বাজারে হা-হুতাশ part 1
স্টাফ রিপোর্টার: বাজারজুড়ে হা-হুতাশ। মানুষের হাতে টাকা নেই। আয় উপার্জন নিম্নমুখী। কিন্তু পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এ অবস্থায় জনজীবনে নেমে এসেছে নাভিশ্বাস। সব কিছুর দাম বাড়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে সবাইকে। সদাইয়ের বাজেট করে বাজারে গিয়ে রীতিমতো বেকায়দায় পড়ছেন ক্রেতারা। সেটা কাঁচা বাজারে হোক কিংবা অন্য পণ্য বাজারেই হোক। কোনভাবেই আয়-ব্যয়ের হিসাবমেলানো যাচ্ছে না। মাস শেষ হওয়ার আগেই আয়ের সব টাকা ফুরিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর মধ্যে চলছে ব্যাপক টানাপড়েন। ফলে সব সময়ই লেগে আছে অভাব। ‘বাজারে এসে সাধ হয় অনেক কিছুই। ইচ্ছে করে বড় মাছটা কিনতে। কিন্তু আয় আর ব্যয়ের হিসাবে সেই সাধ সব সময় বিস্বাদ হয়ে থাকে।’মন্তব্য সরকারি চাকরিজীবী আবুল হাসনাতের। সরকারের কর বিভাগের দ্বিতীয় শ্রেণীর এই কর্মকর্তা বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম হাতের নাগালে, একথা বলা সত্যিই মুশকিল। সবজির ভরামওসুমেও বাজার চড়া। এ অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে উঠেছে। গতকাল রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতাদের কাছ থেকে এমন প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। কয়েকটি বাজারে দোকানির সঙ্গে পণ্যের দাম নিয়ে ক্রেতাদের বাগবিতণ্ডা করতে দেখা গেছে। কাওরান বাজারের কিচেন মার্কেটে আ. রব স্টোর থেকে তীর ব্রান্ডের এক লিটার তেল কিনেছেন এক মহিলা। দাম ১২৩ টাকা চাইতেই জোর গলায় বললেন, কেন? ১১৫ টাকা রাখবেন, সেখানে ৮ টাকা বাড়িয়েছেন কেন? দোকানি এ সময় জানান, তাদের কিছু করার নেই। পাইকারি বাজারেদাম বাড়ানোয় তাদেরও বাড়াতে হয়েছে। তবুও ক্রেতা দাম বাড়ানোর বিষয়টি মানতে রাজি নন। তিনি ওই সময় মন্তব্য করেন,এভাবে সবকিছুর দাম বাড়াতেথাকলে তো আমাদের খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। না হয় বাচ্চাদের পড়াশোনা বাদ দিয়ে শুধু খাওনোর চিন্তাই করতে হবে। এই অভিব্যক্তি শুধু ওই মহিলাক্রেতারই নয়। পণ্যের দামের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে না পেরে বাজারে আসা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারে কেউ কেউ এমন মন্তব্য করেছেন। নিচতলায় সবজির একটি দোকানে কেনাকাটার সময় সরকারি এক কর্মকর্তার গাড়িচালক জয়নাল আবেদীন এ প্রতিবেদককে বলেন, এমন কোন পণ্য নেই যার দাম গত বছরের তুলনায় এবার কম। শীতের সবজিতেও কেজিতে অন্তত ৫ টাকা করে বাড়তি। এমনকি চালের দামও। কিন্তুবেতন এই এক বছরে এক পয়সাও বাড়েনি। ইস্টার্ন প্লাজার মোবাইল ব্যবসায়ী আরিফের মতে, জীবনযাত্রার ব্যয় প্রতিনিয়তই বাড়ছে।
ইস্টার্ন প্লাজার মোবাইল ব্যবসায়ী আরিফের মতে, জীবনযাত্রার ব্যয় প্রতিনিয়তই বাড়ছে। কিন্তু ওভাবে আয় না বাড়ায় তা ক্রমে অস্থিরতার দিকে এগুচ্ছে। অর্থনৈতিক এ সমস্যা অদূর ভবিষ্যতে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে তিনি মনে করেন। শুধু ক্রেতা না, বিক্রেতারাও জানালেন বাজারের করুণ অবস্থার কথা। তাদের ভাষায় ক্রমেই ব্যবসা মন্দার দিকে যাচ্ছে। খুব বেশি প্রয়োজনছাড়া কেনাকাটা হচ্ছে না। আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে বিক্রির পরিমাণ। ‘ছয় মাস হবে ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। আগের তুলনায় প্রায় ৬০ ভাগ বেচাকেনা কমে গেছে। আগে দোকানে চারজন কর্মচারী ছিল। বিক্রি কমে যাওয়ায় দু’জনকে ছুটি দিতে বাধ্য হয়েছি।’- বলেছেন নিউ মার্কেটের হাসিব গার্মেন্টস কালেকশনের মালিক হাবিবুর রহমান। সারা দেশের মতো অর্থনৈতিকদুরবস্থার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর সব চেয়ে ব্যস্ততম নিউ মার্কেট, চাঁদনীচকসহ আশপাশের মার্কেটগুলোতেও। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় মার্কেটগুলো দিন দিন ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ছে। এতে অধিকাংশ সময় তাদের অলস সময় কাটাতে হচ্ছে। চাঁদনীচকের সাদী টেক্সটাইলের মালিক নাঈমুল সাদী বলেন, আড়াই ঘণ্টা হলো বসে আছি। এখন পর্যন্ত কোন বেচাকেনা হয়নি। তিনি বলেন, পাঁচ মাসআগে যেখানে দিনে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করতাম। এখন ২০ হাজার টাকা বিক্রি করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এদিকে এলসি খোলার জটিলতা ও ডলারের দাম বাড়ায় বাধার মুখে পড়েছেন বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। চাঁদনীচকের বিজনেস ফোরামের প্রেসিডেন্ট আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুইবছর আগে শতকরা ১০ ভাগ টাকাদিয়ে এলসি খোলা যেতো। এখন নিয়ম করা হয়েছে ৮০ ভাগ টাকা। কিন্তু তার পরেও এলসি খোলার নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না- দাবি করেন তিনি। নিউ মার্কেটের শীতবস্ত্র ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন বলেন, সরকার শুল্কহার বাড়ানোয় পণ্যর দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, এমনিতেই নিত্যপণ্যের দাম বেশি। তার পরেও ১০ ভাগ হারে আমদানি শুল্ক বাড়ানোয় ব্যবসায় বেশি বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। কিন্তু এতে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেও লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে না। তিনি জানান, গত বছর যে পোশাক ৫শ’টাকা দিয়ে কিনেছি, এবছর সেটি ৬শ’ টাকায় কিনতে হচ্ছে। পণ্যের চাহিদা থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা দোকানে আসতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ব্যবসায়ীরা এখন চরম সঙ্কটের মধ্যে ব্যবসা করছে উল্লেখ করে নিউ সুপার মার্কেটের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন বলেন, পণ্যর দাম বাড়ায় এখনআর ব্যবসায়ীরা টাকা বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
ইতিমধ্যে নিউ মার্কেটের অনেক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ করে দিয়েছেন। রাজধানীর মৌচাক মার্কেট মধ্যবিত্তদের কেনাকাটার একটি পছন্দের জায়গা। তুলনামূলক কম দামেপণ্য কেনা যায় বলে এখানে নারী ক্রেতাদেরই ভিড় থাকেসব সময়। এখনও এখানে ক্রেতাদের ভিড় আছে ঠিকই, কিন্তু বিক্রি নেই আগের মতো। ব্যবসায়ীরা জানান, ক্রেতারা এখনও এক বছর আগের দামে পণ্য কিনতে চায়। কিন্তু পণ্যের দাম বাড়ায় ওই দামে বিক্রি সম্ভব হয় না। এজন্য অনেক ক্রেতা নির্ধারিত বাজেটে পছন্দের পণ্য কিনতে পারেননা। এ কারণে পণ্য কেনার চেয়ে দরদামেই ব্যস্ত থাকেন ক্রেতারা। এ মার্কেটের দ্বিতীয় তলার বিসমিল্লাহ স্টোরের স্বত্বাধিকারী আমিনুর রহমান জানান, এখন ক্রেতারা আগের চেয়ে দরদামকরে বেশি। গার্মেন্টস পণ্যের এ দোকানি জানান, প্রত্যেকটি কাপড়ে একশ’ থেকে দুইশ’ টাকা বেড়েছে গতএক বছরে। কিন্তু ক্রেতারাআগে যে দামে পণ্য কিনতো তাদিয়েই এখন কিনতে চায়। ফলে তারা এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরে বেড়ান। একই মার্কেটের ফারিশা ফ্যাশনের তাফরুজ্জামান বলেন, আগের চেয়ে এখন তুলনামুলক ক্রেতাও কম।
পড়তে থাকুন part 2
ইস্টার্ন প্লাজার মোবাইল ব্যবসায়ী আরিফের মতে, জীবনযাত্রার ব্যয় প্রতিনিয়তই বাড়ছে। কিন্তু ওভাবে আয় না বাড়ায় তা ক্রমে অস্থিরতার দিকে এগুচ্ছে। অর্থনৈতিক এ সমস্যা অদূর ভবিষ্যতে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে তিনি মনে করেন। শুধু ক্রেতা না, বিক্রেতারাও জানালেন বাজারের করুণ অবস্থার কথা। তাদের ভাষায় ক্রমেই ব্যবসা মন্দার দিকে যাচ্ছে। খুব বেশি প্রয়োজনছাড়া কেনাকাটা হচ্ছে না। আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে বিক্রির পরিমাণ। ‘ছয় মাস হবে ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। আগের তুলনায় প্রায় ৬০ ভাগ বেচাকেনা কমে গেছে। আগে দোকানে চারজন কর্মচারী ছিল। বিক্রি কমে যাওয়ায় দু’জনকে ছুটি দিতে বাধ্য হয়েছি।’- বলেছেন নিউ মার্কেটের হাসিব গার্মেন্টস কালেকশনের মালিক হাবিবুর রহমান। সারা দেশের মতো অর্থনৈতিকদুরবস্থার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর সব চেয়ে ব্যস্ততম নিউ মার্কেট, চাঁদনীচকসহ আশপাশের মার্কেটগুলোতেও। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় মার্কেটগুলো দিন দিন ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ছে। এতে অধিকাংশ সময় তাদের অলস সময় কাটাতে হচ্ছে। চাঁদনীচকের সাদী টেক্সটাইলের মালিক নাঈমুল সাদী বলেন, আড়াই ঘণ্টা হলো বসে আছি। এখন পর্যন্ত কোন বেচাকেনা হয়নি। তিনি বলেন, পাঁচ মাসআগে যেখানে দিনে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করতাম। এখন ২০ হাজার টাকা বিক্রি করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এদিকে এলসি খোলার জটিলতা ও ডলারের দাম বাড়ায় বাধার মুখে পড়েছেন বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। চাঁদনীচকের বিজনেস ফোরামের প্রেসিডেন্ট আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুইবছর আগে শতকরা ১০ ভাগ টাকাদিয়ে এলসি খোলা যেতো। এখন নিয়ম করা হয়েছে ৮০ ভাগ টাকা। কিন্তু তার পরেও এলসি খোলার নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না- দাবি করেন তিনি। নিউ মার্কেটের শীতবস্ত্র ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন বলেন, সরকার শুল্কহার বাড়ানোয় পণ্যর দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, এমনিতেই নিত্যপণ্যের দাম বেশি। তার পরেও ১০ ভাগ হারে আমদানি শুল্ক বাড়ানোয় ব্যবসায় বেশি বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। কিন্তু এতে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেও লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে না। তিনি জানান, গত বছর যে পোশাক ৫শ’টাকা দিয়ে কিনেছি, এবছর সেটি ৬শ’ টাকায় কিনতে হচ্ছে। পণ্যের চাহিদা থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা দোকানে আসতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ব্যবসায়ীরা এখন চরম সঙ্কটের মধ্যে ব্যবসা করছে উল্লেখ করে নিউ সুপার মার্কেটের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন বলেন, পণ্যর দাম বাড়ায় এখনআর ব্যবসায়ীরা টাকা বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
ইতিমধ্যে নিউ মার্কেটের অনেক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ করে দিয়েছেন। রাজধানীর মৌচাক মার্কেট মধ্যবিত্তদের কেনাকাটার একটি পছন্দের জায়গা। তুলনামূলক কম দামেপণ্য কেনা যায় বলে এখানে নারী ক্রেতাদেরই ভিড় থাকেসব সময়। এখনও এখানে ক্রেতাদের ভিড় আছে ঠিকই, কিন্তু বিক্রি নেই আগের মতো। ব্যবসায়ীরা জানান, ক্রেতারা এখনও এক বছর আগের দামে পণ্য কিনতে চায়। কিন্তু পণ্যের দাম বাড়ায় ওই দামে বিক্রি সম্ভব হয় না। এজন্য অনেক ক্রেতা নির্ধারিত বাজেটে পছন্দের পণ্য কিনতে পারেননা। এ কারণে পণ্য কেনার চেয়ে দরদামেই ব্যস্ত থাকেন ক্রেতারা। এ মার্কেটের দ্বিতীয় তলার বিসমিল্লাহ স্টোরের স্বত্বাধিকারী আমিনুর রহমান জানান, এখন ক্রেতারা আগের চেয়ে দরদামকরে বেশি। গার্মেন্টস পণ্যের এ দোকানি জানান, প্রত্যেকটি কাপড়ে একশ’ থেকে দুইশ’ টাকা বেড়েছে গতএক বছরে। কিন্তু ক্রেতারাআগে যে দামে পণ্য কিনতো তাদিয়েই এখন কিনতে চায়। ফলে তারা এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরে বেড়ান। একই মার্কেটের ফারিশা ফ্যাশনের তাফরুজ্জামান বলেন, আগের চেয়ে এখন তুলনামুলক ক্রেতাও কম।
পড়তে থাকুন part 2
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন