হে আমার মেয়ে! পর্ব ১ / পাতা ১
প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন নাবিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
অনুবাদ ও গ্রন্থনা: আব্দুল্লাহ শাহেদ আল মাদানী । ওয়েব সম্পাদনাঃ মোঃ মাহমুদ - ই - গাফফার
জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে নিজ মেয়ের প্রতি এক পিতার গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ
যা পড়া দরকার যুবক, যুবতী, বিবাহিত, অবিবাহিত প্রতিটি মানুষের
হে আমার মেয়ে! আমি চল্লিশের কোঠা পার হয়ে পঞ্চাশের পথে পা রেখেছি।যৌবনকে বিদায় দিতে যাচ্ছি। সেও আমার কাছ থেকে বিদায় নিতে চায়। নতুন কোন স্বপ্ন এবং উচ্চ আকাঙ্খা আর নেই।
আমি অনেকদেশ ও শহর ভ্রমণ করেছি, বহু জাতির সাহচর্য লাভ করেছি এবং জীবন ও জগৎ সম্পর্কে অনেক ধারণা অর্জেন করেছি।
আজ আমার কাছ থেকে কয়েকটি কথা শুন! কথা গুলো সঠিক ও সুস্পষ্ট। এগুলো আমার বয়স ও অভিজ্ঞতার আলোকেই তোমাকে বলছি। আমি ছাড়া আর কেউ তোমাকে এগুলো বলবে না।
আমি অনেক লিখেছি, মিম্বারে ও সমাবেশে দাঁড়িয়ে অনেক ভাষণ দিয়েছি, অনেক নসীহত পেশ করেছি। উত্তম চরিত্র অর্জনের আহবান জানিয়েছি, অশ্লিলতা বর্জন ও সকল প্রকার অন্যায় কাজ বর্জনের ডাক দিয়েছি। নারীদেরকেঘরে ফিরতে ও কুরআনের সুপ্রসিদ্ধ বিধান পর্দার আবরণে আবৃত হওয়ার আহবান জানিয়েছি, তাদের সৌন্দর্য্যরে স্থানগুলো ঢেকে রাখতে বলেছি। লিখতে লিখতে কলমএখন দুর্বল হতে চলছে কথা বলার সময় মুখে তা আটকে যাচ্ছে। এত কিছু করার পরও আমি মনে করি নাযে, আমরা কোন অশ্লীল কাজসমাজ থেকে দূরকরতে পেরেছি। বেহায়াপনা দিনদিন বেড়েই চলছে, পাপাচারিত দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে এবংঅশ্লীলতা দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ছে। আমার মনে হয় কোন ইসলামী দেশই এর আক্রমণ থেকে মুক্ত নয়।মিশর, সিরিয়া তথা সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যের সীমা পার হয়ে পাকিস্তান, বাংলাদেশসহ সমগ্র এশিয়ায় এর আক্রমণ বেড়েই চলছে। মহিলারা বের হচ্ছে পর্দাহীন হয়ে, সৌন্দর্যের স্থানগুলো প্রকাশ করে, মুখমন্ডল, বক্ষদেশ এবং কেশ উন্মুক্ত করে।
আমার ধারণা, নসীহত করে আমরা সফল হই নি। হে আমারকন্যা! তুমি কি জান কেন আমরা সফল হই নি? সম্ভবতঃ আমরা এখনও গ্রহণযোগ্য পন্থায় নসীহত করতে পারি নি এবং সংশোধনের দরজায় পৌঁছতেপারি নি।
হে আমার মেয়ে! আমরা তোমার দ্বীনী বোনদেরকে আল্লাহর ভয় দেখিয়েছি,কিন্তু কাজ হয় নি। অতঃপর অবৈধ্য সম্পর্ক ওব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ারকারণে ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়েসতর্ক করেছি, কিন্তু কোন ফল হই নি। এবিষয়ে অনেক বই লেখা হয়েছে, বহু বক্তৃতা দেয়া হয়েছে, তাও ব্যর্থ হয়েছে। এখন আমি ক্লান্ত শরীরে পরাজিত সৈনিকের ন্যায় ময়দান ছেড়ে বিদায় নিতে চাচ্ছি। আমরা বিদায় নিয়ে তোমার দ্বীনি বোনদের ইজ্জত-সম্ভ্রম ওসতীত্ব রক্ষার দায়িত্বতোমার হাতেই ছেড়ে দিচ্ছি, তোমার বিপদগামীবোনদেরকে উদ্ধার ও সংশোধনের বিষয়টি তোমারউপরই রেখে দিয়ে তোমার সফলতার দিকে চেয়ে আছি।
হে আমার মেয়ে! তুমি জেনে রেখো যে, তোমার হেফাজত তোমার হাতেই। এ কথা সঠিক যে, পাপের পথে অগ্রসর হওয়াতে পুরুষকেই প্রথম দায়ী করা যায়। নারীগণ কখনই প্রথমে এ পথে অগ্রসর হয় না। তবে তাদের সম্মতি ব্যতীত কখনই তারা অগ্রসর হতে পারে না, নারীগণ নরম না হলে পুরুষেরা শক্ত হয় না। মহিলাগণ দরজা খুলে দেয়আর পুরুষেরা তাতে প্রবেশ করে।
হে আমার মেয়ে! তুমি যদি চোরের জন্য ঘরের দরজা খুলে দাও আর চোর চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় তুমি যদি চিৎকার করেবলঃ হে লোক সকল! আমাকে সাহায্য কর? আমাকে সাহায্য কর, তাহলে তোমার চেচামেচি করা কি ঠিক হবে? তোমার কান্নাকাটিতে কি লাভ হবে? তোমার সাহায্যের জন্য কেউ কি এগিয়ে আসবে?
হে আমার কন্যা! তুমি যদি জানতে পার যে, পুরুষেরা হচ্ছে নেকড়ে,আর তুমি হচ্ছ ভেড়া, তাহলে কিন্তু তুমি নেকড়ের আক্রমণ থেকে ভেড়ার ন্যায় পলায়ন করবে। তুমি যদি জানতে পার যে, সকল পুরুষই চোর তাহলে কৃপণের ন্যায় তুমি তোমার সকল মূল্যবান সম্পদ পুরুষদের থেকে হেফজত করার জন্যে সিন্দুকে লুকিয়ে রাখতে। মনে রেখো! নেকড়ে কিন্তু ভেড়ার গোশত ছাড়া অন্যকিছু চায় না। আর পুরুষ তোমার কাছ থেকে যা ছিনিয়ে নিতে চায় তা কিন্তু ভেড়ার গোশতের চেয়ে অনেক মূল্যবান। তা যদি তোমার কাছ থেকে চলে যায়, তাহলে জেনে রাখবে তা হারিয়ে তোমারবেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভাল। সে তোমার সবচেয়ে মূল্যবানসম্পদটি নষ্ট করতে চায়, তোমার সম্মানের বিষয়টি ছিনিয়ে নিতে চায় এবং তোমার অমূল্য রত্নটি অপহরণ করতে চায়। সেটি হচ্ছে তোমারসতীত্ব ও পবিত্রতা, যার মধ্যে নিহিত রয়েছে তোমার সম্মান, যা নিয়ে তুমি গর্ব কর এবং যা নিয়ে তুমি বেঁচে থাকতেচাও।আল্লাহর শপথ! পুরুষতোমার এটিকেই নিয়ে নিতে চায়। এটি ছাড়া অন্য কথা কেউ বললে তুমি তা বিশ্বাস করো না।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন