মানব জাতির প্রকাশ্য শত্রু শয়তান – পর্ব ১ →পাতা ৫←
‘শয়তান যেন তোমাদেরকে (ভাল কাজ করা থেকে) বাধা না দেয়। নিশ্চয়ই সে তোমাদেরপ্রকাশ্য শত্রু’ (যুখরুফ ৪৩/৬২)শয়তান ভাল কাজে বাধা দেওয়ারসাথে সাথে মন্দ কাজে উৎসাহিত করে। আল্লাহ বলেন,
أَلَمْ تَرَ أَنَّا أَرْسَلْنَا الشَّيَاطِيْنَ عَلَى الْكَافِرِيْنَ تَؤُزُّهُمْ أَزّاً-
‘আপনি কি লক্ষ্য করেননি যে,আমি কাফেরদের উপর শয়তানকেছেড়ে দিয়েছি। তারা তাদেরকে বিশেষভাবে (মন্দকার্যে) উৎসাহিত করে’ (মারিয়াম ১৯/৮৩)
১৫. প্রভুত্ব বিস্তার করা ওআল্লাহর স্মরণ থেকে ভুলিয়ে দেওয়া : আল্লাহ বলেন,
اسْتَحْوَذَ عَلَيْهِمُ الشَّيْطَانُ فَأَنْسَاهُمْ ذِكْرَ اللهِ أُوْلَئِكَ حِزْبُ الشَّيْطَانِ أَلاَ إِنَّ حِزْبَ الشَّيْطَانِ هُمُ الْخَاسِرُوْنَ-
‘শয়তান তাদের উপর প্রভুত্ব বিস্তার করেছে, ফলে তাদেরকে ভুলিয়ে দিয়েছে আল্লাহর স্মরণ। তারা শয়তানেরই দল। সাবধান! শয়তানের দল অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত’ (মুজাদালা ৫৮/১৯)
১৬. যাদু করা: আল্লাহ সুলায়মান (আঃ)-এর সময়ের অবস্থা বর্ণনা করে বলেন,
وَاتَّبَعُواْ مَا تَتْلُواْ الشَّيَاطِيْنُعَلَى مُلْكِ سُلَيْمَانَ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَـكِنَّ الشَّيْاطِيْنَ كَفَرُواْيُعَلِّمُوْنَ النَّاسَ السِّحْرَ-
‘তারা ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা মুসলমানদের রাজত্বকালে শয়তানেরা আবৃত্তি করত। সুলায়মান কুফরী করেনি; শয়তানরাই কুফরী করেছিল। তারা মানুষকে যাদুবিদ্যা শিক্ষা দিত’ (বাক্বারাহ ২/১০২)
জাবের বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন,
নবী করীম (ছাঃ)-কে যাদু দ্বারা যাদু ছুটানো সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, ‘এটি শয়তানের কাজ’ । [১৯]
১৭. বিভ্রান্ত করা: ওহোদ যুদ্ধে মুসলমানদের অবস্থা বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন,
إِنَّ الَّذِيْنَ تَوَلَّوْا مِنْكُمْ يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعَانِ إِنَّمَا اسْتَزَلَّهُمُ الشَّيْطَانُ بِبَعْضِ مَا كَسَبُوْا-
‘তোমাদের যে দু’টি দল লড়াইয়ের দিনে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল শয়তান তাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিল,তাদেরই পাপের দরুন’ (আলে ইমরান ৩/১৫৫)
১৮. নিজের ইবাদত করানো: হাশরের দিনে জাহান্নামীদের বলবেন,
أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَيْكُمْ يَا بَنِي آدَمَ أَن لاَّ تَعْبُدُوْا الشَّيْطَانَإِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِيْنٌ-
‘হে বনী আদম! আমি কি তোমাদেরকে বলে রাখিনি যে, শয়তানের ইবাদত করো না, সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু’ (ইয়াসীন ৩৬/৬০)
১৯. মদ, জুয়া ও শিরকের প্রচলন করা: আল্লাহ বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُواْ إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالأَنْصَابُ وَالأَزْلاَمُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوْهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ-
‘হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কাজ বৈ তো নয়। অতএব এগুলো থেকে বেঁচে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও’ (মায়েদা৫/৯০)
২০. কুফরীতে নিমজ্জিত করা: আল্লাহ বলেন,
كَمَثَلِ الشَّيْطَانِ إِذْ قَالَ لِلْإِنْسَانِ اكْفُرْ فَلَمَّا كَفَرَ قَالَ إِنِّيْ بَرِيْءٌ مِّنْكَ إِنِّيْ أَخَافُ اللهَ رَبَّ الْعَالَمِيْنَ-
‘তাদের দৃষ্টান্ত শয়তানেরমত, যে মানুষকে বলে, কুফরী কর। অতঃপর যখন সে কুফরী করেতখন শয়তান বলে, তোমার সাথেআমার কোন সম্পর্ক নেই, আমি জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি’ (হাশর ৫৯/১৬)
[চলবে]
১. হাফিয ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ১ম খন্ড (ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ১ম প্রকাশ, জুন ২০০০), পৃঃ ১৮৩।
২. মুসলিম হা/২৯৯৬; মুসনাদে আহমাদ হা/২৪৮২৬; রিয়াযুছ ছালেহীন হা/১৮৪৬; মিশকাত হা/৫৭০১ ‘সৃষ্টির সূচনা ও নবীদের আলোচনা’ অনুচ্ছেদ।
৩. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ১ম খন্ড, পৃঃ ১৪২।
৪. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ১ম খন্ড, ১৪৪ পৃঃ।
৫. ঐ, পৃঃ ১৪৭।
৬. বুখারী ‘ইলম’ অধ্যায় হা/১১০; মুসলিম, মিশকাত হা/৪৬০৯।
৭. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩৩৭; ইবনু মাজাহ হা/২৯৭।
৮. তাফসীরে কুরতুবী, সূরা নাস দ্রঃ।
৯. তাফসীরে ইবনে কাছীর, সূরা আন’আমের ১১২ নং আয়াতের তাফসীর দ্রঃ।
১০. মুসলিম হা/৪৫০ ‘ছালাত’ অধ্যায়; তিরমিযী হা/৩২৫৮ ।
১১. মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৬৮; তিরমিযী হা/১১৭২।
১২. বুখারী, ‘তাফসীর’ অধ্যায় হা/ ৪১৮৯; মুসলিম, মিশকাত হা/৬৯।
১৩. মুসলিম হা/২৮৬৫ ‘জান্নাতের বিবরণ’ অধ্যায়; আহমাদ হা/১৬৮৩৭।
১৪. আহমাদ, নাসাঈ, হাকেম, তাফসীরে ইবনে কাছীর, সূরা আন‘আমের ১৫৩ নং আয়াতের তাফসীর দ্রঃ। পৃঃ ৩/৩৬৬, মিশকাত হা/১৬৬, সনদ হাসান ।
১৫. মুসলিম হা/২৮১২; রিয়াযুছ ছালেহীন হা/১৫৯৪।
১৬. মুসলিম হা/২৮১৩; মিশকাত ‘ঈমান’ অধ্যায়, হা/৭১।
১৭. মুসলিম ‘জান্নাতের বিবরণ’ অনুচ্ছেদ হা/২৮৬৫; মিরকাত, ১ম খন্ড, পৃঃ ১৭৫, টীকা নং ৯০; তাফসীর ইবনে কাছীর, ১১তম খন্ড, পৃঃ ২৬।
১৮. মুহাম্মদ সুলতান আল-মা‘ছুমী আল-খাজান্দী আল-মাক্কী, মুসলিম কি চার মাযহাবের নির্দিষ্ট এক মাযহাব অনুসরণ করতে বাধ্য, অনুবাদ: আবু তাহের (সিরাজগঞ্জ: রুকাইয়া প্রকাশনী, ১ম প্রকাশ, ২০০০), পৃঃ ৬৩।
১৯. আহমাদ হা/১৪১৬৭, ৩/২৯৪; আবু দাউদ হা/৩৮৬৮; মিশকাত হা/৪৫৫৩, সনদ ছহীহ।
সৌজন্যঃ কুরআনের আলো ডট কম ।
শেয়ার করে আপনিও হন ইসলামের প্রচারক ।
আমরা সবাই একাজটি করলে জানার পাশাপাশি সওয়াব হবে ।
যে ব্যাক্তি ইসলামের একটি কথা শিখবে তাকে আল্লাহ দশটি নেকী দেবেন ।
যে শিখাবে তাকেও দশটি নেকী দেওয়া হবে ।
তাই আসুন আমরা নিজেও জানি, অন্যদেরকেও জানাই ।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন