বড় কষ্ট কোমর ব্যথা**ডা. মো. আব্দুল গণি মোল্লাহ part 2
*. শক্ত বিছা্নায় শুলে কোমর ব্যথা কম হয়। তবে খুব শক্ত বিছানা বা মাটিতে শোয়ার খুব প্রয়োজন নেই, আবার নরম বিছানাও ক্ষতিকর। স্বাভাবিক বিছানায় শোয়াটাই ভালো।*. দীর্ঘক্ষণ বসে যাদের কাজ করতে হয় তাদের মেরুদণ্ড সোজা করে বসতে হবে বলে একটি ধারণা অনেকেই পোষণ করে। এটি ঠিক নয়, বরং আরামদায়ক ভঙ্গিতে বসাইভালো। অফিসে যাদের একটানা ও অনেকক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসেকাজ করতে হয় তারা মাঝেমধ্যে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন।
*. ভারী জিনিস ওপরে তুললেই কোমর ব্যথা হয়, এটিও ঠিক নয়। আসলে এমনটি ঘটে কৌশল না জানার কারণে। ভারী জিনিস তোলার সময় এমনভাবে উবু হয়ে তুলতে হবে, যেন কোমরে কোনো টান না পড়ে এবং ওজনটি সর্বত্র সমভাবে বন্টিতহয়।
যদি বাঁচতে চান
*. ওজন কম রাখতে হবে
*. প্রতিদিন ব্যায়াম বা শারীরিক কর্মকাণ্ড করতে হবে
*. ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ নিকোটিন মেরুদণ্ডের নিম্নাংশে রক্তপ্রবাহ শ্লথ করে এবং ডিস্কের ডিজেনারেটিভ পরিবর্তন বাড়ায়।
*. প্রয়োজনবোধে ব্যথার ওষুধ বা মাসল রিলাক্সেন্ট ওষুধ খেতেহবে।
*. প্রতিদিন যোগব্যায়াম বা আসন করলে অনেক ক্ষেত্রেই কোমর ব্যথা ভালো হয়।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
কোমর ব্যথা নির্ণয়ে কার্যকর পরীক্ষা হলো এমআরআই। এ ক্ষেত্রে হাড়, হাড়ের চারপাশের মাংসপেশি, লিগামেন্ট, হাড়ের মাঝখানের ডিস্ক, নার্ভ ইত্যাদি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে কোমরের একটি ডিজিটাল এক্স-রে থেকেও অনেক ধারণা পাওয়া যায়। বিশেষ ক্ষেত্রে রক্তের অন্যান্য পরীক্ষাও দরকারহতে পারে।
অল্প দিনের ব্যথায় চিকিৎসা
*. ভারী কাজ থেকে বিশ্রাম নিন। তবে সারা দিন শুয়ে-বসে কাটানোর দরকার নেই। হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটিকরুন।
*. গরম বা ঠাণ্ডা সেঁক নিন।
*. ফিজিওথেরাপি নিতে পারেন। কখনো কখনো ফিজিওথেরাপি সেন্টারে গিয়ে থেরাপিস্টের পরামর্শ নিতে পারেন।
*. ওষুধ যেমন-প্যারাসিটামল বা ডাইক্লোফেনাক কোমর ব্যথার ক্ষেত্রে কার্যকর। মাসল রিলাক্সেন্টও এ ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে,যদি ডাইক্লোফেনাকের সঙ্গে দেয়া হয়। কখনো কখনো সিডেটিভ বা এনজিওলাইটিক ওষুধও ভালো কাজ করে।
দীর্ঘদিনের ব্যথায় চিকিৎসা
*. ফিজিওথেরাপি নিয়মিত নিলে উপকার পাওয়া যায়। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই ফিজিওথেরাপিস্ট ও অর্থোপেডিক চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী থেরাপি নিতে হবে।
*. আকুপাংচার একটি জনপ্রিয় চিকিৎসা। তবে এতে ব্যথা সত্যি কমে কিনা এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে।
*. এপিডুরাল স্টেরয়েড ইনজেকশন অনেক সময় ব্যবহার করা হয়।
*. যখন এসব চিকিৎসায় কাজ না হয় তখন সার্জারির প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে যেসব ক্ষেত্রে পায়ের দুর্বলতার পাশাপাশি প্রস্রাব ও মলত্যাগে সমস্যা দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে সাধারণত সার্জারির প্রয়োজন হয়।আবার ডিস্ক প্রলাপ্স, স্পাইন অ্যাবসেস ইত্যাদি ক্ষেত্রেও সার্জারির প্রয়োজন হয়।
লেখক : মহাসচিব, বাংলাদেশ অর্থোপেডিকসোসাইটি
এবং নিটোরের অর্থোপেডিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন