মুতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ - যায়েদের শাহাদাত বরণ

কোন মন্তব্য নেই
মুতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ
যুবক যায়েদের ঈমানী শক্তি, রাসূলের
প্রতি তার আকর্ষণ সর্বজন স্বীকৃত
বিষয় ছিল। তার বীরত্বের
বিষয়ে বিশ্ব রাসূল যথার্থভাবেই
অবহিত ছিলেন। কারাদাহ, জামূম, ঈছ,
তর, হিসমী,
উম্মে ফিরকা ইত্যাদি যুদ্ধে যুবক
যায়েদ নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং বিজয়
অর্জন করেছেন। কিন্তু আসন্ন যুদ্ধ
ছিল একটু ভিন্ন ধরণের। কারণ,
হারিসা ইবনে উমাইর রাসূলের
দাওয়াতী পত্র নিয়ে বছরার অধিপতির
কাছে পৌঁছার পূর্বে জর্ডানের
মুতা নামক স্থানে গাসোসিনার
অধিনায়ক শুরাহবিলের হাতে শহীদ হন।
তাকে জিঞ্জিরে আবদ্ধ করে নির্মম
নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। এ
কারণেই মুতা যুদ্ধের সূচনা হয়। এ
যুদ্ধে সেনাপতির দায়িত্ব মুসলিম
পক্ষে কাকে দেয়া যায় এটাই ছিল
চিন্তার বিষয়। কারণ, পরাশক্তি রোম
সম্রাট এক লক্ষ সৈন্য
নিয়ে মুকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
তাদের সহায়তার জন্য আরবের
মুশরিকরা আরো এক লক্ষ সৈন্য
পাঠিয়েছে। সর্বমোট দুই লক্ষ
শত্রুবাহিনীর মুকাবিলার জন্য
কাকে আমীর নিযুক্ত করা যায় এ
নিয়ে রাসূলে পাক গভীরভাবে ভাবছেন।
খানিক বাদে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন হাজার
মুসলিম সৈন্যের অভিযানে আমীর
হিসেবে যুবক যায়েদের নাম
ঘোষণা করেন। হযরত জাফর বললেন,
ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার ধারণা ছিল যে,
এই যুদ্ধ আঞ্জাম দেয়ার জন্য
আপনি আমাকে নিয়োজিত করবেন,
যায়েদকে নয়। রাসূলে পাক
উত্তরে বললেন, “চুপ থাক! আল্লাহর
দরবারে তার কি মকাম তা তোমার
জানা নাই।” যুবক যায়েদের মর্যাদা ও
মহত্ত্ব সম্পর্কে রাসূল খুব
ভালো করেই অবগত ছিলেন। আর
ছিলেন বলেই তিনি হযরত
জাফরকে এভাবে সতর্ক করেন।
অতঃপর রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সৈনিকদের
নির্দেশ দিলেন- যায়েদ যদি শহীদ
হয়ে যায় তাহলে জাফর
ইবনে আবী তালিব ঝাণ্ডা হাতে নিবে।
আর জাফর শহীদ হয়ে গেলে আব্দুল্লাহ
ইবনে রাওয়াহা ঝাণ্ডা হাতে নিবে।
যদি সেও শহীদ হয়ে যায় তাহলে মুসলিম
সৈনিকগণ তাদের
মধ্যে থেকে একজনকে আমীর নিযুক্ত
করে তার হাতে ঝাণ্ডা দিয়ে যুদ্ধ
পরিচালনা করবে। রাসূলে পাকের এই
নির্দেশমালা ছিল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
এই তাৎপর্যপূর্ণ নির্দেশ শুনে যুবক
যায়েদ তার শাহাদাত বরণের
বিষয়টি অনুমান করে নিতে সক্ষম হন।
কিন্তু তিনি বিচলিত নন।
তবে প্রাণাধিক প্রিয় নবীর সান্নিধ্য
থেকে চিরতরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার
বিষয়টি ছিল যায়েদের জন্য অসহনীয়
ব্যাপার।
যায়েদের শাহাদাত বরণ
হযরত যায়েদ রাসূলের দোয়া নিয়ে মুতার
প্রান্তে মাত্র তিন হাজার সৈন্য সহ
উপস্থিত হন। শত্র“দের দু’লক্ষ
সৈন্যের সমাবেশ প্রত্যক্ষ করে প্রথম
পর্যায়ে মুসলিম সৈনিকদের
মধ্যে সামান্য ইতস্ততবোধ কাজ
করলেও পরিশেষে যুদ্ধ অভিযান শুরু
হয়। যুবক যায়েদ নজীরবিহীন অবদান
রাখেন এ যুদ্ধে। শত শত শত্র“
সৈন্যকে পরাস্ত করে যায়েদ ঈমানের
ঝাণ্ডা উড্ডীন রাখেন। তবে এখানেও
আল্লাহ পাকের সিদ্ধান্তই কার্যকর
হয়। যুদ্ধের এক পর্যায়ে রাসূলের
প্রাণপ্রিয় সাহাবী ও সহচর যায়েদ
শাহাদাত বরণ করেন। এমনিভাবে এ
যুদ্ধে পর্যায়ক্রমে হযরত জাফর ও
আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা শাহাদাত
বরণ করেন। অতঃপর মহান বীর হযরত
খালিদ ইবনে ওলীদের
নেতৃত্বে মুসলমানরা যুদ্ধ
চালিয়ে দু’লক্ষ কাফের সৈনিকদের
পরাজিত করেন। মুসলমানদের অর্জিত
হয় পূর্ণ বিজয়।


শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব ।প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন
Next শাহাদাতের প্রতিক্রিয়া - স্মরণীয় আদর্শ

কোন মন্তব্য নেই :