মুসলিম মেয়েদের মাথাই মগজ ধোলাই দিচ্ছে ভারতীয় টিভি চ্যানেল গুলি ।হিন্দুত্ববাদীদের ষড়যন্ত্র হিন্দি সিরিয়াল: ইতিহাস বিকৃতি, পরকীয়া এবং ধর্মীয় আগ্রাসন।একটু পড়েই দেখুন ।

কোন মন্তব্য নেই
যারা মুসলিমবিদ্বেষী, বিধর্মী তাদের
অন্যতম অস্ত্র হলো, প্রচারযন্ত্র।
এর নানাবিধ রূপ: পত্রিকা, পোস্টার,
লিফলেট এবং হালযামানায় তাদের
টেলিভিশন সম্প্রচার। বর্তমান
যামানায় টেলিভিশন হলো তাদের
ব্রহ্মাস্ত্র। আর ভারতবর্ষে হিন্দুদের
সাধারণ ভাষা হিন্দি, আর মুসলমানদের
উর্দু। দুটো প্রায় একইরকম হওয়ায়
হিন্দি সিরিয়ালের দ্বারা ভারতীয় ও
পাকিস্তানী মুসলমানদের মগজ ধোলাই
করাও সম্ভব। ফলে হিন্দি সিরিয়াল
হয়ে উঠেছে হিন্দুত্ববাদ
তথা মুসলিমবিদ্বেষী প্রচারযন্ত্রের
প্রধান হাতিয়ার।
হিন্দি সিরিয়াল প্রযোজকরা যেসব
সিরিয়াল তৈরি করে, তাদের
মধ্যে অন্যতম হলো ঐতিহাসিক
তথা মিথ্যা ইতিহাসে ভরপুর কিছু
সাম্প্রদায়িক নাটক। এ
ভারতবর্ষে ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু
ছিল পৃথ্বীরাজ, শিবাজী, মারাঠা,
রাজপুতরা। তারা হলো হিন্দুদের নায়ক।
তাদের নামানুসারে তারা পৃথ্বিরাজ,
চৌহান, ছত্রপতি শিবাজী,
মারাঠা দ্যা গ্রেট- এ ধরনের
টাইটেলধারী টিভি সিরিয়াল তৈরি করে।
সে সবের নায়ক যদি পৃথ্বিরাজ শিবাজীর
ন্যায় চরিত্ররা হয়, খলনায়ক
তথা ভিলেনটা কে তা বলার
অপেক্ষা রাখে না। “পৃথ্বীরাজ চৌহান”
সিরিয়ালের ভিলেন হিসেবে দাঁড়
করানো হয়েছে খোদ শিহাবুদ্দীন
ঘোরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে!
এবং “ছত্রপতি শিবাজী”
সিরিয়ালে বুযূর্গ
ওলী এবং গোটা ভারতের বাদশাহ হযরত
আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে।
হিন্দুরা তাদের জন্ম থেকে উনাদের
প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে। কিন্তু
মুসলমানদের ঘরে যেসব শিশুরা আছে,
তারা যদি এসব দেখে, শিশুদের কথা বাদই
দিলাম, মুসলমানরাই যেখানে ইতিহাস
জানে না, সেখানে এসব
দেখে তারা কি শিখবে? তারা তাদের
অস্তিত্বের
শত্রুকে ভালোবাসতে শিখবে।
নাঊযুবিল্লাহ! বিপরীতে তারা যাদের
কারণে মুসলমান হতে পেরেছে, উনাদের
ঘৃণা করবে। এটাই হিন্দুত্ববাদীদের
কাম্য। কারণ তারা চায়,
কোনো মুসলমান যেন ভারতবর্ষের
মাটিতে টিকে না থাকে।
যদি মুসলমানদেরকে তাদের মূল
থেকে বিচ্যুত করা যায়, তাহলে তাদের এ
উদ্দেশ্য সাধন করাটা কঠিন কিছু
হবে না। এখন মুসলমানদেরকেই ঠিক
করতে হবে যে, তারা ভারতের
বুকে টিকে থাকবে, না স্পেনের
মুসলমানদের ন্যায় ধ্বংস হয়ে যাবে।
হিন্দি সিরিয়ালের মূল দর্শক আমাদের
দেশের গৃহিণীরা এবং তাদের সাথে তাদের
সন্তানরা। যদিও হিন্দুধর্মে বিবাহ
বিচ্ছেদ নেই, তবুও
হিন্দি সিরিয়ালে দেখানো হয় হিন্দু
মেয়েরা কিভাবে পোশাক বদলানোর ন্যায়
স্বামী বদলিয়ে থাকে। যেমন এ রকম
দেখানো হয়, এক মহিলা প্রথমে একজন
স্বামী গ্রহণ করে, তারপর তাকে তালাক
দিয়ে অন্য স্বামী গ্রহণ করে, আবার
দ্বিতীয় স্বামীকে তালাক দিয়ে প্রথম
যে ছিল তাকে ফের বিয়ে করে। এই একই
কাজ সে কয়েকবার করে!
উদাহরণস্বরূপ কারো দুটো গাড়ি আছে,
যখন যেটাতে খুশি সেটাতে চড়ল। এর
প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। গুলশান
বনানী এলাকায় তালাকের মামলাগুলোর
তিন চতুর্থাংশ করে থাকে মেয়েরা।
তালাকের চেয়েও হিন্দি সিরিয়ালের
আরেকটি বাজে প্রভাব
হলো এতে দেখানো ননদ-বৌ, কিংবা বৌ-
শ্বাশুড়ীর বিরোধ। তালাক
তো স্বাভাবিকভাবে ধরলে খুব কমই
হয়ে থাকে। কিন্তু বৌ-শ্বাশুড়ীর বিরোধ
আজকাল মহামারী আকার ধারণ
করেছে এদেশের মুসলমান নারীদের মন-
মগজে হিন্দি সিরিয়ালের কুপ্রভাবের
কারণে। অধিকাংশ সময়ে এর
বলি হতে হয় শ্বাশুড়ীকে, বৃদ্ধাশ্রমের
জীবন তাকে বেছে নিতে হয়।
হিন্দু সমাজের একটি সাধারণ বদ রসম
হলো তাদের লম্পট দেবতা ছিঃ কৃষ্ণের
অনুকরণে নিকটাত্মীয়দের সাথে দৈহিক
সম্পর্ক রাখা। যেমন দেবর ভাসুর
জ্ঞাতি সম্পর্কিত (চাচাতো মামাতো)
গোষ্ঠী। উদাহরণস্বরূপ
একটি হিন্দি সিরিয়ালের উল্লেখ
করা যায়, যেখানে যমজ দুই বোন, একজন
আরেকজনের শত্রু। এক যমজ বোন তার
বোনের অপর বোনকে গুম করে ফেলে,
এরপর তার যে স্বামীসংসার,
সেখানে তার নিজের জায়গা দখল
করে বসে পড়ে! বোনের স্বামীর
সাথে স্ত্রী সেজে দিব্যি সংসার
করে (নাউযুবিল্লাহ)। আশ্চর্যজনক
হলেও সত্য, এই সিরিয়ালগুলো আমাদের
মা বোনরা দিনের পর দিন রুটিন
মেনে সময়মতো দেখে চলেছে। কিন্তু
সরকার তো দূরের কথা বাসায়
যারা তাদের স্বামী সন্তান
রয়েছে তারাও কোনো ভ্রুক্ষেপ
করছে না।
হিন্দি সিরিয়াল যাই প্রচার করুক
না কেন, তাদের মূল উদ্দেশ্য
হলো হিন্দুত্ববাদী চেতনাকে হিন্দু
তো বটেই, মুসলমানদের মন-মগজেও
গ্রথিত করা। হিন্দি সিরিয়ালগুলো শুরু
এবং শেষ হয় আবহসঙ্গীতে শঙ্খধ্বনি,
মন্দিরের ঘণ্টাবাদ্য
এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে মঙ্গল প্রদীপ
জ্বালানো দ্বারা।
সিরিয়ালগুলো আধা ঘণ্টা করে হয়, এর
পনেরো মিনিটই তারা মূর্তির চেহারার
সামনে ক্যামেরা ধরে রাখে। এর প্রভাব
আমাদের দেশে পড়ছে। প্রতিবছরই
ব্যাঙের ছাতার মতো এদেশে মন্ডপ
মন্দির বেড়েই চলেছে। কারণ আমাদের
আশেপাশের লোকেরাই এগুলোর
পৃষ্ঠপোষকতা করছে। খোদ কুষ্টিয়ার
ইসলামী ভার্সিটিতে এখন প্রশাসনের
অর্থায়নে পূজা হচ্ছে।
বিশেষ করে এদেশে এখন মন্ডপে লোক
আকৃষ্ট হয় বলিউডের হিন্দি গান
বাজিয়ে। তাছাড়া হিন্দু
সমাজে একটি ঘরে নতুন বউকে বরণ
করার কিছু আচারপ্রথা রয়েছে,
যা একান্তই হিন্দুধর্মের নিজস্ব ।
যেমন সদর দরজার
নিচে রাখা একটি চালের
ঘড়াকে লাথি দিয়ে মাটিতে চাল
ফেলে নতুন ঘরে প্রবেশ করে।
হিন্দি সিরিয়ালের অনুকরণে এসব পালন
করছে আমাদের দেশের সিরিয়ালপাগল
নারীরা।
তাছাড়া আরেকটি বিষয় হলো- এর
ফলে মূর্তিপূজার প্রতি, শিরকের
প্রতি মুসলমানদের যে সহজাত
ঘৃণা থাকা উচিত, তা এখন উধাও
হয়ে গিয়েছে! যেসব মহিলারা এসব
দেখে তারা লেখিকার নিকট এই মতামত
ব্যক্ত করেছে, এসব দেখলে এমনকি হয়?
কিন্তু এগুলো দেখার ফলে যা হচ্ছে,
আমাদের দেশের মেয়েদের
কথা এবং পোশাক ভারতের মালউন
নারীদের মতো হয়ে যাচ্ছে। কোনো খারাপ
কিছু ঘটলে “হায় আল্লাহ” না বলে “হায়
ভগবান” বলাটা এখন ডাল-ভাত
হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিরিয়ালগুলোতে দেখানো হয়, একজন
হিন্দু হাতজোড়
করে আরেকজনকে সম্ভাষণ জানায় “জয়
ছিঃ কৃষ্ণ” বলে। এখন মায়েদের
সাথে তাদের শিশুরা এসব দেখে এবং তার
অনুকরণ করে। এভাবেই কিন্তু
স্পেনে মুসলমানদের পতন সূচিত
হয়েছিল। পাক ভারতের মুসলমানদের
এখনো পায়ের তলায় মাটি আছে।
সুতরাং তাদের সাবধান হওয়া উচিত।
দাঁত থাকতে দাঁতের
মর্যাদা বোঝা উচিত।

কোন মন্তব্য নেই :