দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য - অহমিকা অন্তরের ব্যধি

কোন মন্তব্য নেই
জড় বস্তুর আকর্ষণ
মানুষকে আখেরাতের প্রতি উদাসীন
করে তোলে, যার ফলে মানুষ
পাপাচারিতায় লিপ্ত
হয়ে জাহান্নামী হয়। এজন্য
হাদীসে পাকে মৃত্যুর কথা অধিকা স্মরণ
করতে বলা হয়েছে। কবর যিয়ারতের
নির্দেশ একই উদ্দেশ্যে দেয়া হয়েছে,
যাতে মানুষ কবর হাশরের হিসাব-
নিকাশ, পুলছিরাত ও জাহান্নামের
কথা চিন্তা করে অপরাধমুক্ত
থাকতে পারে। অপরপক্ষে আখিরাতের
শান্তি চিরস্থায়ী জান্নাত। জান্নাতের
অবর্ণনীয় সুখ-শান্তির প্রত্যাশায়
মানুষ যাতে নেক আমলের
প্রতি ব্রতী হয়Ñ পবিত্র কুরআন ও
হাদীসে এদিকেও যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ
করা হয়েছে। মানুষ উভয়
বিষয়ে গভীরভাবে মনোনিবেশ
করলে বস্তুর প্রতি তার আকর্ষণ
কমে যায় এবং আখেরাতের প্রস্তুতির
প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পায়। এই মন-
মানসিকতাই এই
যুবককে দুনিয়া বিরাগী করে তুলেছিল।
তাই সে ইবনে দীনারের
দেয়া একটি কুর্তার হাদিয়া গ্রহণ
করে অধিক হিসাবের ভার
কাঁধে নিতে সম্মত হয়নি। হারাম
উপার্জনের পরিণতি ও আযাবের
ভয়ে সে ছিল অত্যন্ত সতর্ক। তাই
পোষাক-পরিচ্ছদ ও জীবন-উপকরণের
অভাব-অনটন তাকে কোন দিন কাতর
করতে পারে নি। অর্থের
অভাবে সে হয়ত হজ্জ্বের কুরবানীর
জন্য জানোয়ার পেশ করতে পারে নি,
কিন্তু কুরবানীর মূল উদ্দেশ্য যা,
তা পেশ করতে সক্ষম হয়েছে। সে তার
নিজের জীবনকে কুরবানীর জন্য পেশ
করে মুনিবের প্রতি গোলামের
আনুগত্যের অপূর্ব নিদর্শন স্থাপন
করেছে। এর চেয়ে অধিক সফলতা আর
কি হতে পারে?
অহমিকা অন্তরের ব্যধি
অহংকার ও অহমিকা সমস্ত আত্মিক
ব্যধির মূল সূত্র। শয়তান অহমিকার
কারণেই শয়তান হয়েছে; সে নিজেও
জাহান্নামী হয়েছে এবং অসংখ্য মানুষের
জন্যও জাহান্নামের কারণ হয়েছে।
যারা ইবাদতগোযার ও শরীয়তের কঠোর
অনুশীলনে অভ্যস্ত, শয়তান
তাদেরকে অত্যন্ত সুকৌশলে এই
ব্যধিতে জড়িয়ে থাকে। ইবাদত-
রিয়াজত ও নেক আমলের
কারণে নিজেকে অপরের চেয়ে বড়
মনে হওয়া অহংকারের ফলশ্র“তি।
অথচ ইবাদত-রিয়াজতের
ক্ষেত্রে আসল বিষয় হচ্ছে আল্লাহ
পাকের দরবারে কবুল হওয়া, আর
এটা নিশ্চিত ভাবে জানার কোন উপায়
নেই। পক্ষান্তরে যাকে ছোট
মনে করা হচ্ছে,
হতে পারে গোপনে সে আল্লাহর প্রিয়
হয়ে আছে। তাই নিজেকে বড় মনে করার
কোন উপায় নেই। সর্বোপরি আল্লাহর
বড়ত্ব ও আযমতের সামনে মানুষÑ
সে যত বড়ই হোক না কেন, তার
কি মূল্য আছে? বিশ্ব রাসূলের
চেয়ে বড় কে হতে পারে? অথচ
তিনি আল্লাহর সম্মুখে ক্রীতদাসের
মত হয়ে থাকতেন। তাহলে আর কোন
সৃষ্টির বড়ত্বের কী অধিকার আছে?
যারা এই সত্য অনুধাবনে সক্ষম হয়
তারা হয় নম্র-ভদ্র, দীন-হীন।
তারা নিজেকে ছোট মনে করে ও ছোট
হয়ে থাকে। ফলে তারা আল্লাহ পাকের
নিকট হয় অতি মহান, অত্যন্ত বড়;
দুনিয়াতেও ও আখেরাতের জীবনেও। এই
যুবক নিজেকে অহমিকা মুক্ত
করতে সক্ষম হয়েছিল। তার
চোখে অন্যের গুরুত্ব ও আল্লাহ পাকের
বড়ত্ব স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়েছিল। তাই
সে ঈদের দিন অন্যের মত
কুরবানী করতে পারে নি বিধায়
নিজেকে অন্যদের তুলনায় ছোট
মনে করে নিজের
প্রাণকে কুরবানী হিসেবে পেশ করেছে।
অতঃপর আল্লাহর সম্মুখে জানোয়ারের
কুরবানীর পরিবর্তে স্বীয় জানের
কুরবানী গ্রহণের জন্য কাতর
সুরে মুনাজাত করেছে। এই থেকে যুবকের
অহমিকা বিবর্জিত মন
এবং দীনতা হীনতা অবলম্বনের স্বভাব
প্রমাণিত হয়।


শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব ।প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

Next Post আখেরাতের বিশ্বাস - ভয় এবং আশা

কোন মন্তব্য নেই :