জান্নাতের মালিক আল্লাহ - যুবকদের করণীয়
জান্নাতের মালিক আল্লাহজান্নাতের মালিক আল্লাহ পাক। কোন
মানুষ অন্য কোন মানুষকে জান্নাত
দিতে পারে না। তবে আল্লাহ ওয়ালাগণ
আল্লাহর দরবারে সুপারিশ
করতে পারেন এবং তাদের সুপারিশ
গৃহীত হতে পারে। এজন্যই কুরআন-
হাদীসে সুপারিশ ও দোয়ার বিধান
প্রবর্তিত হয়েছে। বুখারী শরীফের
হাদীসে আছে যে, অনেক সময় আল্লাহর
খাঁটি বান্দাগণ কোন কিছু
দাবী করে বসেন, তখন আল্লাহ পাক
তাদের খাতিরে তাদের দাবী পূরণ
করে থাকেন। মালিক ইবনে দীনার ছিলেন
সমকালীন শ্রেষ্ঠ ওলী। যুবকের
ক্ষেত্রে তার দোয়া আল্লাহর মহান
দরবারে গৃহীত হয়েছে এবং এ
কারণে যুবকের এই সৌভাগ্য লাভের
ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। যাদের
অন্তরে বক্রতা রয়েছে, কেবল তাদের
কাছেই এরূপ ঘটনা অবাস্তব
মনে হতে পারে, অন্যদের কাছে নয়।
যুবকের দৃঢ় বিশ্বাস
বুযুর্গানে দ্বীনের নেক দৃষ্টি ও
দোয়া নাজাতের বড় উপায়। কিন্তু এর
জন্য প্রয়োজন হয় ঈমান, আমল
এবং আল্লাহর ওয়ালাদের
প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তির। এই যুবকের
প্রতি মালিক ইবনে দীনারের নেক
নজরের কারণ ছিল এটাই।
মূলতঃ বৈধভাবে দুনিয়ার টাকা-পয়সা,
অর্থ-সম্পদ উপার্জনে বাধা নেই।
তবে অর্থ-সম্পদ মূল বস্তু নয়, মূল
বস্তু হচ্ছে আল্লাহর গোলামীÑ এ
অনুভূতি ও বিশ্বাস নিয়ে যারা অর্থ-
সম্পদ উপার্জন করে তাদের জন্য
অর্থ-সম্পদ হয় নেয়ামত ও সফলতার
প্রতীক। আর যারা অর্থ-সম্পদকেই
জীবনের মূল বস্তু মনে করে তারা হয়
লোভাতুর, অর্থলিপ্সু। তারা কোনদিন
সফলকাম হতে পারে না; না ইহকালে,
না পরকালে। এই যুবকও ছিল
অর্থশালী ও বিত্তবান। তবে সে যেমন
ছিল বাহ্যিক দিক দিয়ে বিত্তবান,
তেমনি ছিল আধ্যাত্মিক ও মনের দিক
দিয়েও বিত্তবান। হাদীসে বলা হয়েছে,
যে মনের ধনী সেই প্রকৃত ধনী। যুবক
বয়সে বিপুল অর্থ-কড়ি ব্যয়ে প্রাসাদ
নির্মানে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও
নির্মাণাধীন প্রাসাদের আকর্ষণ
বর্জন করে বরাদ্দকৃত সমুদয় অর্থ
আখেরাতের আশায় দান
করে দেয়া প্রমাণ করে জান্নাতের
প্রতি যুবকের অসাধারণ আকর্ষণ।
প্রমাণ করে অর্থ-সম্পদের তুলনায়
দান-খয়রাতের শুভ পরিণতির
প্রতি তার বিশ্বাস। প্রমাণ
করে আল্লাহ ওয়ালাদের প্রতি তার
অগাধ আস্থা ও শ্রদ্ধা-ভক্তি। এরূপ
যুবকের জীবনই হতে পারে সফল ও
সবার জন্য পাথেয়।
হাদিয়া-নজরানা
এমন যুবক এ যুগেও বিরল নয়। হাজার
হাজার লক্ষ লক্ষ টাকার নজরানা ও
হাদিয়া পেশ করে জীবন ধন্য করার
তাগিদ আজও অসংখ্য যুবকের অন্তর
আন্দোলিত করে। যুবকদের নজরানা ও
হাদিয়ার টাকায় বিরাট বিরাট প্রাসাদ ও
মার্কেট তৈরীর ঘটনাও রয়েছে যথেষ্ট।
তবে মালিক ইবনে দীনারের মত লোকের
সংখ্যা বিরল না হলেও খুবই কম।
যুবকরা শ্রদ্ধা-ভক্তি ঠিকই করে,
নজরানা ও হাদিয়াও পেশ করে থাকে,
কিন্ত উপযুক্ত রাহবার
না ধরতে পারার কারণে তাদের ভাগ্যের
কোন পরিবর্তন হয় না। তাদের
মধ্যে শরীয়তের অনুশীলন এবং আল্লাহ
ও রাসূলের সুন্নতের প্রতি আকর্ষণ
প্রতিফলিত হয় না। আখেরাতের
অনুভূতি তো বহু দূরের কথা, মানবতা ও
মনুষ্যত্বের চরিত্রও অনেক সময়
অনুপস্থিত থাকে।
যুবকদের করণীয়
যুবকদের তাদের নিজেদের জীবনের
মূল্যায়ণ করতে শিখতে হবে।
হক্কানী বুযুর্গরে সন্ধান লাভ
করে জীবনের সফলতার তাগিদে তাদের
নেক নযর ও দোয়া নিতে হবে। তাদের
সহচর্য অবলম্বনের মাধ্যমে বস্তু
জগতের উন্নতির
সাথে সাথে অগ্রাধিকারের
ভিত্তিতে আখেরাতের সাফল্য লাভের
প্রতি আগ্রহী হতে হবে। দুনিয়ার জীবন
চিরস্থায়ী নয়, অথ-সম্পদও
চিরস্থায়ী নয়। এ সত্যটি যাদের
সান্নিধ্যে থাকলে বুঝা যায়, যাদের
সান্নিধ্যে মানুষ রাসূলের সুন্নতের
প্রতি ধাবিত হয়, শরীয়তের
অনুশীলনের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়,
কেবল তাদের সহচর্য অবলম্বনই
যে সফলতার একমাত্র পথ,
একথা যুবকদের অবশ্যই অনুধাবন
করতে হবে। তাহলে তাদের জীবন
সফলকাম হবে; ইহকালেও
এবং পরকালেও।
শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব ।প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন
Next Post পাঁচ. হাজী যুবক
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন