আবুল হোসেনের দুর্নীতিতেই অর্থায়ন স্থগিত: হুদা
কোন মন্তব্য নেই
ঢাকা, অক্টোবর ২০ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি আমলের যোগাযোগমন্ত্রী নাজমুল হুদা বলেছেন, সৈয়দ আবুল হোসেনের দুর্নীতির কারণেই পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন স্থগিত করেছে বিশ্ব ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার বিকালে এক জরুরি সংবাদ সম্মলনে তিনি বলেন,"প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধের বিষয়ে আমার সম্পর্কে অসত্য কথা বলেছেন। আমিস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই- চারদলীয়জোট সরকারের আমলে মহাখালী ফ্লাইওভারসহ ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের (ডিইউটিপি) সাফল্যের কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশাল অংকের অর্থায়নের অঙ্গীকার করে ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছিলো।
"অর্থায়ন স্থগিত হয়েছে বিশ্বব্যাংক র্র্কতৃক বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রীর দুর্নীতির অভিযোগের কারণেই।"
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বলেন, বিএনপি আমলের যোগাযোগমন্ত্রীর [নাজমুল হুদা] দুর্নীতির কারণে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন স্থগিত করেছে বিশ্ব ব্যাংক।
একই দিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেন, পদ্মা সেতুর জন্য দাতাদের দেওয়া অর্থ সরকার 'খেয়ে' ফেলেছে।
যদিও সরকার বলছে, দাতা সংস্থাগুলো প্রতিশ্র"ত ঋণের অর্থ এখনো ছাড় করেনি।
২৯০ কোটি ডলারের পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ হিসেবে দেওয়ার কথা একশ ২০ কোটি ডলার। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতু নির্মাণে এডিবি ৬১কোটি, জাইকা ৪০ কোটি এবং ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক ১৪ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার কথা। বাকি অর্থ দেবে সরকার।
প্রকল্পের তদারকি সংস্থার প্রাক-নির্বাচনী তালিকায় থাকা কানাডীয় প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের বিরুদ্ধে গত মাসে 'দুর্নীতির' অভিযোগ তোলে বিশ্ব ব্যাংক। পরে এ বিষয়ে কানাডীয় পুলিশের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করে বিশ্ব ব্যাংক।
নাজমুল হুদা বলেন, "বিশ্ব ব্যাংক স্পষ্ট করে বলেছে, বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রী জনাব আবুল হোসেনের কোম্পানি সাকোর দুর্নীতির কথা এবং যার দুর্নীতির তদন্ত সাপেক্ষে অর্থের ছাড় বিশ্ব ব্যাংক স্থগিতরেখেছে।"কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কেন যোগাযোগমন্ত্রীর পক্ষে এতো সাফাই গাইছেন, তা জনগণকে জানাতে হবে। এর পেছনে কী কোনো গোপন রহস্য রয়েছে।"
সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, "যদি চারদলীয় জোট সরকার আমলের র্দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে তাদের সহায়তা বন্ধ করবেন, তাহলে এই সরকারের আমলে হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ চুক্তি কেন করতে যাবেন।"
'<ন>আমি আতঙ্কে'
রাজধানীর তোপখানা রোডের মেহরাব প্লাজায় নিজ চেম্বার সংবাদ সম্মেলন করেন নাজমুল হুদা।
তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রী আমারকথিত দুর্নীতির উদ্ভট ও অসত্য তথ্য নিয়ে কেন পাটগ্রামের জনসভায় উপস্থিত হলেন, তা বোধগম্য নয়। আমি তার এরূপ বক্তব্যে আতঙ্কের মধ্যে আছি। কারণ এই সংবাদ সম্মেলনের কথা বলার অভিযোগে আবার কোনো মামলার মুখে আমি পড়তে পারি।"
পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে শুরু হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী নাজমুল হুদা।
তিনি বলেন, "পদ্মা সেতু প্রকল্পের স্থান নির্ধারণ, নকসাপ্রণয়ন ও ভূমি অধিগ্রহণের কাজ আমাদের আমলে শুরু হয়েছিলো।
"ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে প্রথম দফার ক্ষতিপূরণের অর্থ বরাদ্দেরও কথা ছিলো আমাদের সময়ের শেষ দিকে। কিন্তু তৎকালীনপ্রধানমন্ত্রীর [খালেদা জিয়া] ব্যস্ততার কারণে তা হয়ে ওঠেনি।"
তার দুর্নীতি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবদিতে গিয়ে নাজমুল হুদা বলেন,"১/১১ ক্যাংগারু কোর্টে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ যে হাইকোর্টে খারিজ হয়ে গেছে এবং আমি যে বে-কসুর খালাস পেয়েছি- সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর জানা উচিৎ ছিলো।"
বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দুর্নীতির অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা হয় বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের যোগাযোগমন্ত্রী নাজমুলহুদার বিরুদ্ধে।
বিএনপির এক সময়কার প্রভাবশালী এমন্ত্রী বলেন, "আমার মামলার উদ্বৃতি দিয়ে তিনি [প্রধানমন্ত্রী] ১/১১ কুশিলবদেরঅপকর্মের স্বীকৃতি দিয়েছেন।এটা বর্তমান গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার জন্য ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত। এর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।"
সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী অভিযোগ করেন, "ক্ষমতায় বসে ১/১১ সরকারের দায়ের করা শেখ হাসিনাসহতার দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে শত শত দুর্নীতির মামলাপ্রত্যাহার করে নিয়েছে। অন্যদিকে ওই সময়ে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো বহাল রাখা হয়েছে। সরকার এ রকম দ্বৈতনীতির মাধ্যমে দেশের খণ্ডিত জনগণের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজেকে চিহ্নিত করেছেন শেখ হাসিনা।"
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএম/পিডি/১৯৪০ ঘ.

কোন মন্তব্য নেই :