যায়েদের স্মরণে হযরত আবু বকর (রাযিঃ) - হযরত যায়েদের গুণাবলী

কোন মন্তব্য নেই
যায়েদের স্মরণে হযরত আবু বকর
(রাযিঃ)
যায়েদের প্রতি রাসূলের আকর্ষণ ও
ভালোবাসার এ নিদর্শন রাসূলের
খলিফা ও সাহাবগণও সমুন্নত রাখেন।
সাহাবগণ ছিলেন বিশ্বনবীর আদর্শের
প্রতিক। তারা কেবল রাসূলের প্রতিই
নয়, বরং যার প্রতি রাসূলের
ভালোবাসার দৃষ্টি পড়তো, তার প্রতিও
তারা ছিলেন শ্রদ্ধাশীল। হযরত আবু
বকর তার খেলাফল আমলে যায়েদের
পুত্র উসামাকে সিপাহসালার মনোনীত
করে শামের অভিযান পরিচালনা করেন।
উসামা বয়সে ছোট এবং যুবক ছিলেন। এ
কারণে খলীফার এই সিদ্ধান্তই ছিল
অনেকের বোধগম্যের বাইরে। কিন্তু
সে মুহূর্তে হযরত আবু বকরের
জোরালো উক্তিতে এ কথাই প্রমাণিত
হয় যে, এই সিদ্ধান্তের পেছনে যায়েদের
প্রতি রাসূলের আকর্ষণ ও স্নেহ বড়
ভূমিকা রেখেছে। হযরত রাসূলে পাক
যায়েদের পুত্র উসামার প্রতি স্নেহময়
দৃষ্টি রাখতেন। আর উসামা তো হযরত
যায়েদের পুত্র। যে যায়েদ
ব্যক্তি স্বার্থ এবং পার্থিব
সম্পর্ককে বর্জন করে বিশ্ব রাসূলের
প্রতি আনুগত্যেল বিরল নজীর স্থাপন
করেছিলেন, যাকে রাসূল তার জীবদ্দশায়
বিভিন্ন যুদ্ধে আমীর নিযুক্ত করেছেন,
যাকে রাসূলের সাথে বদর, উহুদ ,খন্দক,
খায়বার ও হুদায়বিয়াতে দেখা গেছে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
মরীসিয়ার যুদ্ধে যাওয়ার সময়
যায়েদকেই মদীনা পাকে স্থলাভিষিক্ত
করেছিলেন। হযরত আবু বকর এসব
কিছু বিবেচনা করেই যায়েদের পুত্র
উসামাকে শামের অভিযানে আমীর
নিযুক্ত করেন। হযরত উসামার
প্রতি হযরত আবু বকরের আকর্ষণ,
মায়া ও স্নেহের কথা আজও
ইতিহাসে বিদ্যমান। এর মূলেও ছিল
যায়েদের প্রতি রাসূলে পাকের মহাব্বত
ও ভালোবাসা।
হযরত যায়েদের গুণাবলী
আল্লাহর প্রতি ঈমান, রাসূলের
প্রতি আনুগত্য, আখেরাতের আকর্ষণ,
দুনিয়অ বিমুখতা, হিম্মত-সাহসিকতা,
ইবাদত-রিয়াজত
এবং ঈমানী শক্তি যুবক যায়েদের
সফলতার পথ সুগম করেছে। হযরত
যায়েদ হিজরতের গৌরব অর্জন করেন।
রাসূল বলতেন, যায়েদ আমার,
আমি তাকে সার্বাধিক ভালোবাসি।
পবিত্র কুরআনে সাহাবীদের
মধ্যে কেবল যায়েদের নামই উল্লেখ
হয়েছে। ইবনে উমর বলেন, “আমার
পিতা হযরত উমর (রাযিঃ)
উসামা ইবনে যায়েদের জন্য অধিক
বেতন বরাদ্দ
করলে আমি আপত্তি জানাই। এর
উত্তরে হযরত উমর (রাযিঃ) বলেন,
“হে ইবনে উমর! চুপ হও,
উসামা তোমার তুলনায় রাসূলের অধিক
প্রিয় ছিল।” হযরত উমরের এই
বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই
বক্তব্যটি হযরত যায়েদের মর্যাদা ও
অবস্থান নির্ণয়ে বিশেষ বিবেচনার
দাবী রাখে। মুসনাদে আহমাদে রয়েছে,
ইবনে উমরের সূত্রে রাসূলে পাক
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইরশাদ করেন “আমি শুনেছি,
তোমরা উসামার নেতৃত্বের
সমালোচনা করছ। এর পূর্বে অনেকেই
তার পিতা যায়েদের নেতৃত্বের
সমালোচনা করতো।
তোমরা ভালো করে জেনে নাও, যায়েদ
তোমাদের মধ্যে নেতৃত্বে সার্বাধিক
উপযুক্ত ছিল। সে ছিল আমার
সার্বাধিক প্রিয় ও আস্থাভাজন।
তারপর তার পুত্র উসামা আমার
সার্বাধিক প্রিয়।” হযরত বুরাইদার
সূত্রে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
আমি জান্নাতে প্রবেশ করলে এক
যুবতী আমাকে স্বাগত জানায়।
আমি তাকে জিজ্ঞেস করি যে,
তুমি কার? সে উত্তর দেয় যে,
আমি যায়েদ ইবনে হারিসার! হযরত
যায়েদের জীবন একটি ঐতিহাসিক
জীবন, আদর্শ জীবন,
ত্যাগÑতিতীক্ষার জীবন। তার জীবন
এ উম্মাহর চলার পথের অন্যতম
শ্রেষ্ঠ পাথেয়। তিনি মৃত্যুবরণ করেও
মুসলিম উম্মাহর নিকট অমর
হয়ে আছেন। আল্লাহপাক
তাকে জান্নাতের উচ্চ মর্যাদার
অধিকারী করুন। তার জীবন হোক যুব
সম্প্রাদায়ের জন্য আদর্শ ও পাথেয়।


শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব ।প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন
Next তিন. যুবক ইবনে হারুন

কোন মন্তব্য নেই :