ইবাদত-রিয়াজত - দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য islam130
ইবাদত-রিয়াজতমানুষকে আল্লাহপাক অগণিত নেয়াতম
দান করেছেন। তাই নেয়ামত
যাতে দীর্ঘস্থায়ী হয়
এবং আরো বৃদ্ধি পায় সেজন্য
তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের প্রতি দিক-
নির্দেশনা করেছেন।
পক্ষান্তরে অকৃতজ্ঞদের
প্রতি মাহরূমী-বঞ্চনা ও শাস্তির
সতর্কবাণী প্রচার করেছেন।
কৃতজ্ঞতার মূলসূত্রই হচ্ছে, আল্লাহর
প্রতি ঈমান। ঈমান
হচ্ছে সর্বোপরি বৃহত্তম নেয়ামত। এ
নেয়ামতের হেফাজত এবং তা বৃদ্ধি ও
শক্তিশালী করার জন্য আল্লাহপাক
দেহকে সহায়ক করেছেন।
দেহকে শক্তিশালী করার জন্য পানাহার
সামগ্রী এবং রকমারী খাদ্যদ্রব্যের
ব্যবস্থা করেছেন। মানুষ তা ভক্ষণ
করে দেহকে শক্তিশালী করে থাকে।
কিন্তু মানুষের জীবনে দেহই যে মূলবস্তু
নয়, তা বুঝা যায় মৃত্যুর ঘটনায়।
আত্মার সহচর্যে দেহ সক্রিয় থাকে,
আর আত্মা বের হয়ে গেলে মৃত্যুর
ঘোষণা দেয়া হয়। অথচ দেহ তখনও
বিদ্যমান। এখান থেকেই বুঝা যায় যে,
মূল বস্তু দেহ নয়, বরং আত্মা।
আত্মার কারণেই দেহ ক্রিয়াশীল হয়।
এই আত্মাকে পরিপুষ্ট ও
শক্তিশালী করার জন্যও আল্লাহপাক
ব্যবস্থা করেছেন। ঐ ব্যবস্থার নামই
হচ্ছে ইবাদত-রিয়াজত। আত্মার
মধ্যে রকমারী পুষ্টিকর ভিটামিন
পরিবেশনের প্রয়োজনে নফল, সুন্নাত,
ওয়াজিব ও ফরজসহ বিভিন্ন ধরণের
ইবাদত-রিয়াজতের
ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যারা এই তত্ত্ব
ও রহস্য অনুধাবনে অক্ষম,
তারা দেহকে নিয়েই ব্যস্ত থাকে।
আত্মার ব্যাপারে তারা থাকে উদাসীন।
আর যারা এ সত্য অনুধাবনে সক্ষম হয়
তারা দেহের তুলনায় আত্মার
প্রতি অধিক গুরুত্ব আরোপ
করে থাকে। আত্মার পরিশুদ্ধির
তাগিদে যারা অধিক হারে ইবাদত-
রিয়াজত করে, তারা এ কারণেই
করে থাকে। কনকনে শীতের
ভিতরে অজু-গোসল ও রাতের
আঁধারে তাজাজ্জুদ আদায়ে এ
অনুভূতি তাদের সহায়ক হয়। এই
অনুভূতিই বাদশাহ হারুনের
পূত্রকে ইবাদত-রিয়াজতে অনুপ্রাণিত
করত।
দিনমজুরী করে তাকে জীবিকা নির্বাহ
করতে হবে, কিন্তু সে মুহূর্তেও
স্থায়ী জীবনের স্থায়ী উপকরণ
সংগ্রহের জন্য মালিকের কাছে নামায
আদায়ের শর্ত আরোপ করত। শুধুমাত্র
সপ্তাহে একদিন বস্তুগত জীবনের
উপকরণের জন্য পরিশ্রমে অভ্যস্ত
ছিল, আর অবশিষ্ট্য দিন-রাত আল্লাহ
পাকের ইবাদত-রিয়াজত, তেলাওয়াত ও
আল্লাহর তাসবীহ-তাহলীল ও
জিকিরে নিমগ্ন থাকতো। কারণ
সে জানত, প্রকৃতপক্ষে স্থায়ী জীবন
হচ্ছে পরকালের জীবন। সুতরাং অনন্ত
জীবনের জন্য কিছু করা প্রয়োজন।
বরং আখেরাতের জন্য অগ্রাধিকারের
ভিত্তিতে প্রস্তুতি গ্রহণ
করা প্রয়োজন। আর বস্তু জগতের
জন্য কেবল পথিকের প্রয়োজনীয়
সম্বলই যথেষ্ট।
দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য
আখেরাতের প্রতি অনুরাগ, মৃত্যুর
প্রস্তুতি গ্রহণ এবং দুনিয়ার
প্রাতি বৈরাগ্য সাফল্যের পূর্ব লক্ষণ।
হযরত ইবনে মাসউদের
হাদীসে রাসূলে পাক (সাঃ) স্বয়ং এরূপ
উক্তি করেছেন। বাদশাহ হারুনের পুত্র
যুবকের জীবনে এর
পুরোপুরি বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল।
আখেরাতের প্রতি অনুরাগ তার
শাহী তখত-তাজ পরিত্যাগ
করতে সাহায্যকারী হয়। রাজকীয়
বিলাসিতার
পরিবর্তে দিনমজুরী করে জীবন
যাপনে সহায়ক হয়। দুনিয়া বিরাগের
মন-মানসিকতা ও হিম্মতের
ফলে সে নিজেকে একজন পথিক
মনে করতো। একটি থলী, এক জিলদ
কুরআন শরীফ ছিল তার সহায়-সম্পদ।
জঙ্গল আর মরুভূমি ছিল তার
বাসস্থান, জমাট মাটি ছিল তার বিছানা,
আর ইট ছিল তার তাকিয়া-বালিশ,
পড়নের ছিড়া-ফাটা কাপড় ছিল তার
পোষাক-পরিচ্ছদ। মা জননীর মূল্যবান
আংটি অতি সতর্কতার সাথে সংরক্ষণ
করে সে ফেরত দেয়ার অছিয়ত
করে যায়। পুরোনো কাপড়ে কাফন
পরিয়ে দাফন করার জন্য পথিক
বন্ধুকে নছীহত করে। আর তার
ব্যবহৃত একটি লোটা ও লুঙ্গি কবর
খননকারীকে উপহার দেয়ার শেষ
অছিয়ত করে চিরকালের
আবাসস্থলে সে চলে যায়।
আছে কি এমন কোন যুবক, যে এই
যুবকের আদর্শ সমুন্নত রেখে যুব
সমাজে ইতিহাসকে আলোকিত ও
চমৎকৃত করবে।
শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব ।প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন
Next Post কুরআনের আলোকে আদর্শ যুবক
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন