শরীয়ত মনোনীত স্ত্রী

কোন মন্তব্য নেই
রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবল
বিবাহে অনুপ্রাণিত করেই ক্ষ্যান্ত হন
নি, বরং এ ব্যাপারে সঠিক সুন্দরদিক
নির্দেশনার জন্য বিস্তারিত বিশদ
বিবরণ পেশ করেছেন। যথা: বিবাহের
ব্যাপারে প্রথম
আসে স্ত্রী নির্বাচনের
মাপকাঠি কি হতে পারে। স্বভাবসূলভ
নবী এবং ইসলামী শরীয়ত এ
ব্যাপারে স্বীয়
অনুসারীদেরকে অন্ধকারে রেখে যান
নি। বরং একটি যথোপযুক্ত মানদণ্ড
এবং মাপকাঠি নির্ধারণ করেছেন যার
অনুসরণ করে বিবাহ করলে বিবাহের
উপকারিতা এবং অভীষ্ট লক্ষ্য
অর্জনে সহায়তা পাওয়া যায়। উপরন্তু
স্বামী-স্ত্রীর জীবন
শান্তি এবং আনন্দের হয়। পরস্পর
একজন আরেকজনের পরম প্রিয়
এবং শুভাকাঙ্খী হয়। বিবাহের
উপকারিতা এবং অভীষ্ট লক্ষ্যে সফল
হওয়া এবং না হওয়া পুরাপুরি নির্ভর
করে স্ত্রীর স্বভাব এবং গুণাবলীর
উপর। যদি স্ত্রী ঐ সমস্ত
গুণাবলী এবং বৈশিষ্ট্যের
অধিকারিনী হয় যে সমস্ত
গুণাবলী এবং বৈশিষ্ট্য একটি সুন্দর
আনন্দময় জীবনের জন্য
অত্যাবশ্যকীয়,
তাহলে স্বামী স্ত্রী উভয়ের জীবন হয়
অত্যন্ত মধুর, পরম শান্তির, তাদের
ইহকালীন জীবনই জান্নাতের
নমূনা হয়ে যায়। এ কারণেই এরূপ
উত্তম স্ত্রীকে ইহকালের সর্বোত্তম
নেয়ামত আখ্যা দেয়া হয়েছে-
ﺇﻧﻤﺎ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻣﺘﺎﻉ . ﻭﻟﻴﺲ ﻣﻦ ﻣﺘﺎﻉ
ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﺷﻲﺀ ﺃﻓﻀﻞ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ
ﺍﻟﺼﺎﻟﺤﺔ- ﺳﻨﻦ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﺔ
“বস্তুজগত কেবল সাময়িক
উপকারী বস্তু, উপকারী উপাদানের
মধ্যে সর্বাধিক উত্তম হচ্ছে নেক
স্ত্রী।”
অন্য এক স্থানে আরো অধিক
ব্যাখ্যা দিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
ﻣﺎ ﺍﺳﺘﻔﺎﺩ ﺍﻟﻤﺆﻣﻦ ﺑﻌﺪ ﺗﻘﻮﻯ
ﺍﻟﻠﻪ ﺧﻴﺮﺍ ﻟﻪ ﻣﻦ ﺯﻭﺟﺔ ﺻﺎﻟﺤﺔ
ﺇﻥ ﺃﻣﺮﻫﺎ ﺃﻃﺎﻋﺘﻪ ﻭﺇﻥ ﻧﻈﺮ ﺇﻟﻴﻬﺎ
ﺳﺮﺗﻪ ﻭﺇﻥ ﺃﻗﺴﻢ ﻋﻠﻴﻪ ﺃﺑﺮﺗﻪ
ﻭﺇﻥ ﻏﺎﺏ ﻋﻨﻬﺎ ﻧﺼﺤﺘﻪ ﻓﻲ
ﻧﻔﺴﻬﺎ ﻭﻣﺎﻟﻪ - ﻣﺸﻜﻮﺓ
“মুমিনের জন্য তাকওয়ার পর
সর্বাধিক উপকারী বস্তু হচ্ছে নেক
স্ত্রী। নেক স্ত্রীর গুণাবলী হচ্ছে,
যে স্ত্রী বিনা বিলম্বে স্বামীর নির্দেশ
পালন করে। তাকে অবলোকন
করে স্বামী আনন্দিত হয়। স্ত্রীর
প্রতি ভরসা করে স্বামী শপথ করে,
স্ত্রী তা পূরণ করে। স্বামীর
অবর্তমানে তার সহায় সম্পদ নষ্ট
করে না, এবং তার কারণে স্বামী কষ্ট
পায় না।” সাধারণত মানুষ
অদূরদর্শিতা এবং আবেগের
গোলামী করে রূপসৌন্দর্যকে উত্তম
চরিত্রের উপর প্রাধান্য
দিয়ে থাকে এবং রূপসী নারীকে বিবাহ
করতে অধিক আগ্রহী হয়ে পড়ে। অথচ
রূপ অতি তাড়াতাড়ি বিকৃত
অথবা সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যায়। আর শেষ
না হলেও রূপের আনন্দ একেবারেই
সাময়িক এবং সীমিত হয়। তাই
অন্যান্য গুণাবলীর কোন গুরুত্ব
না দেয়া আর কেবল রূপের পাগল
হওয়া মোটেই দূরদর্শী এবং বুদ্ধিমানের
কাজ নয়। এ ব্যাপারে সতর্ক পথ
অবলম্বনের জন্য দিকনির্দেশনা দান
করে বিশ্বরাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
ﺗﻨﻜﺢ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﻷﺭﺑﻊ: ﻟﻤﺎﻟﻬﺎ،
ﻭﻟﺤﺴﺒﻬﺎ، ﻭﻟﺠﻤﺎﻟﻬﺎ، ﻭﻟﺪﻳﻨﻬﺎ
ﻓﺎﻇﻔﺮ ﺑﺬﺍﺕ ﺍﻟﺪﻳﻦ- ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
সাধারণত: চারটি গুণের ভিত্তিতে কোন
নারীকে বিবাহ করতে হয়, সহায়-সম্পদ,
বংশীয় মর্যাদা, রূপ
এবং ধর্মানুরাগ,তোমরা ধর্মানুরাগী সৎ
নারীকে বিবাহ করে সফলকাম হও, বড়
কামিয়াবী এটাই।
এই হাদীসের সারকথা এটাই যে,
দ্বীনদারী এবং ধর্মকে অগ্রাধিকার
দেয়াই হচ্ছে বুদ্ধির পরিচায়ক।
যে ধর্মপ্রাণ স্ত্রী বিবাহ
করণে সক্ষম হয় সে অত্যন্ত
সৌভাগ্যশীল। তার জীবন ধন্য।
কেননা এর মাধ্যমে স্বামী ধর্মপরায়ণ
স্ত্রীর অধিকার আদায়
করে এবং বৈধভাবে নিজের
যৌনচাহিদা মিটিয়ে নানা ধরনের গুনাহ
থেকে নিজেকে হেফাযত করতে পারবে।
পক্ষান্তরে দীনদার স্ত্রীও
মিতব্যায়িতা,সন্তান-সন্ততির সঠিক
লালন-পালন, স্বামীর সাথে মধুর
আচরণ ইত্যাদি সমস্ত বিষয় সঠিক ও
সুন্দর ভাবে প্রতিপালন করবে। নিজের
সতিত্ব সংরক্ষণ এবং স্বামীর অর্থ-
সম্পদের হেফাযত করবে।
মোটকথা এমন স্ত্রী ঐ
সমস্তগুণাবলীর অধিকারী হয়
যেগুলো একজন জীবনসাথী, দরদী ও
স্নেহময়ী স্ত্রীর
মধ্যে হওয়া প্রয়োজন। এ সমস্ত
গুণাবলীর পরিপ্রেক্ষিতেই
আরবী রমনীদের মধ্যে রাসূলে পাক
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কুরাইশী রমনীদেরকে সর্বোত্তম
বলে মন্তব্য করেছেন,
ﺧﻴﺮ ﻧﺴﺎﺀ ﺭﻛﺒﻦ ﺍﻹﺑﻞ ﺻﺎﻟﺢ
ﻧﺴﺎﺀ ﻗﺮﻳﺶ ﺃﺣﻨﺎﻩ ﻋﻠﻰ ﻭﻟﺪﻩ
ﻓﻲ ﺻﻐﺮﻩ ﻭﺃﺭﻋﺎﻩ ﻋﻠﻰ ﺯﻭﺝ
ﻓﻲ ﺫﺍﺕ ﻳﺪﻩ ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ -
অন্যত্র নারীদেরকে উত্তম গুণাবলীর
প্রতি আকৃষ্ট করে ইরশাদ করেন-
ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺇﺫﺍ ﺻﻠﺖ ﺧﻤﺴﻬﺎ
ﻭﺻﺎﻣﺖ ﺷﻬﺮﻫﺎ ﻭﺃﺣﺼﻨﺖ
ﻓﺮﺟﻬﺎ ﻭﺃﻃﺎﻋﺖ ﺑﻌﻠﻬﺎ ﻓﻠﺘﺪﺧﻞ
ﻣﻦ ﺃﻱ ﺃﺑﻮﺍﺏ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﺷﺎﺀﺕ -
ﻣﺸﻜﻮﺓ
“যে মহিলা পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়
করে, রমযান মাসের রোযা পালন করে,
নিজের লজ্জাস্থানকে হেফাযত
করে এবং এমন কর্মকাণ্ড
করে না যা স্বামীর অপছন্দনীয়,
জান্নাতের সকল দরজা তার জন্য
উন্মুক্ত থাকবে।”
স্ত্রী নির্বাচনের জন্য
যে মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে,
স্বামী নির্ধারনের বেলায়ও একই
মানদণ্ড নির্ধারিত হয়েছে।
কেননা ধর্ম পরায়নতা এবং আল্লাহ
পাকের ভয়ভীতি স্ত্রীর হক
এবং অধিকার আদায়ের
ক্ষেত্রে যতটুকু ফলপ্রসু হয় অন্য
কোনভাবে তা সম্ভব নয়। বিবাহের পর
স্বামীর ব্যাপারে স্ত্রীর আসল
আপত্তি হয় জুলুম অত্যচার এবং তার
হক ও অধিকারের ক্ষেত্রে স্বামীর
অবহেলার,তাই যে স্বামী তার স্ত্রীর
অধিকার পূর্ণ আদায় করে সে অত্যন্ত
সৌভাগ্যবান। তার জীবন সফল
এবং আনন্দময়, আর সেই আদর্শ
স্বামী।

সূত্রঃ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তরদাওয়াতি সংগঠন মজলিসে দাওয়াতুলহক। এর মৌল উদ্দেশ্য মানব জীবনেসকল ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত ওআদর্শের প্রতিফলন ঘটানো।কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের ইত্তিবা-অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলারইবাদত আনুগত্যের দাবি পূরণ করাই হলএকজন মুসলমানের ইহকালীন জীবনেরমূল উদ্দেশ্য।।

শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :