পুন্যের অসংখ্য পথ/পাতা 3

কোন মন্তব্য নেই
১৩) উক্ত আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেন, “মুসলিম বা মু’মিনবান্দা যখন ওযূর উদ্দেশে তার মুখমণ্ডল ধৌত করে, তখন পানির সাথেঅথবা পানির শেষ বিন্দুরসাথে প্রত্যেক সেই গোনাহ বের হয়ে যায়, যা সে দুই চক্ষুর দৃষ্টির মাধ্যমে করে ফেলেছিল। অতঃপর যখন সে তার হাত দুটিকে ধৌত করে, তখন পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে প্রত্যেক সেই গোনাহ বেরহয়ে যায়, যা সে উভয় হাত দ্বারা ধারণ করার মাধ্যমে করে ফেলেছিল। অতঃপর যখন সে তার পা দুটিকে ধৌত করে, তখন পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে প্রত্যেক সেই গোনাহ বেরহয়ে যায়, যা সে তার দু’পায়ের চলার মাধ্যমে করে ফেলেছিল। শেষ অবধি সমস্ত গোনাহ থেকে সে পবিত্র হয়ে বের হয়ে আসে।” (মুসলিম ২৪৪, তিরমীয ২)
১৪) উক্ত আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “পাঁচ ওয়াক্ত নামায, এক জুম্মা থেকে আর এক জুম্মা এবং এক রমযান থেকে আর এক রমযান পর্যন্ত (সংঘটিত সাগীরাগোনাহ) মুছে ফেলে; যদি কবীরা গোনাহ থেকে বেঁচেথাকা যায় তাহলে ( নয়তুবানয়)।” (মুসলিম ২৩৩, তিরমীয ২১৪)
১৫) উক্ত আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “আমি কি তোমাদেরকে এমন কাজ বলে দেব না, যা দ্বারা আল্লাহ তাআলা পাপসমূহকেনিশ্চিহ্ন করে দেন এবং মর্যাদা বর্ধন করেন?” সাহাবাগন বললেন, ‘অবশ্যইবলুন, হে আল্লহর রসূল ! তিনই বললেন “ কষ্টের সময় পূর্ণরূপে ওযু করা, মসজিদের দিকে বেশি বেশিপদক্ষেপ করা ( অর্থাৎ দূর থেকে আসা) এবং এক নামাযের পর দ্বিতীয় নামাযের অপেক্ষা করা। সুতরাং এই হল (নেকী ও সওয়াব) সীমান্ত পাহারা দেওয়ার মত।” (মুসলিম ২৫১, তিরমীয ৫২)
১৬) আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি দুই ঠাণ্ডা (অর্থাৎ, ফজর ও আসরের) নামায পড়বে , সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”
(সহীহুল বুখারী ৫৭৪, মুসলিম ৬৩৫)
১৭) উক্ত আবূ মূসা আশআরী(রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “যখন বান্দা অসুস্থ হয় অথবা সফরে থাকে, তখন তার জন্য ঐ আমলের মতই (সওয়াব) লেখা হয়, যা সে গৃহে থেকে সুস্থ শরীরে সম্পাদন করত।” (সহীহুল বুখারী ২৯৯৬)
১৮) জাবের হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “প্রত্যেক নেকীর কাজ সাদকাহ স্বরূপ।” (সহীহুল বুখারী ৬০২১)

