৯ মাসের বিপদ-আপদ ডা. রাতু রুমানা part 2
কোন মন্তব্য নেই
রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া
গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের পর মায়ের রক্তচাপ লক্ষ রাখা জরুরি। উচ্চ রক্তচাপ অনেক সময় মায়ের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায় এবং এটি একলামসিয়ার একটি লক্ষণও।তাই যারা আগে থেকেই রক্তচাপে আক্রান্ত বা গর্ভাবস্থায় উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের উচিত ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ওষুধ সেবন করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখাএবং নিজ ও বাচ্চা উভয়ের সুন্থতা নিশ্চিত করা।
তলপেটে তীব্র ব্যথা
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে (সাধারণত তিন মাসের মধ্যে) যদি কোনো সময় তলপেটে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়, রক্তক্ষরণ ও পেট রক্ত হয়ে যায় তবে দ্রুত ডাক্তারকে দেখানো উচিত। এ ক্ষেত্রে জরায়ু ছাড়া নালিতে (অন্যান্য সন্তান যেমন- পেটের ভেতর,ডিম্বাশয়ের মধ্যে ইত্যাদি) গর্ভধারণ (যা একটোপিক প্রেগন্যান্সি নামে পরিচিত) হয়ে থাকে এবং অনেক সময় এটি ফেটে গিয়ে মায়ের জীবনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। এক্ষেত্রে দ্রুত অপারেশন ছাড়া মাকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে।
তাই গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩৬ সপ্তাহে ন্যূনতম প্রতি মাসে একবার এবং ৩৬ সপ্তাহের পর প্রতি সপ্তাহে একবার করে মাকে স্বাস্থ্যকর্মী বা ডাক্তার দেখানো উচিত।
গর্ভকালীন সাধারণ সমস্যা
এর বাইরেও গর্ভকালীন সাধারণ কিছু সমস্যা দেখা যায়। যেমন-
বমি
সকালে ওঠার পর যদি বেশি অসুস্থবোধ হয় তবে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে হালকা কিছু যেমন- শুষ্ক টোস্ট বা সাধারণ বিস্কুট খেতে পারেন।
*. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন
*. দুশ্চিন্তা করবেন না
*. বমি হবে এই ভয়ে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করবেন না
বুকজ্বলা
*. অল্প অল্প করে প্রয়োজনে বারবার খাবারখান
*. বেশি মসলাযুক্ত খাবার পরিত্যাগ করুন
*. রাতে বুকজ্বলা শুরু হলে এন্টাসিড ট্যাবলেটচুষে খেতে পারেন
*. প্রয়োজনে ডাক্তার দেখান
কোষ্ঠকাঠিন্য বা পায়খানা কষা
*. প্রচুর পানি, আঁশযুক্ত খাবার ও শাকসব্জি বেশি করে খান
*. নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করে মাংসপেশিরটান ঠিক রাখুন
গিলা ও পা ফোলা
*. অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন না
*. পা যতটা সম্ভব ওপরের দিকে রেখে শুয়ে থাকুন
*. রক্তচাপ পরিমাপ করাবেন
*. লবণ কম খাবেন
যোনির নিঃসরণ
সব মহিলারই গর্ভাবস্থায় যোনির নিঃসরণ বেড়ে যায়। এটা সাধারণত সাদা হয়, তবেগন্ধ থাকে না। যদি যোনির নিঃসরণ গন্ধযুক্ত, রঙিন হয় এবং আপনি অস্বস্তিবোধ করেন তবে বুঝতে হবে আপনারযোনিতে জীবাণুর সংক্রমণ হয়েছে। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। একটু সচেতনতা ও পরিবার এবং চিকিৎসকের সামান্য সহযোগিতাই কমিয়ে আনতে পারে মা ও শিশুর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর হার।
গর্ভবতী মায়ের জন্য
*. সব সময় ধীরে ধীরে দাঁড়াবেন, কখনোই আচমকা দাঁড়াবেন না
*. এক জায়গায় বেশিক্ষণ বসে থাকবেন না
*. প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন
*. বেশি লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন
*. প্রচুর আঁশযুক্ত খাবারযেমন- রান্না করা অথবা কাঁচা ফল এবং সবুজ শাকসব্জি, সালাদ খাবেন
*. অল্প চর্বিযুক্ত ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খাবেন
*. ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করবেন
*. ক্লান্তি-বোধ হলে কিছু সময় বিশ্রাম নিন
*. যতটা সম্ভব দুশ্চিন্তাপরিহার করুন
*. প্রতি রাতে অন্তত ৮ ঘণ্টা এবং দিনে ২ ঘণ্টাঘুমাবেন। প্রয়োজনে বিকেলে বিশ্রাম নিন।
*. বাম কাত হয়ে ঘুমাবেন। এর ফলে বাচ্চার জন্য পুষ্টি ও অক্সিজেন বহনকারী রক্তনালির ওপরচাপ পড়বে না।


♥♥♥♥সমাপ্ত♥♥♥♥
প্রকাশক : সৈয়দ রুবেল উদ্দিন
www.facebook.com/sayed.rubel3

কোন মন্তব্য নেই :