ভালোবাসা এবং যৌনতা

কোন মন্তব্য নেই
দাম্পত্য জীবনে প্রেম-দরকার তৃপ্তিময় যৌনতা
প্রেম এমন এক শব্দ এটা বলতে যতটা সহজ মনে হয় কাজের বেলা কিন্তু ঠিক ততটা কঠিন। সাধারণত কম বয়সে নারী-পুরুষ দুজনের মাঝেই আসে প্রেম। প্রেম কখনো শরীরভিত্তিক, কখনো আবার মন-মানসিক ও শারীরিক অবদান দুটোই সমান্তরালভাবে থাকে। আমাদের দেশে প্রেম প্রথম আসে মানসিক দিক থেকে, তারপর সেটা পরিপূর্ণতা পায় শারীরিক অবস্থায়। কিন্তু পাশ্চাত্যের প্রেমে শারীরিক প্রাধান্য থাকে মুখ্য। সেখানে শারীরিক মিলনের মাধ্যমেই শুরু হয় প্রেম-প্রীতি। অল্প বয়সেই ছেলেমেয়েরা তাদের শারীরিক চাহিদা পরিপূর্ণ করতে সচেষ্ট হয়। এটা তাদের সামাজিক প্রেক্ষাপট। তাদের কথায়, শারীরিক আবেদন যদি ঠিক থাকে তবে মানসিক আবেদন সেখানে পূর্ণতা লাভ করবে। তাই পাশ্চাত্য প্রেমে বিয়ে অত্যন্ত গৌণ। পাশ্চাত্যে প্রায় ৯৫% প্রেমে বিয়ে হয় না। কিন্তু তারপরও তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো জীবন যাপন করে থাকে। একই ছাদের নিচে তারা বসবাস করে। এই লিভ টুগেদারের ফলে অবৈধ সন্তান হচ্ছে। সন্তানের পরিচয় হচ্ছে সেই বয়ফ্রেন্ডের পরিচয়ে। তবে আমাদের দেশে এমন অবস্থা নেই। আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক প্রেক্ষাপট তা সমর্থন করে না।
প্রেম যে রকমেরই হোক না কেন তাতে কমবেশি শারীরিক প্রাধান্য থাকেই। কারণ শরীরকে বাদ দিয়ে তো আর মানুষ নয়। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে প্রেম না থাকলে সুখময় সেক্স থাকবে না। আবার সেক্স না থাকলে স্বর্গীয় প্রেম থাকবে না। তাই যে কোনো সংসার জীবনে প্রেমটাকে বজায় রাখতে হলে প্রয়োজন চমৎকার যৌনতা। যৌনতা নারী-পুরুষকে দূর থেকে কাছের করে ফেলে। যে দম্পতিদের মাঝে চমৎকার যৌনমিলন নেই তাদের মাঝে বনিবনাও খুব একটা লক্ষ করা যায় না। তাই প্রতিটি নারী-পুরুষকেই তাদের প্রেম-প্রীতি অক্ষুণ্ন রাখার জন্য যৌনতা বিষয়ে প্রয়োজনীয় জ্ঞান রপ্ত করতে হবে। জানতে হবে যৌনতার গোপন রহস্য, মধুর রহস্য। কয়েকটি যৌন সমস্যা দাম্পত্য জীবনের প্রেমকে পানসে করে দিতে পারে, আর সেগুলো হলো-
  • অকালে বীর্যস্খলন
  • যন্ত্রণাদায়ক যৌনতা
  • যৌনমিলনে ইচ্ছার অভাব
  • মিলন-ভীতি
  • অসুস্থতা ইত্যাদি।
অকাল বীর্যপাত যৌনজীবনকে বিষিয়ে তুলতে পারে। প্রায় দেখা যায় স্বামীর অকাল বীর্যপাতের ফলে স্ত্রী স্বামীর প্রতি প্রেম-প্রীতি হারিয়ে ফেলেন, সেখানে তৈরি হয় বিরক্তিবোধ ও অস্বস্তি। স্বামী যদি তার প্রিয়তমা স্ত্রীকে সুখী করতে ব্যর্থ হয় তাহলে তিনি বা তার স্ত্রী কেউ যৌনসুখে সুখী হতে পারবে না। এতে করে দুজনার মধ্যে বিস্তার লাভ করবে হতাশা। আর হতাশা দুজনার মনে সৃষ্টি করবে জ্বালা-যন্ত্রণা, বিষণ্নতা।
অনেক পুরুষকেই দেখা যায় যৌন উত্তেজনায় পাগল হয়ে ওঠে। মনে হয় যেন কী থেকে কী করে ফেলবেন কিন্তু করতে তো কিছুই পারেন না। পরে অনুশোচনায় ও লজ্জায় ভেঙে পড়েন। দেখা যায় স্ত্রীর যোনিতে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করানোর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বীর্যপাত হয়ে যায়। এতে করে যৌনসুখ শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ে। তাই এক্ষেত্রে স্বামীকে হতে হবে সজাগ, সতর্ক ও অভিজ্ঞ।
স্বামীকে মিলনের সময় ব্যস্ত হওয়া চলবে না, হতে হবে শান্ত, ধৈর্যশীল, ধীরে ধীরে Step by Step  যৌনতার চূড়ান্ত লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। এ সময় প্রচণ্ড উত্তেজিত না হয়ে বরং প্রিয়তমা স্ত্রীকে উত্তেজিত করতে হবে, স্ত্রীর উত্তেজনা জাগানোর কাজে নিজেকে নিয়োগ করতে হবে। স্ত্রীকে আদর, সোহাগ দিয়ে ভরিয়ে দিতে হবে, চুমো দিয়ে তাকে জাগাতে হবে। যখন মিলনের সময় আসবে তখন ধীরে ধীরে গোপনাঙ্গ স্ত্রীর গোপনাঙ্গে প্রবেশ ঘটাতে হবে, মিলন শুরু করতে হবে ধীরগতিতে। যখনই বীর্যপাত হবে বলে মনে হবে তখনই কিছু সময়ের জন্য লিঙ্গ চালানো বন্ধ করতে হবে। এ অবস্থায় স্ত্রীকে চুমো দেয়া যেতে পারে, স্ত্রীকে সোহাগ করা যেতে পারে। এভাবে কিছুটা সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর আবার লিঙ্গ চালনা শুরু করতে হবে। আবার শেষ মুহূর্তের আগে থেমে যেতে হবে, আবার শুরু করতে হবে-আর এটাকেই বলে ‘স্টপ স্টার্ট টেকনিক’। এ টেকনিক বেশ কিছু দিন ধরে নিয়মিতভাবে প্র্যাকটিস করতে থাকলে তা একসময় সুফল বয়ে নিয়ে আসবে এবং ইচ্ছামতো তখন যৌনসঙ্গমের সময়কাল কমবেশি করা যাবে। এতে করে স্বামীও হবে যৌনসুখে সুখী, স্ত্রীও পাবে সেক্সের মন মাতানো স্বাদ। আর এভাবে দুজনার মাঝে প্রেম তৈরি হবে, বজায় থাকবে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ধরে।
যৌনতায় অকাল বীর্যপাত ঠেকাতে স্বামী আরও কিছু পদ্ধতি চর্চা করতে পারেন, যেমন-চূড়ান্ত মুহূর্তে উপনীত হওয়ার সময় স্ত্রীকে বলবেন যে সে যেন তার আঙুল দিয়ে আপনার পুরুষাঙ্গকে চেপে ধরে। এতে করেও সফলতা আসে। তবে তা একদিনেই হবে না। এ পদ্ধতি ভালোভাবে জানার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করলে আরও ভালো হবে।
যাদের সহজেই বীর্যপাত হয়ে যায় তারা মিলনের সময় বিভিন্ন আসনে মিলন করতে পারেন। আসন পরিবর্তনও যৌনতার উৎকর্ষতা সৃষ্টি করে থাকে। তবে যাই হোক অন্তত একবার অভিজ্ঞ ডাক্তারের সুপরামর্শ গ্রহণ করা প্রয়োজন। ডাক্তারের পরামর্শ দাম্পত্য জীবনের প্রেমকে মজবুত হতে সহায়তা করতে পারে।
যৌনমিলনে নারীর অসহ্য ব্যথা
যৌনমিলনে যেমন মন মাতানো সুখ আছে তেমনি কারও বেলায় তা আবার কষ্টের কারণ হয়েও দাঁড়াতে পারে। যেমন নারীদের কথাই ধরা যাক। কিছু কিছু নারী আছে যারা যৌনমিলনকালে ব্যথায় কুঁকড়ে ওঠেন। তখন দেহমিলন তাদের কাছে হয়ে ওঠে যাতনার। যৌনমিলনের সময় পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করানোর পর কিছু কিছু নারী তাদের যৌনাঙ্গে মিলনকালীন মাঝারি থেকে প্রচণ্ড মাত্রার ব্যথা অনুভব করে থাকে। সেক্স করতে সক্ষম এমন বয়সের যে কোনো নারীর বেলায় এ ঘটনাটি বা সমস্যাটি বারবার চক্রের মতো হতে পারে। নারীর এ সমস্যাটি শারীরিক বা মানসিক কারণে বা উভয় কারণে হতে পারে। সঙ্গমকালীন নারীর যৌনাঙ্গে ব্যথার ঝুঁকি যাদের বেশি তারা হলেন-
  • সামপ্রতিক শারীরিক সমস্যাগ্রস্ত
  • মানসিক অসুস্থ
  • মনোশারীরিক চাপ
  • মদ্যপান
  • দীর্ঘমেয়াদি অবসন্নতা বা ক্লান্তি ইত্যাদি। এ সমস্যায় দেহের যে অংশ জড়িত তা হলো-
  • যোনির মাংসপেশি
  • সতীচ্ছদ বা হাইমেন
  • জরায়ু বা ইউটেরাস
  • মস্তিষ্ক
মিলনকালীন যৌনাঙ্গে
ব্যথার মানসিক কারণ
  • যৌনপুলকের ঘাটতি
  • যৌনসুখ ও শিহরণের অভাব
  • যৌনতা বা সেক্স সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণার অভাব
  • যৌনাঙ্গে আঘাত পাওয়ার প্রতি ভয় বা ফোবিয়া
  • গর্ভাবস্থায় যৌনমিলন
  • গর্ভবতী হওয়ার ভয়
  • শৈশবে যৌন অত্যাচারমূলক অভিজ্ঞতা বা সেক্সুয়াল অ্যাবিউস
  • সাইকোলজিক্যাল বা মেন্টালি আঘাত
  • সেক্স সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা
  • যোনি পিচ্ছিল না হওয়া বা যোনির শুষ্কতা অর্থাৎ মানসিকভাবে যৌনক্রিয়ায় পর্যাপ্ত উত্তেজনার অভাব বা উত্তেজনা সৃষ্টি করতে না পারা
  • সঙ্গী বা সাথীর মাঝে কোনো ব্যাপারে বনিবনা বা ভুল বোঝাবুঝি অথবা প্রেম-ভালোবাসার অভাবেও এ সমস্যার উদ্ভব হতে পারে
মিলনকালীন যৌনাঙ্গে ব্যথার দৈহিক কারণ
  • জরায়ুতে টিউমার যেমন-ফাইব্রয়েড
  • নারীর ইউরেথ্রাতে সংক্রমণ
  • যোনির শুষ্কতা
  • যোনিতে ক্ষত/ইনফেকশন যেমন-হারপিস
  • যোনির সারভিক্স, ডিম্বনালি বা ফেলোপিয়ান টিউব অথবা গর্ভাশয়ে ইনফেকশন
  • শ্রোণিচক্রের বা পেলভিসের প্রদাহজনিত ব্যাধি
  • অপারেশন-পরবর্তী কোনো জটিলতায় যোনি দেয়ালে চাপ অনুভূতির কারণে
  • এন্ডোমেট্রিওসিস
  • সন্তান প্রসব-পরবর্তী যোনির অপারেশনের জটিলতা
  • হঠাৎ করে সতীচ্ছদ ছিন্ন হওয়া
  • নারীর যোনির পর্দা বা সতীচ্ছদ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি মোটা হওয়া
  • মেনোপজ বা রজঃনিবৃত্তির পরে যোনি দেয়াল শুষ্ক ও পাতলা হয়ে যাওয়া
  • জন্মনিরোধক ফোম, কনডম বা ডায়াফ্রাম অথবা জেলির কারণে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়া
মিলনকালীন নারীর যৌনাঙ্গে ব্যথার লক্ষণ ও উপসর্গ
  • পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করাতে গেলে যোনিতে ব্যথা সৃষ্টি হয়
  • সঙ্গমকালীন যোনি অঞ্চলে দারুণ ব্যথা পাওয়া
  • যৌনতার বা সেক্সের বিভিন্ন ভঙ্গিতেও যোনি এরিয়ার ব্যথা-বেদনা হতে থাকা
  • যৌনমিলন বা সেক্স করার সময় সামান্য নড়াচড়াতেই ব্যথা তীব্র হয়ে যাওয়া
  • মিলনের সময় নারী যোনিতে Discomfort অনুভব করতে থাকে
  • যৌনমিলন নারীর কাছে ঘৃণা বা অতৃপ্তি অথবা যাতনার ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
  • নারী বিরক্ত হয়ে ওঠে
  • যৌনমিলনে ভীতসন্ত্রস্ত থাকে, ফলে তার মাঝে তৈরি হয় Sen phobia
  • নারী স্বামীর সান্নিধ্য থেকে পালিয়ে বেড়ায় বা দূরে দূরে থাকে
জটিলতা
  • এ সমস্যায় নারীর আত্মসম্মানবোধ হ্রাস পায়
  • যৌন অনুভূতিবোধ বিকৃত হয়ে যায়
  • ব্যক্তিত্বজনিত সমস্যার সৃষ্টি হয়
  • মানসিক সমস্যা দেখা দেয় (কোনো কোনো ক্ষেত্রে)
এ রোগে করণীয়
অভিজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে রোগীর পুরো মেডিকেল ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা ইনভেস্টিগেশন করাতে হবে। উপসর্গগুলোর ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ করা দরকার। প্যাপ স্মিয়ারসহ যোনির যে কোনো অ্যাবনরমাল ক্ষরণের কালচার টেস্ট করাতে হবে। আসল রোগ, আঘাত বা ইনজুরি অথবা যোনির গঠনগত ত্রুটি থাকলে সেগুলোর উপযুক্ত ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা করাতে হবে। মানসিক কারণ দায়ী থাকলে Sen Education ও মনোবিশেষজ্ঞের কাউন্সিলিং বা সাইকোথেরাপির দরকার হবে। সেক্স বা যৌনতা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞান বা ধারণা অর্জন করতে হবে এবং যৌনতা সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পরিহার করে ইতিবাচক ধারণা ও মনোভাব রোগীকে সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।
নারীর যৌনাঙ্গে ব্যথার চিকিৎসা
  • যোনির শুষ্কতা বেশি হলে পিচ্ছিলকারক K Y লুব্রিক্যান্ট ব্যবহার করা যেতে পারে
  • ইনফেকশন থাকলে তার চিকিৎসা করাতে হবে
  • উষ্ণ গরম পানিতে প্রতিদিন ৩-৪ বার যোনি ধুতে হবে
  • যৌনাঙ্গ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে
  • দুশ্চিন্তা বা টেনশনকে যথা সম্ভব এড়িয়ে চলার অভ্যাস গড়তে হবে। প্রয়োজনে সেক্সোলজিস্ট বা সাইকোলজিস্টের শরণাপন্ন হতে হবে।
যৌনবিকৃতি ও আচরণ
যৌনতার কোন আচরণটি স্বাভাবিক আর কোন আচরণটি অস্বাভাবিক তা নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন মতান্তর। যৌনতার আচরণ একেক দেশে একেক রকম। এক দেশে যা স্বাভাবিক অন্য দেশে তা অস্বাভাবিক। আবার এক দেশে যা অস্বাভাবিক অন্য দেশে তা স্বাভাবিক। যে যৌনতা স্বাভাবিকতার শেষ সীমানা অতিক্রম করে তা বিকৃত যৌনতা। বিকৃত যৌনতার কারণ-
  • স্বাভাবিক যৌনসঙ্গীর অভাব
  • প্রয়োজনীয় যৌনশিক্ষার অভাব
  • বিকৃত ও অস্বাভাবিক পারিবারিক পরিবেশ
  • স্বাভাবিক ও যৌন আচরণের দীর্ঘমেয়াদি অভাব, বঞ্চনা
  • বিকৃত ও স্বাভাবিক যৌন আচরণের পার্থক্যকরণে অসামর্থ্যতা
  • বিপরীত লিঙ্গের প্রতি ভীতিকর অভিজ্ঞতা
  • শৈশবকালীন যৌন আচরণের প্রত্যাবৃত্তি
  • শৈশবের অনাকাঙ্ক্ষিত ও তিক্ত যৌন অভিজ্ঞতা।
এবার যৌন বিকৃতিমূলক
কিছু যৌন আচরণ উল্লেখ করা হলো
  • পিপিংটম
  • ট্রান্সসেক্সুয়ালিটি
  • ট্রান্সভেসটিজম
  • শ্লীলতাহানি
  • এক্সবিশনিজম
  • হোমোসেক্সুয়ালিটি/সমকামিতা
  • ফেটিসিজম
  • পায়ুমেহন
  • বহুগামিতা
  • নিম্ফোম্যানিয়া
  • হস্তমৈথুন/মাস্টারবেশন
  • জেরেন্টোফিলিয়া ইত্যাদি
পিপিংটম
যে মানুষ অন্যের গোপন ব্যাপার বা যৌনক্রিয়া দেখার জন্য জানালা বা দরজার ফুটো দিয়ে উঁকি মেরে যৌনতা বা যৌনক্রিয়া বা নগ্ন শরীর দেখে বেড়ায় সেটা বোঝাতে পিপিংটম শব্দ ব্যবহার করা হয়। কেউ কেউ আবার জানালা বা ছাদে দাঁড়িয়ে দুরবিন দিয়ে অন্যের গোপন কাজগুলো অবলোকন করে মজা পায় তাও পিপিংটমের পর্যায়ে পড়ে। এ ধরনের বিকৃত যৌনচারীরা অন্যের যৌনাঙ্গ বা অন্যের যৌনমিলন/যৌনক্রিয়া দেখার জন্য ঘরের যে কোনো ফুটোয় চোখ রেখে আড়াল থেকে এ ধরনের দৃশ্য অবলোকন করে সেক্স উত্তেজনা অনুভব করে। কেউ কেউ এ সময় এ দৃশ্য দেখার পাশাপাশি হস্তমৈথুনও করে থাকে। এ ধরনের মনোভাব সম্পন্ন ব্যক্তি এ ধরনের অপকর্মে মজা পায়, তৃপ্তি পায়, উত্তেজিত হয়।
ট্রান্সসেক্সুয়ালিটি
এ ক্ষেত্রে দেখা যায় ব্যক্তির বিপরীত লিঙ্গে রূপান্তরিত হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা জন্মে। কোনো কোনো লোককে দেখা যায় যে এ ধরনের বাসনায় সে বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তির মতো যৌন আচরণ করে বেড়ায়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ ধরনের মনোভাব সম্পন্ন ব্যক্তিরা প্রয়োজনে আধুনিকতম হরমোন থেরাপি বা সার্জারি করেও বিপরীত লিঙ্গে রূপান্তরিত হয়ে যায়।
ট্রান্সভেসটিজম
বিপরীত লিঙ্গের পোশাক-পরিচ্ছদ বা অলংকার পরিধান করতে পছন্দ করে আবার বিপরীত লিঙ্গের মতো আচরণ ও পেশায় তাদের মতো হতে চেষ্টা করে। আধুনিক যুগের অনেক ফ্যাশনও এই ট্রান্সভেসটিজমের আওতায় পড়ে যায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছেলেমেয়েদের বেলায়।
এক্সিবিশনিজম
এক্সিবিশনিজমের অর্থ দাঁড়ায় প্রদর্শন করা। এক্সিবিশনিজম বলতে বোঝায় যখন কোনো পুরুষ বা নারী অনেক লোকের সামনে তার যৌনাঙ্গ আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে উন্মোচিত বা প্রদর্শন করে যৌন আনন্দ লাভ করে বা অন্যের যৌনাকর্ষণের চেষ্টা করে। এ ধরনের যৌন বিকৃতি অনেক সময় অনেক অঘটন ঘটাতে পারে। তাই এক্ষেত্রে পরিবারকে সজাগ হতে হবে।
হোমোসেক্সুয়ালিটি/লেসবিয়ানিজম
এটি হলো আরেক ধরনের যৌন বিকৃতি। এ ধরনের সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির সংখ্যা পৃথিবীতে অনেক! এ ধরনের যৌন বিকৃতিতে দুজন পুরুষ বা দুজন ছেলে অথবা দুজন মহিলা বা মেয়ের মধ্যে ঘটে থাকে যৌন ক্রিয়ামূলক আচরণ। এ ধরনের আচরণে দুজন ব্যক্তিরই সমান সম্মতি থাকে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে একজনের নাও থাকতে পারে। যারা এ ধরনের বিকৃত যৌন আচরণে অভ্যস্ত বা আসক্ত হয়ে যায় তাদের আর বিপরীত লিঙ্গের কাউকে ভালো লাগে না বা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি সেক্স জাগে না এবং বিপরীত লিঙ্গের মানুষকে বিয়ে করতেও রাজি হয় না। এ ধরনের সমকামী নারী বা পুরুষ তাদের অন্য ধরনের সেক্স ওয়ার্ল্ড তৈরি করে নেয় এবং সেটাতে তারা প্রায় সময়ই বিচরণ করে বেড়ায়।
পায়ুমেহন
এতে দুজন পুরুষ বা একজন পুরুষ ও একজন নারীর মধ্যে পায়ুপথে যৌনমিলন হয়। বালকদের এ কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ উদ্দেশ্যে বালকদের পাচারও করা হয়ে থাকে। এ ধরনের যৌনাচার সাধারণত কারাবন্দি, মিলিটারি ব্যারাক, হোস্টেলে হয়ে থাকে। হিজড়াদের সাথেও এ ধরনেরপায়ু পথে যৌন কাজ করা হয়ে থাকে। যারা অনেক দিন যাবৎ নিজের পরিবার বা স্ত্রী থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে তাদের মাঝেও কোনো কোনো সময় এ ধরনের যৌন বিকৃতি হতে দেখা যায়। এ ধরনের যৌন আচরণ মোটেও ঠিক নয়। তাই এ ধরনের আচরণে অভ্যস্ত হওয়া উচিত নয়।
যৌন বিকৃতি বা অস্বাভাবিকতা যে রকমভাবেই দেখা যাক না কেন তা একটি সুস্থ সমাজের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে পরিবার থেকে শুরু করে সবারই সজাগ হওয়া প্রয়োজন এবং প্রয়োজনে একজন মনোবিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।
 



বাংলাদেশের বিশিষ্ট মনোশিক্ষাবিদ, মনোবিজ্ঞানী ও মনোচিকিৎসক
অধ্যাপক ডা. এ এইচ মোহাম্মদ ফিরোজ
মানসিক রোগ শিক্ষা, গবেষণা, চিকিৎসা ও জনসচেতনতায় পথিকৃৎ
Syed Rubel


শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান । তাদের কে জানতে দিন অজানা বিষয় গুলি। প্রকাশক ও সম্পাদক ব্লগার_সৈয়দ রুবেল লেখকজানার আছে অনেক কিছু

কোন মন্তব্য নেই :