১৯) উক্ত জাবের হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “যে কোন মুসলিম কোন গাছ লাগায়, অতঃপর তা থেকে যতটা খাওয়া হয়, তা তার জন্য সাদকাহ হয়, তা থেকে যতটুকু চুরি হয়, তা তার জন্য সাদকাহ হয় এবং যে ব্যক্তি তার ক্ষতি করে, সেটাও তার জন্য সাদকাহ হয়ে যায়।” (মুসলিম ১৫৫২)
২০) মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, “মুসলিম যে গাছ লাগায় তা থেকে কোন মানুষ, কোন জন্তু এবং কোন পাখী যা কিছু খায়, তবে তা তার জন্য সাদকাহ হয়ে যায়।” (সহীহুল বুখারী ২৩২০,মুসলিম ১৫৫২)
২১) উক্ত জাবের হতে বর্ণিত, যে বনু সালেমাহ মসজিদের নিকটে স্থান পরিবর্তন করার ইচ্ছা করল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ(সাঃ)-এর কাছে এই সংবাদ পৌছল। তিনি তাদেরকে বললেন, “আমি খবর পেয়েছি যে, তোমরা স্থান পরিবর্তন করে মসজিদের নিকট আসার ইচ্ছা করছ?” তারা বলল, ‘হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) ! আমরা এর ইচ্ছা করেছি।’ তিনি বললেন, “হে বনু সালেমাহ! তোমরা তোমাদের(বর্তমান) গৃহেই থাকো; তোমাদের পদচিহ্নসমূহ লেখা হবে। তোমরা আপন গৃহেই থাকো; তোমাদের পদচিহ্নসমূহ লেখা হবে।”(মুসলিম) অন্য এক বর্ণনায় আছে, “ নিশ্চয় তোমাদের প্রত্যেক পদক্ষেপের বিনিময়ে একটিমর্যাদা বৃদ্ধি হবে।” (মুসলিম ৬৬৫)
২২) আবুল মুনযির উবাই ইবনে কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, একটি লোক ছিল। আমি জানি না যে, অন্য কারো বাড়ি তার বাড়ির চেয়ে দূরে ছিল। তা সত্ত্বেও তার কোন নামায ছুটত না। অতঃপর তাকে বলা হল অথবা আমি (কা’ব) তাকে বললাম যে, ‘তুমি যদি একটি গাধা কিনে আঁধারে ও ভীষন রোদে তার উপর সওয়ার হয়ে আসতে, (তাহলে তা তোমার পক্ষে ভাল হত?)’ সে বলল, ‘আমি এটা পছন্দ করি না যে, আমার বাড়ি মসজিদ সংলগ্ন হোক! কারন আমি তোএই চাই যে, (দূর থেকে) আমার পায়ে হেঁটে মসজিদেযাওয়া এবং ওখান থেকেই পুনরায় বাড়ি ফিরা, সব কিছু যেন আমার নেকীর খাতায় লেখা যায়।’ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) (তার কথা শুনে) বললেন, “আল্লাহ তাআলা এ সমস্ত তোমার জন্য একএ করে দিয়েছেন।”
২৩) অন্য এক বর্ণনায় আছে, “নিশ্চয় তোমার জন্য সেই সওয়াবই রয়েছে, যার তুমি আশা করেছ।”(মুসলিম ৬৬৩, আবূ দাউদ ৫৫৭)
২৪) আবূ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ বিন ইবনে আমর ইবনে আ’স (রাঃ) বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “চল্লিশটি সৎকর্ম আছে তার মধ্যে উচ্চতম হল, দুধ পানের জন্য (কোন দরিদ্রকে) ছাগল সাময়িকভাবে দান করা। যে কোন আমলকারী এর মধ্যে হতে যে কোন একটি সৎকর্মের উপর প্রতিদানের আশা করে ও তার প্রতিশ্রত পুরস্কারকে সত্য জেনে আমল করবে, তাকে আল্লাহ তার বিনিময়ে জান্নাত প্রবেশ করাবেন।” (সহীহুল বুখারী ৬৬৩১)
২৫) আদী ইবনে হাতেম (রাঃ) বলেন, আমি নবী (সাঃ)-কে বলতে শুনেছি, “তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো ; যদিও খেজুরের একটুকরাও সাদকাহ করে হয়। আর যে ব্যক্তি এর সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ভাল কথা বলে বাঁচে।”(সহীহুল বুখারী ৬০২৩,১৪১৩)
২৬) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা ঐ বান্দারপ্রতি সন্তষ্ট হন, যে খাবার খায়, অতঃপর তার উপর আল্লাহর প্রশংসা করে অথবা পানি পান করে, অতঃপর তার উপর আল্লাহর প্রশংসা করে।” (মুসলিম ২৭৩৪)
২৭) আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “প্রত্যেক মুসলমানের উপর সাদকাহ করা জরুরী।” আবূ মূসা (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, ‘যদি সে সাদকাহ করার মত কিছু না পায় তাহলে?’ তিনি বললেন, “সে তার হাতদ্বারা কাজ করে (পয়সা উপার্জন করবে) অতঃপর তা থেকে সে নিজে উপকৃত হবে এবং সাদকাও করবে।” পুনরায় আবূ মূসা (রাঃ) বললেন, ‘যদি সে তাও না পারে?’ তিনি বললেন, “যে কোন অভাবী বিপন্ন মানুষের সাহায্য করবে।”
আবূ মূসা (রাঃ) বললেন, ‘যদি সে তাও না পারে?’ তিনি বললেন, “সে (অপরের)ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকবে। [কারন, সেটাও হল সাদকাহ সরূপ।]” (সহীহুলবুখারী ১৪৪৫,৬০২২)

শেয়ার করে আপনিও হন ইসলামের প্রচারক ।
আমরা সবাই একাজটি করলে জানার পাশাপাশি সওয়াব হবে ।

কোন মন্তব্য নেই :