অশ্বিনী ও রোহিনী এই তিন নক্ষত্রের বেলায় কোন দোষ নয়। যে কন্যার চক্ষুদ্বয় ট্যারা ও চপল, যে কণ্যা দুঃশীলা ও পিঙ্গলবর্ণ এবং হাস্যকালে যার গণ্ডস্থলে কূপাকার চিহ্ন দৃষ্ট হয় তাকে কামুকী বলে জানবে। বিবাহের বিচার্য বিষয় এবারে বিবাহের আগে কি কি বিষয়ের বিচার করা উচিত সে সম্বন্ধে বলছি। (ক) যোগ্য বর কনে পছন্দ করা। (খ) কন্যার উপযুক্ত শিক্ষা-দীক্ষা। (গ) বরের উপযুক্ত উপার্জন ক্ষমতা ও জীবনে প্রতিষ্ঠা। (ঘ) দু’জনের শরীর গঠনে ঠিকমত মিল। (ঙ) সম্ভব হলে ডাক্তার দ্বারা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো। (চ) দুজনের পূর্ণ বয়স। আমাদের দেশে পুরুষের বয়স ২২-৩০ আর নারীর বয়স ১৮-২৫ হলে ভাল হয়। (ছ) ছেলে ও মেয়ের মধ্যে অন্ততঃ সাত আট বছরের পার্থক্য থাকা উচিত। (জ) দু’জনেরই মনের গঠন ও চিন্তাধারার প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত। (ঝ) বিবাহের আগে দুজনের কামশাস্ত্র বিষয়ে পূর্ণ জ্ঞান থাকা বাঞ্ছনীয়। (ঞ) বিবাহের আগে যেন কারও চারিত্রিক দোষ না থাকে। (ট) দু’জনের প্রকৃতি এক প্রকার কিনা সে বিষয়েও বিচার করা। (ঠ) দু’জনের আর্থিক অবস্থায় যেন বিরাট পার্থক্য না হয়। অত্যধিক নারী পুরুষের সঙ্গে খুব গরীব ঘরের নারী বা খুব ধনী ঘরের মেয়ের সঙ্গে খুব গরীব পুরুষের বিয়ে হ’লে তাদের পারিবারিক জীবন প্রায়ই সুখের হয় না। প্রধানতঃ এইগুলি বিচর করে দেখে, বিয়ে দিরে প্রায়ই তারা সুখী দম্পতি হয়। কোকো পণ্ডিতের মত হলো সাধারণ মানুষ পুরুষ বা নারীর রূপ, তাদের বংশ ও তাদের দেহের উচ্চতা দেখে বিয়ের বিষয় বিচার করেন- কিন্তু এটা যে কত বড় ভ্রান্তি তা একটু চিন্তা করলে বুঝতে পারা যায়। পুরুষ বা নারীর ভেতরটা অর্থাৎ তাদের অন্তরের কথা বুঝতে বা হৃদয় দখল করতে পারে খুব কম সংখ্যক মানুষ। তাই তাদের দু’টি প্রকৃত সুখমণ্ডিত হবে কিনা, তা সঠিক বিচার না করে বিয়ে দিলে সুখের চেয়ে দুঃখই দেখা দেবার আশঙ্কা থাকে অনেক বেশী। যখন বর-কনে পরস্পরকে দেখতে পায় না বিয়ের আগে, তখন বিচারকদের হাতে সবে সার্থক ও উপযুক্ত দম্পতি নির্বাচন। বিভিন্ন শুভাশুভ বিচার যখন বরপক্ষরা কন্যা দেখতে যাবেন, তখন নিম্নলিখিত চিহ্নগুলি তাদের অবশ্য দেখা উচিত। ১। কন্যাটি এই সময় ঘুমোচ্ছে বা কাঁদছে কিনা, কিংবা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে কিনা। ২। কন্যার নাম সহজে এবং প্রকৃতপক্ষে উচ্চরণ করা যায় কিনা, তার নাম অকল্যাণ সূচক কিনা। ৩। খবর নেওয়া উচিত, ঐ কন্যার আগে অপর কারও সাথে বিয়ের কথা পাকা হয়েছিল কিনা। ৪। কন্যার গাযের রং পিঙ্গলবর্ণ কিনা। তার মুখে সাদা সাদা দাগ আছে কিনা। ৫। কন্যার মুখ দেখতে পুরুষের মত যেন না হয়। ৬। তার মুখে চুল আছে কিনা। ৭। তাঁর কাঁধ নিচে ঝুলে পড়া কিনা। ৮। পা দুটি বাঁকা কিনা। ৯। কপাল বাইরে ঠেলে বের হয়েছে কিনা, অথবা খুব উঁচু কিনা। ১০। তার স্তন দু’টি অনুদ্ভিন্ন কিনা। ১১। যদি কন্যা তার পিতার শবদাহ করে থাকে। ১২। যদি কোনও পুরুষের সঙ্গে আগে যৌন মিলন করে থাকে এবং তা জানা যায়। ১৩। যদি তার বিয়ের বয়স পার হ’য়ে গিয়ে থাকে। ১৪। যদি কন্যা রুগ্না বা বোবা হয়। ১৫। কন্যার সঙ্গে যদি কোনও সম্পর্ক যেমন খুড়তুতো কি মামাতুতো বোন ইত্যাদি থাকে। ১৬। যদি কন্যা বরের চেয়ে খুব ছোট বা বড় হয় (বয়সে)। কন্যার এইসব লক্ষণ থাকলে বিবাহ করা কখনও উচিত নয়। NEXT ২.২ বিবাহান্তর কর্তব্য শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

২.২ বিবাহান্তর কর্তব্য

কোন মন্তব্য নেই
নব বধূর প্রতি কর্তব্য নববধূর প্রতি অবশ্যই পালনীয় কতকগুলি কর্তব্যের নির্দেশ করা হয়েছে আমাদের শাস্ত্রে। শাস্ত্রমতে সেগুলি অতি অবশ্যই পালন করা উচিত। এখানে একে একে সেগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো। ১। নববধূ বাড়িতে প্রথম পদার্পণের পর প্রতিটি পরিজন তার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করা উচিত। এটি মনে রাখতে হবে, যেরকম তাকে দেখান হবে, তেমন আচরণ সে করবে। তাকে যদি প্রত্যেকে ভালবাসে, সেও প্রত্যেককে ভালবাসবে। ২। নববধূকে জোর করে বা হুকুম করে কোনও কাজ করাতে নেই। তাতে পরিবারের বা স্বামীর গৃহের প্রতি তার একটা বিরক্তির ভাব জন্মায়। ৩। নববধূ ইচ্ছা করে যদি কিছু কাজকর্ম সখ ক’রে নিজের হাতে তুলে নেয় তাতে কোন বাধা দিতে নেই। তাতে তার মনে দুঃখ বা ব্যথা লাগতে পারে। ৪। নববধুর প্রতি তার স্বামীর খুব ভদ্র ভ্যবহার করা উচিত। এটা অবশ্য মনে রাখা কর্তব্য, স্বামীর ভালবাসাই বিবাহিতা নারীর জীবনে সবচেয়ে বেশী কাম্য। তাতে স্বামীন আহ্লাদ থেকে বঞ্চিত হলে কিছুতেই তার মনে শান্তি আসতে পারে না। ৫। নববধূ পিতামাতার স্নেহের আলয় ছেড়ে স্বামীগৃহে পদার্পণ করেছে একথা মনে রাখা উচিত। বিবাহের আগে সে পিতামাতাকে খুব ভালবাসত একথা অস্বীকার করা যায় না, তাই পিতামাতার নিন্দা তার কাছে মোটেই ভাল লাগে না- এতে সে মনে আঘাত পায়। তাই বিবাহিতা নববধূর সামনে কখনও তার পিতৃগৃহের নিন্দা করা উচিত নহে। ৬। ছোটখাটো আর্থিক বা ঐ ধরণের সামান্য বিষয় নিয়ে কখনও নববধূর মনে আঘাত দেওয়া উচিত নয়। এই কথা তুলে তার পিতাকে ছোট প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা কোনও মতেই উচিত নয়। এই ধরনের আলোচনা সর্বদা বর্জনীয়। ৭। আদর, সোহাগ, প্রীতি ও সেই সঙ্গে শ্বশুর গৃহের প্রকৃত অবস্থার বিষয়ে নববধূকে জ্ঞান দান করা কর্তব্য। নববধূ যদি স্বামীর প্রকৃত অবস্থা বোঝে, তবে সে নিশ্চয়ই প্রকৃত অবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবার চেষ্টা করবে। ৮। নারীর কোমলতা, প্রেম, অভিমান এগুলি যে নারীর সহজাত বৃত্তি- নববধূকে তা বলা উচিত নয়। নববধূর বিশ্বাস উৎপাদন স্বামী কি করে নববধূর বিশ্বাস উৎপাদন করবে, এ বিষেয়ে শাস্ত্রে যা বলা হয়েছে তা হচ্ছে- ১। স্বামী কখনও বাড়ির সম্বন্ধে কোনও মিথ্যা কথা নিজে নববধূকে কিছুতেই বলবে না- এটা অত্যন্ত অন্যায় এবং এর ফলে পরে সে বধূর কাছে ছোট হয়ে যায়। ২। স্বামী তার ব্যবহারের মধ্যে কোনও সময়েই স্ত্রীর প্রতি সহসা কামভাব প্রদর্শন করবে না। ৩। ধীরে ধীরে স্ত্রীর সঙ্গে নানা কথা বলে আনন্দ করবে এবং তার ফাঁকে ফাঁকে নিজের প্রকৃতি, বুদ্ধি ও সংযমের পরিচয় দেবে। ৪। প্রয়োজন হলে নববধূর প্রশংসা করবে- তার ব্যবহার, কথাবার্তা, রূপ-গুণের প্রশংসা করবে। ৫। নববধূ তার প্রতি ধীরে ধীরে আকৃষ্টা হ’লে, তা প্রকাশিত হবে তার ব্যবহার ও রতি-প্রকৃতিতে। তা না হলে জোর করে স্বামী যৌন আকর্ষণ বা দৃঢ়তা দেখাবে না। ৬। নববধূ নিজে থেকে প্রেম ও প্রীতি প্রকাশ করলে তার মন বুঝে স্বামী তার প্রতি চুম্বন, আলিঙ্গন ইত্যাদি ধীরভাবে করতে পারে, তবে দেখতে হবে সে তা চায় কিনা। ৭। নববধূ বিমুখ হলে তার প্রতি কখনও রূঢ় আচরণ বা কর্কশ বাক্য ব্যবহার করবে না। ৮। প্রয়োজন হ’লে বধূকে প্রসন্ন করার জন্যে তার কাছে সব নিজেকে নিচু করবে। শাস্ত্রে উল্লেখ আছে- কোনরকম রূঢ়তা ও কর্কশতা সর্বদা পরিত্যাজ্য। ৯। যখন নববধূ চুম্বন নেবে তারপর আলিঙ্গন ও ধীরে ধীরে তার সম্মতি নিয়ে মিলনের কথা উঠতে পারে। ১০। নববধূর যদি প্রথম ঋতু না হয়ে থাকে, কদাচ মিলন উচিত নয়। নারী ঋতুমতী হবার আগে পর্যন্ত সে কখনও মিলনের উপযুক্তা হয় না। এখানে একটা কথা। আজকাল অধিকাংশ বিয়েই হয় নারীর ঋতুর পর-কিন্তু বাৎস্যায়নের আমলে তা হতো না। উপরের নিয়মগুলি পালন না করলে বালিকার মনে স্বামীর প্রতি ঘৃণা বা বিরক্তির ভাব জাগতে পারে- তাতে দাম্পত্য জীবন কখনও সুখের হয় না। যৌবনাগমন ও মাসিক ধর্ম নারী ও পুরুষ উভয়ের জীবনেই বিভিন্ন সময়ে যৌবনের সঞ্চার ঘটে থাকে। তবে যৌবন আগমন উভয়ের ঠিক একই সময়ে ঘটে না- বিভিন্ন সময়ে ঘটে। নারীর যৌবন আগমন ঘটে আগে- পুরুষের ঘটে কিছু পারে। গ্রীষ্মপ্রধান দেশে পুরুষের যৌবন আগমন ঘটে আঠারো থেকে কুড়ি বছরের মধ্যে। শীতপ্রধান দেশে- অর্থাৎ ভারতের বহির্দেশে যুবকদের যৌবন আগমন ঘটে বাইশ থেকে পঁচিশ বছর বয়সে। নারীর যৌবন আগমন ঘটে গ্রীষ্মপ্রধান দেশে চৌদ্দ থেকে ষোল বছর বয়সে- আর শীতপ্রধান দেশে আঠারো থেকে কুড়ির মধ্যে। যৌবন ধর্মের তালিকা শীতপ্রধান দেশে যৌবন আগমন পুরুষ- ২২-২৫ নারী- ১৮-২০ গ্রীষ্মপ্রধান দেশে যৌবন আগমন পুরুষ- ১৮-২০ নারী- ১৪-১৬ শীতপ্রধান দেশে যৌবন নিরোধন পুরুষ- ৬৫-৭০ নারী- ৫০-৫৫ গ্রীষ্মপ্রধান দেশে যৌবন