পুরুষ শাসিত সমাজ ও নারীর অবস্থান
লিখেছেন: একানারী স্বাধীনতা বলে একটা কথা প্রায়ই
উচ্চারন করে “নারী বাদী “ সমাজ ।
মনে হয়
নারীকে একটা আলাদা জাতি হিসাবে
নারীরাই চিহ্নিত করে করে ,
যে তারা কেবল ই নারী তারা “ মানুষ “
নয় । এই ভাবে নিজের
আত্মপরিচয়কে অবমাননা নারীরাই
করে । বিকৃত ধর্মে যেমন
মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করেছে ।
একই ভাবে পুরুষে নারীতে ভেদাভেদ
তৈ্রি করতে নানা ছল চাতুরির আশ্রয়
নিয়েছে । প্রাচীন
যুগে দাসী বেচাকেনা হত ।
আজো কোনো কোনো জাগায় এই চল
রয়েছে । স্বামী সেবা , পতি সেবা ,
জননী ,জায়া ,ভগ্নী , নানান রুপে কেবল
নারীর উদ্যেশে যে ভাবে আদেশ উপদেশ
। পরিশেষে , স্বর্গ অথবা বেহেশ্ত
নামক যায়গার প্রলোভন
দেখিয়েছে পুরুষের ক্ষেত্রে ততোটা না।
এই বিভেদ বা বিভাযন তা পৌ্রানিক
ধর্ম , কিবা হিন্দু , বা মুসলিম
সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য । নারীর স্থান
থেকে স্থানাতরের নিক্ষেপ করার কারন
ও বিকৃত ধর্মীয় অনুশাসনের জের ।
কতো হিন্দু নারী স্বামী মৃত্যুর
পরে যে “কাশী”
নির্বাসনে গিয়ে দুর্বিসহ জীবন কাটায়
তার পরবর্তি খবর কেও জানে না ।
একই ভাবে মুসলিমদের অবস্থান
আরো ভয়াবহ । নারী নির্যাতনের ছোট
একটা উধারন দেই – “ তোমাদের
পত্নীগন তোমাদের জন্য শষ্যক্ষত্র
স্বরুপ , সুতরাং , স্বীয়
শষ্যক্ষেত্রে আগমন করো যে দিক
দিয়ে ইচ্ছা “ ( সুরা আল
বাকারা ২৮৬-রুকু ৪) । বিভিন্ন ধর্ম
গ্রন্থে আছে একটার
বেশী স্বামী গ্রহন করতে পারবে না ।
স্বামীদের বহু স্ত্রী থাকলেও স্ত্রীদের
জন্যে একটা শ্বামী। আর পুরুষের
পতিতালয়ে যাবার অবাধ অধিকার ।
নারীরা কেবল চারন ক্ষেত্র । পুরুষ
যে ভাবে খুশী নারী দেহ ভোগ
করতে পারবে । স্ত্রীর ইচ্ছে অনিচ্ছার
কোনো মুল্য নাই । সেই কথাই বার বার
সুবিধা ভোগী ধুর্ম গ্রন্থ
রচয়িতা ঠাকুর দেবতা ইশ্বর ,
আল্লাহর নাম দিয়ে বলা হয়েছে ।
পুরুষকে প্রলোভিত করা হয়েছে ।
এবং তাতে তারা সুবিধাভোগি দল
ইস্পিত লক্ষ্যে পৌছাতে সক্ষম
হয়েছে । আজ তাই বিভিন্য আকার
দিয়ে মানুষ তাদের পুজো করে ,
নিরাকারে এবাদত । পরোকাল নামক
অচেনা জগতের হাতছানিতে প্রলোভিত।
কি নিদারুন প্রবঞ্চনার ইতিবৃত্ত
তারা রচনা করে গেছেন । মানবের
স্বীয় মানবিক চিন্তা ভাবনা করার
সুযোগ থেকে তারা সু-চতুর
ভাবে সরিয়ে দিয়েছে । কিছু সংখ্যক
মহামানব ! আজ যখন কেউ সেই
অন্ধকার কুয়াশাচ্ছন্ন যুগের
চিন্তা ভাবনাকে সরিয়ে নিজ শিক্ষা ,
বিবেক ভাবনা দিয়ে চলতে চাইছে ।তখন
ই তাদের কে শাস্তি দেবার
ব্যাবস্থা হচ্ছে । মানুষের
চিন্তা চেতনা কে এই ভাবেই লুন্ঠন
করা হয়েছে ।
জনৈক টিচার যিনি বিদেশ থেকে উচ্চতর
শিক্ষা নিয়ে বর্তমানে কর্মরত ।
ক্লাস রুমে এক দিন তিনি কথায় কথায়
বলছিলেন -
কেবল নিজ দেশ নয়
আমি নারী বিধায়
বিদেশে থাকাকালীন
নানা প্রতিবন্ধকতার
মুখোমুখি হতে হয়েছিল
একজন তিরিশ উর্ধ নারীর অভিভাবক
দেখা যায় বারো বছরের বালককে ।
দৈহিক সামাজিক এবং ধর্মীয়
ভাবে অভিভাবকত্ব এনে দিয়েছে । শুধু
মাত্র সে নারী বিধায় । পুত্র সন্তান
জন্ম গ্রহন করলে যে ধরনের সমাদর
পায় একজন নতুন মা , কন্যা সন্তান
প্রসবের পরে ততোটাই ধিকৃ্ত হতে হয়
। অথচ কন্যা হোক পুত্র হোক জন্ম
দেবার জন্যে দায়ী পুরুষের ই , x-y
ক্রমজম নারীর কিন্তু নেই, নারীর
কেবল xx যখন নারী x পুরুষের x
মিলিত হয় তখন জন্ম নেয়
কন্যা সন্তান। নারীর কিন্তু নেই কোন
y. আর পুরুষের y এবং নারীর x
মিলিত হয় তখন জন্ম গ্রহন করে পুত্র
সন্তান । সমগ্র পরীক্ষাটা তো মনুষ্য
নিয়ান্ত্রিত নয় । এখানে কাউকেই
দায়ী করা উচিত না। তবু মেয়ে সন্তান
জন্মদানের অপরাধে ঐ মেয়ের
স্বামীকে আর একটা বিয়ে করার
জন্যে প্ররোচিত করতে থাকে তার মা ,
ভগ্নী ( তারাও কিন্তু নারী ) এক জন
নারী হয়ে নারীর কষ্ট অনুধাবন
করেনা তারা । বিভিন্ন ধর্মের বিধান
ঘাটলে দেখা যায় , পুরুষের চাইতে নারীর
স্থান কেবল নীচেই না , নারী সব
ক্ষেত্রে নিষেধের বেড়াজাল । এক বার
এক বৌ্দ্ধ মন্দীরে দেখেছিলাম
একটা বিশেষ এলাকা জুড়ে লোহার গেইট
লাগানো , ভেতরে মুর্তি দেখা যাচ্ছে ।
সামনে একটা ছোট সাইন বোর্ড ।
তাতে লেখা –
“ মহিলা এবং কুকুরের প্রবেশ
নিষেধ “
অনেকের হয়ত মনে হবে – ভালো মন্দ
যাই
লিখি না কেনো নারী নিয়ে এতো সতো
কথার দরকার কি । এতো বহুকাল ধরেই
শুনে আসছি । আধুনীক নারী সংগঠন
আরো গলা ফাটিয়ে মরছে এ আর নতুন
কি । এতো কিছুর পরেও বৈষম্য দূর হয়
না । বাহ্যিক চেহারা বদল হয়েছে মাত্র
। আর কিছু ই বদলায়নি । কেননা সকল
সমস্যার উতপত্তি স্থল তো বিকৃ্ত
ধর্মগ্রন্থ গুলো । পৃথিবীর
যতো দ্বন্ধ , অশান্তি , কলহ । এ
সবের শেকড়কে চোখ বন্ধ করে কয়েক
ভাগে ভাগ করা যায় – ধর্মবাদ ,
বর্ণবাদ, ব্যাক্তিগত মালিকানার
কারনে ক্ষমতার দাপট এবং নারী ও
পুরুষ । শুধু মাত্র ক্ষমতা পাবার
লোভে দিনের পর দিন ধর্মকে বিকৃ্ত
করে হাতিয়ার হিসাবে ব্যাবহার
করে গেছে তারা । ব্যাক্তিগত
মালিকানার কারনে নারী ও
হচ্ছে বঞ্চিত । পিতৃ গৃহ হোক
বা স্বামী গৃহ হোক । এমন
কি রাজনীতিতেও রয়েছে ভেদাভেদ।
আজো বন্ধ হয়নি ধর্ষন নামক
পৈ্শাচিক নির্যাতন । স্কুল
পড়ুয়া মেয়েটি বাড়ী ফিরে গলায়
ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করছে ।
প্রতিনিয়ত তথাকথিত মামা ,
কাকা জ্যাঠা নামধারি কতো পুরুষের
হাতে কিশোরী মেয়েরা কোণো না কোনো
ভাবে নির্যাতিত হচ্চছে ।
আভ্যন্তরিন এ সব অত্যাচারের
কয়টা খবর ই বা আসে ।
নাবালিকা মেয়েগুলো লজ্জায় ভয়ে মুখ
ফুটে কাওকে কিছু বলতে পারে না ,
পাছে তাকে না আবার পাপী ,নষ্টা ,অ-
সতী ,কুলটা শব্দে ভুষিত হতে হয় । এর
পরে আমরা দাবী করি পৃ্থিবী এগিয়ে
যাচ্ছে , নারী স্বাধীন হচ্ছে ।
নারী প্রথম আবাসস্থল নিজ পিতৃ গৃহ ।
নারীর প্রতি বৈষম্যের সুচনা করে ।
নারীর প্রতিভা কে বিস্বাস
করতে হবে । এবং সভ্যতার ভারসাম্য
রক্ষায় তাকে কাজেও লাগাতে হবে ।
নারী এখন ও যেনো শরীয়ার শিকার
না হয় ।
মার্চ 11, 2010
*
লিখেছেন: একা
শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন