৫ আসামীর ৪ জনকেই চিনতে পারছে না পুলিশ : আদালত চত্বরে কিশোরীর শ্লীলতাহানির ঘটনা

কোন মন্তব্য নেই

স্টাফ রিপোর্টার: আদালত
চত্বরে কিশোরীর শ্লীলতাহানির ঘটনায়
দায়ের করা মামলার ৫ আসামির ৪
জনকেই চিনতে পারছে না পুলিশ।
আসামিদের কাউকে গ্রেপ্তারও
করা হয়নি। চিহ্নিত হওয়া একমাত্র
আসামি কোতোয়ালি থানার অপারেশন
অফিসার নাজমুল হুদাকে সাময়িক
বরখাস্ত করা হলেও তাকে গ্রেপ্তার
করা হয়নি। থানার সার্ভিস
বুকে তাকে ছুটিতে অনুপস্থিত
দেখানো হয়েছে।
ওদিকে কোতোয়ালি থানায় দায়ের
করা মামলাটির তদন্তে অনীহা প্রকাশ
করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
সমালোচনা হতে পারে, এমন আশঙ্কায়
তারা স্পর্শকাতর এ মামলার
তদন্তে রাজি নয়। এ অবস্থায় মামলার
তদন্তভার সিআইডিকে দেয়া হতে পারে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন পদস্থ
কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশের নির্যাতনের শিকার
পরিবারটি এখন আতঙ্কের মধ্যে দিন
কাটাচ্ছে। আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায়
ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। গতকাল
পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তা বলেন, দায়েরকৃত মামলার
৫ আসামির ৪ জনই পুলিশ সদস্য। তাই
আসামিদের গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে পুলিশ
কিছুটা বিব্রতবোধ করছে।
তবে তদন্তে দোষ প্রমাণিত
হলে অবশ্যই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।
ওই কর্মকর্তার কাছে প্রশ্ন করা হয়
সাধারণ মানুষের
ক্ষেত্রে মামলা দায়েরের পর পরই
আসামিকে গ্রেপ্তার করতে দেখা যায়,
কিন্তু এক্ষেত্রে আসামি গ্রেপ্তার
হচ্ছে না কেন? জবাবে ওই
কর্মকর্তা বলেন, আপনারা সবই
বোঝেন। পুলিশ পুলিশের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার
ক্ষেত্রে কিছুটা ইতস্তত
করবে এটা স্বাভাবিক। তবে পুলিশ
অপরাধ করলে কখনই সে পার পাবে না।
আসামিদের রক্ষার
চেষ্টা করা হচ্ছে এমন অভিযোগ
করেছেন নির্যাতনের শিকার কিশোরীর
বাবা ফারুক। তিনি বলেন, এখন
পর্যন্ত একজন আসামিও গ্রেপ্তার
হলো না। আমরা আতঙ্কের মধ্যে দিন
কাটাচ্ছি। অথচ পুলিশ সব আসামিকেই
চেনে। অবশ্য লালবাগ জোনের উপ-
পুলিশ কমিশনার হারুনুর রশিদ বলেছেন,
৫ আসামির ৪ জনকেই চিহ্নিত
করা যায়নি। জামান নামের যে পুলিশ
সদস্যের নাম উল্লেখ করা হয়েছে,
তাকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
এছাড়া গোফওয়ালা যে পুলিশ সদস্যের
বর্ণনা দেয়া হয়েছে, তাকে খোঁজা হচ্ছে।
বাবু নামের পুলিশের সোর্সের
বিষয়ে তিনি বলেন, বাবু আসলেই
পুলিশের সোর্স কি না তা নিশ্চিত
হওয়া যায়নি। তাকে চিহ্নিত করাও
যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার দুপুরে পুরান ঢাকার আদালত
থেকে ফেরার পথে বাবা-মাসহ এক
তরুণীকে পুলিশ আটকে আদালত সংলগ্ন
পুলিশ ক্লাবে নিয়ে যায়।
পরে সেখানে পুলিশ
তরুণীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন
করে বলে জানায় তরুণী। এছাড়া তার
বাবা-মাকেও আটকে নির্যাতন করার
অভিযোগ ওঠে। বুধবার রাতে এ ঘটনায়
চার পুলিশ ও পুলিশের এক
সোর্সকে আসামি করে মেয়েটির
মা থানায় মামলা করেন।
ঘটনার চার দিন ও মামলা দায়েরের ২
দিন পার হলেও কোন আসামি গ্রেপ্তার
না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আইন
ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সংস্থাটির
জ্যেষ্ঠ উপপরিচালক টিপু সুলতান
বলেন, আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ
করছি।
বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনে আমরা পুলিশের
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের
সঙ্গে কথা বলব।
ওদিকে পুলিশের নির্যাতনের শিকার ওই
তরুণী বাসা থেকে উধাও হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল
থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। গতকাল
মেয়েটির বাবা বলেন, এ
নিয়ে উত্তরখান থানায়
একটি জিডি করা হয়েছে।
জিডি নম্বর-১৪৫০। তিনি বলেন,
বৃহস্পতিবার সকালে মেয়েকে বাসায়
রেখে আমি ও আমার স্ত্রী আইন ও
সালিশ কেন্দ্রের
লালমাটিয়া অফিসে যাই। ফিরে দেখি,
মেয়ে বাসায় নেই।
পরে জানতে পারি রুবেল ও রুবেলের
মামা আওলাদ তাকে তুলে নিয়ে গেছে।
রুবেল তার মেয়ের স্বামী হলেও
নির্যাতন ও যৌতুক চাওয়ার
অভিযোগে মেয়েটি তার বাসায়
থাকতো না বলে জানান তিনি।

কোন মন্তব্য নেই :