নিরোধন পুরুষ- ৫৫-৬০ নারী- ৪৫-৫০ পুরুষের যৌবন আগমনের লক্ষণ অবশ্য মাঝে মাঝে উপরের প্রকৃতিগত নিয়মেও ব্যতিক্রম দেখা যায়। পুরুষের যৌবন আগমন বিভিন্ন লক্ষণের মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে। যেমন- (১) কষ্ঠস্বর ভারী হয়। (২) গোঁফের মধ্যে রেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। (৩) বগলে ও বসি-দেশে লোম দেখা যায়। (৪) তাদের দেহের মধ্যে বীর্য্য বা শক্তি সৃষ্টি হয়। (৫) মানসিক পরিবর্তন ঘটে। নারীর যৌবন আগমনের লক্ষণ নারীর যৌবন আগমনের সঙ্গে সঙ্গে তার দেহে যে সব চিহ্ন ফুটে ওঠে তা হলোঃ- তাদের দৈহিক ও মানসিক পরিবর্তন। ১। দেহে নারী-সুলভ কমনীয়তা ফুটে ওঠে। ২। হাত, পা, জঙ্ঘন, নিতম্ব ইত্যাদিতে মেদ জমে ওঠে। ৩। বক্ষদেশ উন্নত হ’য়ে ওঠে। ৪। মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয়। ৫। প্রায় আঠাশ দিন অন্তর মাসিক বা ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। এই ঋতুস্রাব হলো নারীর যৌবন আগমনের সবচেয়ে বড় চিহ্ন। মাসিক বা ঋতু নারীর যৌবন আগমনর থেকে যৌবনের সীমা পর্যন্ত এই সময়ে প্রতি আঠাশ দিন অন্তর নারীর যোনি থেকে কিছুটা রক্ত ও শ্লেষ্মা বেরিয়ে আসে। একই বলা হয় মাসিক বা ঋতু। বাৎস্যায়ন বলেন- এই ঋতু নারীর বিবাহের সূচনা বোঝায়। বাৎস্যায়নের মত বিবাহের সূচনার সময়, ঋতুস্রাবের ঠিক প্রারম্ভে। কিন্তু আজকাল ও বিধান প্রাই মানা হয় না- কারণ ভারত সরকার আঠারো বছরের আগে কোনও নারীর বিবাহ অসিদ্ধ বলে ঘোষনা করেছেন। ঋতুর সময়ে বিভিন্ন সতর্কতা ঋতুমতী নারীর সময় বা ঐ সময়ের পরে কতকগুলি বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা কর্তব্য। তা না হলে তার দৈহিক ও মানসিক নানা প্রকার ক্ষতি হ’তে পারে। এ বিষয়ে এখানে সংক্ষেপে আলোচনা করা হচ্ছে। ঋতু যে একটি সাধারণ বস্তু নয়, তা আমাদের ভারতীয় সব শাস্ত্রকারদের বেশ জানা ছিল- তাই তাঁরা এটা মেনে চলতেন সব সময়ে। শাস্ত্রের ভাষায়ঃ- ঋতুমতী যদা নারী চণ্ডালী প্রথমেহনি। পাপীয়সী দ্বিতীয়ে চ তৃতীয়ে নষ্টরূপিনী ॥ উপস্বিনী চতুর্থে চ লাতা চৈব বিশুদ্ধতি। প্রথমেহ হ্নি অগত্যা চ গমনে জীবন ক্ষয় ॥ দিনভেদে ঋতুমতী নারীর বিভিন্ন নামকরণ করা হয়েছে ভারতীয় শাস্ত্রে। নারীর ঋতু হলে তিন দিন কোন নারীকে কি নামে ডাকা হয় এবং তার প্রকৃতি কি হয় তা বলা হয়েছে। যেদিন নারী জাতি প্রথম ঋতুমতী হয় সেদিন সে চণ্ডালিনীসদৃশা হয়ে থাকে। তেমনি দ্বিতীয় দিনে সে হয় মহাপাপীয়সী, তৃতীয় দিনে হয় নষ্টরূপী, চতুর্থ দিনে সে হয় উপস্বিনীসদৃশা। চতুর্থ দিনে নারী যথাবিধি স্নান করলে সে পবিত্রা হয়ে থাকে। ঋতু হলে প্রথম দিন নারী স্পর্শ করবে না। সেই দিন উপগত হ’লে পরমায়ু হ্রাস হ’য়ে থাকে। যদি দ্বিতীয় দিনে নারী গমন করা হয় তাহলে সেই পুরুষকে মহাপাপে লিপ্ত হতে হয়। তৃতীয় দিনেও নারীকে পরিত্যাগ করা উচিত। সেই দিন নারীকে স্পর্শ করলে সেই নারী বেশ্যাবৃত্তি অবলম্বন করে এবং সেই পুরুষকেও বেশ্যাগমনজনিত পাপে লিপ্ত হ’তে হয়। চতুর্থ দিনে নারী স্নান করে বিশুদ্ধা হলে তারপর তাকে স্পর্শ করবে। ঋতুকালীন নিয়ম শাস্ত্রের এই কথাগুলির মধ্যে যে কতটা বাস্তবতা প্রচ্ছন্ন আছে তা একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায়। তারপর ঋতুকালীন বিভিন্ন বিষয়ের ফলাফল বলা হচ্ছে। (ক) ঋতুর পরই নারীর জরায়ু থাকে নরম ও সংবেদনশীল। ঐ সময় কোন ব্যায়াম, দৌড় ঝাঁপ, ছুটাছুটি, লাফালাফি করা উচিত নয়। (খ) ঋতুর সময় নিয়মিতভাবে দৈহিক বিশ্রাম অবশ্য কর্তব্য। তাই আমাদের দেশে ঋতুর সময় তিন দিন পূর্ণভাবে নারীর অশৌচ পালন করা হয়ে থাকে। এর অর্থ আর কিছুই নয়। এই তিন দিন বিশেষ ভাবে গৃহকর্ম থেকে নারীকে বিশ্রাম দেওয়া কর্তব্য। (গ) ঋতুর সময় ঋতুস্রাব মুছে ফেলার জন্যে বা রক্ত শুষে নেবার জন্যে অনেকে অত্যন্ত ময়লা কাপড়ের টুকরো ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকে এটি যে কত বড় ভুল জিনিস এবং এর জন্যে যে কতটা অনিষ্ট হতে পারে এটি তারা গভীরভাবে দেখবার অবসর পান না। যদি কাপড়ের বা কার্পাস তুলোর টুকরোতে কোন রোগের বা দুরারোগ্য ব্যাধির জীবাণু থাকে তবে তা যোনিনালী দিয়ে দেহের ভিতরে প্রবেশ করবে। এর ফলে জরায়ু বা গর্ভাশয় কঠিন পীড়ায় আক্রান্ত হ’তে পারে। এজন্য অনেক সময় ধনুষ্টংকার বা রতিজ রোগ বা অন্য কোন রোগ হতে পারে। ঋতুমতী নারীর তাই এ বিষয়ে সাবধান থাকা একান্ত প্রয়োজন। ঋতুমতী নারীর উত্তর ধৌত কার্পাস বস্ত্র ব্যবহার করা উচিত। (ঘ) ঋতুর সময় কখনও শরীরে ঠান্ডা লাগান উচিত নয়-রাত্রি জাগাও উচিত নয়। ঐ সময় শরীর দুর্বল থাকে। সহজেই ঠাণ্ডা লাগতে পারে। রাত জাগলেও শরীরের ক্ষতি হতে পারে। (ঙ) ঋতুস্রাবের সময়ে পরিষ্কার কার্পাস টুকরো বা সাবান গরম জল ইত্যাদি দ্বারা পচা কাপড়ের টুকরো যোনিতে ব্যবহার করা উচিত। (চ) ঋতুস্রাবের সময় অন্ততঃ তিন চার দিন কোন পুরুষের সঙ্গে যৌন মিলনে ব্রতী হওয়া উচিত নয়। তাতে জরায়ু কোন না কোন ভাবে আহত হতে পারে। তার ফলে নানা ক্ষতি হতে পারে। (ছ) ঋতু কালীন মাটির পাত্রে জলপান, কঠোর বিছানায় শয়ন করা উচিত। এ সময়ে চুলে তেল দেওয়া, গন্ধ দ্রব্য বা সুগন্ধি বস্তু ব্যবহার করা উচিত নয়। এ সব পর্যন্ত শাস্ত্রীয় মতে নিষিদ্ধ। (জ) যদিও আজকাল ও সব নিয়ম পালন করা হয় না। তবু এগুলি পালন করা উচিত। তার কারণ ঋতুকালে এমন কিছু করা উচিত নয়, যাতে নারী কামাতুর হয়ে সঙ্গমে লিপ্ত হতে পারে। 0 0 0 99 NEXT ২.৩ বিবাহের চেষ্টা ও উপায় শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

২.৩ বিবাহের চেষ্টা ও উপায়

কোন মন্তব্য নেই
বালিকা বয়স থেকে প্রেমালাপ কখনও কখনও এমন ঘটে থাকে যে, কোন তরুণ যুবক, বহু চেষ্ট করে অতিপ্রেত তরুণীকে বিয়ে করে উঠতে পারে না। নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলিতে এরূপ হতে পারে। (১) যখন কোন লোক গুণবান হয়েও নির্ধন। (২) যখন কোন লোক দেখতে সুন্দর বা গুণবান হয়েও প্রতিপত্তিশালী বন্ধু বা আত্নীয়ের অভাবে বিবাহ স্থির করতে পারে না। (৩) যখন কোন লোক ধনশালী হয়েও অত্যন্ত কলহ পরায়ণ হয়। (৪) যখন কোন যুবক তার পিতামাতা বা ভাইদের উপর নির্ভরশীল থাকে। (৫) যখন কোন লোক দেখতে স্ত্রীলোকের মত। অন্য লোকের অন্তঃপুরে গিয়ে মিলতে পারে।-কিন্তু কেউ বর বলে গ্রাহ্য করে না। এরূপ ক্ষেত্রে সেই যুবক যাকে বিয়ে করতে চায়, বালিকা বয়স থেকেই সে বিষয়ে চেষ্টা করা উচিত। দক্ষিণ ভারতে দেখা গেছে, কোন পিতৃমাতৃহীন বালক অন্য মানুষের ঘরে মানুষ হয়েও, এমন কন্যা বিবাহ করেছে, যে সে তা সাধারণভাবে করতে পারত না। কিন্তু তা ঘটেছে শুধু প্রেম-নিবেদন কৌশলে। কোনও কোনও বালক প্রেমালাপ করেও বালিকার মাকে মাতৃ সম্বোধনের কৌশলেও উচ্চস্তরের মেয়ে বিয়ে করতে পারে। যা অনেক ধরনবান ব্যক্তিও পারে না। অবশ্য এই বালক ও বালিকারা ছেলেবেলা থেকেই সাথী হওয়া চাই। তারপর দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব বেশ দৃঢ় হওয়া চাই, বাল্যকাল থেকে। দু’জনে একসঙ্গে নানা খেলা করবে-ফুল তুলবে, পুতুল তৈরি করে খেলবে, নানা ফুলের মালা গাঁথবে, মেয়েটা-ছেলেটাকে ফুল তুলে দিয়ে সাহায্য করবে। তা ছাড়া চোর চোর খেলা, বিচি নিয়ে খেলা, পাখি ওড়ানো ইত্যাদি নানা প্রকার খেলা আছে। এবারে এগুলি বিষয়ে বলা হচ্ছে। বাৎস্যায়ন নিম্নোক্ত খেলাগুলির কথা অনুমোদন করেছেন। (১) চোর চোর খেলা- এই খেলায় একজন অন্যজনের চোখ বেঁধে দেয়। সহচর সহচরিরা কোন গুপ্ত স্থানের ভেতর লুকিয়ে পড়ে। তারপর তার চোখ খুলে দেওয়া হয়। তখন সে তাদের খুঁজতে আরম্ভ করে দেয়। একজনকে খুঁজে বের করে তাকে ছুঁয়ে দিলেই সে চোর হবে। সাধারণতঃ প্রেমিক প্রেমিকা পরস্পরকে খুঁজে বের করতে চেষ্টা করে-‌ (২) বিচি নিয়ে খেলা- বিভিন্ন ফলের বিচি নিয়ে এই খেলা হয়। একজন হাতে কিছু বিচি নিয়ে প্রশ্ন করে, জোড় না বেজোড় তারপর সে হয়ত উত্তরে বলল জোড়। তখন খুলে গুণে দেখা হয়। কথা মিলে গেলে সে জিতল-অন্যথায় হেরে গেল। (৩) পাখি ওড়ান- সব খেলোয়াড় হাতে হাত দিয়ে দাঁড়ায়-একজন ঝাপটা দিয়ে দৌড়াতে শুরু করে দেয়। (৪) লবণ বীথিকা- বাৎস্যায়নের সময়ও খেলা ছিল-বর্তমানে আছে কিনা জানা নেই। একদল ছেলেমেয়ে একটি লবণের ছোট স্তূপ তৈরি করে। অন্য দল তাদের ধরবার চেষ্টা করে লবণের