পুরুষত্বহীন সমস্যা মোকাবিলায় নারীর ভমিকা

1 টি মন্তব্য

পুরুষত্বহীনতা হলো পুরুষের জীবনের একটি জটিল যৌন সমস্যা। একে জটিল বলার কারণ এটি পুরুষকে যৌনমিলন থেকে বিচ্যুত করে ফেলে। যখন কোনো পুরুষের লিঙ্গ সময় মত অর্থাৎ যৌনমিলনের সময় উত্তেজিত হয়ে উঠে না তখন তাকে ইরেকটাইল ডিসফাংশন বলে। এর ফলে লিঙ্গ সঠিক মাত্রায় যৌনমিলনের জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠেনা। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যাবহার দ্বারা ইদানীং পুরুষত্বহীন তার সমস্যার সমাধান শুরু হয়েছে। শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষত্বহীনতার কারণ মানসিক এবং ১০ ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষের পুরুষত্বহীন তার জন্য শারীরিক নানা কারণ দায়ী থাকে। পুরুষত্বহীনতা প্রাথমিক স্তরের এবং চূড়ান্ত মাত্রার হতে পারে। প্রাথমিক স্তরের পুরুষত্বহীনতার জন্যে লিঙ্গ খুব বেশি মাত্রায় উত্তেজিত হয় না এবং উত্তেজনার কিছুক্ষণ পরেই লিঙ্গ শিথিল হয়ে যায়। আর চূড়ান্ত মাত্রার পুরুষত্বহীনতা হলো লিঙ্গের একেবারে অসাড় অবস্থা।
প্রাথমিক পুরুষত্বহীনতা
কোনো পুরুষের প্রাথমিক পুরুষত্বহীনতা হবে তা আগে থেকে বলা যায় না। আবার কেউ অন্যকে শেখাতে পারে না লিঙ্গ উত্থানের বিষয়টি। লিঙ্গের উত্থান একটি প্রাকৃতিক  অবস্থা। রেসপিরেটোরী, সারকুলেটরী এবং স্নায়ুবিক কারণে লিঙ্গ উত্থিত হয়। কিন্ত আসল কারণটি হলো প্রাকৃতিক। তবে অনেক ক্ষেত্রে যৌন মনোদৈহিক সামাজিক কারণেও অনেকের পুরুষত্বহীনতা হতে পারে। যে কারণগুলো পুরুষত্বহীনতার জন্য স্বাভাবিকভাবে দায়ী সেগুলো হলো-                                                   
  • কঠিন ধর্মীয় বিশ্বাস।     
  • যৌনতার জন্য প্রচুর শক্তি না থাকা।
  • মাতৃত্বের কঠিন চাপ।   
  • সমকামিতা পছন্দ করা।
  • নারীদেরকে ঘৃণা করা।
  • পতিতার সাথে সঙ্গমে ব্যর্থ হওয়ার পরে মনে পাপ বোধের সৃষ্টি।
চিকিৎসা
প্রায়শই পুরুষত্বহীনতার চিকিৎসা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় এবং রোগের কারণ ধরতে না পারলে চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রলম্বিত হতে পারে। যৌন বিশেষজ্ঞ মাস্টার এবং জনসনের মতে যৌন সঙ্গিনী বদলের ফলেও অনেক সময় এ রোগের সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে। নারীর উচিত পুরুষকে এব্যাপারে সাহায্য করা। স্ত্রীর উচিত স্বামীকে সাহায্য করা। নৈতিক, সামাজিক, আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরুষের পুরুষত্বহীনতার চিকিৎসায় বর্তমানে যে বিষয়গুলো গ্রহণ করা হয় সেগুলো হলো-
  • যৌনতার পরিপূর্ণ শিক্ষাদান।
  • সাইকোথেরাপি।
  • রোগীকে হস্তমৈথুনের দ্বারা তার লিঙ্গের দৃঢ়তা বাড়ানো।
  • দুশ্চিন্তাগ্রস্ত রোগীকে এ্যাংজিওলিটিক্স দেয়া।
  • নিচু মাত্রার ৫০ গ্রাম টেস্টোস্টেরন ইনজেকশন সপ্তাহে তিনবার দেয়া।
  • যদি রোগীর কেবলমাত্র উত্থানজনিত সমস্যা হয় তবে রোগীকে নগ্ন নারীর সামনে উপস্থিত করা। এক্ষেত্রে পতিতাদের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।
  • পেপাভেরিন ইনজেকশন লিঙ্গের দৃঢ়তা বাড়াতে পারে।
  • রোগীর জন্য সামাজিকতার প্রয়োজন।
  • যৌন উদ্দীপক গ্রন্থ্থ পড়া উচিত।
চূড়ান্ত মাত্রার পুরুষত্বহীনতা
অনেক পুরুষের পুরুষত্বহীনতা সাময়িক। দেখা যায় যে খুব বেশি মাত্রায় উদ্বিগ্ন থাকলে বা কোনো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকলে যৌনমিলনের সময় পুরুষ তার যৌন উত্তেজনা হারাতে পারে। আবার খুব বেশি মাত্রায় এলকোহল সেবনের ফলেও পুরুষের লিঙ্গের দৃঢ়তা নষ্ট হয়ে যায়। সাইকোজেনিক অথবা অর্গানিক নানা কারণে পুরুষের পুরুষত্বহীনতার সৃষ্টি হতে পারে। মনোদৈহিক যে যে কারণে পুরুষত্বহীনতার সৃষ্টি হতে পারে -
১.         দাম্পত্য সমস্যা।
২.         ধর্মীয় কুসংস্কার।
৩.        কঠিনভাবে পিতা বা মাতার অনুশাসনের নিয়ন্তণে থাকা।
৪.         পূর্বের যৌন অক্ষমতার জন্য পাপূবোধ।
৫.        অকাল বীর্যপাত।
৬.        যৌনতার ব্যাপারে অনাগ্রহ।
৭.         যৌনমিলনে সফলতা আসবে কিনা এই নিয়ে ভয় এবং দুশ্চিন্তা।
অর্গানিক কারণে সৃষ্ট পুরুষত্বহীনতা-
১.         এনাটোমিকাল
           = বড় হাইড্রোসেল
           = টেস্টিকুলার ফাইব্রোসিস
২.         কার্ডিওরেসপেরেটোরী
           = এনজিনা
           = মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশন
৩. জেনিটো ইউরিনারী
           = ফাইমোসিস
          = প্রিয়াপিজম
          = প্রোসটাটিটিস
          = ইউরেথ্রিটিস
          = প্রোসটাটেকটমী
৪. এন্ড্রোক্রাইনাল
         = ডায়াবেটিস
         = থাইরোটক্সিকোসিস
         = স্থলতা
         = ইনফ্যান্টালিজম
         = ক্যাসট্রেশন
         = এক্রোমেগালি
৫. নিউরোলজিক্যাল
        = মাল্টিপোল সিরোসিস
        = অপুষ্টি
        = পারকিনসন্স অসুখ
        = টেমপোরাল লবের সমস্যা
        = সপাইনাল কর্ডের আঘাত
        = ই সি টি
৬. ইনফেকশন                                                                 
       = টিউবারকিলোসিস
       = গনোরিয়া
       = মাম্পস
৭. ড্রাগ নির্ভরতা
       = এলকোহল সেবন
       = স্নায়ু শিথিলকারী ওষুধ
       = এন্টিহাইপারটেনসিভ ওষুধ
       = সাইকোট্রপিকস ওষুধ। যেমন - ইমিপ্রামিন
       = ডিউরেটিক্স। যেমন - রেজারপাইন
রোগ নির্ণয়
যে কোনো ধরনের পুরুষত্বহীনতার চিকিৎসার জন্য তার রোগ নির্ণয়ের প্রয়োজন রয়েছে। ডাক্তারকে জানতে হয় পুরুষের ক্রমাগত যৌন সমস্যা কেন সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় মনোদৈহিক কারণের চাপ শরীরের উপর এসে পড়ে এবং এই জন্য পুরুষ উত্থান সমস্যায় ভোগে। রোগ নির্ণয়ের জন্য ডাক্তারকে যে বিষয়গুলো জানতে হয় -
১.         রোগীর পারিবারিক ডাক্তারী ইতিহাস।
২.         রোগীর ব্যক্তিগত ডাক্তারী ইতিহাস।
৩.        রোগীর শারীরিক পরীক্ষা।
৪.         রোগীর লিঙ্গ পরীক্ষা।
৫.        ল্যাবটেস্ট।
৬.        মিনেন সোটা মালটিফেজিক পারসোনালিটি ইনভেনটোরী।
রোগীর পারিবারিক ডাক্তারী ইতিহাস এবং রোগীর ব্যক্তিগত ডাক্তারী ইতিহাস জানা এই জন্য জরুরি যে এতে করে রোগ নির্ণয় করা সুবিধা হয়। ডাক্তার বুঝতে পারেন পুরুষত্বহীনতার এই সমস্যাটির কারণ শারীরিক নয় মানসিক। অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত এলকোহল সেবনজনিত কারণে পুরুষের পুরুষত্বহীনতা দেখা দেয় এবং এটি স্থায়ী সমস্যার সৃষ্টি করে। অনেকে আবার যৌনতার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলে এবং অনেকের অকাল বীর্যপাতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। রোগীর শারীরিক পরীক্ষা নীরিক্ষার মধ্যে প্রধান বিবেচ্য বিষয় থাকে তার রেসপিরেটোরী এবং কার্ডিওভাসকুলার ঠিক মত কাজ করছে কিনা তা লক্ষ্য করা। এছাড়াও স্নায় এবং তলপেট ব্যবস্থা কতটুকু সুস্থ আছে এটিও ডাক্তারদেকে জানতে হয়। লিঙ্গ পরীক্ষার সময় ডাক্তার যে বিষয়গুলো লক্ষ্য করেন -
  • প্রিপিউজ- ফাইমোসিসের জন্য
  • মত্রনালীর মুখ-স্টেনোসিসের জন্য
  • অন্ডথলি- হাইড্রোসেলের জন্য     
  • করপরা কেভারনোসা-যে কোনো প্রকার ফাইব্রোসিসের জন্য
ল্যাবরেটরী টেস্ট
ল্যাবরেটরীতে ডাক্তার রোগীর বিভিন্ন শারীরিক বিষয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে থাকেন। এতে করে দ্রুত সমস্যা নির্ণয় করা সহজ হয়। ল্যাবরেটরিতে পুরুষত্বহীনতার জন্য যে সমস্ত টেস্ট করানো হয় সেগুলো হলো -
  • সিবিসি
  • ইএসআর
  • মত্র পরীক্ষা   
  • লিভারের এনজাইম পরীক্ষা   
  • বীর্য পরীক্ষা
  • থুথু পরীক্ষা
  • এসএম এ ১২
  • টেস্টোস্টেরন স্তর পরীক্ষা
  • প্রেল্যাকটিন স্তর পরীক্ষা
পুরুষত্বহীনতার চিকিৎসা
পুরুষত্বহীনতার চিকিৎসার ব্যাপারে অধিকাংশ পরামর্শ এসেছে মাস্টার এবং জনসনের কাছ থেকে। তারা তিনটি বিষয়ে প্রাথমিকভাবে গবেষণা করে থাকেন যে, কেন একজন পুরুষ পুরুষত্বহীনতায় ভোগে। এই তিনটি কারণকে বিশেস্নষণ করে তারা এমন কিছু কৌশল এবং পদ্ধতির কথা বলেন যাতে করে পুরুষত্বহীনতা সমস্যা কাটানো যায়। তাদের গবেষণার বিষয় তিনটি হলো -
১. যৌনতার ব্যাপারে পুরুষ এবং নারীর ভ্রান্ত ধারণা।
২. পুরুষের পুরনো চিন্তা ভাবনা এবং উঁচু মাত্রার শারীরিক এবং মনোদৈহিক চাপ। বিশেষ করে স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার যৌনতার ব্যাপারে আলোচনা কম হওয়া। মনে রাখা উচিত স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার যৌন আলোচনা যৌন উদ্দীপনা বাড়াতে পারে।
৩. পুরুষত্বহীন পুরুষের মানসিক চাপ বেশি থাকে সেই কারণে স্ত্রীর বা যৌন সঙ্গিনীর উচিত তাকে আশ্বস্ত করা যে এটি কোনো রোগ নয়।                               
মাস্টার এবং জনসনের পুরুষত্বহীনতার ব্যাপারে দেয়া পরামর্শগুলো হলো-
  • যৌন সঙ্গী এবং সঙ্গিনীর মধ্যে খোলামেলা যৌন আলোচনা করা উচিত। এটি পরসপরের যৌনানুভূতিকে চাঙ্গা করতে পারে এবং পুরুষের লিঙ্গের দৃঢ়তা সৃষ্টি  করে।
  • যৌনতার ব্যাপারে কোনো প্রকার ভ্রান্ত ধারণা পোষন করা উচিত নয়। নারী এবং পুরুষ উভয়েরই উচিত যৌনতার ব্যাপারে একজন অন্যজনকে সাহায্য করা। এর  ফলে যৌন অনুভূতি এবং পুরুষের লিঙ্গের দৃঢ়তা তৈরি হতে পারে।
  • যদি নারী বা পুরুরো যে কারো একজনের যৌনতার ব্যাপারে কোনো প্রকার সন্দেহ, ভয় ভীতি বা দুশ্চিন্তা কাজ করে তাহলে সাথে সাথে তা ডাক্তারকে জানানো উচিত। অনেক নারী যৌনতার ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা খুব পছন্দ করে। হয়তো তার যৌন সঙ্গ বা স্বামী ওরাল সেক্স পছন্দ করছে অথচ নারী সেটি পছন্দ করছে না। এতে করে উভয়ের যৌন অনুভূতির মধ্যে একটা পার্থক্য তৈরি  হতে পারে। এ ব্যাপারটির দিকে খেয়াল রাখা উচিত।
  • পরসপরের সাথে গভীর স্পর্শের সম্পর্ক থাকা উচিত ।    
  • পুরুষের যদি উত্তেজনা কম থাকে সে ক্ষেত্রে নারীর উচিত পুরুষকে উত্তেজিত করে তোলা। নারী বিভিন্ন ভাবে পুরুষকে উত্তেজিত করে তুলতে পারে। বিশেষ করে নারী তার স্তন, স্তনবৃন্ত, ক্লাইটোরিস ইত্যাদি উত্তেজক শারীরিক অংশের স্তপর্শ দ্বারা পুরুষকে উত্তেজিত করে তুলতে পারে।
  • পুরুষত্বহীনতা সমস্যা মোকাবেলায় নারীর ভমিকা রয়েছে খুব বেশি। নারী পুরুষকে বিভিন্নভাবে উত্তেজিত করে আবার তাকে শিথিল করে তার লিঙ্গের দৃঢ়তা বাড়াতে পারে। স্ত্রী দিনে অন্তত তিন চার বার স্বামীর লিঙ্গের দৃঢ়তা বাড়াতে এ কাজটি করতে পারে।
  • লিঙ্গের উত্তেজনা দীর্ঘক্ষণ ধরে না রেখে পুরুষের উচিত একবার লিঙ্গ শিথিল করে আবার লিঙ্গের উত্তেজনা তৈরি করা। এতে করে পুরুষত্বহীনতার সমস্যা কিছুটা কমতে পারে।   
অধ্যাপক ডাঃ এএইচ মোহাম্মদ ফিরোজ
এফসিপিএস এমআরসিপি এফআরসিপি

ফেসবুকে আমি

next post @

ভালোবাসার এনাটমি (আরিফ মাহমুদ সাহবুল)



শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।তাদের কে জানতে দিন অজানা বিষয় গুলি।প্রকাশক ও সম্পাদক ব্লগার_সৈয়দ রুবেললেখকজানার আছে অনেক কিছু

1 টি মন্তব্য :

Mohsin Al Newas বলেছেন...

vai, ami kono jowno tripti paina, just ejaculation ar time a 5-10sec ar jnno aktu feelings hoe,thats it.amar sex life a ami kono din ae feelings ta painai r ae jnno ami sex korta bashi agrohina.apnar kacha thakla aktu shomadhan diben plz.amar age now 40.
Thanks.