আখেরাতের বিশ্বাস - ভয় এবং আশা

কোন মন্তব্য নেই
আখেরাতের বিশ্বাস
মানুষ স্বেচ্ছায়
দুনিয়াতে আসেনি এবং স্বেচ্ছায়
দুনিয়া থেকে যেতেও পারে না। এর জন্য
রয়েছে অলংঘনীয় খোদায়ী বিধান।
তবে একদিন মানুষকে এই দুনিয়ার
স্বপ্নপুরী ত্যাগ করতে হবে এবং যার
হুকুমে এসেছে তার হুকুমেই
তাকে ফিরে যেতে হবে। দুনিয়ার এ জীবন
নেহায়েত ক্ষণস্থায়ী। এই ধ্র“ব সত্য
অনুধাবনে যারা সমর্থ হয় তারা বস্তু
জড়তার প্রতারণা থেকে নিজেকে মুক্ত
রাখতে সক্ষম হয়। সক্ষম হয়
আখেরাতকে প্রাধান্য
দিতে এবং আখেরাতের জন্য
প্রস্তুতি গ্রহণ করতে।
সে মৃত্যুকে ভয় করে না,
বরং মৃত্যুকে শান্তি ও মুক্তি লাভের
উপায় মনে করে। সে মনে করে মৃত্যু
হলেই সে জড়বস্তুর পরিবেশ মুক্ত
হয়ে নতুন পরিবেশ লাভে ধন্য হবে।
ধন্য হবে জান্নাত লাভে, আল্লাহর
সান্নিধ্য লাভে। যার নির্দেশে এবং যার
নিকট থেকে সে এসেছে, সে তার
নির্দেশের অপেক্ষায় থাকে পুণরায় তার
নিকট ফিরে যাওয়ার জন্য। এর বাস্তুব
নিদর্শন ছিল হাজী যুবকের জীবন।
ইবনে দীনার
যুবকটিকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে,
“তুমি কোথা হতে এসেছ এবং কোথায়
যাচ্ছ?” উত্তরে যুবক
বলেছিলঃ “আল্লাহর দরবার
থেকে এসেছি এবং আল্লাহর
দরবারে ফিরে যাওয়ার
পথে রওনা হয়েছি।” আহ!
কতইনা হৃদয়গ্রাহী কথা! কী অপূর্ব
বিশ্বাস, কি প্রেমের অভিব্যক্তি! তার
এই উক্তি বিশ্ব মানবতার
ইতিহাসে উজ্জ্বল আদর্শ
হয়ে আছে এবং থাকবে। পবিত্র স্থান
মিনাতে মৃত্যুবরণ করে সে যার কাছ
থেকে এসেছিল তার কাছেই ফিরে গেল।
তার এই উজ্জ্বল জীবনাদর্শ হয়ে রইল
বিশ্ব যুব সমাজের জন্য স্মরণীয়
পাথেয়।
ভয় এবং আশা
মানুষ দুটি কারণে অপরাধমুক্ত
থেকে সৎ পরায়ণ হয়।
ক) ক্ষতিকর ও বিপদজনক কাজের
প্রতি মানুষের অন্তরে ভয়-
ভীতি সঞ্চার হয়ে থাকে। আর এই ভয়
থেকে মুক্তির পথ বেছে নেয়ার তাগিদেই
সে সততা অবলম্বন করে।
খ) লাভ ও সফলতার কামনায় মানুষ সৎ
কাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়
এবং অপরাধমুক্ত থাকার
প্রতি ব্রতী হয়। এই বিধান কেবল
পার্থিব ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়,
ধর্মীয় এবং আখেরাতের ব্যাপারেও
সমানভাবে ক্রিয়াশীল। বস্তুতঃ যার
মনে আল্লাহর ও তার আযাবের ভয়
নেই, যার মনে আল্লাহর নেয়ামতের
আশা-ভরসা নেই সে হয়ে ওঠে উদাসীন-
অপরাধপ্রবণ। সে পাপাচারিতায় লিপ্ত
হতে কুন্ঠাবোধ করে না।
অপরপক্ষে যার অন্তরে আল্লাহ ও
তার আযাবের ভয় বিদ্যমান, যার
অন্তরে আল্লাহ ও তার নেয়ামতের
প্রতি কৃতজ্ঞতা ও আশা-ভরসা আছে,
সে হয় সজাগ দৃষ্টির অধিকারী-
দূরদর্শী, সৎ ও দৃঢ় প্রত্যয়ের
অধিকারী। সে তার অভীষ্ট লক্ষ্য
অর্জনে হয় অত্যন্ত উদ্যোগী।
হাজী যুবক এরই নজীর স্থাপনে সক্ষম
হয়েছিল। আখেরাতের হিসাবের
ভয়ে সে একটি কুর্তা পর্যন্ত
হাদিয়া গ্রহণে অসম্মত হয়। হালাল ও
বৈধ জিনিসের হিসাব দেয়ার ভয়ে তার
অন্তর প্রকম্পিত থাকে, আখেরাতের
পোষাক-পরিচ্ছদ লাভে ধন্য হওয়ার
আশায় যে খালি গায়ে হাজ্বের
সফরে বের হয়, তার অন্তরের
অবস্থা কত উন্নত! কিসের
ভয়ে এবং কিসের আশা-ভরসায়
সে নিজেকে মোহমুক্ত করতে সক্ষম
হয়েছিল, আজকের যুবক সমাজ
কি তা তলিয়ে দেখবে? সমুন্নত
রাখতে উদ্যোগী হবে কি এই
অবিস্মরণীয় মুসলিম যুবকের
সোনালী ইতিহাস?


শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব ।প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

Next post নেক আমলের তাওফীক - অন্তদৃষ্টির গুরুত্ব

কোন মন্তব্য নেই :