স্তূপটি জয় করতে চায়। তারা কিছু লবণ চুরি করে পালায়-আগের দল তাদের ধরবার চেষ্টা করে। (৫) গম নিয়ে খেলা- গম ও চাল একত্র মিশিয়ে দেয়। তারপর তা পৃথক পৃথক করার চেষ্টা। (৬) কানামাছি খেলা- এই খেলার বর্তমান নাম কানামাছি খেলা। খেলোয়াড়দের একজনের চোখ বেঁধে দেওয়া হয়ে থাকে। তারপর তার মাথায় সকলে থাবড়া মারতে থাকে। সে যদি চোঁখ বাঁধা অবস্থায় একজনকে ধরতে পারে বা তার নাম বলতে পারে তখন সে আবার কাণাষাঁড় হবে। তখন আবার তার চোখ বেঁধে এইভাবে খেলা চলবে। কৈশোর প্রেম এইভাবে নানা খেলা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে তরুণ প্রেমিকের উচিত প্রেমাস্পদকে লাভ করার চেষ্টা করা। তাছাড়া যারা একটু বয়সে বেড়েছে তারা তাদের অভিপ্সীতার সখা বা বাল্যবন্ধুর সঙ্গে আলাপ পরিচয় করবে। যদি অভিস্পীতার কোন ধাত্রী কন্যা থাকে, তার সাহায্যে তার দেখা পেতে হবে। বা কোনও নারীর সাহায্যে ঐ নারীর সঙ্গে দেখা করবে। আর যদি কোন বাধা না থাকে স্বাভাবিক ভাবে দেখা করবে। কৈশোর প্রেমের কাজ প্রেমিকের কাজ প্রেমিকাকে সর্বদা সুখী করে রাখা। তরুণী বা কিশোরী যা চায় তাকে তাই জোগাড় করে এনে দিতে হবে। যে সব খেলার জিনিস প্রেমিকা কোথাও পায় না, তা জোগাড় করে দিতে হবে। নানাবিধ খেলনা জোগাড়ে খুব সাবধান্তকোন পুরুষ বন্ধুর সাহায্য না নেওয়া হয় যেন। তা হলে সে পরে উক্ত প্রেমিকার প্রতি আকৃষ্ট হ’তে পারে। স্থান বা কাল অনুযায়ী প্রসাধন দ্রব্য, গন্ধদ্রব্য,কুমকুম্‌,চন্দন ইত্যাদিও জোগাড় করে দেওয়া উচিত। ওসব কিন্তু করতে হবে খুব নিভৃতে, যাতে আর পাঁচজন জানাতে না পারে। প্রেমাস্পদকে চুপি চুপি বলতে হবে-তোমাকে যা দিচ্ছি তা যেন কাউকে বলো না। যদি প্রেমিকা বলে-কেন? তার উত্তরে বলতে হবে-তোমাকে আমার ভাল লাগে-তাই বলে তা কি সকলকে বলা উচিত? যখন তরুণীর মন আরও জয় হয়েছে দেখবে, তখন নানা ম্যাজিক যাদুবিদ্যা ইত্যাদি দেখাবে। যদি গান বা আবৃত্তি জান, গোপনে তাকে বা তার সখীদের সহ তাকে গান বা আবৃত্তি ধীরে ধীরে শোনাবে। যখন শরৎ বা বসন্ত কালে আসে, পৃথিবী যখন চাঁদের আলো আর মন্দ মধুর বাতাসে ভেসে আসে, তখন নিরালায় প্রেমিকাকে ফুলের মালা গন্ধদ্রব্য উপহার দিবে। তার সঙ্গে মিষ্ট সুরে নানা কথা বলবে। এইভাবে নানা কাজের মাধ্যমে বুঝতে হবে যে নায়িকার মন টলেছে কি না। নায়িকার প্রেমের লক্ষণ নারীর কাম্য পুরুষের সঙ্গে দেখা হলে সে মুখের দিকে তাকায় না। যদি হঠাৎ কখনো দেখা হয় তাহলেও সে মাথা নামিয়ে নিয়ে চলে যায় বা আড়চোখে তাকায়। তবে মনের প্রেম জানাবার জন্য সে হয়ত কাপড় ঘুরিয়ে পরার অছিলায় দেহের অংশ যেমন স্তন, কাঁধ বা বগল নায়ককে দেখাতে পারে। এটি তাকে আকর্ষণের জন্যে। যদি নারী দেখে যে তার প্রেমের মানুষটি তাকে ঠিক দেখতে না পেয়ে অন্যমনস্কভাবে চলে যাচ্ছে, তখন নারী দূর থেকে তার দিকে অজ্ঞাতে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। যদি প্রেমিক কোনও কিছু জিজ্ঞাসা করে, নারী ধীরভাবে কিন্তু সংক্ষেপে তার জবাব দেয়। নায়িকা কেবলই তার কাছে কাছে থাকতে চায়-যদি নায়ক কোনও সময় একটু দূরে থাকে তা হ’লে নায়িকা তার আত্নীয়ের সঙ্গে কথা বলে -কিন্তু আড়চোখে নায়কের দিকে তাকায়। সে নায়কের কাছ থেকে সরতে চায় না-কোন সামান্য বিষয়ের অজুহাতে বা কোনও অছিলা ধরে নায়কের সঙ্গে কথা বলতে সে আগ্রান্বিত হয়। হয়তো সখীদের চুল নিয়ে তা গোছাতে গোছাতে প্রেমাস্পদের কাছে সময় কাটায়। যে প্রেমিকের বন্ধুদের ওপর বিশ্বাস রাখে-তাদের প্রতি সম্মানসূচকভাবে কথা বলে। প্রেমিকের পরিচারকের কথা মন দিয়ে শোনে-তার সঙ্গে নিজের পরিচারকের মত ব্যবহার করে থাকে। নায়কের সঙ্গে নানা খেলা করতে চায়-যেমন তাস, পাশা ইত্যাদি- অবশ্য একটু পরিচয় হলে এটি হয়। নায়ক কোনও বস্তু নায়িকার কাছে গচ্ছিত রাখতে দিরে সে তা বেশ যত্ন সহকারে রেখে দেয়। বেশভূষা করলেই নারী চায় তার প্রেমাস্পদকে সেই সব বেশভূষা দেখাতে। ঐ নায়ক যদি তার বেশভূষার প্রশংসা করে, তাতে সে মহাখুশী হয়। যদি নায়ক বেশভূষার প্রশংসা না করে-তবে সে মনে করে তা মোটেই ভাল হয়নি। সে পরে সেই বেশ পরতে চায় না। নায়কের প্রতি বিরূপ মনোভাবও আসতে পারে। নায়ক যদি তাকে কোনও বেশ বা অলংকার উপহার দেয়, নায়িকা সেগুলি পরিধান করে বাইরে বা কোনও উৎসবে যেতে খুব ভালবাসে। যদি তার নিজের বাড়িতে অপর কোনও ভদ্রলোকের সঙ্গে তার বিয়ের কথাবার্তা হয়, তখন সে ভারি বিষণ্ন হয়ে ওঠে যাতে ও বিয়ে না হয় বা ভেঙ্গে যায়। আর এ বিয়ে যাতে না হয় সেই চেষ্টা করে। এছাড়া নায়ককে দূর থেকে দেখলে, তার কন্ঠস্বর শুনলে বা গান শুনলে সে খুব খুশী হ’য়ে ওঠে। এ সময় সে বেশ হাসিখুশী থাকে। অন্য সময়ে দূরে থাকলে সে কি যেন চিন্তা করতে থাকে। যদি কোনও লোক নায়কের কোনও গুণের প্রশংসা করে, তবে নায়িকা খুশী হয়। নায়ক কোন বড় পরীক্ষায় পাশ করলে বা কোন উচ্চ সম্মান লাভ করেছে শুনতে পেলে নায়িকা খুবই খুশী হয়ে ওঠে। নায়ক কোনও অন্যায় কাজ করেছে শুনলে, সে তা প্রায় বিশ্বাস করে না-তবু সে মনে মনে বিষন্ন ও দুঃখিত হয়ে ওঠে। নায়িকার মনোভাব বুঝে চালচলন ও কাজকর্ম করা নায়কের উচিত। তার ভালবাসার নায়িকাকে বিয়ে করার জন্যে সর্ব প্রকারে চেষ্ট ও যত্ন করবে। বাৎস্যায়ন আরও বলেন্তবাল্যের বন্ধুকে বাল্যের খেলার মাধ্যমে বিয়ে করা উচিত। যুবকদের উচিত, যৌবন সুলভ কাম ক্রিয়ার সব চিহ্ন দেখলে সেই যুবতীকে লাভ করার জন্যে সর্ব প্রকার চেষ্টা করে। আর বর্ষীয়সীদের উচিত তাদের বিশ্বস্ত সখীদের মাধ্যমে পুরুষকে লাভ করা। NEXT POST ২.৪ প্রেম নিবেদন শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

২.৪ প্রেম নিবেদন

কোন মন্তব্য নেই
বাইরের সাহায্য ছাড়া যুবক-যুবতীদের প্রেম নিবেদন যখন কোনও তরুণী তার হাবভাবে বা ব্যবহারে আর এক যুবকের প্রতি আসক্তি দেখায়, তখন ঐ যুবক আর কোনবও ঘটক বা মধ্যবর্ত্তী দূতের সাহায্য না নিয়ে নিজেই ঐ যুবতীকে লাভ করবার ব্যবস্থা করবে। পাশা খেলা বা তাস খেলতে খেলতে ছলনা করে যুবক যুবতীর সঙ্গে ঝগড়া আরম্ভ করতে পারে। তখন যুবতী নিশ্চয়ই তার আকারে প্রকারে নানা রকম কামক্রিয়ার সূচনা করতে পারে। অবসর পেলেই ঐ প্রেমিক যুবক যুবতীকে আল্‌গা আল্‌গা ভাবে অঙ্গ স্পর্শ করবে। তখন সে হয়তো এমন ছবি ঐ নায়িকাকে দেখাতে পারে যাতে দুটি মূর্ত্তি (একটি নারী একটি পুরুষ) পরস্পর আলিঙ্গন অবস্থায় অঙ্কত। কোন মিলনের ছবি দেখিয়ে নায়িকাকে নায়ক তার মনের ইচ্ছা বোঝাতে পারে। অথবা নদীতে বা দীঘিতে দু’জনে স্নান করার সময় নায়ক একটু তফাতে ডুব মেরে একেবারে নারীর অঙ্গ ঘেঁসে উঠতে পারে। গা ঘেঁসে দূরে যেয়েও উঠতে পারে। এতে প্রেমাকর্ষণ বাড়ে। বসন্ত উৎসবের সময় কোনও পাতায় তার মনের ইচ্ছার ছবি এঁকে তা ঐ প্রেমিকাকে দেখিয়ে তার মনের কথাটা জানাতে পারে। ঐ যুবক তার প্রেমিকাকে বলতে পারে যে তাকে না পেলে বড় মন খারাপ হয়ে যায়। ঘুম আসে না, ঘুমোলে সে তাকে স্বপ্ন দেখে। থিয়েটার বা যাত্রা দেখতে গিয়ে কোনও ছল করে সে ধীরে ধীরে তার অঙ্গ স্পর্শ করবে। খুব আসে- আসে- তার পায়ের বুড়ো আঙ্গুল নিজের আঙ্গুলে দিয়ে চেপে ধরবে। যে কোন নিশানাতেই নিজের মনের ভাব নায়িকাকে জানাবে-আমি তোমাকে ভুলতে পারি না। এসো দু’জনে একসঙ্গে থাকি। যখন নায়ক বুঝবে-নায়িকা সত্যিই তার প্রতি আসক্ত তখন সে অসুখের ভান করবে। নায়িকাকে ডেকে পাঠাবে-নায়িকা হয়ত এসে মাথায় গায়ে হাত বুলাবে। তখন নায়ক বলবে-উঃ কি আরাম। এত ওষুধ খাওয়া হলো, তাতে কিছুই হলো না। তোমার সামান্য স্পর্শে আমি খুব আনন্দ পেলাম, আমি অনেক সুস্থ। তারপর সে নায়িকার অনেক প্রশংসা করবে। এইভাবে ধীরে ধীরে নায়িকা আকৃষ্ট হ’লে দু’জনে কোনও দিন নিভৃতে থাকাকালে নায়ন যৌন কার্যের কথা বলবে। এটি অন্ধকারে করা উচিত-কারণ অন্ধকারে নায়িকাদের প্রেম কামনা বৃদ্ধি পায়। একান্ত কিছুতেই স্বীকৃতি না পেলে নায়িকার কোন সখী বা সাথীদের সাহায্য নেওয়া উচিত। যখন কোনও তরুণী সাধারণ কোন জায়গায়, দেব মন্দির কিংবা উৎসবের জায়গায় কোনও তরুণের প্রতি ভালবাসা দেখায় (যমন চাউনি, হাসি খুশি ইত্যাদি) তখন বুঝতে হবে ঐ তরুণ ইচ্ছুক হলেই তরুণীটিকে সে লাভ করতে পারে। শুধু চাই ধৈর্য্য, কৌশল ও অধ্যবসায়। ইচ্ছুক নারীদের কর্তব্য যখন কোনও নারী তার মনের মত পুরুষ পেতে ইচ্ছুক হয়, তখন এমনও