সেক্স সংক্রান্ত নানা তথ্য - পর্ব ৫
চতুর্থ পর্বের পর
ফ্রয়েডিয়ান তত্ত্ব ও আরও কিছু কথা রানি ভিক্টোরিয়ার শাসনামলে প্রচন্ড যৌন অবদমনকালে সিগমন্ড ফ্রয়েডের উদ্ভব ঘটেছিল। ফ্রয়েড যেসব তত্ত্ব দিয়েছিলেন তাতে যৌনতাকে অকল্পনীয় গুরুত্বারোপ করেছিলেন। তার উদ্ভাবিত সাইকোঅ্যানালাইসিস তত্ত্ব সারা বিশ্বজুড়ে আলোচিত-সমালোচিত ও প্রভাবিত করেছিল। সাইকোঅ্যানালাইসিসে মনোবিকাশের অনেক কিছুই পুরুষাঙ্গকে অবলম্বন করেআবর্তিত হতে দেখা গেছে। লঙ্গকেন্দ্রিক মনের উদ্বেগ, লিঙ্গ হারানোর ভয়, কেসট্রেশন অ্যাংজাইটি শিশুর মনস্তাত্ত্বিক বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এর ফলে শিশু সাবলীলভাবে এডিপাস স্তর অতিক্রম করে যেতে পারে। মনের পূর্ণতা আরও উৎকর্ষতা পায়। আর স্বাবলম্বী হয়ে আসে। যৌনাঙ্গের মাধ্যমে ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ। সহজভাষায় যৌনাঙ্গের অযৌন ব্যবহার। মজার ব্যাপার হলো বানর, শিম্পাঞ্জী, গরিলা-এ জাতীয় প্রাণীগুলোর মাঝে এমন অদ্ভুত যৌনাচরণটি দেখা যায়। তারা শত্রু পক্ষকে উদ্রিক্ত পুরুষাঙ্গের মাধ্যমে যেন ক্রোধের প্রকাশ ঘটায়। সভ্যতার বিবর্তনে এ আচরণ সেন্সরড হয়ে গেলেও এর বিক্ষিপ্ত প্রকাশ দেখা যায়। র্যাপিস্টরা তাদের ভিকটিম, পুরুষ অথবা মেয়ে যেই হোক, এ যৌন আচরণ দেখিয়ে থাকেন। কিছুটা পরোক্ষ ইঙ্গিতে এটি ঘটিয়ে থাকে প্রদর্শন কর্মীরা। এরা মূলত শিশু আর মহিলাদের উদ্রিক্ত পুরুষাঙ্গ দেখিয়ে থাকে। এ প্রদর্শন ঘটে আচমকা। এ কারণে সামনের জন হকচকিত অপ্রস্তুত হয়ে যায়। সাইকোঅ্যানালিসিস্টরা মূলত ফ্যালিক প্রাইড কথিত এ পরিভাষা ব্যবহার করে থাকেন। এটি শিশু পুত্রের মনে কতকটা অহংবোধের জন্ম দেয় সে নিজেকে মেয়েদের তুলনায় উৎকর্ষতর ভাবতে শেখে। মনের এ অনুভূতির কারণে শিশু অনেকটা সহজভাবে কেসট্রেশন অ্যাংজাইটি অতিক্রম করে যেতে পারে। একথা অনস্বীকার্য, পুরুষ মনের একটা সংবেদনশীল অংশ হলো যৌনতা। মনের একটা জায়গা জুড়ে থাকে পুরুষাঙ্গ আর তদসংশ্লিষ্ট নানা চিন্তা-চেতনা। এগুলো আমাদের আচরণকে প্রভাবিত করে অনেক মাত্রায়। শিশুর মনোযৌন বিকাশে জটিল পর্যায় যখন পুরুষ শিশু তার মাতার প্রতি এক ধরনেরতাড়নাবোধ করে। আর এতে পিতাকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে বসে। এ কারণে শিশুর মনে তার পিতার জন্য প্রবল ঈর্ষা, বৈরিতা, প্রতিদ্বন্দ্বী মনোবৃত্তির বিকাশ ঘটে। গ্রীক কবি হোমারের সে সোফো ক্লেস গল্পের নায়ক ওডিপাস তার পিতাকে খুন করে মাতাকে বিয়ে করে। এ হতে ওডিপাস কমপ্লেক্সের অবতারণা। কেসট্রেশন অ্যাংজাইটির কারণে শিশু এর বিকল্প সমাধানের প্রয়াস পায়। সে বুঝে নেয় যদি সে নিজেকে পিতার মতো করে গড়ে তুলতে পারে তাহলেআগামীতে মায়ের মতো কোনো মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে। মনোবিকাশের এ আঙ্গিকে আইডেন্টিফিকেশন বলা হয়। সমজাতীয় মনোজটিল দশা হলো মেয়েদের ইলেক্ট্রকমপ্লেক্স। শিশুকন্যার পিতার প্রতি অপ্রতিরোধ্য তাড়না থাকলেও মাতার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হবে এ ভয়ে সামনে এগোয় না, সে মনকে বোধ দেয়। যদি সে মায়ের মতো করে নিজেকে গড়ে তুলতেপারে তাহলে আগামীতে পিতার মতো কোনো পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। এটিই শিশু কন্যার মনের সাবলীল বিকাশ। এই পোষ্টটি লিখেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট মনোশিক্ষাবিদ, মনোবিজ্ঞানী ও মনোচিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ এইচ মোহাম্মদ ফিরোজ মানসিক রোগ শিক্ষা, গবেষণা, চিকিৎসা ও জনসচেতনতায় পথিকৃৎ পুরুষ-নারীর কাম ক্রীড়া
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন