মানবের যৌনতা বৈচিত্র্যময় এবং জটিল ১
আমাদের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন ঘটে থাকে। আট বছর থেকে বিশ বছর পর্যন্তআমরা বালক এবং বালিকা থেকে পুরুষ এবং নারীতে পরিণত হই। এই পরিবর্তনের সময়কালে আমাদের শরীরে যেমন পরিবর্তন আসে, তেমনিপরিবর্তন আসে আমাদের অনুভবেও। আমাদের অনুভবেরপরিবর্তন আসে আমাদের নিজেদের সম্বন্ধে আমাদেরপরিবার ও অন্যদের সম্বন্ধেও।আমরা প্রস্তুত থাকি বা নাথাকি আমরা এসব পরিবর্তনের মধ্যে দিয়েই চলে আসি- আমরা এই পরিবর্তন চাই বা না চাই, তাতে কিছু এসে-যায় না। আমাদের মধ্যের এই পরিবর্তন সম্বন্ধে আমরা অবগত হই বা না হই তাও কোনো ব্যাপার নয়। অনেক সময় মনে হয় এই পরিবর্তনটাঅত্যন্ত দ্রুত গতিতে হয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় আমরা অনুভব করি যে এই পরিবর্তনখুব দ্রুতগতিতে হচ্ছে না। এটা প্রায়ই হয়ে থাকে দ্বিধাদ্বন্দ্বময়।
এসব ব্যক্তিগত উন্নতির মধ্য দিয়ে প্রায় প্রতিটি লোকের মধ্যে ভয়ভীতি জাগরিত হয় যে, সে যেন অন্য সকলের চেয়ে আলাদা নাহয়। লোকে যা বেশিরভাগ চায়তা হচ্ছে অন্য দশজনের মতোস্বাভাবিক হতে। কিন্তু বেশিরভাগ লোকই যা বোঝে নাতা হচ্ছে এই যে, এই পরিবর্তনগুলোই ঘটে থাকে এবং অনেক বয়স্ক মানুষই এটা এখনো বোঝে না যে এই আলাদা হয়ে বড় হওয়াটাই হচ্ছে স্বাভাবিক। এটা বিশেষ করে সত্যি বলে গণ্যহয়, যখন এ পরিবর্তনটা আমাদের যৌনতার ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়। দুজন লোক যেভাবে দেখে, চিন্তা করে বা অনুভব করে তাতে তারা দুজন সম্পূর্ণ এক হতে পারে না, না তাদের হওয়া উচিত। চিন্তা করুন এমন একটি পৃথিবীতে বসবাসের কথা যেখানে সকল মানুষ একইরকমের। এটা কতই না বোরিং লাগত। মানুষ প্রায়ই তাদের অজ্ঞানতাবশত পার্থক্য হওয়াটাকে সাধারণত ভয় পায়। আমরা যাকে বুঝি না তাকেই আমরা ভয় পাই। কিন্তু যখন আমরা বুঝতে পারি যে, এটা মানুষে মানুষে পার্থক্য আছে বলেই আমরা এতটা উত্তেজনাবোধ করি। আমাদেরসমাজের বৈচিত্র্যকে আমাদের উদযাপন করা উচিত।
যৌনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বৈচিত্র্যময় ও জটিল। অন্য কথায় বলা যায় যে, পৃথিবীতে এমন কোনো একক সঠিক পথ নেই যাতে নারী, পুরুষ অথবা শিশুরা একভাবে যৌনতা অনুভব করতে পারে। তৎপরিবর্তে মানুষের যৌনতা অত্যধিক বেশি আকারে বৈচিত্র্যময় হয়ে থাকে। একটি সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেয়াহলো যে, মানুষ কিভাবে ৪টিজরুরি পথে তাদের যৌনতার ক্ষেত্রে একে অন্যের কাছ থেকে আলাদা হয়- লিঙ্গের পরিচয়, যৌনতার পূর্বাভিমুখীনতা, যৌনতারস্বাদ এবং আত্মীয়তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।্য। এইপার্থক্যসমূহের অনেকগুলোই কমন এবং এর অনেকগুলোই হচ্ছে Less Common.
লিঙ্গের পরিচয়
মানুষের যৌনতায় লিঙ্গ হচ্ছে একটি প্রাথমিক পার্থক্য। লিঙ্গ বালক ও বালিকার মধ্যের শারীরিক পার্থক্যের অনেকটাই প্রদর্শন করে। নারী ও পুরুষের বেলায়ও তাই। লিঙ্গের পরিচয়-এর অর্থ হচ্ছে- একজন কতটা পরিমাণে স্ত্রীলিঙ্গ অথবা পুংলিঙ্গ হিসেবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলে বিবেচিত হয়।
স্ত্রী লিঙ্গের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আমাদের যে সমাজ নারী হয়ে একত্রিতভাবে বসবাস করে। পুং লিঙ্গের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সেই পথে ব্যবহার আচরণ করা যে আমাদের সমাজ যেভাবে পুরুষ হয়ে মিলেমিশে থাকে। কিন্তু যেভাবে আমাদের সব জিনিস আমাদের যৌনতার সাথে সম্পৃক্ত, লিঙ্গের পরিচয় ততটাই সহজ নয়। প্রত্যেক লোকই সেই পরিমাণে পৃথক, যে পরিমাণে সে সমাজের নারীত্বের এবং পুরুষত্বের আশা অনুরূপ বসবাস করে। প্রায় সব লোকের মধ্যেই কিছুটা নারী বৈশিষ্ট্য আছে এবং সব নারীর মধ্যে কিছুটা পুরুষ বৈশিষ্ট্য আছে। সুতরাং কিভাবে একজনের নারীত্বের বা পুরুষত্বেরধারণা উন্নতি লাভ করতে পারে প্রথম অবস্থাতে এবং কী কারণে এই ধারণাসমূহকে আমরা স্বীকার বা অস্বীকার করব?
জেন্ডার স্টেরিওটাইপের ৪টি মৌলিক উপাদান
১। ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য উদাহরণস্বরূপঃ আশা করা হয় নারীরা প্রায়ই অপ্রতিরোধী ও বাধ্যগত এবং পুরুষেরা প্রায়ই আত্মবিশ্বাসী ও আক্রমণাত্মক হয়ে থাকে।
২। গার্হস্থ্য আচরণ উদাহরণস্বরূপঃ শিশুদের পরিচর্যা নারীদের দ্বারাই প্রায়ই সবচেয়ে ভালোভাবে এবং পুরুষদের দ্বারা প্রায় সবচেয়ে ভালোভাবে সংশোধন করা হয় বলে বিবেচিত হয়।
৩। বৃত্তি বা পেশা উদাহরণস্বরূপঃ অধুনাকাল পর্যন্ত বেশিরভাগ সেবিকা এবং সচিব হয়েছেন নারী এবং বেশিরভাগ ডাক্তার ও নির্মাণকর্মী হয়েছে পুরুষ।
৪। শারীরিক গঠন উদাহরণস্বরূপঃ নারীদের আশা করা হয় তারা সাইজে খাটো, চেহারায় কমনীয় আর সেখানে পুরুষদের আশা করা হয় তারাহবে লম্বা এবং চওড়া কাঁধের।
লিঙ্গের বৈসাদৃশ্য
প্রায় লোকই তাদের লিঙ্গের ব্যবহার করে থাকে তাদের শারীরিক লিঙ্গের প্রতি সামাজিক আশা-আকাঙ্ক্ষাকে গ্রহণ করে। অন্যরা তাদের লিঙ্গের ব্যবহার করে থাকে অনেক কম সাধারণ উপায়ে। এখানে কিছু লিঙ্গের বৈসাদৃশ্যের উদাহরণ দেয়া হলো-
ক্রস ড্রেসারস
অনেক লোকই তাদের লিঙ্গের ভূমিকা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায়। এক লিঙ্গের লোকেরা এমন পোশাক প্রায়ই পরতে ভালোবাসে যাকে অন্য লিঙ্গের লোকেরা দেখে থাকে সমাজের সাধারণ রীতি-নীতির প্রতি উপহাস বা কৌতুক হিসেবে। অন্যদের জন্য ‘ক্রস ড্রেসিং’ একটা সুন্দর পেশা এনে দিতে পারে। অনেক‘ক্রস ড্রেসারস’ পেশাদারিচিত্তবিনোদক হিসেবে জীবন-যাপন করে। যেসব পুরুষ ক্রস ড্রেস পরে তাদের প্রায় উল্লেখ করা হয় নারীর ব্যক্তিত্বে অবতরণকারী বলে বা জোর করেনারী হওয়া বলে। যেসব নারীক্রস ড্রেস পরে তাদের বলাহয় পুরুষ চরিত্র অনুকরণকারী বা ড্রাগ কিং।
ট্রান্সভেসটিটিসঃ (বিপরীত লিঙ্গের পরিধেয় বস্ত্র পরিধানে অভ্যাস)
অনেক লোক অন্য লিঙ্গের পোশাক পরে তার কারণ এটা তাদের যৌন আনন্দ দেয়। এসবলোককেই সাধারণত ‘ট্রান্সভেসটিটিস’ বলা হয়। অনেক সময় তারা জনসাধারণের সামনেই ‘ক্রস ড্রেস’ পরে ঘুরে বেডায় আবার অনেক সময় শুধু ব্যক্তিগতভাবে পরে থাকে।উদাহরণস্বরূপ একজন ট্রান্সভেসটিটিস মানুষ একটি নারীর প্যান্ট পরতে পারে। মোজা পরতে পারে তারা ব্যবসায়িক পরিচ্ছদের নিচে। অনেক ট্রান্সভেসটিটিস হচ্ছে বিপরীত লিঙ্গের দিকে ধাবিত, যাদের সমলিঙ্গের মানুষের প্রতি কোনো প্রকার সামনা-সামনি হওয়ার আগ্রহ নেই।
আরো
পড়তে থাকুন মানবের যৌনতা বৈচিত্র্যময় এবং জটিল 2
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন