ডাঃ জাকির নায়েক এর লেকচার। প্রশ্ন ও উত্তর পর্ব ।

২টি মন্তব্য
প্রশ্নঃ সালাত আদায়ের অনেক নিয়ম
আছে এ সবগুলো কি ঠিক?
উত্তরঃ ডাঃ জাকির
নায়েকঃ যদি মার্কেটে যান
তবে সেখানে সালাতের নিয়ম-কানুন এর
উপর কয়েকশত বই রয়েছে। বেশিরভাগ
বইতে কিছু হাদীস রয়েছে যেগুলো সহীহ
হাদীস নয়।
বেশিরভাগ বইয়ে সালাত আদায়ের কেবল
একটী নিয়ম রয়েছে। আমাদের
নবীজি (সাঃ) বলেছেন এটার উল্লেখ
আছে সহীহ বুখারীতে, “সালাত আদায়
কর যেভাবে আমাকে সালাত আদায়
করতে দেখ”।
আমরা সালাত আদায় করব সেই
নিয়মে যেভাবে আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ)
আদায় করেছেন। সালাতের অন্য কোন
নিয়ম নেই। তাহলে সালাতের বিভিন্ন
গুরুত্বপূর্ণ নিয়মগুলো যেমন
কিভাবে হাত বাঁধতে হবে, রুকু দিতে হবে,
সিজদা দিতে হবে এসব
ব্যাপারে একটা নিয়ম ই আছে। আর সহীহ
হাদীসে এই নিয়মগুলো উল্লেখ
করা হয়েছে। সালাতের কিছু ব্যাপারে এ
নিয়মগুলো কিছুটা শিথিল।
যেমন ধরুন
আমরা রুকুতে যেটা পড়ি সহীহ হাদীস
বলছে, কখনো কখনো নবীজি (সাঃ)
বলেছেন “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর
যিনি সুমহান” আবার কোনো কোনো সময়
বলেছেন “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর
যিনি সুমহান, সমস্ত প্রশংসা তার”।
আবার যেমন ধরুন বিতর এর সালাত।
নবীজি (সাঃ) কখনো এটি পড়েছেন এক
রাক’আত, কখনো পড়ছেন তিন
রাকা’আত, পাঁচ রাকা’আত, সাত
রাকা’আত। তবে বেশিরভাগ সময়ই
পড়েছেন তিন রাকা’আত।
তাহলে কিছু নিয়মের
ব্যাপারে শিথিলতা আছে।
আর এখানে আমি যে বইটার
কথা বলতে পারি বইটা মার্কেটে পাবেন।
এখানে আপনারা পাবেন সহীহ হাদীস,
বইটির নাম ‘The Guide to Salah’
by MA Sakib।
আপনাদের যদি বেশি সময়
থাকে আরা বিস্তারিত জানতে চান,
তাহলে আরেকটি বইয়ে বিস্তারিত আছে।
কিভাবে সিজদায় যাবেন, কোন অঙ্গ
প্রথমে মাটিতে স্পর্শ করবে,
কিভাবে উঠে দাঁড়াবেন। এসব কিছু
বিস্তারিত জানতে বইটি পড়তে পারেন।
বইটির নাম ‘The Prayer of the
Profet’। বইটি লিখেছেন নাসির উদ্দিন
আলবানী।
তবে আপনার প্রশ্নের
উত্তরটা হলো সালাত আদায়ের সময়
গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর নিয়ম মাত্র
একটাই।
আপনারা যদি বইগুলো পড়তে চান
তাহলে যোগাযোগ করতে পারেন IRF এর
লাইব্রেরিতে।
সেখানে আপনারা বইগুলো পাবেন।
প্রশ্নঃ অনেক মুসলমান খাওয়ার
আগে “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম”
উচ্চারণ করে এটা কি সুন্নাত?
উত্তরঃ ডাঃ জাকির নায়েকঃ
আমার জ্ঞানানুযায়ী এমন কোনো সহীহ
হাদীস নেই যেখানে বলা হয়েছে যে,
মুহাম্মাদ (সা) খাওয়ার
পূর্বে “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম”
উচ্চারণ করেছেন।
তবে হাদীসে বলা হয়েছে- তিনি শুধু
‘বিসমিল্লাহ’ বলতেন। যেমন
হাদীসে এসেছে যে, মুহাম্মাদ (সা)
বালকদেরকে বলছেন যে, তোমরা খাওয়ার
পূর্বে ‘বিসমিল্লাহ’ বলো। (বুখারী, হাদীস
৫৩৭৬)
অপর হাদীসে আছে যে, আয়েশা (রা)
বলেন, যখন খাও তখন ‘বিসমিল্লাহ’
বলে শুরু করো। আর
শুরুতে ভুলে গেলে খাওয়ার সময় যখন
মনে আসে তখন বলো-
“বিসমিল্লাহি ফি আওয়ালিহি ওয়া আখিরিহি” (আবূ
দাঊদ, হাদীস ৩৭৫৮)। অর্থাৎ
আল্লাহ্র নামে শুরু এবং শেষ করছি।
সুতরাং এগুলোই রাসূল (সা)-এর শিক্ষা।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু লোক
সঠিক জ্ঞানের অভাবে “বিসমিল্লাহির
রহমানির রহিম” বলে। যখন এ রকম
কাউকে মনে করে দেওয়া হয় যে, শুধু
‘বিসমিল্লাহ’ বলতে হবে তখন
সে বলে “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম”
বললে অসুবিধা কোথায়?
বরং এটা ‘বিসমিল্লাহ’ বলার
চেয়ে উত্তম।
এ ক্ষেত্রে তার
বিপক্ষে আপনি যুক্তি দেখাতে পারেন
এভাবে যে, যখন কুরবানি করা হয় তখন
“বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম”
কেনো বলা হয় না?
অতএব যেখানো যেটা নির্দেশ
করা হয়েছে সেভাবেই তাকে পালন
করতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাব
ে আমরা কুরআন এবং সুন্নাহর সঠিক
অনুসরণ করি না। বরং নিজের মত
অনুযায়ী চলাফেরা করি।
এগুলো পরিহার করতে হবে।
প্রশ্নঃ আমরা জানি, টাই ক্রসের
প্রতীক, মুসলমানদের জন্য টাই পড়ার
অনুমতি আছে কি?
উত্তরঃ ডাঃ জাকির নায়েকঃ
অনেক মুসলিম আছে যাদের ধারনা টাই
হল ক্রসের প্রতীক। কিন্তু তুলনামূলক
ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়ন করলে দেখা যায়
যে, খৃষ্টানদের কোন ধর্ম গ্রন্থেই
বলা নেই যে, টাই ক্রসের প্রতীক।
হাদীস অনুসারে মুসলমানরা এমন কোন
পোশাক পরিধান
করতে পারবেনা যে পোশাক অমুসলিমদের
কোন বিশেষ প্রতীকের মত হয়।
তবে বাইবেলে কোথাও বলা নেই যে টাই
ক্রসের প্রতীক।
বরং এটি একটি কালচারাল পোশাক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঠাণ্ডা হাওয়ার
দেশের লোকেরা টাই পরে তাদের পোশাক
আটকে রাখত এবং সেখান থেকেই টাইয়ের
উদ্ভব হয়।
একদল মুসলিম আছেন
যারা পশ্চিমা কালচার পছন্দ করেন
না এবং পশ্চিমাদের সবকিছুতেই
প্রতিবাদ করেন।
তবে আমার মতে, আমাদের উচিৎ
হবে পশ্চিমাদের যে কাজগুলো খারাপ
সেগুলোর প্রতিবাদ করা।
যেগুলো নিরপেক্ষ সেগুলোতে প্রতিবাদ
করার দরকার নেই।
কেউ যদি প্রমাণ
সহকারে এটা উপস্থাপন
করতে পারে যে টাই ক্রসের প্রতীক,
তাহলে সেটা পরিধান করা যাবেনা।
শরিয়ত মুসলমানদের অনুমতি দিয়েছে যে,
মুসলিমরা সে পোশাক
পরতে পারবে যেগুলো শরীয়ত সীমার
বাইরে যায় না। কিন্তু
যেগুলো ইসলামী শরীয়তের বিপরীতে যায়
সেগুলো পরা যাবে না। যেমনঃ হাফপ্যান্ট,
শর্টস ইত্যাদি। এগুলো যদিও
পশ্চিমা সংস্কৃতির পোশাক, কিন্তু
শরিয়তের সীমালঙ্ঘন হওয়ায়
এগুলো পরার অনুমতি নেই।
খৃষ্টানরা গাড়ি আবিস্কার করেছিল।
তাই বলে কি আমরা তাদের আবিষ্কৃত
গাড়িতে চড়ব না?
সুতরাং টাই পড়ার অনুমতি আছে। কারণ
এটা খৃষ্টানদের ধর্মীয় প্রতীক নয়।
প্রশ্নঃ অনেক মুসলমান খাওয়ার
আগে “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম”
উচ্চারণ করে এটা কি সুন্নাত?
উত্তরঃ ডাঃ জাকির নায়েকঃ
আমার জ্ঞানানুযায়ী এমন কোনো সহীহ
হাদীস নেই যেখানে বলা হয়েছে যে,
মুহাম্মাদ (সা) খাওয়ার
পূর্বে “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম”
উচ্চারণ করেছেন।
তবে হাদীসে বলা হয়েছে- তিনি শুধু
‘বিসমিল্লাহ’ বলতেন। যেমন
হাদীসে এসেছে যে, মুহাম্মাদ (সা)
বালকদেরকে বলছেন যে, তোমরা খাওয়ার
পূর্বে ‘বিসমিল্লাহ’ বলো। (বুখারী, হাদীস
৫৩৭৬)
অপর হাদীসে আছে যে, আয়েশা (রা)
বলেন, যখন খাও তখন ‘বিসমিল্লাহ’
বলে শুরু করো। আর
শুরুতে ভুলে গেলে খাওয়ার সময় যখন
মনে আসে তখন বলো-
“বিসমিল্লাহি ফি আওয়ালিহি ওয়া আখিরিহি” (আবূ
দাঊদ, হাদীস ৩৭৫৮)। অর্থাৎ
আল্লাহ্র নামে শুরু এবং শেষ করছি।
সুতরাং এগুলোই রাসূল (সা)-এর শিক্ষা।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু লোক
সঠিক জ্ঞানের অভাবে “বিসমিল্লাহির
রহমানির রহিম” বলে। যখন এ রকম
কাউকে মনে করে দেওয়া হয় যে, শুধু
‘বিসমিল্লাহ’ বলতে হবে তখন
সে বলে “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম”
বললে অসুবিধা কোথায়?
বরং এটা ‘বিসমিল্লাহ’ বলার
চেয়ে উত্তম।
এ ক্ষেত্রে তার
বিপক্ষে আপনি যুক্তি দেখাতে পারেন
এভাবে যে, যখন কুরবানি করা হয় তখন
“বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম”
কেনো বলা হয় না?
অতএব যেখানো যেটা নির্দেশ
করা হয়েছে সেভাবেই তাকে পালন
করতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাব
ে আমরা কুরআন এবং সুন্নাহর সঠিক
অনুসরণ করি না। বরং নিজের মত
অনুযায়ী চলাফেরা করি।
এগুলো পরিহার করতে হবে।
By: ইসলাম ও অন্যান্য ধর্ম
এবং ডাঃ জাকির নায়েকের বিশ্লেষণ
প্রশ্নঃ ভাই আমরা কি অমুসলিমদের
বাসায় সালাত আদায় করতে পারি?
উত্তরঃ ডাঃ জাকির
নায়েকঃ আমি আগেও বলেছিলাম
আমাদের নবীজি (সা) বলেছেন এটার
উল্লেখ আছে সহীহ আল বুখারীতে। “এই
পৃথিবীকে আমার এবং আমার উম্মতের
জন্য সিজদার স্থান
হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে”।
আপনি পৃথিবীর যে কোনো জায়গায়
সালাত আদায় করতে পারবেন।
তবে জায়গাটা হতে হবে পবিত্র।
এছাড়াও কিছু নিয়ম-কানুন আছে।
যদি কোনো অমুসলিম এর ঘরে নামায
পড়তে চান তবে কোনো পবিত্র কাপড়ের
উপর পবিত্র জায়গায় সালাত আদায়
করতে পারেন। খেয়াল রাখবেন
যেখানে নামায পড়বেন, তার সামনে যেন
কোনো মূর্তি বা ছবি না থাকে,
মাঝে একটি সুতরা ব্যাবহার করবেন।
আমাদের নবীজি একথা বলেছেন।
এমনকি একটি তীর ও সুতরা হতে পারে।
সহীহ বুখারীতে উল্লেখ আছে, এই
সুতরা একটি দড়িও হতে পারে।
আপনি যদি সালাতের
নিয়মগুলো মেনে চলেন
তাহলে অমুসলিমদের ঘরেও সালাত আদায়
করতে পারেন। তবে জায়গাটা যেন
পবিত্র হয় এবং সামনে যেন
কোনো মূর্তি বা ছবি না থাকে।
আশা করি উত্তরটা পেয়েছেন।
প্রশ্নঃ আমি তাকদীর তথা অদৃষ্ট
সমন্ধে জানতে চাচ্ছি?
উত্তরঃ ডাঃ জাকির নায়েকঃ অনেকের
মধ্যে তাকদীর বা অদৃষ্ট
সমন্ধ্যে ধারনা হল যে, আল্লাহই
সবকিছু নির্ধারণ করে দিয়েছন।
তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে যে, কোন
চোর যদি চুরি করে তাহলে তার জন্য
কে দায়ী হবে? নিশ্চয়ই
তিনি যিনি চুরি করাটা তার
ভাগ্যে লিখে রেখেছেন।
*যদি কারও তাকদীরে লিখা থাকে যে,
সে মানুষ হত্যা করবে তাহলে সেই হত্যার
জন্য ঐ ব্যাক্তি দায়ী হতে পারেনা,
বরং দায়ী হবে অদৃষ্টের লেখক অর্থাৎ
আল্লাহ্ (নাউযুবিল্লাহ)।
*এমন কি, কারও অমুসলিম
হওয়াটা যদি তার ভাগ্যে লেখাই
থাকে তাহলে সে দোযখে যাবে কেন?
প্রকৃতপক্ষে এখানে যে সমস্যাটা হচ্ছে তা হল
কদরের অর্থ বুঝতে ভুল করা। আমাদের
অদৃষ্টে বিশ্বাস করতে হবে, এটা নিয়ম।
কিন্তু সাথে আমাদের
এটা জেনে নিতে হবে যে অদৃষ্ট
বলতে কি বুঝায়? এটাকে একটা উদাহরণ
দিয়ে বুঝানো যেতে পারে।
ধরুন, একটা ক্লাসে এক’শ জন ছাত্র
বসে আছে। ক্লাসটি হচ্ছে বছরের শেষ
দিকে বার্ষিক পরীক্ষার আগে।
ক্লাসে শিক্ষক ছাত্রদের
দেখিয়ে বলছেন, তুমি হবে ফার্স্টক্লাস
ফার্স্ট। তুমি পাবে সেকেন্ড ক্লাস আর
তুমি ফেল করবে। এখন বার্ষিক
পরীক্ষা হল এবং পরীক্ষার ফল
প্রকাশের পর দেখা গেল প্রথমজন
ফার্স্টক্লাস ফার্স্ট হয়েছে, দ্বিতীয়
জন পেয়েছে সেকেন্ড ক্লাস এবং তৃতীয়
জন ফেল করেছে।
এখন তৃতীয় জনের ফেল করেছে বিধায়
কি এ কথা বলার সুযোগ
আছে যে আপনি বলেছিলেন বিধায়
আমি ফেল করেছি? না এ সুযোগ নেই।
কারণ উক্ত শিক্ষক তাদেরকে এক বছর
পড়িয়েছেন, তাই তিনি তার
অভিজ্ঞতা থেকে অনুমান করেছেন
যে কার পরীক্ষার ফলাফল
কি হতে পারে? এখানে শিক্ষকের এ
অনুমান কে দোষ দেওয়র সুযোগ নেই।
ঠিক তেমনি বিশ্বজাহানের
স্রষ্টা আল্লাহ্, তিনি শিক্ষকদের
থেকেও অনেক উর্ধে্ব এবং তার ইলমুল
গায়েব অর্থাৎ তিনি ভবিষ্যতের
কথাগুলো জানেন।
এগুলো তিনি একটি কিতাবে লিখে রেখেছেন।
উদাহরণস্বরূপ মনে করি, একজন লোকের
গন্তব্য যাওয়ার জন্য
পাঁচটি রাস্তা সামনে আছে। আল্লাহ্
পূর্ব হতেই জানেন যে, লোকটি দ্বিতীয়
রাস্তা বেছে নেবে। তাই
তিনি সেটা লিখে রেখেছেন। এখানে লক্ষ্য
রাখা দরকার যে, তিনি লিখে রেখেছেন
বলেই তিনি দ্বিতীয়
রাস্তা বেছে নেবে ব্যাপারটি ঠিক এমন
নয়; বরং লোকটি দ্বিতীয়
রাস্তা বেছে নেবে বলেই আল্লাহ্
সেটা লিখে রেখেছেন।
আবার ধরুন, আপনি একজন ভাল ছাত্র।
ইন্টার পরীক্ষার পর আপনি পদার্থ
বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও
গণিতে এ প্লাস পেয়েছেন। এখন
আপনি ডাক্তারও হতে পারেন আবার
ইঞ্জিনিয়ারও হতে পারেন। আপনি ঠিক
করলেন আপনি ডাক্তার হবেন। আল্লাহ্
জানেন আপনার পছন্দ দুটো,
তবে আপনি ডাক্তার হবেন। তাই
আল্লাহ্ তা লিখে রেখেছেন। এরপর
আপনি যখন রুজি রোজগার শুরু করবেন
তখন আপনি সৎ কামাই ও করতে পারেন
আবার দুর্নীতি ও করতে পারেন।
ধরি আপনি রোজগার দুর্নীতির
মাধ্যমে করলেন। এক্ষেত্রে আল্লাহ্
তা পূর্বে থেকেই জানেন
বলে তিনি তা লিখে রেখেছেন। এমন নয়
যে, তিনি আগেই নির্ধারণ করে দিয়েছেন
বিধায় আপনি হারাম পথে রোজগার
করবেন। এটাই হল তাকদীর তথা অদৃষ্ট।
তবে তাকদীরের কিছু জিনিস
আছে নির্ধারিত যেমন কে কখন
জন্মাবে কার মৃত্যু কখন হবে ইত্যাদি।
সুতরাং আমাদের অপরাধগুলোর জন্য
আমরাই দায়ী। কেউ চুরি করলে সে চুরির
জন্য সে নিজেই দায়ী।
একইভাবে যারা অমুসলিম তাদের এ
অবস্থার জন্য দায়ী কে?
এ ব্যাপারে হাদীসে এসেছে যে, প্রত্যেক
শিশুই প্রকৃতিগতভাবে মুসলিম
হয়ে জন্মায়, পরবর্তি্তে তার
গুরুজনেরা তাকে পথভ্রষ্ট করে।
সুতরাং কারও অমুসলিম হওয়া আল্লাহ্
নির্ধারণ করে দেন নি। কারণ একজন
অমুসলিম ব্যাক্তির মৃত্যুর আগ
পর্যন্ত সুযোগ আছে যে, সে তার
বুদ্ধিমত্তাকে ব্যাবহার করে কুরআন
অধ্যায়ন করে মুসলিম হতে পারবে।
আর এ জন্যই হাশরের ময়দানে বিচার
করা হবে মানুষের কর্মের আলোকে।
যে ভাল কাজ করবে সে জান্নাত পাবে।
আর যে মন্দ কাজ
করবে সে হবে জাহান্নামের অধিবাসী।
প্রশ্নঃ পুরুষ এবং মহিলারা যখন সালাত
আদায় করে তখন আলাদা নিয়মে কেন
আদায় করে?
উত্তরঃ ডাঃ জাকির
নায়েকঃ বাজারে অনেক বই পাবেন
যেখানে সালাত আদায়ের বিভিন্ন নিয়ম-
কানুন দেয়া আছে। বেশিরভাগ
বইয়ে আলাদা একটি অধ্যায় থাকে যে,
মহিলারা কিভাবে সালাত আদায়
করবে এবং পুরুষরা কিভাবে সালাত
আদায় করবে।
আর সেখানে নিয়মগুলোও আলাদা।
সত্যি বলতে এমন একটি সহীহও হাদীস
খুজে পাবেন না;
যেটা বলছে পুরুষরা মহিলাদের
থেকে ভিন্ন নিয়মে সালাত আদায় করবে।
এমন কোনো সহীহ হাদীস নেই।
আর আপনারা যদি সহীহ বুখারী পড়েন
এক নম্বর খন্ডে পাবেন, হযরত
উম্মে দারদা (রা)তাশাহুদে
বসেছিলেন পুরুষদের মতো করে। (সহীহ
বুখারী)
তিনি ছিলেন এমন একজন যিনি ধর্মীয়
বিষয়ে যথষ্ট জ্ঞান রাখতেন, এরকম
আরো অনেক সহীহ হাদীস আছে যেগুলোর
বর্ণনা দিয়েছিলেন হযরত আয়েশা (রা)
এবং নবী (সা)-এর অন্যান্য
স্ত্রীরা আর অন্য মহিলা সাহাবীরা।
আল্লহ তাদের শান্তিতে রাখুন।
আর এগুলোর উল্লেখ আছে সহীহ
বুখারী ও সহীহ মুসলিম শরীফে।
তবে তাদের কেউ বলেন নি যে পুরষদের
এবং মহিলাদের সালাত আদায় করার
নিয়ম একবারে আলাদা।
উত্তরটা পরিস্কারভাবে আমার
লেকচারে আগেও বলেছি যে নবীজি (সা)
বলেছেন, ইবাদত
করো যেভাবে আমাকে ইবাদত
করতে দেখো। (সহীহ বুখারী)
তাহলে পুরষ এবং মহিলারা সালাত আদায়
করবে একই রকম নিয়মে একই
পদ্ধতিতে আশা করি উত্তরটা পেয়েছেন।
প্রশ্নঃ সালাত আদায়ের অনেক নিয়ম
আছে এ সবগুলো কি ঠিক?
উত্তরঃ ডাঃ জাকির
নায়েকঃ যদি মার্কেটে যান
তবে সেখানে সালাতের নিয়ম-কানুন এর
উপর কয়েকশত বই রয়েছে। বেশিরভাগ
বইতে কিছু হাদীস রয়েছে যেগুলো সহীহ
হাদীস নয়।
বেশিরভাগ বইয়ে সালাত আদায়ের কেবল
একটী নিয়ম রয়েছে। আমাদের
নবীজি (সাঃ) বলেছেন এটার উল্লেখ
আছে সহীহ বুখারীতে, “সালাত আদায়
কর যেভাবে আমাকে সালাত আদায়
করতে দেখ”।
আমরা সালাত আদায় করব সেই
নিয়মে যেভাবে আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ)
আদায় করেছেন। সালাতের অন্য কোন
নিয়ম নেই। তাহলে সালাতের বিভিন্ন
গুরুত্বপূর্ণ নিয়মগুলো যেমন
কিভাবে হাত বাঁধতে হবে, রুকু দিতে হবে,
সিজদা দিতে হবে এসব
ব্যাপারে একটা নিয়ম ই আছে। আর সহীহ
হাদীসে এই নিয়মগুলো উল্লেখ
করা হয়েছে। সালাতের কিছু ব্যাপারে এ
নিয়মগুলো কিছুটা শিথিল।
যেমন ধরুন
আমরা রুকুতে যেটা পড়ি সহীহ হাদীস
বলছে, কখনো কখনো নবীজি (সাঃ)
বলেছেন “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর
যিনি সুমহান” আবার কোনো কোনো সময়
বলেছেন “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর
যিনি সুমহান, সমস্ত প্রশংসা তার”।
আবার যেমন ধরুন বিতর এর সালাত।
নবীজি (সাঃ) কখনো এটি পড়েছেন এক
রাক’আত, কখনো পড়ছেন তিন
রাকা’আত, পাঁচ রাকা’আত, সাত
রাকা’আত। তবে বেশিরভাগ সময়ই
পড়েছেন তিন রাকা’আত।
তাহলে কিছু নিয়মের
ব্যাপারে শিথিলতা আছে।
আর এখানে আমি যে বইটার
কথা বলতে পারি বইটা মার্কেটে পাবেন।
এখানে আপনারা পাবেন সহীহ হাদীস,
বইটির নাম ‘The Guide to Salah’
by MA Sakib।
আপনাদের যদি বেশি সময়
থাকে আরা বিস্তারিত জানতে চান,
তাহলে আরেকটি বইয়ে বিস্তারিত আছে।
কিভাবে সিজদায় যাবেন, কোন অঙ্গ
প্রথমে মাটিতে স্পর্শ করবে,
কিভাবে উঠে দাঁড়াবেন। এসব কিছু
বিস্তারিত জানতে বইটি পড়তে পারেন।
বইটির নাম ‘The Prayer of the
Profet’। বইটি লিখেছেন নাসির উদ্দিন
আলবানী।
তবে আপনার প্রশ্নের
উত্তরটা হলো সালাত আদায়ের সময়
গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর নিয়ম মাত্র
একটাই।
আপনারা যদি বইগুলো পড়তে চান
তাহলে যোগাযোগ করতে পারেন IRF এর
লাইব্রেরিতে।
সেখানে আপনারা বইগুলো পাবেন।
প্রশ্নঃ মুসলমানেরা যেখানে এক
এবং একই কুরআনের
অনুসারী তাহলে মুসলমানদের মধ্যে এত
বিভক্তি এবং চিন্তাদারার এত
বিভিন্নতা কেন?
উত্তরঃ ডাঃ জাকির নায়েকঃ আজকের
মুসলমানরা বিভিন্ন দলে-
উপদলে বিভক্ত। যদিও এ
বিভক্তি ইসলামে অনুমদিত নয়। ইসলাম
একতায় বিশ্বাসী।
পবিত্র কোরআনের ৩নং সূরা আল-
ইমরানের ১০৩নং আয়াতে আছে
"তোমরা সকলে মিলে আল্লাহ্র রুজ্জু
দৃঢ়ভাবে আকরে ধরো আর পরস্পর
বিচ্ছিন্ন হয়ও না।"
এখানে আল্লাহ্র রুজ্জু হচ্ছে আল-
কোরান।
যাকে ঐক্যবদ্ধভাবে আঁকড়ে ধরা উচিত।
এই আয়াতে আরও জোর
দিয়ে বলা হয়েছে, “পরস্পর বিচ্ছিন্ন
হয়না”।
পবিত্র কোরআনের ৪নং সূরা আন-
নিসার ৫৯নং আয়াতে বলা আছে
"তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহ্র ও
আল্লাহ্র রাসুলের।"
অতএব মুসলমানদের আল-কোরান ও
সহীহ হাদীসের অনুসরন করা উচীত।
এবং মতপার্থক্য করা উচিত নয়।
ইসলামে দলাদলী ও বিভক্তি নিষেধঃ
পবিত্র কোরআনের
৬নং সূরা আন্আমের
১৫৯নং আয়াতে বলা হয়েছে,
"“নিশ্চয় যারা নিজেদের দ্বীনকে খণ্ড-
বিখণ্ড করে ফেলেছে এবং বিভিন্ন
দলে বিভক্ত হয়ে পরেছে, তাদের
সাথে আপনার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
তাদের বিষয় আল্লাহ্র হাতে ন্যস্ত।
অতঃপর তিনি তাদেরকে জানিয়ে দিবেন,
যা তারা করতো”"
এই আয়াতে আল্লাহ তা’লা বলেছেন যে,
যারা নিজেদের দ্বীনকে ভাগ
করে নিয়েছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত
হয়ে গেছে, তাদের
থেকে নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে রাখা উচিত।
কিন্তু যখন একজন মুসলিমকে প্রশ্ন
করা হয় আপনি কে ? তখন তার সাধারন
উত্তর হয়ে থাকে, “আমি একজন ‘সুন্নী’
অথবা ‘শীয়া’ অনেকে আবার
বলে থাকে আমি একজন ‘হানাফি’
বা ‘শাফিয়ী’ বা ‘হাম্বলী’ বা ‘মালিকী’...।
তারা এই পরিচয়টাকে অতন্ত
গুরুত্বপূর্ণ মনে করে।
অথচ আমাদের মহানবী (সাঃ)
কি ছিলেন ?
তিনি কি ‘সুন্নী’ না-কি ‘শীয়া’ না-
কি ‘হানাফি’ না-কি ‘হাম্বলী’ না-
কি ‘শাফিয়ী’ না-কি ‘মালিকী’
ছিলেন......?
আসলে তিনি ছিলেন একজন মুসলিম।
পবিত্র কোরআনের ৩নং সূরা আল-
ইমরানের ৫২ নং আয়াতে আছে,
“ঈসা (আঃ) এবং তার
অনুসারীরা মুসলিম ছিলো”।
পবিত্র কোরআনের ৩নং সূরা আল-
ইমরানের ৬৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে,
"ইবরাহীম (আঃ) না ছিলেন
ঈহুদি না ছেলেন খ্রিস্টান
তিনিতো ছিলেন একজন মুসলিম”"
সুতরাং আমাদের পরিচয় হওয়া উচিত শুধু
মুসলিম। আমি একজন “শিয়া”
অথবা “সুন্নী” এটা বলা উচিত হবেনা।
আল-কোরান নিজেদেরকে “মুসলিম”
বলে পরিচয় দিতে বলেঃ
নবী করিম (সাঃ) অমুসলিম রাজা-
বাদশাহদের নিকট ইসলামের দাওায়াত
দিতে গিয়ে বিভিন্ন সময়
চিঠি লিখেছিলেন।
সেসব
চিঠিতে তিনি ৪১নং সূরা ফুসিলাতের
৩৩ নং আয়াত লিখে পাঠাতেন,
“"আর তার কথার চেয়ে আর কার
কথা অধিক উত্তম
যে মানুষকে আল্লাহ্র পথে আহ্বান
করে এবং নিজে সৎ কাজ করে, আর
বলে আমি তো একজন মুসলিম
তথা আত্মসমর্পণকারী”"
ইসলামের সুবিজ্ঞ মহান ব্যক্তিদের
প্রতি সম্মানঃ
ইসলামের সুবিজ্ঞ আলেমদের
প্রতি অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।
যার মধ্যে রয়েছে চার ইমামঃ যথা ইমাম
আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম
মালিকী, ইমাম হাম্বলী (রহঃ) ।
আল্লাহ তাদের প্রতি অনুগ্রহ বর্ষণ
করুক। যে কেউ তাদেরকে অনুসরন
করতে পারে। কিন্তু ঐ ব্যক্তির পরিচয়
হতে হবে শুধু মুসলিম।
সুনানে আবু-দাউদের ৪৫৭৯
নং হাদিসে উল্লেখ আছে যে, নবী (সাঃ)
বলেছেন, “"আমার উম্মত ৭৩
দলে বিভক্ত হবে”"
হাদিসটির মর্ম কথা হল উম্মতের
অবস্থা এমন হবে যে,
তারা মতপার্থ্যকে জড়িয়ে পড়বে,
এমনকি তারা ৭৩ দলে বিভক্ত
হয়ে পড়বে।
এছাড়া তিরমিযির ১৭১
নং হাদিসে উল্লেখ আছে যে রাসুল (সাঃ)
বলেছেন, "“আমার উম্মতগণ ৭৩
দলে বিভক্ত হবে, এবং একটি দল
ব্যতীত বাকি সব দল জাহান্নামে যাবে।
সাহাবেয়ে কিরাম আরয করিলেন,
“হে আল্লাহ্র রাসুল! সেই
দলটি কোনটি হবে?
তিনি উত্তরে বললেন, “সেই
দলটি হবে যার আমি এবং আমার
সাহাবায়ে কিরাম থাকবো”"
সুতরাং আমরা সেই সব জ্ঞানী লোকদের
অনুসরণ করবো যাদের মত কোরান
এবং সহিহ হাদিসের সাথে মিলে।
এবং পরিচয় হবে আমি একজন মুসলিম।
প্রশ্নঃ স্বামী যদি দ্বিতীয় বিবাহ
করতে চায়
তাহলে সেক্ষেত্রে কি প্রথমা স্ত্রীর
অনুমতি নিতে হবে?
উত্তরঃ ডাঃ জাকির
নায়েকঃ এটি স্বামীর জন্য
অত্যাবশ্যকীয় নয় যে, দ্বিতীয় বিয়ের
সময় তার প্রথমা স্ত্রীর কাছ
থেকে অনুমতি নিতে হবে- কেননা কুরআন
বলছে- ‘তুমি একাধিক
বিয়ে করতে পারবে একটা মাত্র
শর্তে যে, যদি তুমি তোমার স্ত্রীদের
মধ্যে (পূর্ণাঙ্গভাবে)ন্যায়বিচার
করতে পার’।
কিন্তু এটি অবশ্যই উত্তম যে, দ্বিতীয়
বিয়ের আগে স্ত্রীর
অনুমতি নেয়া এবং এটি তার কর্তব্য
যে, সে তার দ্বিতীয় বিয়ের
আগে স্ত্রীকে জানানো- কেননা ইসলাম
বলে- যদি একাধিক স্ত্রী থাকে,
তাহলে তোমাকে অবশ্যই তাদের
মধ্যে ন্যায় বিচার করতে হবে’।
কারণ যদি প্রথম স্ত্রী অনুমতি দেয়,
তবে স্বামী ও তার স্ত্রীর মধ্য
অন্তরঙ্গ সম্পর্ক বিরাজ করবে।
কিন্তু এটি অত্যাবশ্যকীয় নয়,
তবে যদি চুক্তিতে এটি উল্লেখ
থাকে তবে তাকে অনুমুতি নিয়েই
বিয়ে করতে হবে।
চুক্তিটি এরকম
যে “তুমি স্ত্রী থাকাকালীন
আমি কাউকে বিয়ে করব না"।
কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে এটি বাধ্যতামূলক
বরং ভাল।
প্রশ্নঃ ইসলাম যখন নারী-পুরুষের অবাধ
মেলামেশায় বিশ্বাসী নয়,
তবে কিভাবে ইতিহাসের বিভিন্ন
পর্বে তারা একত্রে যুদ্ধ করত?
উত্তরঃ ডাঃ জাকির
নায়েকঃ আপনি যদি আমার বক্তব্য
ঠিকমত
শুনে থাকেন,...আমি সেখানে উল্লেখ
করেছি এমনকি যুদ্ধ ক্ষেত্রেও
নারীরা পর্দা করত,
তবে সেখানে কিছুটা ছাড় দেয়া হয়েছে।
আপনি যদি সহীহ বুখারী পড়ে থাকেন,
সেখানে বলা হয়েছে, যুদ্ধ
ক্ষেত্রে মহিলাদের দেখা যাচ্ছিল। অথচ
স্বাভাবিক সময়ে তাদের
পা ঢাকা থাকত। সুতরাং এরকম
ক্ষেত্রে ইসলাম কিছুটা ছাড় দিয়েছে।
যুদ্ধক্ষেত্রে নারীদের ঘোরায় চড়ারও
দৃষ্টান্ত রয়েছে। তখন তাদের
খালি পা দেখা যেত।
সুতরাং যুদ্ধক্ষেত্রে ইসলাম তাদের
কিছুটা ছাড় দিয়েছে পর্দার ক্ষেত্রে; এর
মানে এ নয় যে ইসলাম তাদের অবাধ
মেলামেশার অনুমতি দিয়েছে- যেরকম
দেখা যায় আমেরিকার সৈন্যবাহিনীতে।
(বিস্তারিত জানার জন্য ডাঃ জাকির
নায়েকের ইসলামে নারীর অধিকার
লেকচারটি শুনার অনুরোধ করছি)
প্রশ্নঃ কেবল স্বামীই কি স্ত্রীকে ‘তিন
তালাক’ দিতে পারে? যদি কোন
নারী তালাক বা ডিভোর্স নিতে চান
তাহলে তাকে কি করতে হবে?
উত্তরঃ ডাঃ জাকির নায়েকঃ একজন
পুরূষ তার স্ত্রীকে ডিভোর্স
দিতে পারে কিন্তু একজন নারী ও
কি তার স্বামীকে ডিভোর্স বা তালাক
দিতে পারে? একজন মহিলা তালাক
দিতে পারেনা। কারণ ‘তালাক’
শব্দটি আরবি যেটা ‘ডিভোর্স’
অর্থে ব্যাবহার করা হয়-
যা স্বামী স্ত্রীকে দিতে পারে, কিন্তু
স্ত্রী-স্বামীকে দিতে পারবেনা।
ইসলামে ডিভোর্স পাঁচ ধরনের
হয়ে থাকে।
প্রথমঃ এ চুক্তির মাধ্যমে স্বামী-
স্ত্রী উভয়েই বলবে ব্যাস আমরা আর
একসাথে ঘর করার মত উপযুক্ত নই-
চল আমরা উভয়কে ছেড়ে দেই।
দ্বিতীয়ঃ এই প্রকার তালাক স্বামীর
একক ইচ্ছায় হবে। যেখানে স্বামীকে তার
স্ত্রীর প্রদেয় মোহর পরিশোধ
করতে হবে এবং স্ত্রী কর্তৃক
স্বামীকে প্রদেয় উপহারও
ফিরিয়ে দিতে হবে।
তৃতীয়ঃ স্ত্রীর একক ইচ্ছায় ডিভোর্স
দেয়া। যদি তার বিয়ের
চুক্তিতে তথা তার নিকাহনামায়
এটি উল্লেখ
থাকে তবে এককভাবে স্বামীকে ডিভোর্স
দিতে পারবে- এটাকে বলা হয় ‘ইসমা’।
চতুর্থঃ এ পদ্ধতিটি হলো,
স্বামী যদি স্ত্রীর সাথে খারাপ আচরণ
করে অথবা তাকে ন্যায্য অধিকার
না দেয় তখন স্ত্রীর কাজীর
কাছে যাওয়ার অধিকার আছে।
এবং বিয়ে বাতিল করার আবেদন
জানাতে পারবে। একে বলে ‘নিকাহ-ই-
ফাসেদ’। তখন
কাজী স্বামী কে পুরো মোহর পরিশোধ
করার জন্য বলবে।
পঞ্চমঃ এ পদ্ধতিটেকে বলা হয়
“খোলা”। এক্ষেত্রে যদিও স্বামী সব
দিক থেকে ভাল হয় এবং তার
সম্পর্কে স্ত্রীর কোন অভিযোগ
না থাকে তথাপি তার ব্যাক্তিগত
কারণে স্বামীকে পছন্দ করেনা- তখন
সে স্বামীকে অনুরোধ
করতে পারে তাকে ডিভোর্স দেয়ার
জন্য। আর এটাই হলো ‘খোলা’।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য,
নারী যে তার স্বামীকে ডিভোর্স দেয়ার
এ পদ্ধতিগুলো গ্রহন
করতে পারে সে কথা খুব কম লোকই
বলে। কিছু আলেম-ওলামা আছেন যারা এ
পাঁচ ধরনের ডিভোর্স কে ২ বা ৩
ভাগে ভাগ করেন; কিন্তু ব্যাপক
অর্থে ইসলামে তালাক পাঁচ প্রকার।
প্রশ্নঃ স্কুল বা কলেজে ভর্তির জন্য
Donation দেয়ার অনুমতি আছে কি?
উত্তর: ডাঃ জাকির নায়েকঃ আমার
মতে যদি Donation দেয়া হয় এ জন্য
যে স্কুলের উন্নতি হবে অথবা নতুন
কোন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে,
তবে সেটা দেয়া যেতে পারে।
তবে সেটা যদি ঘুষ হয়,
তাহলে সেটা হারাম। ঘুষ আর
উপহারে পার্থক্য আছে।
পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারার
১৮৮ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে-
“অন্যের সম্পত্তি গ্রাস করার জন্য
বিচারকদের ঘুষ দিও না”
অনেকে হয়ত বলতে পারে উপহার আর
ঘুষ একই জিনিস।
আমাদের নবী করিম (সাঃ)
কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, উপহার ও
ঘুষের মধ্যে পার্থক্য করব কি করে?
উত্তরে নবী করিম (সাঃ) বলেন, তুমি ঐ
অবস্থানে থাকলে উপহারটা যদি না আসত
তাহলে সেটা ঘুষ।
সুতরাং আপনি Donation দেন এ
উদ্দেশ্যে যে এটা প্রতিষ্ঠানটির
উন্নয়নের কাজে ব্যাবহার করা হবে।
আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে সেই
টাকাটা যেন প্রিন্সিপাল বা কর্তৃপক্ষের
পকেটে না যায়। আর ভর্তি করার জন্য
উপহার তথা ঘুষ হিসেবেও না হয়।

শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।
আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।
আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।
সাথে থাকুন সব সময় ।

আল্লাহ্ হাফেজ ।

২টি মন্তব্য :

নামহীন বলেছেন...

ভাই আপনার কিছু পোস্ট রিমুভ করে দিন। আপনাকে মানাই না। (নারীর কাম উত্তেজনা ওতৃপ্তি)(যৌন মিলনের চারটে গোপণ সূত্র)(বর্তমানের সমাজে পুরুষদেরকি দরকার আছে?)(পরিচালকরা তাদের ব্যবসা করে, নারীদের দেহ দেখিয়ে,ছবি দিয়ে নয়)(দেখুন বিশ্ব বেহাইয়া - ঐশ্বরিয়ার রায় এর নগ্ন ছবি।)

Golpo বলেছেন...

একজন নামহীন মানুষের কথায় এতো জনপ্রিয় পোস্ট আমি সরিয়ে ফেলতে পারিনা ।কি কারণে আমার কাছে এসমস্ত পোস্ট মানাই না তার সুনিদিষ্ট কারণ উলেখ্য করুন ।এই ব্লগটি তৈরী করেছি এসবের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য ।বসে বসে আঙ্গুল চুষার জন্য নয় ।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমার ব্লগ বাড়ীতে আসার ও আপনার মূল্যহীন বক্তব্য ব্লগে তুলে ধরার জন্য ।