হতে পারে যে ঐ তরুণীকে সে কিছুতেই যোগাড় করতে পারে না। এরূপ ঘটনা নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলিতে ঘটতে পারে। যথা- ১। কোন সম্ভ্রান্ত কন্যা, সুন্দরী, গুণবতী কিন্তু আর্থিক অভাবগ্রস্ত। ২। নারী গুণবতী, সুন্দরী কিন্তু উচ্চবংশের নয়। ৩। পিতৃমাতৃহীন, মাতুলালয়ে প্রতিপালিত। ৪। স্বামী জোগাড় করে দেবার লোকের অভাব। ৫। বয়সে বিবাহ যোগ্যের হয়ে বেশি। এইসব ক্ষেত্রে হলে নিজের চেষ্টা করে তার মনোমত প্রতি যোগাড় করে নেবে। সে তখন একজন পরিশ্রমী, উদ্যমশীল ও সুশ্রী তরুণকে মনে মনে ঠিক করে নেবে। হয়তো বাল্যকালে যে সব বালকের সঙ্গে সে খেলাধূলা করেছিল, তাদের একজনকে ঠিক করে নিতে পারে। অথবা এমন যুবককে মনে মনে ঠিক করবে-যে তার প্রতি কিছু কিছু ইশারায় আসক্ত হয়েছে। সেই যুবক এমন চিহ্ন প্রকাশ করেছে যে, নায়িকার মত পেলে সে তাকে বাবা মার মতের বিরুদ্ধেই বিয়ে করতে পারে। তাকে পাবার জন্যে নিজের পৈতৃক ধন্তসম্পত্তিও বিসর্জন দিতে পারে। এমন কি সমাজের নিন্দা বা নিষেধাজ্ঞা সে অগ্রাহ্য করতে পারে। মনে মনে এমনি পাত্র ঠিক করে সে সেই তরুণের সঙ্গে নিভৃতে দেখা করবে। হাব ভাব ইঙ্গিতে সে তাকে আকর্ষণ করতে চেষ্টা করবে। সুযোগ পেলে সে গোপনে নায়ককে ফুলের মালা বা গন্ধ দ্রব্য উপহার দিতে পারে। নায়িকা নিভৃতে নায়ককে মনের ভাব জানাবে-তার কাণের কাছে মুখ নিয়ে ফিস্‌ফিস্‌ করে গল্প করবে, দেখবে, নায়ক তাকে চায় কিনা। যদি নায়ক তা চায় সে তখন নায়িকার দেহ স্পর্শ বা আলিঙ্গণ করবে। নায়িকা আগে বুঝবে, নায়ক তাকে গ্রহণ করতে সত্যি রাজী কিনা। যদি দেখে নায়ক তাকে গভীর ভাবে ভালবাসে-তখন সে নায়কের চুম্বন বা আলিঙ্গনের উত্তর দেবে। নায়ক যদি যৌন মিলনের প্রস্তাব করে নায়িকা তাতেও রাজী হবে। তারপর দু’জনে চুম্বন, আলিঙ্গন করবে। নায়ক তার দেহ মর্দন করলে সে তা উপভোগ করবে। কিন্তু আগে দেখা উচিত নায়ক যেন বিশ্বাসী হয়-অর্থাৎ উপভোগ করে ত্যাগ করতে না পারে। মিলনের সময় নায়ক চাইলে, নায়িকা তার বাম হাত দিয়ে নায়কের লিঙ্গ স্থানে চাপ দিতে পারে। নায়িকার যোনিতে হাত দিয়ে নায়কের লিঙ্গ স্থানে চাপ দিতে পারে। নায়িকার যোনিতে হাত দিয়ে চাইলে, সে মৃদু আপত্তি করবে, তাতে বাধা দেবে না। কিন্তু প্রত্যক্ষ যৌন মিলনে রাজী হওয়া উচিত-যতক্ষণ অন্ততঃ গান্ধর্ব বিয়ে অনুষ্ঠিত না হচ্ছে। এ বিষয়ে পরে বলা হবে। নারী কিরূপ পুরুষ চায় ১। বলিষ্ঠ, স্বাস্থ্যবান ও যুবক। ২। সুন্দর গাত্রবর্ণ, সুদর্শন ও সুশ্রী। ৩। যার মধ্যে নিজস্ব স্বকীয়তা বা বিশেষ দৃঢ়তা আছে। ৪। যে কিছুটা অহঙ্কারী, গর্ব্বিত। ৫। যার প্রচণ্ড আত্নবিশ্বাস আছে। ৬। যার বিশেষ ব্যক্তিত্ব ও দৃঢ়তা আছে। ৭। যে পুরুষের নিজস্ব উপার্জন যথেষ্ট এবং সে তাকে প্রতিপালন করার যোগ্য। ৮। যে পুরুষের অন্য স্ত্রী নাই-বা অন্য নারীর প্রতি গভীর আসক্তি নাই। ৯। যে নির্ভরযোগ্য ও তাকে সারা জীবন আশ্রয় দিতে পারবে। ১০। নায়ক সুশিক্ষিত, মার্জিত ও রুচি সম্পন্ন হলে খুব ভাল হয়। ১১। খেয়ালী ও কল্পনা প্রবণ পুরুষকেও অনেক নারী পছন্দ করে থাকে। ১২। যে পুরুষের নানা গুণ আছে-যেমন,গান, বাজনা, শিশুসাহিত্য, কাব্য ইত্যাদি। কোনও বিশেষ গুণের অধিকারী যে পুরুষ। ১৩। যে পুরুষ উচ্চ বংশ উদ্ভুত। ১৪। বয়সে নারীর চেয়ে কিছুটা অন্ততঃ পাঁচ-ছয় বছরের বড়। ১৫। যে পুরুষ নারীকে সত্যিই গভীর ভাবে ভালবাসে। ১৬। খুব কামুক বা লম্পট পুরুষকে চায় না। ১৭। বয়স্ক বা অনাসক্ত পুরুষকে চায় না। ১৮। জুয়াড়ি বা বেশ্যাসক্ত পুরুষকে চায় না। এই ধরণের অন্যান্য গুণ থাকলেও তাকে নারী ঘৃনা করে। ১৯। যে পুরুষ হৃদয়হীন বা অত্যাচারী ও স্বেচ্ছাচারী হয় তাকে নারী চায় না। ২০। যে পুরুষ পৌরুষত্বহীন বা দৃঢ়তাহীন তাকেও নারী চায় না। NXT২.৫ বিয়ের প্রকারভেদ শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

৩.১ দাম্পত্য ব্যবহার ও রীতি প্রকৃতি

কোন মন্তব্য নেই
দৈনন্দিন জীবনে নর-নারীর সম্বন্ধ দাম্পত্য জীবনকে সুন্দর মধুময় করে তোলবার একটি প্রধান উপায়। এবার সে সম্বন্ধেই সুন্দর ও সুষ্ঠ আলোচনা করব। দুটি তরুণ-তরুণীকে জীবন সংগ্রামের অজস্র সুখ, দুঃখ, হাসি এবং কান্নার মধ্য দিয়ে ভারসাম্য রেখে চলবার উপযুক্ত করে দেখবার জন্যেই এই নিবিড় বন্ধনে বেঁধে দেবার প্রথা- যার নাম বিয়ে। এমন একদল লোক আছেন যাঁরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন যে যৌন মিলনের ছাড়পত্রই হচ্ছে বিয়ে। এখানে আমি তাঁদের উদ্দেশ্য করে বলছি- তাঁরা জীবনের স্বকীয়তাকে প্রথম দৃষ্টি থেকেই ভুল ভাবে দেখতে শুরু করেছেন। বিবাহিত ধর্মপত্নী মানে যে কেবলমাত্র যৌন জীবনের দাম্পত্য সঙ্গী তা নয়। সেটা এখানে আমি বেশ বড় করে তুলতে চাই। পুরুষের এক মধুর আচরণ বন্ধন প্রথারুপেই এই বিয়ে স্বীকৃতি ও বিশ্লেষিত হয়ে এসেছে। বিয়ের প্রধান নির্দেশ এবং আসল বিষয় হল স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক স্নেহ, প্রেম, ভালোবাসা, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, দায়িত্ব-কর্তব্য, অধিকার প্রভৃতি। যাবতীয় উপলব্ধিকে এক ও অভিন্ন করে মিলিয়ে দিয়ে একত্রিত অনুভুতিতে প্রতিষ্ঠা করা। অনেকে হয়তো মনে করতে পারে যে এর সব একটা ঘোর অবিচার। একজন নারীর একজন পুরুষকে এবং একজন পুরুষের একজন নারীকে এক বছর ভালো লাগতে পারে। কিন্তু তার পরেই আসে একঘেয়েমী, অসাড়তা এবং আনন্দহীনতা। এতে যে যৌন জীবনকে দুঃখ-কষ্টে ভরিয়ে তোলে। কিন্তু প্রাচীন ঋষিরা অনেক ভেবেই চিন্তেই এ রীতির প্রচলন করেছিলেন। আমিত্ব, আত্ম সংযম কঠোর সাধনা ও একাগ্রতা, বিপুল ধৈর্য ও অধ্যবসায় দ্বারা যৌন সম্পর্কের অনেক উর্দ্ধে বিবাহিত জীবনকে একটি শাশ্বত স্থায়িত্বের ও নিড়ত্বের গন্ডিতে মানতে হবে। সংস্কৃত শাস্ত্রে স্ত্রীকে মাতা, সখী, দাসী এবং বেশ্যা রুপে যে বর্ণনা করা তা এক বিন্দু অতিরঞ্জিত নয়। স্নেহ এবং অধিকারে স্ত্রী হবে মাতার সমান। দৈনন্দিন জীবনে, অসংখ্য সংঘাতের দুর্বিপাক থেকে স্বামীকে কিছুটা আড়াল করবার জন্যে স্বামীর সঙ্গে সঙ্গে থেকে সে হবে সখী। স্বামীর কর্মকেই নিজের জীবনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবার জন্যে সে হবে শিষ্যা বা সহধর্মিনী। স্বামীর নিপুণ সেবার ভার সে নিজ হাতে তুলে নেবে, সে হবে দাসী। স্বামীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে সে যখন মেতে উঠবে তখন হবে বেশ্যা এটার মধ্যে অত্যুক্তি কিছুই নেই। দাম্পত্য জীবনে এটা প্রত্যেক নারীর কর্তব্য। পুরুষ স্বাভবতঃই বহুকামী। একঘেয়েমী সে কোনও দিনই সহ্য করতে পারে না। একঘেয়েমী দূর করে তাকে নানারূপ পন্থায়, দাম্পত্য জীবনকে মধুময় করে তুলতে হয়। সব সময়ই ভাবতে হবে দু’জনে যেন দুটি নবীন প্রেমিক আর প্রেমিকা। দু’জনের কথার মাঝে ফুটে উঠবে নূতন প্রেমিক-প্রেমিকার কথার সুর। আমাদের দাম্পত্য জীবন নিরানন্দ একঘেয়ে। অপ্রীতি ও নানা মনোমালিন্যের কেন্দ্রে পরিণত হয় অনেক ক্ষেত্রেই প্রকৃত শিক্ষার অভাবে। আর দাম্পত্য জীবন সুখময় করে তোলবার উপায় না জানবার জন্যে। বহু দাম্পত্য জীবন নারীর জন্যে সুখী হ’তে পারে না। পৃথিবীর বুকে সুখী দম্পতির সংখ্যা দিনের পর দিন কমেই আসছে। এর ফলে বিয়ের আগ্রহের অভাব আজকাল বড়ই স্পষ্ট হয়ে দেখা দিচ্ছে। দাম্পত্য জীবনের গোড়া দিকে আগ্রহের অভাব থাকে না। এ কথা বুঝিয়ে না বললেও চলবে। তখন দেখা যায় যে দু’জনের গভীর অনুরাগ অপরীসিম নিবিড়তা। কিন্তু যতই দিন যায় ততই যেন তা মিলিয়ে যায়। অনুরাগ তখন পরিণত হয় বিরাগে। দাম্পত্য জীবনে ঘনিয়ে আসে তখন কলহ বিবাদ, মনোমালিন্য গতানুগতিকতা। এমন নারী অবশ্য পুরুষের ঘাড়ে সব দোষ চাপিয়ে নিশ্চিন্ত হবার প্রয়াস পায়। কিন্তু সত্যি কি তাই? এটা কিন্তু নিরপেক্ষ মনোভাবের পরিচায়ক নয়। বহু দাম্পত্য জীবন নারীর জন্যে সুখী হতে পারে না। আবার বহু দাম্পত্য জীবন অসুখী হয় পুরুষের জন্য। অবশ্য এসবের জন্যেই দায়ী আমাদের শিক্ষা। দাম্পত্য জীবনকে সুখী করে তোলার শিক্ষা আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা তাদের পিতা-মাতাদের কাছ থেকে পায় না। বড় হয়ে তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যথেষ্ট জ্ঞান লাভ করে বটে কিন্তু এই যৌন জীবন সম্বন্ধে থাকে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। এটা মনে রাখা উচিত যে একদিন জোর করে দাম্পত্য জীবনের বোঝা তরুণ-তরুণীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলে প্রথম কিছুদিন তারা এর অপব্যবহার করবে। তারপর একদিন সব কিছুর প্রতি বীতশ্রদ্ধ হ’য়ে পড়বে। প্রথমতঃ পুরুষের কথা ধরা যাব। পুরুষ অত্যন্ত স্বার্থপর। তারা ভুলে যায় যে নারীরও ব্যক্তিত্ব বলে একটা জিনিস আছে। তারা সব সময় নারীর উপর অধিকার এবং প্রভুত্বে দাবী ঘটায়। পান থেকে চুন খসালেই তার মনে অহেতুক ক্ষোভের সঞ্চার হয়। নারী যে দাসী নয়- জীবনসঙ্গিনী এটা মনে রাখা প্রত্যেক পুরুষের কর্তব্য। সহৃদয়তা এবং পরস্পরের প্রতি সহানুভুতি সম্পন্ন হওয়াই সবচেয়ে বড় সাধনা। তারপর নারীর কথা। এমন অনেক নারী আছে, যারা গৃহকর্ম পূজার্চনা, শ্বশুর-শাশুড়ীর সেবা ও দৈনন্দিন কার্যাবলীর প্রতি ব্যস্ত। আর তাদের সে ব্যস্ততাও অত্যধিক। এই বিভিন্ন কার্যাবলীর মধ্যে তাদের অধিকাংশ সময় কাটে। তারা হয়ত গৃহিণী পতে পারে কিন্তু স্বামীর মনতুষ্টি বিধানে অক্ষম। শারিরীক ও মানসিক মিলন থাকা সত্বেও যৌন ব্যপারে দু’জনের মধ্যে অনেক সময় গরমিল দেখা যায়। স্ত্রীর ব্যবহারে হয়ত স্বামী আনন্দিত ও গর্বিত। কিন্তু তার যৌন জীবনে সে স্ত্রী সাহচর্য্যে বঞ্চিত। সব নারীরই যে সমান যৌন প্রাবল্য থাকবে তা বলছি না। কিন্তু গোটা দাম্পত্য রতি পর্যায়ের প্রাধান্যকেও অস্বীকার করা যায় না। পতির কর্তব্য ১। স্ত্রীকে মিত্র ভেবে তার সঙ্গে মিত্রবৎ আচরণ করবে। ২। স্ত্রী যেন আপনাকে তার একমাত্র নির্ভরস্থল বলে মনে করতে পারে। ৩। পত্নী যদি পতির চেয়ে সুন্দর না হয়, তথাপি তাকে ঘৃণা বা উপেক্ষা করা উচিত নয়। ভালোবেসে তাকে আপন করে নেওয়াই কর্ত্তব্য। ৪। পত্নীর কাছে কোন কথা গোপন করা উচিত নয়। নিজের যা কিছু দোষগুণ খুলে বলা উচিত। ৫। কখনও পত্নীর সঙ্গে নির্লজ্জের মত ব্যবহার করা উচিত নয়। ৬। পত্নীর কাছে সর্বদা নিজের গাম্ভীর্য্য বজায় রাখা অনুচিত। ৭। সর্বদা সুমধুর ভাষায় তাকে আকর্ষণ করে নেওয়া উচিত। ৮। পত্নীর সামনে কোনও পরস্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা বা তার গুণগান করা উচিত নয়- তাতে তার মনে দুঃখ বা হিংসার ভাব জাগতে পারে। ৯। পত্নী সাজসজ্জা করলে তার গুণগান করা পতির কর্ত্তব্য। ১০। পত্নী কোনও ভাল রান্না করে খেতে দিলে তার প্রশংসা করা উচিত। ১১। পত্নীর কোনও দোষত্রুটি থাকলে তা বুঝিয়ে বলা উচিত। তাকে সেগুলি শুধরে নেবার জন্য উপদেশ দেওয়া উচিত। জোর জবরদস্তি দ্বারা কখনও তাকে সংশোধন করা যায় না তা মতে রাখা কর্ত্তব্য। স্ত্রীর কর্তব্য ১। পতিকে সব সময় প্রেমিক বা নিজের সাথী বলে ভাবা উচিত। তার সঙ্গে সেই রকম ব্যবহার দ্বারা তুষ্ট করা সাধ্বী স্ত্রীর অবশ্য কর্তব্য। ২। কোন রোগব্যাধি হলে তা গোপন না করে পতির কাছে খোলাখুলি ভাবে বলা উচিত। ৩। পতিনিন্দা শোনা উচিত নয়- কারণ তাতে নৈতিক অধঃপতন ঘটতে পারে। ৪। বেশি খরচ পত্র করা বা পতির চেয়ে বেশি খরচ করে চালবাজী করা উচিত নয়। ৫। পতি বাইরে থেকে ফিরলে তার প্রতি যথোচিত সম্মান ও প্রীতি প্রদর্শন করা উচিত। ৬। পতির সব জিনিসপত্র সব সময় ঠিকমত হাতের কাছে এগিয়ে দেওয়া উচিত। ৭। নারীর সব সময় মন ভার করে থাকা উচিত নয়। এতে পতি ও পত্নীর আন্তরিকতার অভাব ঘটে। ৮। সহনশীলতা নারীর শ্রেষ্ঠ গুণ- এটি প্রত্যেক নারী মনে রাখা উচিত। ৯। পতির সঙ্গে সব সময় মধুর ব্যবহার করা পত্নীর অবশ্য কর্ত্তব্য। ১০। স্বামীকে কখনও কটু বাক্য বলা বা তার সঙ্গে ঝগড়া করা নারীর উচিত নয়। ১১। পতির নিত্যব্যবহার্য্য যে সব বস্তু-যেমন কাপড়, ছাতা, জুতো, বইপত্র এ সবের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা বুদ্ধিমতী নারী মাত্রেরই কর্ত্তব্য। ১২। সংসারের খরচ পত্রের হিসেব রাখা প্রত্যেক পত্নীর অবশ্য কর্ত্তব্য। আয় বুঝে ব্যয় করবে। ১৩। কোনও প্রদর্শণী বা উৎসব আনন্দে পতির অনুমতি ছাড়া যোগদান করা স্ত্রীর কর্ত্তব্য নয়। ১৪। পতির উপদেশ অনুযায়ী এবং তার রুচি অনুযায়ী ঘরের আসবাব পত্রাদি সাজানো এবং পরিষ্কার রাখা উচিত। ১৫। সখী বা বান্ধবীদের সঙ্গে বসে কখনও পতির নিন্দা করা উচিত নয়। ১৬। পতিকে প্রকৃত বন্ধুর মত ভাবা উচিত। ১৭। ঘর পরিষ্কার এবং ঘরের সব জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা উচিত। ১৮। চাকরের সাহায্য ছাড়াই যতটা সম্ভব নিজ হাতে পরিবারের সব কাজ করবে। ১৯। সাধারণতঃ পরিচ্ছন্ন থাকবে- তবে বেশি বাবুগিরি ভাল নয়। ২০। স্বামীর খাদ্যদ্রব্য সম্ভব হলে নিজ হাতে রান্না করবে। এখানে পতি-পত্নীর বিষয়ে সাধারণ বিষয়গুলি নিয়েই আলোচনা করা হলো। তবে একটা কথা মনে রাখা উচিত। মেয়েদের পক্ষে স্বামী ও শ্বশুরের ঘর হলো একটি বিরাট পরীক্ষাগার। উপরের নিয়মগুলি ছাড়াও আপন বুদ্ধির বলে যে মেয়ে সংসারের সব প্রয়োজনীয় কাজ খুঁজে নিয়ে করে থাকে, সে মেয়ের স্বামীর সংসারে সকলের প্রিয় হয়। স্ত্রীর পালনীয় দায়িত্ব যখনই কোনও তরুণীর সঙ্গে কোন পুরুষের শাস্ত্র মতে বিয়ে হলো, তখনই নারীর কর্তব্য হবে স্বামীর সঙ্গে একত্রে জীবন যাত্রা নির্বাহ করা। এই বিশ্বসংসারে যত রকম দুঃখ কষ্ট বা শোক তাপ আছে, সে সবই স্বামীর সঙ্গে অংশীদার হয়ে ভোগ করতে হবে। তা হলেই স্বামীর গৃহের সবাই অতি শীঘ্র আপন হয়ে উঠবে। তার পিতৃগৃহের দায়িত্ব ও কর্তব্য খুবই সীমাবদ্ধ হয়ে গেল- সঙ্গে সঙ্গে তার স্বামীর সংসারে সে একজন গুরুত্বপূর্ণ লোক হয়ে দাঁড়াল। বাৎস্যায়নের আমলে স্ত্রী ছিল দুই প্রকার। এক ধরণের স্ত্রী একা স্বামীর সঙ্গে বাস করত, অন্য ধরনের হলো একজন লোক বহু স্ত্রীর সঙ্গে বাস করত। স্ত্রীর কর্তব্য স্বামীর কথা কখনো না করা। তাঁকে পূর্ণভাবে ভক্তি-শ্রদ্ধা করা। কখনও তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো। এতে স্বামীর মনে গভীর দুঃখের আদর্শ। স্ত্রী সংসারে যা কিছু করবে তা যেন স্বামীর মত নিয়ে বা তার সঙ্গে কথাবার্তা বলে করে। সে যেন সর্বদা তাদের গৃহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখে। সংসার যে গৃহদেবতা আছেন তাঁকে প্রত্যহ সকালে, দুপুরে ও সন্ধ্যায় পূজা করবে। পুরোহিত থাকলে তার পূজার জন্য ফুল, বেলপাতা, নৈবেদ্য, তুলসী ইত্যাদি যোগাড় করে দেবে যেন তাঁর কোন অসুবিধা না হয়। তাছাড়া স্বামীর ভাই-বোন, আত্নীয়-স্বজন বা পিতামাতাকে অবশ্য বহু যত্নে তত্ত্বাবধান করবে। স্বামীর বন্ধু-বান্ধবকে শ্রদ্ধা ও প্রীতির চোখে দেখবে। এতে স্ত্রীও প্রিয় ও আদরণীয়া হয়ে উঠবে পরিবারের সকলের কাছে। নারীর উচিত তার রন্ধন গৃহের ভার নেওয়া। রান্না ঘরের পাশে কোনও জমি পতিত রাখতে নেই। তা থাকলে সেখানে নানা ফলমূল বা শাকসব্জীর গাছ লাগানো উচিত। অবশ্য এতে সংসারে খরচও কিছু কমে যাবে। কুমড়া, লাউ, সিম, সরষে, আদা, শাক ইত্যাদি লাগানো যায়। তাছাড়া একপাশে একটি ফুলের গাছ থাকবে- যেমন, গাঁদা, জুঁই, বেল, চামেলি, সূর্য্যমুখি, জবা ইত্যাদি ফুল গাছ। সেখানে পুষ্পকুঞ্জের মধ্যে একটি বা দুটি বসবার বেঞ্চেরে ব্যবস্থা রাখবে অবসর সময় সেখানে বসে বায়ু সেবন করা যায়। স্বামীর ভাই-বোন, আত্নীয়-স্বজন, বৃদ্ধ পিতা-মাতা-ওদের অবশ্য বহু যত্নে তত্ত্বাবধান করবে। স্বামীর বন্ধুবান্ধবকেও শ্রদ্ধা করা উচিত। নারী স্বেচ্ছায় কোন ভিখারিনী, সন্ন্যাসিনী বা স্বামী যাকে অপছন্দ করেন এমন নারীর সঙ্গে মিশবে না। যে সব নারী তুকতাক জানে তাদের সহিত মিশবে না। তাদের সঙ্গে মেশামেশি স্বামী পছন্দ করেন আর করেন না তাও সে লক্ষ্য করবে। পতির মন জুগিয়ে চললে অতিশীঘ্র পতিপ্রাণা হয়ে উঠবে। স্বামী কোন কোন খাদ্য খেতে ভালবাসে তাও স্ত্রীর জানা দরকার। সম্ভব হলে সে সব খাদ্য রেঁধে দেবে। স্বামীর শরীর কখন কেমন থাকে তাও লক্ষ্য করা উচিত। স্বামীর পদশব্দ পেলেই স্ত্রী অলঙ্কার পরে বা ভাল কাপড় পরে তার সামনে যাবে- কখনও নোংরা কাপড় পরে তার সামনে যাবে না। যদি স্বামী খরচ পরায়ণ হয়, তা হলে তাকে খরচের বিষয়ে পরামর্শ দেবে। স্ত্রীর উচিত স্বামীর সঙ্গে মিশে স্বামীর অনুমতি নিয়ে অলঙ্কর ইত্যাদি পরিধান করে বিবাহাদি উৎসবে যোগদান করা। সাধারণ পূজা বা কোনরূপ উৎসবে পল্লীর সঙ্গীদের সাথে মিশে যোগদান করা উচিত। স্বামী ভোজ করে নিদ্রা গেলে, তারপর স্ত্রীর বিছানায় যাওয়া উচিত। স্বামী নিদ্রিত থাকলে তখন তাকে নিদ্রা থেকে তোলা উচিত না। ভোরে স্বামী শয্যাত্যাগ করবার পূর্বেই স্ত্রীর বিছানা ছেড়ে উঠে যাওয়া উচিত। রান্নাঘর হবে বাড়ির এক বিপরীত দিকে- যাতে বাইরের অতিথি বা স্বজন এসে দেখতে না পায়। এই রান্নাঘরে যথেষ্ট আলো বাতাস ও পরিষ্কার থাকা দরকার। যদি স্বামী কোনও অপরাধ করে থাকেন বা স্ত্রীকে তিরষ্কার করেন তা হলে স্ত্রীর উচিত নয় তাকে কতকগুলি রূঢ় কথা বলা। অবশ্য স্ত্রী স্বামীর তিরস্কারের উত্তরে কপট ক্রোধ দেখাতে পারে। কিংবা সে মনমরা বা বিষণ্ন ভাব দেখাতে পারে যখন স্বামী একা থাকবেন তখন তাঁকে সব কথা বোঝাতে পারে। স্ত্রীর কখনও স্বামীর ভালবাসা পাবার জন্যে কোনও যাদুবিদ্যা প্রয়োগ বা তুকতাক করা উচিত নয়। স্ত্রী এসব করলে সে স্বামীর অবিশ্বাস ভাজন হয়ে যায়। স্ত্রীর যা করা উচিত নয় ১। স্বামীর সঙ্গে রূঢ় ভাষায় কথা বলা। ২। নিরানন্দ ভাবে কখনও স্বামীর দিকে তাকাতে নেই। ৩। রুষ্ট ভাবে কখনও স্বামীর দিকে পিছন ফিরে থাকবে না। ৪। কখনও রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে পথচারীদের দিকে চেয়ে থাকবে না। ৫। স্বামী ছাড়া অপর পুরুষের সঙ্গে একাকী নির্জনে বা বাগানে কথাবার্তা বলবে না। ৬। অনেকক্ষণ ধরে নির্জনে একাকী সময় কাটাবে না। ৭। দেহ থেকে বেশি ঘাম বের হয়ে গেলে বা দুর্গন্ধ হলে, সেই ঘাম ধুয়ে সুগন্ধ লাগাবে। যদি দাঁতে বা মুখে দুর্গন্ধ হয় তা হলে দাঁত মুখ পরিষ্কার করা উচিত। ৮। যখন স্বামীর সঙ্গে বা অন্য কারও সঙ্গে দেখা করতে যাবে, কখনও কু-বেশ বা নিম্ন স্তরের বেশ পরে যাবে না। ৯। স্বামীর মত না নিয়ে কোনও ব্রত সাধন বা ভগবানের উপাসনা করবে না। স্বামীকে তা জানাবে। বলবে- যা করছি, তা তোমরাই মঙ্গলের জন্যে প্রিয়তম। ১০। স্বামীর মত না নিয়ে কারও সঙ্গে এমন কি আত্নীয়ের সঙ্গেও বের হওয়া উচিত নয়। ১১। স্বামীর শরীর অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাঁর কাছে সব সময়ে থাকবে। কি দরকার তা জিজ্ঞাসা করবে। ঠিক মত ওষুধ খাওয়াবে। সময় মত পথ্যাদির ব্যবস্থা করবে। প্রয়োজন হলে হাত পা টিপে দেবে। মোট কথা তাড়াতাড়ি যাতে স্বামী সেরে ওঠে সে সব কাজ করবে। বিবাহিতা মেয়েদের পতিই এক মাত্র গতি এ কথা মনে রাখা উচিত। স্ত্রী কি কি বস্তু সংসারে রাখবে স্ত্রীর উচিত সংসারের অতি প্রয়োজনীয় সব বস্তুগুলি সংসারে মজুত রাখা। তা হলো- (১) মাটির তৈরী হাঁড়ি, বেতের ঝুড়ি, কাঠের পাত্র বা সিন্দুক, লোহা বা চামড়ার তৈরী জিনিস। (২) লবণ, ঘি, তেল, গন্ধদ্রব্য, মশলা প্রভৃতি। (৩) চাল, গম, প্রভৃতি। (৪) বিরল বা দুষ্প্রাপ্য ঔষধ। (৫) কতকগুলি জিনিসের বীজ সঞ্চয়- যেমন আলু, মূলা, শশা, পেঁয়াজ, বেগুন ইত্যাদি। ঠিক সময়মত ঐ সব মাটিতে পুঁতে দেওয়া দরকার। আর একটি কথা- গৃহস্থের স্ত্রী হয়ে কখনও ঘরের গোপন খবর বা প্রকৃত অবস্থা কাউকে জানাতে নেই। তাতে সংসারে অবনতি ঘটে সন্দেহ নাই। (৬) সংসারের যা দুধ খরচ হয় তা করে, যা অবশিষ্ট থাকে তার ঘৃত তুলে নিয়ে সঞ্চয় করবে। সরিষার থেকে, তেল, তূলা, থেকে সূতা প্রভৃতিও সঞ্চয় করবে। স্ত্রী নিজে হাতে কি করবে (১) পাত্রের জন্যে ঢাকনা, জল তোলার দড়ি। (২) ধান ঝাড়া- তা থেকে প্রয়োজন মত চাল বের করে নেওয়া। ধানের খোসা আলাদা করে নেওয়া। (৩) তূষ, ভূষি, ফেন ও খড়ের ঠিক ব্যবহার জানা। (৪) পোড়া কয়লা থেকে কয়লা বের করে জমিয়ে রাখা। (৫) কর্মচারীদের কাজ দেখা- মাহিনার ব্যবস্থা করা; তাদের সুখ সুবিধার দিকে লক্ষ্য করা। (৬) চাষের জন্য উৎকৃষ্ট বীজ সঞ্চয়। (৭) গরু, বাছুর, হাঁস, মুরগী, ইত্যাদি গৃহপালিত পশু পাখির যত্ন ও পরিচর্যা। (৮) বেশি পশু পাখি থাকলে তাদের হিসাব মিলিয়ে নিয়মিত দেখা। আয়-ব্যয়ের হিসাব ও সঞ্চয় ১। স্বামীর আয়-ব্যয়ের হিসেব নেবে ও সেই মত খরচ করবে। আয় বুঝে ব্যয় করবে। ২। কিছু সঞ্চয় করবে। ৩। স্বামীর কাপড় চোপড় সব ঠিক মত কিনে তৈরী রাখবে। ছিঁড়ে গেলে সেগুলি সেলাই করে বা রং করে ঝি, চাকর ও দুঃখীজনকে দেবে। ৪। এই সব ছেঁড়া কাপড় চোপড় থেকে পর্দা, ঢাকনা প্রভৃতি করতে পারে। ৫। মদ্য বা মাদক দ্রব্য ব্যবহার করলে তা কিছু সঞ্চয় করবে, প্রয়োজন মত খরচ করবে। তবে মাত্রা ঠিক রাখা অবশ্য কর্তব্য। ৬। স্বামরীর বন্ধু বান্ধব এলে তাদের ফল মূল ও তাকাম দিয়ে আপ্যায়ন করবে। ৭। স্বামীর বন্ধু নিজের বন্ধু- তাঁর শত্রু, নিজের শত্রু সম জ্ঞান করবে। ৮। ভৃত্যদের মাঝে মাঝে গুণ দেখে পুরষ্কার দেবে। এতে তাদের কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ে। ৯। সকাল বেলা শয্যাত্যাগ করা ও বিছানা তুলতে অবহেলা করা উচিত নয়। ১০। সন্ধ্যায় নিজের হাতে ঘর ঝাঁট দেবে ও ধুপ দীপ দেবে। স্বামী বিদেশে থাকলে এ সময়ও স্ত্রী অনেক কর্তব্য আছে যা একে একে বরা হলো- (১) স্বামীর কল্যাণ ব্রত, উপবাস ইত্যাদি করবে। (২) বাড়ির যারা প্রবীণ প্রবীণা তাদের তাদের আজ্ঞা পালন করা কর্তব্য। (৩) স্বামী যেমন ব্যবস্থা করে যাবেন সেই অনুযায়ী অর্থ ব্যয় করবে। (৪) কেউ ধার নিয়ে থাকলে তা আদায় করতে হবে। (৫) নতুন কেউ ধার চাইলে দেবে না। (৬) স্বামী বিদেশে অর্থাভাবে পড়লে অর্থ পাঠাতে চেষ্টা করবে। (৭) স্বামী যে সব কাজ আরম্ভ করে গেছেন সে সব চালাতে হবে। (৮) সংসারের সব ব্যয় নির্বাহ করতে হবে। (৯) বিয়ে বা কারও মৃত্যু ছাড়া কদাচ পিত্রালয়ে গমন করবে না। (১০) কারো বিয়ে বা মৃত্যু ঘটলে কোন আত্নীয়কে সঙ্গে নিয়ে ভাল পোষাক পরিচ্ছদ পরিধান করে যাবে। (১১) চিঠিতে স্বামীকে সান্ত্বনা দেবে। (১২) স্বামীর চিঠির তাড়াতাড়ি জবাব দেবে। (১৩) শ্বশুর-শাশুড়ি বা গুরুজনকে জিজ্ঞাসা না করে কোনও ব্রত বা উপবাস করবে না। (১৪) বাজে অর্থ ব্যয় করবে না। (১৫) বিশ্বাসী কর্মচারী দিয়ে কাজ চালাবে। বাজার-হাট ও অন্যান্য খরচ কমাবে। (১৬) অবস্থা অনুযায়ী বুঝে কিছু কিছু খরচ কমাতে পার। (১৭) স্বামী বাড়ি ফিরে যেন অতি সাদা পোষাকে দেখতে পান। তাহার অবর্তমানে স্ত্রী যে মিতব্যয়িনী ছিলে এটা তাঁকে বোঝাতে হবে। (১৮) স্বামী যেন কোনও কু-ধারণা কোন সময়ের জন্য না আনতে পারে। (১৯) স্বামী ফিরে এলে গৃহ দেবতার পূজা দেওয়া অবশ্য কর্তব্য। বাৎস্যায়ন বলেন- যদি বিবাহিতা স্ত্রী না হয়ে বারবনিতা বা রক্ষিতা বিধবা হয়, তারও এই সব কর্তব্য পালন করা উচিত। এতে পুরুষের আস্থা ও ভালবাসা প্রভৃতি অনেক বৃদ্ধি পায়। দাম্পত্য প্রেমও মধুময় হয়ে ওঠে। next৩.২ সহপত্নী শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

৩.২ সহপত্নী

কোন মন্তব্য নেই
সহপত্নীর প্রতি ব্যবহার লোকে সহপত্নী কেন রাখে? এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করে বাৎস্যায়ন বলেছেন, নিম্নলিখিত কারণের জন্য লোকে সহপত্নী রাখে। তা হলো- ১। প্রথম স্ত্রীর নির্বুদ্ধিতা বশতঃ ২। তার কড়া মেজাজের জন্য বাধ্য হয়ে। ৩। স্বামীর উক্তির বিরুদ্ধ ব্যবহারে। ৪। তার কদর্য রূপ হলে। ৫। সর্বদা রোগ ভোগ করতে থাকলে। ৬। তার গভীর আলস্য থাকলে। সে একেবারেই কাজকর্ম করতে চায় না। ৭। তার বন্ধ্যাত্ব বা কেবল কন্যা প্রসব করতে থাকলে। ৮। স্বামীর কামনা চরিতার্থ করতে না পারলে। স্ত্রীর উচিত, যাতে উপরোক্ত কারণগুলি না ঘটে তার ব্যবস্থা করা। তবে যদি তা নেহাৎ ঘটে যায় বা সে নিজে বন্ধ্যা হয় তা হলে সহপত্নী গ্রহণ করতে স্বামীকে বাধা দেওয়া উচিত নয়। কিন্তু সহপত্নী বাড়িতে এলেই যে পূর্ব গৃহিণী নিজেকে অপমানিতা ও ঘৃণিতা মনে করবে, এর যথেষ্ট কারণ না ঘটলে এই মনোভাব হৃদয় মধ্যে পোশণ করা উচিত নয়। তারই তো সংসার ছিল-এখনও তারই সংসার থাকল। তবে স্বামীর ভালবাসার একজন অংশীদার এসেছে বলেই সহ অংশীদারকে কেবলই ঘৃণা এবং অপমান করতে হবে এর মধ্যে কি কোনও সুনীতি আছে? বরং তার সঙ্গে একত্রে বাস করে যাতে সংসারের কল্যাণ হয়-পরিবারস্থ অন্যান্য লোকের খাওয়া, পরা বা আর্থিক কষ্ট তারা না পায়, তাই করা উচিত। সহপত্নী এলে বড় গৃহিণী তাকে নিজের ছোট বোনের মত আদর করে ঘরে তুলবে। কিন্তু তা না করে অধিকাংশ গৃহিণী সহপত্নীর সঙ্গে ঝগড়া করেন। তাকে হিংসা করেন- এতে তার সংসার কখনও সুখের হতে পারে না। এতে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ আরও বেড়ে যায়। স্বামী ঝগড়া-হিংসা সব দেখে বড় বিরক্ত হন্ততিনি হয়তো তখন শান্তির আশায় প্রথমা স্ত্রীকে ছেড়ে দ্বিতীয়াকে নিয়ে অন্যত্র চলে গেলেন। পূর্ব পত্নীর সঙ্গে হয়তো সম্বন্ধ একেবারে ত্যাগ করলেন। এতে স্বামীর আনুকূল্য পাবার যেটুকু আশা ছিল তা নষ্ট হয়ে গেল। সমস্ত পৃথিবীটাই তার কাছে যেন শূন্য হয়ে গেল। তার চেয়ে তার উচিত নবাগত সহপত্নীকে সংসারে আনা মাত্র নিজের ছোট বোনের মত নিজের কাছে টেনে নেওয়া। তাকে আপন করে নেওয়া। রাত্রিকালে তার বিছানা ছেড়ে স্বামীকে এবং নব বিবাহিতা সহপত্নীকে একত্রে শুতে দেওয়া উচিত। সন্ধ্যাবেলা ঐ নবাগতা সহপত্নীর চুল বেঁধে দেবে-তাকে ভাল বেশভূষা পরাবে, মুখে গন্ধদ্রব্য লাগাবে-তারপর তাকে স্বামীর বিছানায় পাঠিয়ে দেবে। নবাগতা সহপত্নীকে নানা প্রসাধন দ্রব্যে, সজ্জিত করে তাকে নানাবিধ কামকথা শিখিয়ে দেওয়া উচিত। কোনও রকম স্বামীকে জানানো উচিত নয় যে তার মনে মনে ঈর্ষা বা দুঃখ জন্মেছে। বরং স্বামীকে মাঝে মাঝে বলা দরকার, নতুন বউকে মাঝে মাঝে অলঙ্কার, বস্ত্র ইত্যাদি তিনি ক্রয় করে দেন। সহপত্নীর সন্তান্তসন্থতিদের নিজের সন্তান সন্ততির মত আদর যত্নে মানুষ করা উচিত-তাদের সেবা, যত্ন করতে হবে নিজহাতে। তারা তার আত্নীয়স্বজন কেউ এলে, তাকে নিজের আত্নীয়-স্বজনের মতো যত্ন করতে হবে, তাদের শ্রদ্ধা করতে হবে। এইরূপ করলে তার পূর্বে সংসার টিকে থাকবে, একথা মনে রাখা উচিত। কনিষ্ঠা সহপত্নীর কর্তব্য কনিষ্ঠা সহপত্নী হয়তো স্বামীর ভালবাসা কিছু কিছু আয়ত্ত করে নিয়েছে- তখনও তার উচিত জ্যেষ্ঠা সহপত্নীকে প্রথমে শ্রদ্ধা ভক্তি করা-সংসারের সব কিছুর জন্যে তার মতামত নেওয়া। স্বামীকে প্ররোচনা দেওয়া, যাতে তিনি জ্যেষ্ঠা সহপত্নীকে কিছু কিছু সম্মান দেন্তমাঝে মাঝে তাকেও আদর করেন। জ্যেষ্ঠার প্রতি ঘৃণা, হিংসা কি কলহপ্রবণতা কখনও করা উচিত নয়। বিধবার কর্তব্য কোন কোন বিধবা তার কাম-বাসনা চরিতার্থ না করতে পেরে বা মনস্কামনা সিদ্ধ করার জন্য সুদর্শন বলবান যুবা পুরুষকে গ্রহণ করতে পারে। একে বিবাহ বলা হয় না একে বলে পূণর্ভূ। পূণর্ভূ হয়ে নতুন স্বামী পেতে হলে তাকে একটা অনুষ্ঠান করে স্বামীর বন্ধুদের ভোজন করাবে-কিছু কিছু অর্থ তাদের দান করবে। তারপর নতুন স্বামীর প্রদত্ত অলঙ্কার ও বস্ত্রাদি পরিধান করে স্বামীর আত্নীয়স্বজনের কাছে উপস্থিত হবে। সে পূর্ব গৃহে যাবে না-এই কথা প্রকাশ করবে। নতুন স্বামীর গৃহে এসে তার সঙ্গে কাম কলা প্রকাশ করবে। অবহেলিতা পত্নী যখন ওকানও লোকের কতকগুলি পত্নী থাকে, তখন হয়ত একটি পত্নী হয়-অবহেলিতা। সে হতে পারে স্বামীর অনাদৃতা। স্বামী তার সঙ্গে হয়তো যৌনকার্যও করেন না। এমন অবস্থা ঐ অবহেলিতা পত্নীর উচিত, যে পত্নী স্বামীর সবচেয়ে প্রিয়তমা, তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব স্থাপন করা। তর উচিত অন্যান্য পত্নীদের সঙ্গে বা বাড়ির অন্য আত্নীয় স্বজনের সঙ্গে সম্ভাব রাখা। তার উচিত কামের যৌন কলা যা আছে তা নিপুণভাবে শিক্ষা করা হয়ত এই নিপুণতার অভাবেই সে স্বামীর ভালবাসা হারিয়েছে। তার সপত্নীর সন্তান-সন্ততিদের প্রতি ভালবাসা হারিয়েছে। সংসারে যে সব পূজা আছে, ব্রত পার্বণ আছে তাও তার ভালভাবে পালন করা দরকার। স্বামী যৌন সম্পর্কের ইচ্ছা প্রকাশ করা মাত্র তার তাতে সাড়া দেওয়া উচিত। ইচ্ছা না থাকলেও স্বামীর মতে মত দেওয়া উচিত। মোট কথা যাতে স্বামীর মন জয় করা যায় তার চেষ্টা করা উচিত। স্বামীর সঙ্গে কোন পুরানো কলহের কথা বা ঝগড়ার কথা তার না তোলাই কর্বব্য। এমন কি তখন তার স্বামীর অন্য কোনও পত্নীর সঙ্গেও তার কলহ করা কদাচ উচিত নয়। যদি কোনও পত্নীর সঙ্গে স্বামীর বিবাদ হয়, সে তার মীমাংসা করে দিতে চেষ্টা করবে। যে সব কাজ করলে স্বামী তাকে ভালবাসতে পারে, তাকে পূর্ণভাবে বিশ্বাস করতে পারে, সে সব কাজ করা উচিত। স্বামী তাকে যাতে ভালবাসতে পারে, প্রতিটি কাজ তার এমন ভাবে করা কর্তব্য। অন্তঃপুরের মহিলাদের কর্তব্য রাজার অন্তঃপুরে সাধারণতঃ প্রত্যেক রাণীর পৃথক পৃথক মহল বা ঘর থাকে। রাজার একজন করে চাকরানী বা দূতী থাকে। তাকে দিয়ে বলে পাঠান, নির্দিষ্ট রাতে তিনি কোন রাণীর কাছে রাত্রি যাপন করবেন। রাজ অন্তঃপুরে প্রধান মহিষী থেকে পরস্পর স্তর আছে। মাঝে থাকেন উপপত্নী, বাঈজী ও বারাঙ্গনা প্রভৃতি-সব শেষে থাকেন রাণীরা। রাণীদের উচিত চাকরানীদের মাধ্যমে রাজার কাছে মালা, চন্দন, সুগন্ধি প্রভৃতি পাঠানো-যাতে রাজা তার কথা আগে মনে করেন। রাজার নিকট থেকে যেমন আদেশ হয়, সেই অনুযায়ী রাজা ইচ্ছামত অন্তঃপুরিকাদের অনুগৃহীত করে থাকেন। এই বিষয়ে রাণীদের উচিত নয়, রাজার বিরুদ্ধে কোন মত প্রকাশ করা। বহু পত্নীকে লোকের কর্তব্য বহু পত্নীক লোকের কর্তব্য তার প্রতিটি স্ত্রীকে সন্তুষ্ট রাখা-তাদের কাউকে অবহেলা না করা। যদি কেউ কোনও দোষ করে থাকে-তবে তার অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি দেবেন- মিথ্যা কাউকে শাস্তি দেবেন না- প্রমাণ না পেলে তা সঠিক বলে বিশ্বাস করবেন না। সে একজন পত্নীর সঙ্গে কিরূপ কামকেলি করে থাকে তা অন্যের কাছে প্রকাশ করবে না। একজনের যোনির গঠন কেমন তা কদাচ অন্যকে বলবে না। এতে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। যদি তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়, সে ধীর স্থিরর মস্তিষ্কে তার বিচার করবে। কদাচ যেন এর অন্যথা না হয়। সঙ্গম সময় কোন স্ত্রীর কাছে কতটা আরাম পায়, অন্যের কাছে তা বলা অনুচিত। প্রত্যেকের কাছেই তার প্রশংসা করা উচিত। তাতে সকলেই রাজাকে ভালবাসে। next ৪.১ পতিতাদের ইতিবৃত্ত শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

৪.১ পতিতাদের ইতিবৃত্ত

কোন মন্তব্য নেই
পতিতা অর্থাৎ বেশ্যারা। এরা হলো সেই সমপ্রদায়ভুক্ত নারী যারা পুরুষকে যৌন সুখ ভোগ করতে নিজেদের দেহ দিয়ে আপনাদের জীবিকা অর্জন করে। অবশ্য তারা যে কোনও পুরুষকে দেহ দানের বিনিময়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় অর্থ উপার্জন করে, তা নয়। তারাও মানুষ- তাদেরও মন আছে, অভিরুচি আছে, ভাল-মন্দ বিবেচনা শক্তি। তাই তাদের বিষয়ে অনেক কিছু সাধারণ মানুষের শিক্ষা করা উচিত। অনেক সময় যাদের সঙ্গে যৌন মিলন করতে পারে হাতে তাদের পয়সাও আছে, তবু তারা সেই লোককে ফেরৎ দেয়। কারণ সেই নারী তাকে পছন্দ করে না। যৌন মিলনে কিছুটা মনের মিলেরও প্রয়োজন হয়। বেশ্যারা প্রয়োজনমত নিজেকে সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও অলঙ্কারে ভূষিতা রাখে। যেন এক প্রকার পণ্য দ্রব্য। তাই তার বাড়ি এমন থাকবে যেন বাইরের লোক তাকে দেখতে পায় এবং সেও বাইরের লোককে দেখতে পায়। তার আরও জানা উচিত, সৌন্দর্য্য দিয়ে পুরুষকে জয় করতে পারলে তবে তার অর্থ মিলবে। বেশ্যাদেরও আবার ঘটক বা দূত থাকে। তারা অন্য লোককে তার গুণ পণ্য বলে তাকে আকর্ষন করে নিয়ে আসে। বেশ্যা যাদের খুশী রাখবে নিম্নলিখিত লোকদের বেশ্যাদের সর্বদা খুশী রাখা উচিত। তা না হলে ব্যবসা চলে না। তা হলো- (১) নগরের নগরপাল ও পুলিশের কর্তা। (২) দেশের কোনও বিচারক বা বিখ্যাত আইনবিদ। (৩) কোনও গণৎকার বা জ্যোতিষ। (৪) কোনও ব্যায়ামবীর লোক। (৫) কোনও সতীর্থ বা সমব্যবসায়ী। (৬) কোনও শিল্পপতি। (৭) কোনও পীঠমর্দ বা বিট বা বিদূষিকা, সুগন্ধি দ্রব্য বিক্রেতা বা মদ্য বিক্রেতা, কোন রজক বা নাপিত। বাৎস্যায়ন বলেন উপরোক্ত লোকদের উপরে বেশ্যার কোন যৌন আকর্ষন থাকা উচিত নয়। তাদের কেবল অর্থ দ্বারা বশীভূত করে ব্যবসায়ে উন্নতি করবে। বেশ্যারা যাদের পছন্দ করে বেশ্যা কোন্‌ কোন্‌ ধরনের ব্যক্তিকে মনে প্রাণে কামনা করবে তাও বাৎস্যায়ন বলে গেছেন। তারা হলো- ১। কোনও স্বাধীন ধনশালী লোক। ২। রাজ্যের কোন উচ্চপদস্থ কর্মচারী। ৩। যে ব্যক্তি অল্পদিনে প্রচুর সম্পত্তি বা টাকাকড়ি পেয়েছে। ৪। বেশ্যার সমব্যবসায়ী ব্যক্তির সঙ্গে যে সম্প্রতি কলহ করেছে। ৫। যে লোকের স্থায়ী নিশ্চিত উপার্জন আছে। ৬। যে কুৎসিৎ হলেও নিজেকে সুন্দর বলে মনে করে। ৬। যে আত্নপ্রশংসায় খুব বিরত। ৮। কোনও রতি অক্ষম লোক- সে নিজে মনে করে যে সে খুব রতি পারদর্শী। ৯। যে লোক আত্নপ্রশংসা ভালবাসে। ১০। যে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাস্ত করতে খুবই ইচ্ছুক। ১১। খুব দানশীল ব্যক্তি। ১২। যে লোক রাজা, ধনী বা সম্ভ্রান্ত লোকের সঙ্গে দিন যাপন করে। ১৩। যে নিজ ভাগ্যকে খুব বিশ্বাস করে। ১৪। অপরিমিত ব্যয়শীল লো্‌ক। টাকা খরচ করতে যার দরদ নাই। ১৫। যে লোক পিতামাতার অবাধ্য। ১৬। কোন ধনীর একমাত্র সন্তান। ১৭। নিঃসন্তান ধনী ব্যক্তি। ১৮। যে কামুক লোক তার কামক্রিয়া গোপন রাখতে পারে। ১৯। যে সন্ন্যাসী গোপনে কামক্রিয়া চরিতার্থ করে। ২০। কোনও সাহসী যোদ্ধা। ২১। কোন চিকিৎসক বা বৈদ্য। ২২। বহু দিনের পরিচিত লোক। বেশ্যার পছন্দমত যুবকের গুণাবলী বাৎস্যায়ন বলেছেন ভালবাসা, সুখ্যাতি ও ধন অর্জন করতে হলে বেশ্যার প্রয়োজন একজন বিলাসী যুবক। তার কি কি গুণ থাকবে, তা হলা হচ্ছেঃ- ১। সে উচ্চবংশীয় হবে। ২। তর্কশাস্ত্রে বেশ বুৎপন্ন হবে। ৩। রাজনীতিতে পারদর্শী হবে। ৪। কবি বা শিল্পী হবে। ৫। বেশ গল্প বলতে পারদর্শী হবে। ৬। সু-বক্তা ও বুদ্ধিমান লোক। ৭। বিভিন্ন কথায় যারা পাণ্ডিত্য দেখায়। ৮। মনে উচ্চাশা থাকবে। ৯। প্রাচীন লোকদের যারা শ্রদ্ধা করবে। ১০। প্রচুর গুণ থাকবে। ১১। সৎসাহসী হবে। ১২। একনিষ্ঠ প্রেমিক হবে। ১৩। বন্ধুদের প্রতি সৌহার্দ্যশীল হবে। ১৪। নানাবিধ বাকবিতণ্ডায় কুশলী হবে। ১৫। শরীর নীরোগ হবে। ১৬। কামশক্তি পরায়ণ হবে। ১৭। মদ্যপানদোষ থাকবে না। ১৮। সব নারীর প্রতি স্নেহ ভালবাসা দেখাবে। ১৯। স্বাধীনচেতা লোক হবে। ২০। মনে সন্দেহ থাকবে না। বেশ্যার গুণাবলী বেশ্যারও কতকগুলি বিশেষ গুণ থাকা একান্ত প্রয়োজন। তা হলো- ১। সে সুন্দরী হবে। ২। সে যুবতী হবে। ৩। দেহে সুলক্ষণ যুক্ত চিহ্ন থাকবে। ৪। মধুরভাষিণী হবে। সলজ্জ ভাব দেখাবে। ৫। অর্থের কথা চিন্তা না করে নিজের স্বামীর মত উপপতিকে ভালবাসে, এমন ভাব দেখাবে। ৬। দু-একটি মাত্র উপপতির সঙ্গে রতি মিলন করবে। ৭। স্থির চিন্তা করবে। ৮। উপপতির সঙ্গে প্রবঞ্চনা করবে না। ভাল ব্যবহার করা উচিত। ৯। কৃপণী হবে না। এতে উপপতি সরে পড়তে পারে। ১০। সাধারণ সমিতি বা যাত্রায় যোগদান করবে। এতে চাহিদা বাড়বে সন্দেহ নাই। ১১। নানা শিল্পের অনুরাগিণী হবে। ১২। সুকণ্ঠী গায়িকা হলে আরও ভাল হয়। নারী পতিতা হয় কেন ১। অর্থাভাবে বা দারিদ্র্যতাবশতঃ অনেক সময়ে মেয়েরা পতিতা বৃত্তি গ্রহণ করে। ২। সংসারের অনাদর বা অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে পতিতা বৃত্তি গ্রহণ করে। ৩। স্বামীর অনাদর অত্যাচারও এ পথে যাবার মস্ত বড় একটি কারণ। ৪। অতি কামুকতা। যে স্বামীর দ্বারা পূর্ণ তৃপ্তি পায় না। ৫। একাধিক পুরুষে আকর্ষণ। ৬। অতিরিক্ত বিলাসের প্রতি আকর্ষণ। ৭। বৈধব্য। ৮। অন্যের প্ররোচনায় প্রভাবিত হওয়া। ৯। একজনকে ভালবেসে গৃহত্যাগ, পরে তার দ্বারা প্রত্যাখ্যান। ১০। সামপ্রদায়িক দাঙ্গা বা যুদ্ধের জন্য কুলত্যাগিনী। ১১। আজীবন কুমারী থাকা। পরে অন্য পথে গমন। ১২। গ্রামাদি থেকে সংগৃহিতা নারী। ১৩। গোপন প্রেম ও স্বামী কর্তৃক ধৃত ও স্ত্রী ত্যাগ। ১৪। স্ত্রীর সংসারে বিতৃষ্ণা-স্বামী হয়ত আজীবন চরিত্রহীন। ১৫। দারিদ্রতার জন্য কুমারী কন্যা বা স্ত্রীকে বিক্রয়। পতিতাদের প্রকারভেদ ১। একমাত্র উপপিতিতে আকৃষ্ট। ২। নাচ গান জানা কলারসিক পতিতা- দেহমিলন বেশি চায় না। নির্দিষ্ট একজন নায়ককে রাখে। ৩। বাড়িউলি বা কোনও নারীর অধীনে বাস করা পতিতা। ৪। কোন রাজ অনুগৃহীত বিশেষ ধনী পতিতা, সে উপপত্নীর মত পৃথক প্রাসাদে বাস করে। next ৪.২ পতিতার উপপতি শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :

৪.২ পতিতার উপপতি

কোন মন্তব্য নেই
পতিতার উপপতির যে সব গুণ থাকবে ১। সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া দরকার। ২। সদবুদ্ধি ও বিবেক থাকবে। ৩। সৎব্যবহার। ৪। সরলতা। ৫। পরস্পরের প্রতি কৃতজ্ঞতার ব্যবহার। ৬। দূরদর্শিতা। ৭। কাজের প্রতি ঔদাসীন্য। ৮। স্থান কাল অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা। ৯। আইন মান্য করে চলা। ১০। দারিদ্র্যে মুহ্যমানতা। ১১। যথাসময়ে হাস্য করা। ১২। পরনিন্দা ও জনশ্রুতি বৃদ্ধি না করা। ১৩। দুর্নাম থেকে আত্নরক্ষার শক্তি। ১৪। রোষ, হিংসা, আত্নগর্ব থাকা উচিত। ১৫। চপলতা থেকে মুক্ত ভাব। ১৬। যার সঙ্গে দেখা হবে তাকে অভিবাদন। ১৭। কাম ক্রীড়ায় বৈচিত্র্য। ১৮। মনে সব সময় স্ফুর্তি থাকা দরকার। ১৯। অন্তঃকরণ হবে উদার। ২০। মুক্ত হসে- খরচ করবে। ২১। পতিতার মন জুগিয়ে চলবে। ২২। শৃঙ্গার দক্ষতা থাকবে। বেশ্যারা যেসব পুরুষকে পছন্দ করে না ১। যক্ষ্মা বা কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত লোক। ২। যে লোক মেহ বা প্রমেহ রোগে ভুগছে। ৩। যে পুরুষের মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। ৪। যে লোক বহু নারীর সঙ্গে মিলন করে। ৫ । যে লোক তার স্ত্রীকে খুব ভালবাসে। ৬। যে লোক কটুভাষী, দয়ামায়া শূন্য। ৭। যে সাধু লোক বলে মোটেই গণ্য নয়। ৮। যে চুরি কার্য্য করে। ৯। যে আত্নরক্ষার জন্যে মিথ্যা কথা বলে। ১০। যে টাকার জন্যে সব কিছু করতে পারে। ১১। যে প্রেমের জন্যে বা গুপ্ত প্রেমের জন্যে লজ্জিত বা ভীত হয় না। ১২। যে লোক সুরত কার্যে অক্ষম। ১৩। যে পুরুষ পয়সা খরচ করতে কুণ্ঠিত। পত্নীরূপে বেশ্যা যে বেশ্যা অনেকদিন ধরে কোন একজন পুরুষের উপপত্নীরূপে বাস করে, তার সঙ্গে ধর্ম পত্নীর মত ঘর করা ও সহবাস করা যায়। পত্নীরূপে বেশ্যার কর্তব্য ১। নায়কের মর্দন চাওয়া। নিজেও চুম্বন, আলিঙ্গন, দংশন প্রভৃতি করতে পারে। ২। ধর্ম কর্মে মন দেওয়া। ৩। নিত্য নূতন কামকেলি। ৪। নিজে অর্থ না চাওয়া। দাসদাসী বা কোন ধাত্রীকে দিয়ে সাংসারিক প্রয়োজন জানাবে। ৫। মর্য্যাদা দিয়ে নায়ককে সন্থষ্ট রাখতে চেষ্টা করবে। ৬। নায়ক ক্রুদ্ধ হলে হাসবে। যথাসাধ্য তাকে সন্থষ্ট করবার চেষ্টা করবে। ৭। নায়কের মনে কোন ব্যথা দেবে না। ৮। কখনও কটু কথা বলবে না। নিজের স্বামীর মত তাকে প্রাণ দিয়ে ভালবাববে। ৯। অন্য পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হবে না। তাতে নায়কের আগ্রহ কমে যাবে। ১০। নায়কের বিরুদ্ধে কেউ নিন্দা করলে তার প্রতিবাদ করবে-না হয় তা শুনবে না। এতে নায়কের অতি প্রিয় হয়ে উঠবে। ১১। নায়কের অসুখে সেবা করবে। ১২। সন্তানলাভের আকাঙ্খা থাকবে। সন্তান একটি কি দু’টি হরে ভাল হয়। এর বেশী হওয়া উচিত নয়। বিতৃষ্ণাযুক্ত উপপতির লক্ষণ যখন কোন উপপতির কোনও বেশ্যার উপরে বিতৃষ্ণা আসে তখন যে সব লক্ষণ দেখা যায়-তা এবারে বলা হচ্ছে- ১। উপপত্নীকে দেয় টাকা সম্পূর্ণ দেয় না। ২। যাদের সঙ্গে তার হিংসা দ্বেষ থাকে, তাদের সঙ্গে সে হেসে কথা বলে। ৩। উপপত্নীর মতের বিরুদ্ধে কাজ করে। অন্য বারাঙ্গনার নিকট যাওয়া আসা করে। ৪। উপপতি তার প্রতিশ্রুতি রাখে না। ৫। নিজের মনোভাব উপপতীকে গোপন করে। এই নায়িকার প্রতি ভালবাসার বন্ধন কমে যায়। ৬। উপপতীকে সর্বদা বিদ্রুপ করে। যাতে সে রেগে যায়। ৭। প্রায়ই তাকে ছেড়ে ছেড়ে থাকতে চায়। ৮। উপপত্নীর পূর্বের সব বিরুদ্ধ-চারীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে কথাবার্তা বলে। ৯। তাকে ঘৃণার ভাব দেখায়। এ সকল লক্ষণ নায়কের মধ্যে দেখা গেলে, বুঝতে হবে নায়ক তাকে ত্যাগ করবে। উপপত্নীর নায়ক ত্যাগের চিহ্ন বেশ্যারা যখন উপপতিকে ছেড়ে দেবার চেষ্টা করবে এবং যে সব চিহ্ন দেখাবে, তা হ’লো- ১। উপপতি যা পছন্দ করে না এমন কাজ উপপতী করবে। ২। উপপতিকে কেবল ব্যথা দেবে। অপমানসূচক কার্যকলাপও করতে পারে। ৩। এমন লোকের সঙ্গে কথাবার্তা বলবে-যাদের সঙ্গে উপপতির সদ্ভাব নেই। ৪। তার নিন্দা করবে-মর্যাদাহীন করবে। ৫। তাকে প্রত্যেক বিষয় তিরষ্কার করবে। ৬। অন্য বেশ্যাদের উপপতির প্রশংসা করবে, নিজের উপপতির কাছে। ৭। উপপতির যত দোষ অবাধে অন্যের কাছে জানাবে ও তার প্রচণ্ড নিন্দা করবে। ৮। উপপতি ডাকলে তার কাছে আসবে না-তাড়াতাড়ি সাড়া দেবে না। ৯। রতি কার্য করতে চাইবে না। ১০। উপপতি চুম্বন করতে চাইলে মুখ ফেরাবে। ঘৃণার ভাব দেখাবে। ১১। আলিঙ্গনে বাধা দেবে। দূরে দূরে থাকবে। ১২। রতি কাজের জন্য জোরাজুরি করলে ঊরু দুটি চেপে রাখবে। ১৩। উপপতির কোন কথা গ্রাহ্য করবে না। তার যা ইচ্ছা তাই করবে। ১৪। সুরতের সময় উপপতি ঘুমের ভান করবে। ১৫। সুরতকালে উপপতি ক্লান্ত হ’য়ে পড়লে তাকে উপহাস করবে। ১৬। দিনের বেলায় উপপতি সঙ্গম করতে চাইলে, সে অন্যত্র চলে যাবে। ১৭। উপপতির সামনে অন্য পুরুষের সঙ্গে প্রেমালাপণ করবে। ১৮। শৃঙ্গারের শেষে বীর্য স্খলনের সময়ে, উপপতিকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেবে। উপপতি এমন সব কার্যকলাপ করলে বুঝবে যে, সে তাকে আর চায় না। nextt৫.১ পরনারী-পরপুরুষ শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব । প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :