এইডস সম্পর্কে জানুন এবং প্রতিরোধ করুন ডা. গৌতম কুমার দাস part 4

কোন মন্তব্য নেই
*. ইনজেকশনের মাধ্যমে নেশা গ্রহণকারীদের মধ্যে মিয়ানমারে ৩৪ শতাংশ, চীনে ৪৩.৯ শতাংশ এবং থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ৪৫ শতাংশ এইচআইভি সংক্রমিত। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে ইনজেকশনের মাধ্যমে নেশাকারীদের ৪৮ শতাংশ এইচআইভি সংক্রমিত, যাদের বেশির ভাগই বয়সে তরুণ, শিক্ষিত ও তারা তাদের পরিবারের সাথে বসবাস করে আসছে।
*. সমকামীদের মধ্যে ১১.১ শতাংশ চীনে, থাইল্যান্ডে ও ভারতের ১৭ শতাংশ এইচআইভি পজিটিভ পাওয়া গেছে। আর এশিয়ার দেশগুলোতে দেখাযায় ইনজেকশনের মাধ্যমেনেশা গ্রহণ ও ঝুঁকিপূর্ণ দৈহিক মিলনই এইডস বিস্তারের প্রধান কারণ। ইনজেকশনের মাধ্যমে নেশাকারীরা সংখ্যায় কমহলেও তাদের উচ্চ সংক্রমণ হার এবং যৌনকর্মীদের সাথে যৌনমিলনের মাধ্যমে তারা এইচআইভির বিস্তারে দ্বৈত ভূমিকাপালন করছে।
পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে এইচআইভি বা এইডসের পরিসংখ্যান। UNAIDS -এরসর্বশেষ তথ্যমতে এইচআইভিআক্রান্ত মানুষের সংখ্যাকয়েকটি দেশে নিম্নরূপ-
*. ভারত- ৫৭,০০,০০০
*. মিয়ানমার-৩,৩৬,০০০
*. থাইল্যান্ড- ৫,৬০,০০০
*. পাকিস্তান- ৮০,০০০
*. নেপাল- ৭৫,০০০
*. শ্রীলঙ্কা- ৫,০০০
*. চীন- ৬,৫০,০০০
চিকিৎসা
এ রোগের চিকিৎসা ও প্রতিষেধক টিকা আবিষকার এখনো গবেষণার পর্যায়ে। এইচআইভি এবং এইডসের জন্য বিশেষ ধরনের চিকিৎসা করা হয়। এতে ভাইরাস দমনের জন্য চিকিৎসা ছাড়াও ভাইরাসের ফলে শারীরিক অবস্থার চিকিৎসা করা হয় এবং ওই ব্যক্তি ও তার পরিবারকে মানসিক ও অনুভূতিগত সাহায্য করা হয়।
এইচআইভির ওষুধপত্র দুটি শ্রেণীভুক্ত। প্রথমটি ‘কম্বিনেশন’ অর্থাৎ মিশ্রথেরাপি। যখন সপষ্টভাবে জানা যায় রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভয়াবহ রকমের হ্রাস পেয়েছে তখন সাধারণত এটা শুরু করা হয়।এতে ভাইরাস দমন করা হয় এবং ওই ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যথাসম্ভব সক্রিয় রাখার চেষ্টা করা হয়। আজকাল নানা রকমের অ্যান্টি এইচআইভি ওষুধ (প্রায়ই যাকে অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল ড্রাগ বলা হয়) পাওয়া যায়, যা অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে যৌথভাবে দেয়া হয় এবং এইচআইভি রোগাক্রান্ত ব্যক্তির আয়ুষকাল বিস্ময়কর উন্নতি করতে পারে। তবে চিকিৎসা প্রণালী জটিল এবং সম্ভবত সারা জীবন এই চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয় এবং তাতে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। কোনটা নিতে হবে ও কখন থেকে এই ওষুধ সেবন শুরু করতে হবে তা ব্যক্তিবিশেষের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে ও এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনাকরে নেয়া শ্রেয়।
দ্বিতীয় প্রকারের চিকিৎসায় যদি এইডসসংক্রান্ত কোনো রোগ দেখা দেয় তার চিকিৎসা করাহয়। এতে পরিস্থিতি অনুযায়ী বিভিন্ন চিকিৎসাকরা হয়।
অন্যান্য সাহায্যের মধ্যে রয়েছে ডায়াটিশিয়ান, ফিজিওথেরাপিস্ট, কাউন্সিলর এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের সামাজিক পরিচর্যা ও সমবয়সীদের সাহায্য ব্যবস্থা।
এইচআইভি বা এইডস প্রতিরোধ
*. এইডস থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে এর প্রতিরোধ। বয়োপ্রাপ্তদের বেলায় এইচআইভি সংক্রমণ ও এইডস রোগ প্রতিরোধের উপায় হলো ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ এড়িয়ে চলা।
*. যৌনমিলনের মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণ এড়ানোর সবচেয়ে নিশ্চিতউপায় হলো সংযম।
*. মাত্র একজন বিশ্বস্ত যৌনসঙ্গী বা সঙ্গিনী রাখুন ও আপনার সেই সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকুন।যদি ঘটনাক্রমে আপনাদেরদুজনের একজন বা উভয়েই ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসেরসংসপর্শে এসে থাকেন তাহলে প্রতিবার যৌনমিলনের সময় অবশ্যই কনডম ব্যবহার করুন।
*. রাবারের বা ল্যাটেক্স কনডম ব্যবহার করুন। কেননা যৌনক্রিয়ার সময় সংক্রমণ এড়ানো বন্ধের জন্য এটিই সবচেয়ে কার্যকর উপায়। তবে শর্ত হলো এই যে, এই কনডমসঠিকভাবে ব্যবহার করতেহবে অর্থাৎ যৌনসঙ্গমেরপূর্ব মুহূর্তে কনডম সঠিকভাবে পরতে হবে।
*. জীবাণুমুক্ত করা হয়নি এমন কোনো সুচ বা ত্বক ফোঁড়ানোর জিনিস ব্যবহার করবেন না।
*. আপনার শরীরে অন্যের রক্ত গ্রহণের দরকার হলে নিশ্চিত হোন যে আপনি যে রক্ত নেবেন তা এইচআইভিমুক্ত।
*. গর্ভবতী মহিলাদের রক্তপরীক্ষা করা।
*. প্রতি ছয় মাস অন্তর এইচআইভি জীবাণুর জন্য রক্ত পরীক্ষা করা।
*. প্রতিরোধমূলক কর্মসূচিগ্রহণের মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণের হারব্যাপকভাবে কমিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যেথাইল্যান্ড ২০০০ সাল পর্যন্ত সম্ভাব্য ৫০ লাখ জনগোষ্ঠীর মাঝে নতুন এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে। বাণিজ্যিক যৌন স্থাপনার যৌনকর্মীদের মধ্যে ৯৮ সালে যেখানে ৪৩% এইচআইভি ছিল ২০০২ সালে তা ২৯ শতাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। কনডমের ব্যাপক ব্যবহার ও বাণিজ্যিক যৌন স্থাপনায় গমন নিরুৎসাহিত হওয়ার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।
*. এইচআইভি বা এইডসের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলুন।
*. এইচআইভি বা এইডসের সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান করুন।
*. জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকাজে লাগিয়ে এইচআইভি এইডসের বিরুদ্ধে সফল আন্দোলন গড়ে তুলুন।
*. গণমাধ্যম এবং এর সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ বস্তুনিষ্ঠ এবং সঠিক তথ্য প্রদান করে জনসাধারণকে এইচআইভি বাএইডসে আক্রান্ত

আরো
পড়তে থাকুন part 5

কোন মন্তব্য নেই :