আবু আমেরের স্বপ্ন - স্বপ্নের হাকীকত islam131
আবু আমেরের স্বপ্নযিয়ারতের
পরবর্তী রাত্রে আমি স্বপ্নে নূরের
একটি বিরাট গম্বুজ দেখতে পাই।
গম্বুজের উপর কেবল নূর আর নূর।
সেই নূরে উপবিষ্ট বাদশাহ হারুনের সেই
যুবক পুত্র আমাকে সম্বোধন
করে বলছেঃ হে আবু আমের!
তুমি আমাকে অতি উত্তমরূপে দাফন-
কাফন করেছ। আমার অছীয়ত সমূহ
যথাযথভাবে পূরণ করেছ এবং আমার
আমানত যথাস্থলে পৌঁছিয়েছ।
আল্লাহপাক তোমাকে উত্তম প্রতিদান
দান করে সৌভাগ্যবান করুন।
আমি যুবককে জিজ্ঞাসা করলাম,
হে আমার প্রাণপ্রিয় বন্ধু!
আল্লাহপাক তোমার সাথে কিরূপ আচরণ
করেছেন? সে বললঃ “হে আবু আমের!
আমি যে মাওলার
চরণে এসেছি তিনি তো পরম দয়ালু ও
করুণাময়। তিনি আমার
প্রতি অতি সন্তুষ্ট।
তিনি আমাকে যা দান করেছেন, তা চোখ
কখনো দেখেনি, কান
কখনো শুনেনি এবং অন্তরও অনুভব
করেনি। আমি তোমাকে আল্লাহর কসম
করে বলছি, যে কেউ দুনিয়া থেকে আমার
মত এখানে চলে আসবে, তার জন্যও
রয়েছে ঐ সম্মান ও মর্যাদা-
যা আমি লাভ করেছি।”
আদর্শ সন্তান
বাদশাহ হারুনকে তার পুত্র
সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন
, “আমি বাদশাহ হওয়ার পূর্বে তার
জন্ম হয়। অতি উত্তমরূপে তার
লালন-পালন করা হয়। পবিত্র কুরআন
ও দ্বীনী শিক্ষায় সে শিক্ষিত হয়।
ফলে বস্তু জগতের প্রতি তার
আকর্ষণ ছিল না মোটেই।
পরবর্তী সময়ে আমার উপর রাষ্ট্রীয়
দায়িত্ব ন্যাস্ত হয়, কিন্তু
সেদিকে তার মোটেই ভ্রুক্ষেপ ছিল না।
সে কোন দিন আনন্দ-উল্লাসের
প্রতি আকৃষ্ট হয় নাই। আমার
থেকে পৃথক হয়ে যাওয়ার সময়
আমি তার মা-জননীকে মূল্যবান
আংটিটি তাকে দিতে বলি। সে তাও খরচ
করে নাই, বরং ফেরত দিয়ে মৃত্যুবরণ
করেছে। সে তার মা-জননীর প্রতি ছিল
অত্যন্ত আনুগত্যশীল।
স্বপ্নের হাকীকত
আবু আমের যুবকটিকে নূরের
গম্বুজে উপবিষ্ট দেখেছে। যুবক তার
প্রতি আল্লাহ পাকের করুণা ও দয়ার
কথা তাকে অবহিত করেছে। যারা তার
মত জীবন যাপন করবে,
পরকালে রয়েছে তাদের জন্য সম্মান-
মর্যাদা ও মহান আল্লাহপাকের
নৈকট্য- যুবক তার বক্তব্যে এই
সুসংবাদও প্রদান করেছেন। রাসূলের
স্বপ্ন ব্যাতীত আর কারও স্বপ্ন
অকাট্য প্রমাণ নয়, একথা সত্য।
কিন্তু মুসলমানের স্বপ্ন যে মিথ্যা নয়,
একথাও পবিত্র হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।
মুসলিম শরীফের হাদীসে রাসূলে পাক
(সাঃ) ইরশাদ করেন ঃ মুমিনের স্বপ্ন
অধিকাংশই সত্য হয়। অপর এক
হাদীসে বলা হয়েছে যে, নবুওয়াতের দ্বার
রুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই আর নবীও
আসবে না, ওহীও আসবে না।
তবে সুসংবাদ হিসেবে মুমিন-মুসলিমগণ
স্বপ্ন দেখবে। স্বপ্নের
মাধ্যমে যা কিছু প্রাপ্ত হবে,
যদি সেসব শরীয়তের মূলধারা, অকাট্য
প্রমাণাদি ও হুকুম-আহকামের
প্রতিকূলে না হয়,
তাহলে সেগুলোকে সুসংবাদ এবং সতর্ক
সংকেত হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে।
এ কারণেই মুসলিম মনীষীগণ স্বপ্নের
গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। পবিত্র কুরআন ও
হাদীসে এ বিষয়ে যথেষ্ট
প্রমাণাদি বিদ্যমান রয়েছে।
বাদশাহ হারুনের পুত্র এই যুবকের
জীবনাদর্শ ও তার
অবস্থা পর্যালোচনা করলে যে সমস্ত
গুণাবলী প্রকাশ পায়, পবিত্র কুরআন
ও হাদীসের আলোকে এই সমস্ত
গুণাবলীর প্রতিদানের সাথে আবু
আমেরের স্বপ্নের যথেষ্ট মিল
পাওয়া যায়।
শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব ।প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন
Next Post ইবাদত-রিয়াজত - দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন