অনিদ্রা? ২৫টি সমাধান অধ্যাপক ডা. এ এইচ মোহাম্মদ ফিরোজ্ part 3
৭. নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান- আপনার শরীর একটি রুটিন ফলো করতে চায়।আপনি পছন্দ করুন আর নাই করুন। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠা অত্যন্ত প্রয়োজন। প্রতিদিন সময়মতো ঘুম, সময়মতো খাওয়া শরীর পছন্দ করে। সুতরাং একটি নির্দিষ্ট সময় পছন্দ করুন। রাতের ঘুমের জন্য ওই সময়টিকে জেদ করে ধরে রাখুন। যদিও আপনার মনে নাহয় যে আপনি যথেষ্টভাবে ক্লান্ত হননি তবুও নির্দিষ্ট সময়টাতে ঘুমাতে যান। আপনার শরীর তা পছন্দ করবে যখন সে বুঝতে পারবে আপনি আসলেই ওই ব্যাপারটাতে আন্তরিক যে, আপনি সময় মেনে চলতে চান, তখনই শরীর সাড়া দেয়ার চেষ্টা করবে এবং ঘুমের নির্দিষ্ট সময়টাকেমেনে নেবে।৮. চিত হয়ে ঘুমান- চিত হয়ে শুলে শরীর দ্রুত রিলাক্স হয়। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পায়। যদি একান্ত কাত হয়ে শুতে হয় তাহলে ডান দিকে কাত হয়ে শোন। বাম দিকে কাত হয়ে শুলে স্টমাক, লিভার, ফুসফুস সবগুলো হার্টের ওপরে চাপ সৃষ্টি করে। কোনো সময়ে উপুড় হয়ে বা পেটে চাপ দিয়ে শোবেন না কারণ ভেতরের সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ওপর এর দারুণ প্রভাব যেমন-হৃৎপিণ্ড, ফুসফুসে চাপ সৃষ্টি করে এ পদ্ধতি।হার্ট, লাংস তো বটেই এতে শ্বাস-প্রশ্বাসও দ্রুত হয়, ফলে ঘাড়ে ও শরীরের পেছনে ব্যথার সৃষ্টি করে। ভুলে যান এ পদ্ধতির কথা।
৯. প্রচুর আলো-বাতাস সমৃদ্ধ ঘরে ঘুমান- হাল্কা তাজা বাতাস, রুমেরটেম্পারাচার ৬০-৬৫ ডিগ্রি/২০ ও ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে ঘুমের আরামদায়ক পরিবেশ হয়েছে বলে বলা যায়। গরমে এপাশ-ওপাশ করলে ঘুম হয় না। শীতকালে কম্বল ঠেসে ঘুমাতে হবে একথা নেই। অন্য সময়ে হাল্কা চাদর একটা গায়ে রাখতে পারেন।
১০. হাল্কা স্নাক্স নিন- অল্প পরিমাণে শো প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ স্নাক্স রাত্রিকালীন ঘুমের জন্য ভালো। ঘুমাতে যাওয়াার এক ঘণ্টা পূর্বে খেতে হবে। এগুলো ঘুমঘুম ভাব আনতে সাহায্যকারী। অপরপক্ষে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যামাইনো এসিড এলট্রিপটোফ্যান সমৃদ্ধ খাবার যেমন গরম দুধ, ডিম, মুরগি, ক্যাজুনাট ইত্যাদি খেলে আবার ঘুম ভালো হবে। দুটোই চেষ্টা করে দেখুন, দেখুন কোনটি আপনার জন্য ভালো হয়, পরে সে অনুযায়ী কাজ করুন।
১১. ক্যাফিন, অ্যালকোহল ও সিগারেট বাদ দিন- মনে রাখবেন কফিতে যে শুধু ক্যাফিন আছে তা নয়। যে কোনো চা, কোলা বা চকোলেটে বেশ পরিমাণ ক্যাফিনজাতীয় পদার্থ থাকে। ক্যাফিন, অ্যালকোহল বা সিগারেট ঘুমে বাদ সাধে। অ্যালকোহল ঘুমের কিছু সাহায্য করে বটে কিন্তু এটা ঘুমের সব কিছু উল্টাপাল্টা করে দেয়, আরামের ঘুমে বাদ সাধে সিগারেটও। তাই এগুলো বাদ দিন, সুস্থ থাকুন।
১২. দিনের বেলা হাল্কা ব্যায়াম করুন- যারা মানসিক কাজ বেশি করেন তাদের মধ্যে নিদ্রার সমস্যা বেশি। যারা শারীরিক কাজ করেন তাদের মধ্যে নিদ্রা সমস্যা কম। প্রতিদিন ১৫ মিনিট হাল্কা ব্যায়াম আপনার শরীরে যথেষ্ট অক্সিজেন সরবরাহ করবে। শরীরকে রিলাক্স করতে সাহায্য করবে। ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পূর্বে ব্যায়াম করা যেতে পারে। ওই ৩০ মিনিটে শরীরটা আস্তে আস্তে ঠাণ্ডা হয়ে যাবে, ঘুম ভালো হবে।
১৩. নিয়ম করে ঘুম থেকেওঠা- বাঙালিদের বদ অভ্যাস ছুটির দিন লম্বা ঘুম। ছুটি থাকুক আর নাই থাকুক প্রতিদিন সকালে একই সময়ে উঠুন। যখনই জেগেযাবেন ইত্যাদি চিন্তা করে আর এপাশ-ওপাশ করবেন না। উঠে পড়ুন, ঘুম শেষে জেগে যান। জেগে জেগে বিছানায় শুয়ে থাকবেন না। অত্যন্ত খারাপ স্বভাব এটি। উঠে পড়ুন ও কাজে লেগে যান।
১৪. ভোরে ওঠার অভ্যাস- আগেকার লোকজনের অভ্যাস ছিল। এটি এখন শহর জীবনে কম দেখা যায়। বর্তমানে জেগে ওঠার সময়ের চেয়ে অন্তত পক্ষে ১ থেকে দেড় ঘণ্টা আগে ওঠার চেষ্টা করুন। প্রথমে দুচার দিন কষ্ট হবে। কিন্তু উঠে গেলে পরের রাতে ঘুম আবার নিয়মমতো সময়েই চলে আসবে এবং ভালো হবে। ঘুমের ঘড়িটাকে নিয়ম করে ঠিক করেনিন। শরীর আস্তে আস্তে সাড়া দিতে থাকবে। ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর সময় স্থির করে ঘড়িটাকে ঠিক করে নিন।
১৫. গরম দুধ পান করুন- ঘুমাতে যাওয়ার ১৫ মিনিট পূর্বে এক গ্লাস হাল্কা গরম দুধ পান করুন। আপনার নার্ভাস সিস্টেমের ওপর কাজ করবে এটা। দুধে ক্যালসিয়াম থাকে। এই ক্যালসিয়াম জট বেঁধে যাওয়া নার্ভগুলোর জট ছাড়িয়ে দেয় এবং রিলাক্স করতে সাহায্য করে।
১৬. মিউজিক শুনুন- শান্ত, মন ঠাণ্ডা করা মিউজিক শুনুন। এগুলো আপনাকে ঘুমের রাজ্যে নিয়ে যাবে। ঘুমের জন্য আলাদা কিছু মিউজিক ক্যাসেট বা সিডি পাওয়া যায়। অটোমেটিকভাবে বন্ধ হয়ে যায় এরকম ক্যাসেট বা সিডি প্লেয়ার দরকার হবে। এজন্য ধীরলয়ের কোনো মিউজিক বা গান সাহায্যকারী হতে পারে।
আরো
পড়তে থাকুন
part 4
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন