যুবকের ইসলাম গ্রহণ

কোন মন্তব্য নেই
যুবকের ইসলাম গ্রহণ
যুবক বলল, ‘আমি মূর্খ,
পড়ালেখা জানি না। তাই
আপনি আমাকে পবিত্র কুরআন
পড়ে শোনান এবং বুঝিয়ে দিন।’ বুযুর্গ
বলেন, ‘এরপর আমি পবিত্র কুরআনের
একটি সূরার তেলাওয়াত শুরু করি।
যুবকটি আমার তেলাওয়াত অত্যন্ত
আগ্রহ ও মনোযোগের সাথে শ্রবণ
করে। রাসূলের
বাণী অনুসারে তেলাওয়াতের প্রভাব-
জ্যোতি তার অন্তরের কালিমা ও
অন্ধকার দূরীভূত করে।
সে অনুতাপদগ্ধ হয়ে অশ্র“সিক্ত
হয়ে যায়।’
এভাবে বুযুর্গের তেলাওয়াত শেষ হলো,
কিন্তু যুবকের মন এখনও পরিতৃপ্ত
হয়নি। তবে শেষ পর্যন্ত সে হকের
সন্ধান পেয়ে ধন্য হয়ে বলল, “সত্যিই
এই কালাম যার তার
নফরমানী করা যায় না।” এই
বলে কালিমা পাঠ করে মুসলমান
হয়ে যায়।
দ্বীনি শিক্ষার গুরুত্ব
মুমিনের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য
হচ্ছে দ্বীনি শিক্ষা গ্রহণ। নবীর
ওয়ারিস-আলেমদের গুরু দায়িত্ব
হচ্ছে মুসলমানদেরকে কুরআন-সুন্নাহ
তথা শরীয়তের সঠিক শিক্ষা দান
করে তাদের
মধ্যে দ্বীনি চেতনা জাগিয়ে তোলা।
কেননা ঈমানের পর ঈমানের সজীবতা,
ঈমানী শক্তি বৃদ্ধি ও স্থায়িত্ব
নির্ভর করে আমলের উপর।
পক্ষান্তরে মূর্খতা ও
আমলে উদাসীনতা মুসলিম
সমাজকে কুলষিত করে, আকীদার
বিকৃতি সাধন করে। বেদআত-মুনকারাত
ও অপসংস্কৃতির বিস্তৃতি ঘটায়।
উপরন্তু মুসলিম সমাজে প্রসারিত হয়
ধর্মনিরোপেক্ষতার
নামে ধর্মদ্রোহীতার কালো থাবা। আজ
মুসলিম যুবক-যুবতীসহ সর্বশ্রেণীর
জনসাধারণের মাঝে বিজাতীয় তাহজীব-
তামাদ্দুন ও তাদের শিক্ষা-সংস্কৃতির
ব্যাপক প্রচার-প্রসার লাভের
অন্যতম কারণ হচ্ছে দ্বীন ইসলাম
সম্পর্কে মুসলমানদের অজ্ঞতা।
অজ্ঞতার এ অভিশাপ
থেকে মুক্তি লাভের একমাত্র উপায়
হচ্ছে, সমাজের সর্বশ্রেণীর
মুসলমানদের দ্বীনি শিক্ষা গ্রহণ ও
সে শিক্ষা বিস্তারে এগিয়ে আসা এবং
এক্ষেত্রে সর্বশক্তি নিয়োগ করা।
শিক্ষা অভিযানের মাধ্যমেই কেবল
মুসলিম জাতির ঐতিহ্য
রক্ষা পেতে পারে, দূরীভূত
হতে পারে জাতীয় অধঃপতনের বিষাক্ত
সাপ। এর কোন বিকল্প নেই।
ওলামা-মাশায়েখদের দায়িত্ব
শিক্ষা-দীক্ষা বিস্তারের প্রধান
দায়িত্ব আলেম-ওলামাদের।
কেননা রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলেমদেরকেই
স্বীয় উত্তরাধিকারী নির্ধারণ
করেছেন। আর তা করেছেন
দ্বীনি ইলমের কারণেই, অন্য কোন
কারণে নয়। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার
অধিকারী অথবা অর্থশালী ধনাঢ্যদেরকে
তিনি স্বীয় ওয়ারিস বলে ঘোষণা করেন
নি। কিন্তু তিক্ত হলেও সত্য যে, আজ
এক শ্রেণীর আলেম রাষ্ট্রীয়
ক্ষমতা ও অর্থ-কড়িকে ইসলামের
প্রচার প্রসার ও শরীয়ত বাস্তবায়নের
উপায় ভেবে দ্বীনি শিক্ষার চেয়েও
সেগুলোর প্রতি অধিক গুরুত্ব
দানে প্রয়াসী। তাদের মতে রাষ্ট্র
প্রতিষ্ঠা ব্যতীত ইসলাম প্রতিষ্ঠার
পথ খোলা নেই। একথা অস্বীকার করার
কোন উপায় নেই যে, ইসলামী রাষ্ট্রীয়
ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য প্রয়োজন
অপরিসীম এবং এর জন্য
নিয়মতান্ত্রিক ও ঐক্যবদ্ধ
প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখাও জরুরী,
কিন্তু দ্বীনি শিক্ষার
প্রয়োজনীয়তা এর চেয়েও অধিক।
কেননা রাষ্ট্র ও প্রশাসন যতই
গুরুত্বের দাবীদার হোক না কেন, তার
অবস্থান সহায়ক উপায় বা সহায়ক
শক্তির অধিক নয়। আর
দ্বীনি শিক্ষা হচ্ছে মূল ভিত্তি।
ভিত্তির জন্যইতো উপায় অবলম্বন।
আত্মা ব্যতীত দেহে যেমন
শক্তি সঞ্চার হয় না, দেহ ক্রিয়াশীল
হয় না, তেমনি ইলম ব্যতীত
দ্বীনি চেতনা টিকে না, শরীয়তের আমল
ক্রিয়াশীল হয় না।
বস্তুতঃ দ্বীনি শিক্ষাকে বাদ
দিয়ে বা খাটো করে দেখে রাষ্ট্র
প্রতিষ্টার অভিযান
হচ্ছে ভিত্তি স্থাপন না করেই এমারত
নির্মাণের নামান্তর। এই ধ্র“ব
সত্যটি সবার অনুধাবন করতে হবে।
বুঝতে হবে যে, অন্য সব কার্য
সমাধানের লোক রয়েছে এবং অধিক
সংখ্যায় রয়েছে। কিন্তু নবীর
ওয়ারীসি শিক্ষার লোকের খুবই অভাব
এবং এর ব্যবস্থাপনাও অত্যন্ত
অত্যন্ত সীমিত। উপরন্তু এই সামান্য
ব্যাবস্থাপনাটুকুও শত্র“দের জন্য
অসহনীয়। তাই
তারা দ্বীনি শিক্ষাকে সমূলে উৎপাটনের
ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। রাষ্ট্রীয়
ক্ষমতা, পদমর্যাদা ও অর্থের
লোভনীয় জাল বিস্তার
করে তারা জ্ঞাত-অজ্ঞাত পথে শিকার
তালাশে ব্যস্ত। তাদের
শিকারে যাতে পরিণত না হতে হয় এ
ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন
করতে হবে। মুসলিম যুবকদের
মধ্যে দ্বীনি শিক্ষার বিস্তার
এবং ধর্মীয় জীবনাচারের অনুশীলন
নতুন যুগের সূচনা করতে পারে। এরূপ
দৃষ্টান্ত বিরল নয়।
শিক্ষার সুফল
আমরা এই যুবকের জীবন
থেকে দৃষ্টান্ত গ্রহণ করতে পারি।
মুসাফির বুযুর্গ কেবল
যুবকটিকে মুসলমান করেই ক্ষান্ত
হননি, বরং তাকে শিক্ষা-দীক্ষা দান
করে স্বল্প সময়ে তার তরবিয়তের
প্রতি তিনি মনোনিবেশ করেন।
তাকে তিনি পবিত্র কুরআন
শিক্ষা দেন, দ্বীনি মাসলা-মাসায়েল
সম্পর্কে প্রয়োজনীয়
অভিজ্ঞতা দানে ব্রতী হন। তার
আধ্যাত্মিক পরিশোধনেও সচেষ্ট হন।
ফলে সে আমলের প্রতি আকৃষ্ট হয়
এবং বুযুর্গের সহচর্যেই
মুজাহাদা মেহনত করে মারিফাতের
সুধা পানে ধন্য হয়, তার জীবন হয়
সফলকাম।


শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব ।প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

Next post যুবকের আধ্যাত্মিক সাফল্য - শিক্ষার প্রতি অনুরাগ

কোন মন্তব্য নেই :