রাসূলের পাশে যায়েদ - যায়েদের ইসলাম গ্রহণ

কোন মন্তব্য নেই
রাসূলের পাশে যায়েদ
অপেক্ষার প্রহর ফুরিয়ে গেল এক
সময়। রাসূলে কারীমের সাথে হযরত
খাদীজার বিবাহ সম্পন্ন হলো। হযরত
খাদীজার স্বামী একজন মহান যুবক,
যাকে সমগ্র মক্কাবাসী আমীন
এবং সত্যবাদী খেতাবে ভূষিত করেছে।
বিবাহের পর স্বামীর সহযোগিতা ও
সেবার জন্য খাদীজা যায়েদকে স্বামীর
কাছে হাদিয়া পেশ করেন। এ
সুযোগে যায়েদও এই মহান যুবকের সহচর
হতে সক্ষম হয়। কালে খাদীজার এ যুবক
স্বামী ওহীপ্রাপ্ত হয়ে বিশ্ব রাসূলের
পদমর্যাদা লাভ করবে তা হয়তো যায়েদ
কখনো ভাবতেও পারে নাই, কিন্তু যুবক
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরশে যায়েদ
এক নতুন জীবন লাভ করে। যায়েদ
ভাবে, আমার মনীবা আমাকে তার
স্বামী হযরত মুহাম্মদকে দিয়ে আমার
কল্যাণই করেছেন। কী মহান উদার এক
ব্যক্তির সান্নিধ্য আমি লাভ করেছি।
ইনি কি কোন সাধারণ মানুষ?
যে দূর্বলের উপর প্রভুত্ব কায়েম
করে না, বরং আমানতদার সুলভ আচরণ
করে। যখন কারো প্রতি দৃষ্টি আরোপ
করে তখন তার চাহনিতে দয়া-মায়া,
মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও প্রেম
প্রকাশ পায়, যখন কথা বলে তখন তার
কথায় মানুষের ভরাক্রান্ত-ব্যথিত
হৃদয় প্রশান্ত সাগরে পরিণত হয়।
সে যখন মৃদু হাসে তখন জ্বলন্ত
অন্তর শীতল হয়ে পড়ে, দুঃখ-
বেদনা দূরীভুত হয়ে যায়। যখন
কারো আবেদন-নিবেদন শোনে, তখন
তা পূরণের জন্য এতটাই উদগ্রীব
হয়ে উঠে যে, যেন সে নিজেই
আবেদনকারী হয়ে যায়। উপরন্তু যায়েদ
তার হৃদয়ে পিতার স্নেহ ও মা জননীর
মমতার সন্ধান পায়। তার চেয়েও
অধিক কোন কিছু সে এখানে খুঁজে পায়।
এই যুবকের সহচর্যে যায়েদের
জীবনে নতুন বিপ্লব শুরু হয়। সে তার
মাতা-পিতার বিরহ-
বেদনা ভুলে যেতে শুরু করে। উকাযের
মার্কেটে মানুষরূপী পশুদের
আচরণে যে হতাশার
অনুভূতি যায়েদকে স্তম্ভিত ও বিমূঢ়
করে দিয়েছিলো, এখন যেন যায়েদ
তা সম্পূর্ণই ভুলে গিয়েছে। উকাযের
মার্কেটে যায়েদ নিলামে বিক্রি হয়েছিল,
এখনও যে যুবক মনে-প্রাণে মুহাম্মদের
কাছে বিক্রি হয়ে আছে, কিন্তু উভয়
বিক্রির মধ্যে যে ব্যবধান রয়েছে,
তা যায়েদ অন্তরাত্মা দিয়ে অনুভব
করে। হযরত মুহাম্মদের এ মানবতা ও
উদারতার কারণ কি? এই অজানা রহস্য
যায়েদকে বিচলিত করে তোলে।
যায়েদের ইসলাম গ্রহণ
রহস্য ও তত্ত্ব উদঘাটনের জন্য
যায়েদকে আর অধিক কাল
অপেক্ষা করতে হয়নি। হযরত মুহাম্মদ
হেরা পর্বতে নির্জনতা অবলম্বন শুরু
করেন। হঠাৎ একদিন আল্লাহর
ওহী নিয়ে এসে জিবরীল
তাকে বিশ্বাবসীর প্রতি আল্লাহ
তা’আলার পক্ষ থেকে রাসূল হওয়ার
সুসংবাদ শোনান। হযরত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখন
বিশ্বনবী, শ্রেষ্ঠ রাসূল। যায়েদ এবার
সবকিছুই বুঝতে সক্ষম হলো। তাই
সে দেরী করা সমীচীন
মনে না করে রাসূলের প্রতি ঈমান
স্থাপন করে সর্বপ্রথম ঈমান
লাভে ধন্য হওয়ার মর্যাদা অর্জন
করেন। বিশ্ব রাসূল প্রায়ই বলতেন,
“কৃতদাসদের মধ্যে যুবক যায়েদই
সর্বপ্রথম আমর প্রতি ঈমান স্থাপন
করেছে।”


শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব ।প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

Next যায়েদের অনুসন্ধান - যায়েদের সন্ধান লাভ

কোন মন্তব্য নেই :