মৃত্যুর স্মরণ মুক্তির উপায়

কোন মন্তব্য নেই
রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর যিয়ারত
করতে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে মৃত
ব্যক্তি থেকে শিক্ষা লাভ হয়, মৃত্যুর
প্রস্তুতির দিকে মন আকৃষ্ট হয়,
মরীচিকাময় বস্তু থেকে অন্তর
দূরে সরে থাকে। অপর
হাদিসে তিনি ইরশাদ করেন,
“তোমরা মৃত্যুকে অধিক স্মরণ কর,
কেননা মৃত্যু মানুষের সকল স্বাদ
মিটিয়ে দেয়।” এই যুবকের অন্তর
মৃত্যুর ভয়ে প্রকম্পিত ছিল। কবরের
ভয়-ভীতি দুনিয়া বিরাগী হওয়ার জন্য
সহায়ক হয়েছে। সে বুঝতে সক্ষম
হয়েছিল যে, বস্তু জগত নিতান্ত
অস্থায়ী পথিকের জীবন, স্থায়ী জীবন
তো আখেরাতের জীবন। কামিয়াব সেই,
যে আখেরাতের জন্য কিছু সঞ্চয় করে।
তাই বাহলুল তাকে পুনরায় নছীহত
করতে আবেদন
জানালে যুবকটি তাকে পুনরায় এরূপ
নছীহত করেঃ
(১) “আমি মৃত্যুর বিষয়ে অত্যন্ত
উদাসীন, অথচ মৃত্যু আমার পিছে পিছে।
আজ হোক কাল হোক আমাকে মৃত্যুবরণ
করতেই হবে।
(২) আমি আমার দেহকে মূল্যবান
পোষাক পরিচ্ছদে সুসজ্জিত
করে রেখেছি, অথচ এ দেহ কবরে পচে-
গলে দুর্গন্ধময় হয়ে যাবে।
(৩) আমি যেন স্বচক্ষে অবলোকন
করছি, আমার এই সুন্দর সুঠাম শরীর
কবরে পড়ে থাকবে, কবর খনন
করে আমাকে গর্তের ভিতর
একা রেখে মাটি দিয়ে চাপা দেয়া হবে।
আমার সুন্দর মুখমণ্ডল, সুন্দর সুঠাম
দেহ সবকিছুই বিলীন হয়ে যাবে, হার
গুলো চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে।
না চামড়ার খবর থাকবে, না গোশতের
খবর থাকবে। আমার জীবন শেষ
হয়ে চলেছে, অথচ জড় বস্তুর আকর্ষণ
কেবল বৃদ্ধিই পাচ্ছে।
(৪) সামনে ভয়াবহ সফর, সম্বল
বলতে কিছুই নেই। পাপাচারে লিপ্ত
হয়ে স্রষ্টার কাছে কেবল নাফরমানীই
করেছি। নাফরমানীর পরিণাম
থেকে মুক্তির জন্য কোন কিছুই আমার
কাছে নেই।
(৫) আমি অগণিত গোনাহ করেছি, আর
মানুষের দৃষ্টিগোচর
হওয়া থেকে আল্লাহ সেগুলোকে গোপন
রেখেছেন। কিন্তু আমার সমস্ত গোপন
গোনাহসমূহ হাশরের ময়দানে মালিকের
সম্মুখে প্রকাশ পেয়ে যাবে।
(৬) নিঃসন্দেহে এই ভয় আমার ছিল।
আমি আল্লাহর উপর ভরসাশীল
এবং তার ক্ষমায় বিশ্বাসী। তিনি সকল
প্রসংশার অধিকারী।
(৭) মৃত্যুর পর দেহ গলে-পচে যাবে,
ভয়ের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। জান্নাত
অথবা জাহান্নামের অঙ্গীকার
না থাকলেও ভয়ের জন্য এতটুকুই
যথেষ্ট। কিন্তু কি বলা যায়,
আমরা অত্যন্ত বেওকুফ।
শিক্ষা গ্রহণ করি না।
(৮) আহ!
যদি তিনি আমাকে ক্ষমা করে দিতেন!
এছাড়া আর কোন উপায় নেই। গোলামের
দ্বারা অপরাধ হয়ে গেলে মনিবই
তো ক্ষমা করতে পারেন।
(৯) নিঃসন্দেহে আমি অত্যন্ত
নিকৃষ্ট। আমি আমার মাওলার
প্রতিশ্র“তি ভঙ্গ করেছি। অযোগ্য
গোলাম এরূপই হয়ে থাকে। তার কোন
ওয়াদা ঠিক থাকে না।
(১০) হে আমার মনিব! যখন আপনার
আগুন আমাকে দগ্ধ করবে তখন আমার
কি অবস্থা হবে? এই আগুন তো কোন
পাথরও সহ্য করতে পারবে না।
তাহলে আমি কি করে সহ্য করব?
(১১) মৃত্যুর সময়ও আমি একা হবো,
কবরেও একই যেতে হবে, একই কবর
থেকে উঠতে হবে। কোথাও কেউ আমার
সাথী ও সাহায্যকারী হবে না।
(১২) হে আল্লাহ পাক! আপনি একক
লা-শরীক। আমার মত
নিঃস্বকে আপনি ক্ষমা করুন,
দয়া করুন।


শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব ।প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

Next post যুবক অদৃশ্য - সৃষ্টির লক্ষ্য- উদ্দেশ্য

কোন মন্তব্য নেই :