আমার বক্ষে ঠিক কতজন পুরুষ স্পর্শ করেছে তা গুনে বলা দুস্কর।-তামান্না সেতু

কোন মন্তব্য নেই


আমার বক্ষে ঠিক কতজন পুরুষ স্পর্শ করেছে তা গুনে বলা দুস্কর। তবে আমার সন্তান সম্ভবত তার মায়ের চোখের প্রতিটি জলের হিসেব রেখেছে। 
বাসে উঠতে-নামতে, মার্কেটে, ওভার ব্রিজে, ফুটপাতে এমনকি বোনের বিয়ের বড়যাত্রী বরনেও কিছু নাম না জানা হাত ছুয়ে গেছে আমায়। 
তারপরও ঠিক ঐ বাড়ির বউ হয়েই গিয়েছে আমার বোন। কি করার আছে?
প্রথমে নিজের ভেতর নিজে গুটিয়ে গিয়েছি। দু দিন হয়ত স্কুলে যাইনি, এক বেলা ভাত খাইনি, কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলিয়েছি কিন্তু তারপর? বাস্তবতা আর বয়ে চলা সময় আমাকে আবার নিয়ে ফেলেছে রাশি রাশি হাতের ভিড়ে। 
দিনের পর দিন হরতাল দিলে যেমন একটা সময় যে দলের হরতাল সে দলের মানুষকেও জীবিকার টানে পেট্রোল বোমার ভয় নিয়েই বাসে উঠে বসতে হয়। ঠিক তেমন আমাকেও বের হতে হয়েছে। বাসে উঠতে হয়েছে, মার্কেটে যেতে হয়েছে। আর হাতগুলো একটাবারও ক্ষমা না করে আমায় ছুয়ে গেছে।
আমি আবার কিছুদিন কেঁদেছি, মগের পর মগ পানি দিয়ে গোসল করেছি!! হায়রে সব ধুয়ে যায় কেবল আমার বিবেক ধুয়ে যায় না।
খুব পরিষ্কার একটা সৃতি- একদিন নিউ মার্কেট গিয়েছি বার হাত লম্বা শাড়ি পরে, ঘার তোলা ব্লাউজ। পাশ দিয়ে দু'জন ছেলে চলে গেল, বয়সে আমার ছেলের থেকে ৪/৫ বছরের বেশী হবে বড় জোর। বলল -"এই যে, এত ঢেকে রাখলে আমরা কি দেখব" ?
আমার পা টা কেমন দুলে উঠল! খপ করে পাশের দোকানের দরজাটা ধরে দাড়িয়ে নিজেকে সামলে নিলাম। আমার ছেলেটা তখনও কিছু না বুঝে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
তারপরও ভীষণ রকম সম্মান ঠিক রাখার দায় নিয়ে আমাকে বলে বেড়াতে হয় -"কই আমায় তো কেউ কোনদিন বাজে কথা বলল না। ছোঁয়া তো দূরের কথা ! "
শুনুন, এই মিথ্যেটা আপনাদের সকলের স্ত্রি, বোন, মা মেয়ে বলে বেড়াচ্ছে। 
আজ ভাবি ঠিক কার সম্মান ঠিক রাখলাম? নিজের নাকি ঐ হাত গুলোর?
ছোটবেলায় সাঁতার শেখবার সময় একবার পানিতে ডুবতে বসেছিলাম। পাশের বাড়ির এক ছেলে ঠিক সময় খপ করে আমার হাতটা ধরে টেনে তুলল। সেই ছেলেটির মুখ আমি চিরকাল বাসে, মার্কেটে, ওভারব্রিজে খুজে বেড়াই। কখনও যে পাইনি তাও তো না। কিন্তু লাখো হাতের ভিড়ে সে মুখ প্রায়ই হাড়িয়ে যায়।
ঠিক কি প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই পথ বেছে নিয়েছে সেই হাতগুলো আমি জানি না। কি চায় তারা? নারী মুক্ত পথ? হাট-বাজার? অফিস আদালত? 
কার লেখায় যেন পড়েছিলাম একদিন (শুভজিৎ হয়ত) – কোন এক রমণীর গায়ে হাত দেবার চেষ্টায় যখন এক যুবক অন্যদের মার খেয়ে অচেতন তখন সেই মহিলাকেই দেখা গেল পরম স্নেহে সেই যুবককে পানি খাওয়াতে। 
আমি এখনো জানি না ঠিক কি চায় তারা। শুধু জানি এ পাপের ভার যেদিন সইতে না পারবেন সেদিন মাথা গোঁজার জন্য একজন নারীর আঁচল ভীষণ জরুরী হয়ে পরবে।
গত বর্ষায় আরাফকে (আমার ছেলে) নিয়ে গিয়েছিলাম ক্রিসেন্ট লেকে। কদম ফুলটা ওখানে খুব পাওয়া যায়। আমি লেকের জলে পা ধুচ্ছি নিচু হয়ে হঠাৎ টের পেলাম আমার কাঁধে কারো হাত। ভাবছি ঘুরেই একটা চড় কশাবো সজোরে, সাহস পাচ্ছি না। না ভয়ে নয়, আশায়। আশা- নিশ্চয়ই ঘুরে দেখব আরাফ ঠিক খুজে খুজে এক গোছা কদমফুল এনে দাঁড়িয়েছে আমার পিছে- "মা, এই যে তোমার বর্ষার প্রথম কদম ফুল"। আমি ঘুরে দাড়াতে চাচ্ছি। আমার কাঁধের কাছে হাতটা আরও একান্ত হচ্ছে। নিশ্চয়ই আরাফ। আর কেউ অযথা কেন হতে যাবে?
আমি ভীষণ আশা নিয়ে, বিশ্বাস নিয়ে ঘুরে দাড়াতে চাচ্ছি। আমরা ভীষণ আশা নিয়ে ঘুরে দাড়াতে চাচ্ছি। নিশ্চয়ই পিছনে এক জোরা পবিত্র হাত আমাদের অপেক্ষায়।
নিশ্চয়ই।–তামান্না সেতু (পরিচালক-বাতিঘর)

এই পোষ্টের বিপরিতে আমাদের কথা।
কোনো কুলাঙ্গার যখন আপনার বক্ষে হাত দিয়েছে তখন সে হাত ফেরত যায় কি করে? তা ছাড়া আপনার পাও তো খালি ছিল না বরং একজোড়া জুতাও ছিল। সেই জুতা দিয়ে পিডিয়ে কি এই কুলাঙ্গার গুলোর চাপা ফাটিয়ে দেওয়া যেতো না? অথচ ওনার এই পোস্ট লেখার কারণে অনেকেই তাকে সাহসী লেখক বলতেছেন। এই সব লেখা সারা জীবন লিখে গেলেও এই কুলাঙ্গার গুলো মানুষ হবে না বরং শুয়র থেকেই যাবে। এরা আধুনিক শিক্ষা পেলেও ধর্মীয় ও  নৈতিক শিক্ষা পায়নি। ধর্মীয় শিক্ষা ব্যতীত কারো চরিত্র ভালো হবে না। আর এরাও ঐ সমস্ত ধর্মহীন মেয়েদের পেট থেকেই বের হয়ে এসেছে। মা ধর্মহীন ও নৈতিক শিক্ষাহীন হওয়ার কারণে তাঁর সন্তানদের কেও ধর্মহীন ও নৈতিক শিক্ষাহীন ভাবেই গড়ে তুলেছে। আমার মাও আমাকে জন্ম দিয়েছেন। জন্ম দিয়ে নিজের দায়িত্ব শেষ করেনি, সকালে মক্তবে পাঠিয়েছেন। মক্তব শেষে আবার স্কলেও পাঠিয়েছেন। পাড়ার ছেলেদের সাথে মিশতে দেননি। টি,ভি দেখতে দেননি, গানও শুনতেও দেননি। আর বাবাতো বাড়িতে এসে ঘরে না পেলে কৈয়ফত দিতে হতো এতো ক্ষণ কই ছিলাম। টি,ভি কেনো দেখতে দেননি তা আজ বুঝতে পারতেছি। কেননা, ছবিতে বলেন বা ছবির গানের কথা বলেন, সব কিছুতেই নারীকে পুরুষদের খাদক হিসাবে উপস্থাপন করে। ছবিতে দেখানো কি ভাবে নারীকে পটাতে হয়, ধর্ষনের দৃশ্য দেখিয়ে শিক্ষা দেওয়া হয় এভাবে নারীদের কে ফেলে ধর্ষন করতে হয়। আর কি নিকৃষ্ট প্রকারের গান, যা শুনলে ভুমি আসে। এই সব কথা এখানে উল্লেখ করতে চাই না। এগুলো নিয়ে আলাদা ভাবেই প্রতিবেদন প্রকাশ করবো। এখানে আমাদের প্রশ্ন হলো, তিনি শুধু এই কুলাঙ্গার গুলোকে নিয়েই কথা বলেছেন, কিছু এই কুলাঙ্গার গুলো যাদের কাছে থেকে এই সব শিক্ষা পেলো তিনি একটি বিদ্যালয়ের পরিচালক হয়েও তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলেন নি। দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, তিনি এখানে বলেছেন, “তাঁর বক্ষে ঠিক কতজন পুরুষ স্পর্শ করেছে তা গুনে বলা দুস্কর।” এখানে একজন, দুইজন, তিনজন পুরুষ তাঁর বক্ষে হাত স্পর্শ করার পরও তিনি কেনো এই সমস্ত পুরুষদের থেকে সতর্ক থাকলেন না? কেনো এই সমস্ত পুরুষদের থেকে নিজেকে দূরে রাখলেন না? সেটা তিনিই ভালো বলতে পারবেন।  একটি প্রবাদ পড়ে ছিলাম “নেড়া বেল তলাতে একবারেই যায়”। এখন দেখতেছি নারীরা ঐসব জায়গায় বারে বারে যায়। এখান থেকে বুঝা গেল “নারী স্বাধীনতার দেশ, নারীর ইজ্জত সম্মান সব কিছু শেষ”।
পরিশেষে একটি কথাই বলবোঃ যার ভিতরে আল্লাহ তা’আলা ভয় নেই, সে মানুষ থাকে পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট হয়ে যায়। কোন এক মাওলনার মুখ থেকে শুনে ছিলাম, তিনি বলেছিলেন, “মাছ পঁচলে শুটকি হয়, কিন্তু মুসলমান বেদ্বীন হলে শুয়রের চেয়েও নিকৃষ্ট হয়”।  ইসলাম নারী ও পুরুষদের সম্পর্কে কি বলে এখানে কুরআনের আয়াত টি পড়লেই আপনারা বুঝতে পারবেন।
“মুমিনদেরকে (পুরুষ) বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।”
“ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।”(কুরআন ২৪:৩০-৩১)
এখন আপনি বলেন যারা কুরআনের এই কথাটি জানেনা বা বা মানে না তাদের চরিত্র কেমন হবে? ইসলাম স্বামীদের সম্পর্কে কি বলে এখানে দেখুন নারী পুরুষের পর্দা সম্পর্কে এখানে দেখুন স্বামী স্ত্রী সম্পর্কে কি বলে এখানে দেখুন তাঁর সাথে ডাক্তার জাকির নায়েকের লেকচার শুনুন, এখানে, এখানে।  সৈয়স রুবেল বিডি( প্রতিষ্ঠাতা-আমার বাংলা পোস্ট) সত্য, ন্যায় ও সুশিক্ষার প্রতীক! সৌজন্য আমার বাংলা পোস্ট


আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুণ।

কোন মন্তব্য নেই :