মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে জিডি : খতমের হুমকি দিয়ে এবার সরকারের নিরাপত্তা চায় লগি-বৈঠার খুনি বাপ্পাদিত্য

কোন মন্তব্য নেই
 তথাকথিত শাহবাগ আন্দোলন থেকে দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে খতম করার হুমকি দেয়ার এক সপ্তাহ পর গতকাল মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডাইরি (জিডি) করেছে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে রাজপথে মানুষ হত্যার খুনি বাপ্পাদিত্য বসু। শাহবাগ
থানায় জীবনের নিরাপত্তাহীনতা বোধ করে এ জিডি করেছে বলে সে গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে। এর আগে সে শাহবাগ থেকে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ড. পিয়াস করিম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের পিঠের চামড়া তুলে নেয়ার হুমকি দেয়।
জিডিতে সে নিজেকে তথাকথিত শাহবাগ আন্দোলনের একজন সংগঠক দাবি করে বলে, এ আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে দৈনিক আমার দেশ কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছে। পত্রিকাটির সম্পাদক নিজেও আমাকে নিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে পত্রিকাটিতে কলাম এবং সম্পাদকীয় লিখেছেন। জিডিতে সে দাবি করে, ব্লগার রাজীব হত্যাকাণ্ডের পর আমি আশঙ্কা করছি আমাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে জামায়াত-শিবিরের হয়ে পরিকল্পিতভাবে একটি নীল নকশা তৈরি করা হচ্ছে। এ অবস্থায় আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং আন্দোলনের একজন সংগঠক হিসেবে আমার মানহানির ঘটনা ঘটেছে। শাহবাগ থানার এএসআই নুরুল আলম জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গতকাল পৌনে ১১টার দিকে ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি বাপ্পাদিত্য বসু এ জিডি করে।
ভয়ঙ্কর খুনি বাপ্পাদিত্য বসু : ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর মানুষ খুনের পর লাশের ওপর নৃত্য করেছিল যে খুনি, সে-ই হলো এই বাপ্পাদিত্য বসু। ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টনে জামায়াত-শিবিরকর্মীদের লগি-বৈঠা দিয়ে নির্মমভাবে হত্যার পর তাদের লাশের ওপর নৃত্য করেছিল সে। ২৮ অক্টোবর জামায়াতের ডাকা সমাবেশের প্রস্তুতিকালে একদল চরমপন্থী তার নেতৃত্বে হামলা চালায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ছাত্রত্ব বাতিল হয়ে গেছে এ খুনির। ২০০৫-০৬ সালে ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, একই সময় ঢাবি শাখার আহ্বায়ক ছিল সে। ২০০৬-০৭ সেশনে ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ছিল সে। বর্তমানে সে ওয়ার্কার্স পার্টির ছাত্র সংগঠন ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি। হঠাত্ ব্লগার বনে গিয়ে গণমাধ্যম বন্ধের হুমকির পাশাপাশি সে দেশের দুঃসাহসী একজন সম্পাদককে খতম করার প্রকাশ্য হুমকি দেয়। এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি ব্লগার পরিচয়ে বাপ্পাদিত্য শাহবাগের সমাবেশে ভিন্নমতের গণমাধ্যম বন্ধের হুমকি দেয়।
জানা যায়, যশোরের বাম-চরমপন্থীদের নিয়ে একটি বিশাল জঙ্গি গ্রুপ রয়েছে বাপ্পাদিত্য বসুর। ওই গ্রুপটি যশোর অঞ্চলে খুন-লুটপাটের সঙ্গে জড়িত। মাদকাসক্ত বাপ্পাদিত্য আর্থিক টানাপড়েনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর চুরি-ছিনতাই শুরু করে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রত্ব বাতিল হয়ে যাওয়ার পর প্রকাশ্য রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও চরমপন্থীদের সঙ্গে সে যোগাযোগ বাড়াতে শুরু করে। যশোর জেলার সদর উপজেলার রূপদিয়া গ্রামে একটি সাধারণ পরিবারে ১৯৮৩ সালের ২১ আগস্ট তার জন্ম। ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াকালে বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সে। এরপর গড়ে ওঠে চরমপন্থীদের সঙ্গে তার সখ্য। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে লগি-বৈঠার তাণ্ডবের পর এলাকার মানুষ তাকে চিনতে শুরু করে। বেশিরভাগ মানুষই তাকে চেনেন ২৮ অক্টোবরের খুনি হিসেবে। জানা যায়, যশোর অঞ্চলে এখন আর আগের মতো সুবিধা করতে পারছে না চরমপন্থীরা। তাই বাপ্পাদিত্যর মতো দুষ্কৃতকারীরা অন্যান্য অঞ্চলের চরমপন্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে।

মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে জিডি : খতমের হুমকি দিয়ে এবার সরকারের নিরাপত্তা চায় লগি-বৈঠার খুনি বাপ্পাদিত্য

 

কোন মন্তব্য নেই :