নারীর জান্নাত যে পথে →পাতা ৩←

কোন মন্তব্য নেই
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে নারী পা ঁচ ওয়াক্ত নাম াজ পড়ে, রমজানের রোজা রাখে, আপন লজ্জাস্থান হেফাজত করে এবং স্বামীর আনুগত্য করে তাকে বলাহবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর।”
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমাদের সেসব স্ত্রী জান্নাতি, যারা মমতাময়ী, অধিক সন্তান প্রসবকারী, পতি-সঙ্গ প্রিয়Ñ যে স্বামী গোস্বা করলে সে তার হাতে হাত রেখে বলে, আপনি সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত, আমি দুনিয়ার কোন স্বাদ গ্রহণ করব না।” সুনানে নাসায়িতে আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একদা জিজ্ঞাসা করা হল, হে আল্লাহর রাসূল, কোন নারী সব চেয়ে ভাল? তিনি বললেন, “যে নারী স্বামীকেআনন্দিত করে, যখন স্বামী তার দিকে দৃষ্টি দেয়। যে নারী স্বামীর আনুগত্য করে, যখন স্বামী তাকে নির্দেশ দেয়, যে নারী স্বামীর সম্পদ ও নিজ নফসের ব্যাপারে, এমন কোনো কর্মে লিপ্ত হয় না, যা স্বামীরঅপছন্দ।”
হে মুসলিম নারী, নিজকে একবার পরখ কর, ভেবে দেখ এর সাথে তোমার মিল আছে কতটুকু। আল্লা হক ে সন্তুষ্ট করার পথ অনুসরণ কর। দুনিয়া-আখেরাতের কল্যাণ অর্জনের শপথ গ্রহণ কর। নিজ স্বামী ও সন্তানের ব্যাপারে যতœশীল হও।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক মহিলাকে জিজ্ঞাসা করেন, “তোমার কি স্বামী আছে? সে বলল হ্যাঁ, রাসূল বললেন, তুমি তার কাছে কেমন? সে বলল, আমি তার সন্তুষ্টি অর্জনে কোন ত্র“টি করি না, তবে আমার সাধ্যের বাইরে হলে ভিন্ন কথা। রাসূল বললেন, লক্ষ্য রেখ, সে-ই তোমার জান্নাত বা জাহান্ নাম ।”
উপরের আলোচনার আলোকে নেককার নারীর গুণাবলি :
১. নেককার : ভাল কাজ সম্পাদনকারী ও নিজ রবের হক আদায়কারী নারী।
২. আনুগত্যশীল : বৈধ কাজে স্বামীর আনুগত্যশীল নারী।
৩. সতী : নিজ নফসের হেফাজতকারী নারী, বিশেষ করে স্বামীর অবর্তমানে।
৪. হেফাজতকারী : স্বামীর সম্পদও নিজ সন্তান হেফাজতকারী নারী।
৫. আগ্রহী : স্বামীর পছন্দের পোশাক ও সাজ গ্রহণে আগ্রহী নারী।
৬. সচেষ্ট : স্বামীর গোস্বা নিবারণে সচেষ্ট নারী। কারণ হাদিস ে এসেছে, স্বামী নারীর জান্নাত বা জাহান্নাম।
৭. সচেতন : স্বামীর চাহিদার প্রতি সচেতন নারী। স্বামীর বাসনা পূর্ণকারী।
যে নারীর মধ্যে এসব গুণ বিদ্যমান, সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভাষ্য মতে জান্নাতী। তিনি বলেছেন, “যে নারী পা ঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমজানের রোজা রাখে, নিজ সতীত্বহেফাজত করে ও স্বামীর আনুগত্যকরে, তাকে বলা হবে, যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে জান্নাতে প্রবেশ কর।”
আনুগত্যপরায়ন নেককার নারীর উদাহরণ :শাবি বর্ণনা করেন, একদিন আমাকেশুরাই বলেন, “শাবি, তুমি তামিমবংশের মেয়েদের বিয়ে কর। তামিমবংশের মেয়েরা খুব বুদ্ধিমতী। আমি বললাম, আপনি কীভাবে জানেন তারা বুদ্ধিমতী? তিনি বললেন, আমি কোনো জানাজা থেকে বাড়ি ফিরছিলাম, পথের পাশেই ছিল তাদের কারো বাড়ি। লক্ষ্য করলাম, জনৈক বৃদ্ধ মহিলা একটি ঘরের দরজায় বসে আছে, তার পাশেইরয়েছে সুন্দরী এক যুবতী। মনে হল, এমন রূপসী মেয়ে আমি আর কখনো দেখিনি। আমাকে দেখে মেয়েটি কেটে পড়ল। আমি পানি চাইলাম, অথচ আমার তৃষ্ণা ছিল না। সে বলল, তুমি কেমন পানি পছন্দ কর, আমি বললাম যা উপস্থিত আছে। মহিলা মেয়েকে ডেকে বলল, দুধ নিয়ে আস, মনে হচ্ছে সে বহিরাগত। আমি বললাম, এ মেয়ে কে? সে বলল, জারিরের মেয়ে জয়নব। হানজালা বংশের ও। বললাম, বিবাহ িতা না অবিবাহিতা? সে বলল, না, অবিবাহিতা। আমি বললাম, আমার কাছে তাকে বিয়ে দিয়ে দাও। সে বলল, তুমি যদি তার কুফু হও, দিতে পারি। আমি বাড়িতে পৌঁছেদুপুরে সামান্য বিশ্রাম নিতে শোবার ঘরে গেলাম, কোনো মতে চোখ ে ঘুম ধরল না। জোহর নাম াজ পড়লাম। অতঃপর আমার গণ্যমান্য কয়েকজন বন্ধু , যেমনÑ আলকা মা , আসওয়াদ, মুসাইয়্যেব এবং মুসা ইবনে আরফাতাকে সাথে করে মেয়েরচাচার বাড়িতে গেলাম। সে আমাদের সাদরে গ্রহণ করল। অতঃপর বলল, আবু উমাইয়্যা, কি উদ্দেশ্যে আসা? আমি বললাম, আপনার ভাতিজি জয়নবের উদ্দেশ্যে। সে বলল, তোমার ব্যাপারে তার কোন আগ্রহ নেই! অতঃপর সে আমার কাছে তাকে বিয়ে দিল। মেয়েটি আমার জাল ে আবদ্ধ হয়ে খুবই লজ্জা বোধ করল। আমি বললাম, আমি তামিম বংশের নারীদের কী সর্বনাশ করেছি? তারা কেন আমার উপর অসন্তুষ্ট?পরক্ষণই তাদের কঠোর স্বভাবের কথা আমার মনে পড়ল। ভাবলাম, তালাক দিয়ে দেব। পুনরায় ভাবলাম, না, আমিই তাকে আপন করে নিব। যদি আমার মনপুত হয়, ভাল, অন্যথায় তালাকই দিয়ে দেব। শাবি, সে রাতের মুহূর্তগুলো এতো আনন্দের ছিল, যা ভোগ না করলে অনুধাবন করার জো নেই। খুবই চমৎকার ছিল সে সময়টা, যখনতামিম বংশের মেয়েরা তাকে নিয়েআমার কাছে এসেছিল। আমার মনে পড়ল, রাসূলের সুন্নতের কথা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “স্ত্রী প্রথম ঘরে প্রবেশ করলে স্বামীর কর্তব্য, দু’রাকাত নামাজ পড়া, স্ত্রীর মধ্যে সুপ্ত মঙ্গল কামনা করা এবং তার মধ্যে লুকিত অমঙ্গল থেকে পানাহ চাওয়া।” আমি নামাজশেষে পিছনে তাকিয়ে দেখলাম, সে আমার সাথে নামাজ পড়ছে। যখন নামাজ শেষ করলাম, মেয়েরা আমার কাছে উপস্থিত হল। আমার কাপড় পালটে সুগন্ধি মাখা কম্বল আমার উপর টেনে দিল। যখন সবাই চলে গেল, আমি তার নিকটবর্তী হলাম ও তার শরীরের এক পাশে হাতবাড়ালাম। সে বলল, আবু উমাইয়্যা, রাখ। অতঃপর বলল,
الحمد لله، أحمده و أستعينه، وأصلي على محمد وآله…
“আমি একজন অভিজ্ঞতা শূন্য অপরিচিত নারী । তোমার পছন্দ অপছন্দ আর স্বভাব রীতির ব্যাপারে কিছুই জানি না আমি। আরো বলল, তোমার বংশীয় একজন নারী তোমার বিবাহ ে আবদ্ধ ছিল, আমার বংশেও সে রূপ বিবাহিতা নারী বিদ্যমান আছে, কিন্তু আল্লাহর সিদ্ধান্তই সিদ্ধান্ত।
নারীর জান্নাত যে পথে →পাতা ৪←

কোন মন্তব্য নেই :