উকাযের বাজারে যায়েদ - খাদীজার ঘরে যায়েদ

কোন মন্তব্য নেই
উকাযের বাজারে যায়েদ
আরবের প্রসিদ্ধ বাজার
উকাযে কৃতদাস হিসেবে বিক্রি করার
জন্য যায়েদকে আনা হলো। যায়েদ দেখল
সেখানে অসংখ্য মানুষের সমাগম।
কিন্তু তাদের মধ্যে মানবতা, দয়া-
মায়ার কোন কিছুই যায়েদ খুঁজে পায় না।
এই মানবতা বিবর্জিত মানুষগুলোর
দৃষ্টি কেবল যায়েদের উপরই বিদ্ধ
হতে থাকে। যায়েদের হৃষ্টপুষ্ট দেহ,
সৃষ্টিগত গঠন-সৌন্দর্য, সুঠাম দেহের
সজীবতা, তার দৈহিক শক্তির পরিমাণ
ইত্যাদি নিয়ে কতগুলো মানুষ আলোচনা-
পর্যালোচনা করতে থাকে,
যাতে উপযুক্ত মূল্য দিয়ে ক্রয়
করে যথেষ্ট কাজ
তাকে দিয়ে করিয়ে নেয়া যায়। তাকে দাস
হিসেবে কিনে নিতে ইচ্ছুক এমন
অনেককেই সে দেখতে পায়, কিন্তু তার
মনের চিৎকার ও ফরিয়াদ শোনার মত
কাউকে খুঁজে পায় না। এই বিশাল
বাজারে ক্রেতাদেরকে যায়েদের ব্যথিত
আত্মা যেন বার বার চিৎকার
করে বলছিল “তোমরা কারা? তোমাদের
তো চক্ষু আছে তাহলে তোমরা আমার
প্রতি করুণার দৃষ্টি নিক্ষেপ করছ
না কেন? তোমাদের তো কান আছে,
তাহলে তোমরা আমার ক্রন্দন
এবং ফরিয়াদ শ্রবণে বধির কেন?
তোমরা তো আমার পিতৃ তুল্য,
সুতরাং আমার এ অসহায় অবস্থার
প্রতি তোমাদের দয়া আসে না কেন?
তোমরা কি তাহলে ডাকাত দলের
সহযোগী? অত্যাচারী মাস্তানদের
পক্ষে? এরূপ জুলুম-নির্যাতন আর
পাপাচার কি তোমাদের শোভা পায়?
কিন্তু যায়েদের এ মর্মস্পর্শী-
বেদনা ঝরা হৃদয়ের ধ্বনি শোনার জন্য
কাউকে পাওয়া গেল না।
যারা স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর
আহ্বানে সাড়া দেয় না,
যারা নফরমানীতে কুণ্ঠাবোধ করে না,
তারা কি কোনদিন মজলুমের করুণ
ধ্বনি শুনে ভরাক্রান্ত হতে পারে?
পারে কি সত্য ও
ন্যায়নীতি অনুধাবনে সক্ষম হতে?
খাদীজার ঘরে যায়েদ
হযরত খাদীজা যায়েদের মাঝে এমন কিছু
গুণ ও বৈশিষ্ট্য দেখতে পান যা অন্য
দাসদের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই
তিনি যায়েদকেই হাদিয়া স্বরূপ গ্রহণ
করেন। যায়েদ তার প্রতি কৃত আচরণ
ও পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে অনেক
কিছুই ভাবতে শুরু করে। অল্প বয়সের
মধ্যেই সে বুঝতে সক্ষম হয় যে, কেউ
তার বেদনা ভরা হৃদয়ের
আহাজারী শ্রবণ না করলেও মহান
পালনকর্তা তার প্রার্থনা অবশ্যই
শুনেছেন। সে যেন পুনরায় মা জননীর
স্নেহের কোলে ফিরে এসেছে। হযরত
খাদীজার স্নেহ-মায়া, আদর-যত্ন
পুনরায় তার অন্তরে মানবতা ও
মনুষ্যত্বের ধারণা জাগিয়ে তোলে।
কিন্তু মাতা-পিতার বিরহ বেদনা এখনও
তার হৃদয়কে অশান্তই করে রাখে।
এদিকে স্বয়ং হযরত খাদীজা ছিলেন
বিধবা, তিনি একাকী জীবন-যাপন
করছিলেন। মক্কার সম্ভ্রান্ত
পরিবারের যুবকদের পক্ষ থেকে বিবাহ
প্রস্তাব আসতে থাকে, কিন্তু হযরত
খাদিজা কোন প্রস্তাবেই সম্মত
হতে পারেন নি। বিত্তশালী গোত্রীয়
প্রধানদের পক্ষ থেকেও প্রস্তাব পেশ
করা হয়েছে, কিন্তু কিছুতেই
তিনি সম্মতি জানান নি। তার অন্তর
এমন একজনের সন্ধানী ছিল,
যে অর্থশালী বা গোত্রের বাদশাহ
না হলেও হবে অন্তরের বাদশাহ।
উত্তম চরিত্র ও আদর্শের সম্রাট।
হযরত খাদীজা এমনই একজন মহান
যুবকের অপেক্ষা করছিলেন।


শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব ।প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

Next রাসূলের পাশে যায়েদ - যায়েদের ইসলাম গ্রহণ

কোন মন্তব্য নেই :