নারীর জান্নাত যে পথে →পাতা ৪←

কোন মন্তব্য নেই
তুমি আমার মালিক হয়েছ, এখন আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক আমার সাথে ব্যবহার কর। হয়তো ভালভাবে রাখ, নায়তো সুন্দরভাবে আমাকে বিদায় দাও। এটাই আমার কথা, আল্লাহর নিকট তোমার ও আমার জন্য মাগফিরাত কামনা করছি।
শুরাই বলল, শাবি, সে মুহূর্তেওআমি মেয়েটির কারণে খুতবা দিতেবাধ্য হয়েছি।অতঃপর আমি বললাম,
الحمد لله، أحمده وأستعينه، وأصلي على النبي وآله وأسلم، وبعد…
তুমি এমন কিছু কথা বলেছ, যদি তার উপর প্রতিষ্ঠিত থাক,তোমারকপাল ভাল। আর যদি পরি ত্যাগ কর,তোমার কপাল মন্দ।আমার পছন্দ… আমার অপছন্দ…আমরা দু’জনে একজন।আমার মধ্যে ভাল দেখলে প্রচার করবে,আর মন্দ কিছু দৃষ্টিগোচর হলে গোপন রাখবে।
সে আরো কিছু কথা বলেছে, যা আমি ভুলে গেছি।সে বলেছে, আমার আত্মীয় স্বজনের আসা-যাওয়া তুমি কোন দৃষ্টিতে দেখ? আমি বললাম,ঘনঘন আসা-যাওয়ার মাধ্যমে বিরক্ত করা পছন্দ করিনা।সে বলল, তুমি পাড়া-প্রতিবেশীর মধ্যে যার ব্যাপারে অনুমতি দেবে, তাকে আমি ঘরে প্রবেশ করার অনুমতি দেব।যার ব্যাপারে নিষেধ করবে,তাকে আমি অনুমতি দেব না। আমি বললাম, এরা ভাল, ওরা ভাল না। শুরাই বলল, শাবি, আমার জীবন ের সব চেয়ে আনন্দদায়ক অধ্যায় হচ্ছে, সে রাতের মুহূর্তগুলো। পূর্ণ একটি বছর গত হল, আমি তার মধ্যে আপত্তিকর কিছু দেখিনি।একদিনের ঘটনা,‘দারুল কাজা’ থেকে বাড়ি ফিরে দেখি, ঘরের ভেতর একজন মহিলা তাকে উপদেশ দিচ্ছে;আদেশ দিচ্ছে আর নিষেধ করছে।আমি বললাম সে কে?বলল, তোমার শ্বশুর বাড়ির অমুক বৃদ্ধ। আমার অন্তরের সন্দেহ দূর হল। আমি বসার পর, মহিলা আমার সামনে এসে হাজির হল। বলল,আসসালামু আলাইকুম, আবু উমাইয়্যা। আমি বললাম, ওয়া লাইকুমুসসালাম, আপনি কে? বলল, আমি অমুক; তোমার শ্বশুর বাড়ির লোক। বললাম, আল্লাহ তোমাকে কবুল করুন । সে বলল, তোমার স্ত্রী কেমন পেয়েছ? বললাম, খুব সুন্দর। বলল, আবু উমাইয়্যা, নারীরা দু’ সময় অহংকারের শিকার হয়। পুত্র সন্তান প্রসব করলে আর স্বামীরকাছে খুব প্রিয় হলে। কোন ব্যাপারে তোমার সন্দেহ হলে লাঠি দিয়ে সোজা করে দেবে। মনে রাখবে, পুরুষের ঘরে আহ্লাদি নারীর ন্যায় খারাপ আর কোন বস্তু নেই। বললাম, তুমি তাকে সুন্দর আদব শিক্ষা দিয়েছ, ভাল জিনিসের অভ্যাস গড়ে দিয়েছ তারমধ্যে। সে বলল, শ্বশুর বাড়ির লোকজনের আসা-যাওয়া তোমার কেমনলাগে? বললাম, যখন ইচ্ছে তারা আসতে পারে। শুরাই বলল, অতঃপর সে মহিলা প্রতি বছর একবার করে আসত আর আমাকে উপদেশ দিয়ে যেত। সে মেয়েটি বিশ বছর আমার সংসার করেছে, একবার ব্যতীত কখনো তিরস্কার করার প্রয়োজন হয়নি। তবে ভুল সেবার আমারই ছিল।
ঘটনাটি এমন, ফজরের দু-রাকাত সুন্নত পড়ে আমি ঘরে বসে আছি, মুয়াজ্জিন একামত দিতে শুরু করল। আমি তখন গ্রামের মসজিদেরইমাম। দেখলাম, একটা বিচ্ছু হাঁটাচলা করছে, আমি একটা পাত্রউঠিয়ে তার উপর রেখে দিলাম। বললাম, জয়নাব, আমার আসা পর্যন্ত তুমি নড়াচড়া করবে না।শাবি, তুমি যদি সে মুহূর্তটা দেখতে! নাম াজ শেষে ঘরে ফিরে দেখি, বিচ্ছু সেখান থেকে বের হয়ে তাকে দংশন করেছে। আমি তৎক্ষণাৎ লবণ ও সাক্ত তলব করে,তার আঙুলের উপর মালিশ করলাম। সূরায়ে ফাতেহা, সূরায়ে নাস ও সূরায়ে ফালাক পড়ে তার উপর দম করলাম।”
দাম্পত্য জীবনে স্ত্রীর কর্তব্য :
১. স্বামীর অসন্তুষ্টি থেকে বিরত থাকা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তিনজন ব্যক্তির নামাজ তাদের মাথার উপরে উঠে না। (ক). পলাতক গোলামের নামাজ, যতক্ষণ না সে মনিবের নিকট ফিরে আসে। (খ). সে নারীর নামাজ, যে নিজ স্বামীকে রা গান ্বিত রেখে রাত যাপন করে।(গ). সে আমিরের নামাজ, যার উপর তার অধীনরা অসন্তুষ্ট।”
২. স্বামীকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা।
ইমাম আহমদ ও অন্যান্য মুহাদ্দিস বর্ণনা করেন, “দুনিয়াতে যে নারী তার স্বামীকে কষ্ট দেয়, জান্নাতে তার হুরগণ (স্ত্রীগণ) সে নারীকে লক্ষ্য করে বলে, তাকে কষ্ট দিয়ো না, আল্লাহ তোমার সর্বনাশ করুন ।সে তো তোমার কাছে ক’দিনের মেহমান মাত্র, অতি শীঘ্রই তোমাকে ছেড়ে আমাদের কাছে চলে আসবে।”
৩.স্বামীর অকৃতজ্ঞ না হওয়া।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,“আল্লাহ তা’আলা সে নারীর দিকে দৃষ্টি দেবেন না, যে নিজ স্বামীর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেনা, অথচ সে স্বামী ব্যতীত স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আমিজাহান্ নাম কয়েক বার দেখেছি, কিন্তু আজকের ন্যায় ভয়ানক দৃশ্য আর কোন দিন দেখিনি। তার মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশী দেখেছি। তারা বলল,আল্লাহর রাসূল কেন? তিনি বললেন,তাদের না শুকরির কারণে।জিজ্ঞাসা করা হল, তারা কি আল্লাহর না শুকরি করে? বললেন, না, তারা স্বামীর না শুকরি করে, তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না। তুমি যদি তাদের কারো উপর যুগ-যুগ ধরে ইহসান কর, অতঃপর কোন দিন তোমার কাছে তার বাসনা পূণ না হলে সে বলবে, আজ পর্যন্ত তোমার কাছে কোন কল্যাণই পেলাম না।”
৪.কারণ ছাড়া তালাক তলব না করা।ইমাম তিরমিজি, আবু দাউদ প্রমুখগণ সওবান রাদিআল্লাহ আনহু থেকে বর্ণনা করেন, “যে নারী কোন কারণ ছাড়া স্বামীর কাছে তালাক তলব করল, তার উপর জান্নাতের ঘ্রাণ পর্যন্ত হারাম।”৫.অবৈধ ক্ষেত্রে স্বামীর আনুগত্য না করা।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,“আল্লাহর অবাধ্যতায় মানুষের আনুগত্য করা যাবে না।” এখানে নারীদের শয়তানের একটি ধোঁকা থেকে সতর্ক করছি, দোয়া করি আল্লাহ তাদের সুপথ দান করুন।কারণ দেখা যায় স্বামী যখন তাকে কোন জিনিসের হুকুম করে, সে এ হাদিস ের দোহাই দিয়ে বলে এটা হারাম, এটা নাজায়েজ, এটা জরুরি নয়। উদ্দেশ্য স্বামীর নির্দেশ উপেক্ষা করা।আমি তাদেরকে আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীটি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আল্লাহ তা’আলা বলেন,যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করেছে, কিয়ামতের দিন তাদের চেহারা কালো দেখবেন।”হাসান বসরি রহ. বলেন,হালাল ও হারামের ব্যাপারে আল্লাহ ও তার রাসূলের উপর মিথ্যা বলা নিরেট কুফর ি।৬স্বামীর বর্তমানে তার অনুমতি ব্যতীত রোজা না রাখা। সহিহ মুসলিম ে আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,কোন নারী স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ব্যতীত রোজা রাখবে না।”পাতা 5

কোন মন্তব্য নেই :