ধরে রাখুন আপনার ‘তারুণ্য’

কোন মন্তব্য নেই

তারুণ্য ধরে রাখতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জুড়ি মেলা ভার। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার থাকতে হবে। এর ফলে অকাল বার্ধক্য এবং নানা ধরনের রোগ আমাদের কাছ থেকে শত হাত দূরে থাকবে।
প্রাচীনকাল থেকে সৌন্দর্যপিপাসু মানুষ চেয়েছে তার রূপ-লাবণ্য বাড়ানোর পাশাপাশি তারুণ্য ধরে রাখতে। বিজ্ঞানের এই অত্যাধুনিক যুগে এসেও এর বিন্দুমাত্র ব্যতিক্রম ঘটেনি। বরং রুপালি পর্দার তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবাই চায় বয়স যতই বাড়ুক না কেন তারুণ্যের ছোঁয়া থাকুক সব সময়।
জাদু আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে
তারুণ্য ধরে রাখতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জুড়ি মেলা ভার। আমাদের শরীরে অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্ষিত থাকে। কিন্তু বর্তমান লাইফস্টাইল, যেমন-ফাস্ট ফুড খাওয়া, স্ট্রেস, মাত্রাতিরিক্ত টেনশন, ধূমপান, কায়িক পরিশ্রমে অনীহা ইত্যাদি আমাদের নিজস্ব প্রাকৃতিক অক্সিডেন্টকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার থাকতে হবে। এর ফলে অকাল বার্ধক্য এবং নানা ধরনের রোগ আমাদের কাছ থেকে শত হাত দূরে থাকবে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণে করণীয়
ফলমূল, শাকসবজি ইচ্ছামতো গ্রহণে কোনো বিধিনিষেধ নেই। যতটা ইচ্ছে খেতে পারেন। তবে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ট্যাবলেট খেতে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরি। গবেষণায় দেখা গেছে, ফলমূল, শাকসবজি গ্রহণে যেখানে ১০০ শতাংশ সুফল পাওয়া যায়, সেখানে মাত্র ২৫ শতাংশ কাজ হয় ট্যাবেলেট বা ক্যাপসুলে।
পোড়া তেল নিষিদ্ধ
কোনো কিছু ভাজার পর পোড়া তেল অনেকে তুলে রেখে দেন পরদিন রান্না করার জন্য। এটা করা উচিত নয়। কারণ পোড়া তেল শরীরের জন্য মারাত্মক কুফল বয়ে আনে। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট তৈরির সহায়ক এনজাইমগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রান্না যতখানি সম্ভব সিদ্ধ করে খাওয়া উচিত। এভাবে খাদ্যগুণ বজায় থাকে এবং হজমে সহায়তা হয়।
মাছ-মাংস কম খাওয়া ভালো
এটা শুধু বড়দের বেলায় প্রযোজ্য। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাছ-মাংস কম খাওয়া উচিত। রেডমিট যেমন গরু, খাসির মাংস বেশি খেলে রক্তে আয়রনের মাত্রা বেড়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রক্রিয়া বিনষ্ট করে।
স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট
শরীর ও মনের ক্ষতি করতে স্ট্রেসের জুড়ি নেই। কিন্তু এটা থেকে দূরে থাকতে হবে। বলা যত সহজ, দূরে থাকাটা ততই কঠিন। তাই কীভাবে একে ম্যানেজ করা যায়, সেটা ভাবাই বুদ্ধিমানের কাজ। মনে স্ট্রেস সৃষ্টি হলে শরীরে অ্যাড্রিনালিন গ্ল্যান্ড থেকে এক ধরনের হরমোন বের হয়, যা শরীরে টক্সিন ছড়ায়। এটা রক্তনালিকে সরু করে দেয়, যার ফলে রক্তচাপ বাড়ে, মস্তিষ্ক ও হৃৎপিণ্ডে তার সুদূর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ত্বক খসখসে হওয়া, চুল উঠে যাওয়া, বুড়োটে ভাব ইত্যাদি শারীরিক সমস্যাগুলোও এর ফলে উদ্ভব হয়। স্ট্রেস কমানোর প্রয়োজন তাই সবাই অনুভব করে। নিজের পছন্দমতো কোনো কাজ করা বা ছবি থাকলে, যেমন-জীবজন্তু পোষা, বই পড়া, গান শোনা, নিয়মিত খোলা জায়গায় বেড়ানো ইত্যাদিতে মনের ভার অনেকখানি লাঘব হয়।
পজিটিভ থিংকিং
রূপের দুনিয়ায় বর্তমানে নতুন একটা মতবাদ প্রায়ই শোনা যায়। আর তা হচ্ছে পজিটিভ থিংকিং। সহজ কথায় ইতিবাচক চিন্তা। দুশ্চিন্তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব প্রায় পারমাণবিক বোমার মতোই। এর প্রভাবে ত্বক, চুল বিনষ্ট হয়ে যায়, এমনকি শরীরের প্রধান প্রধান অঙ্গ, যেমন-হৃৎপিণ্ড, কিডনি, লিভার ইত্যাদির ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। জীবনে সুখ-দুঃখ তো থাকবেই। কিন্তু নানা প্রতিকূলতার মাঝে যে ব্যক্তি সাহসে বুক বেঁধে মাথা উঁচু করে চলতে পারে, যৌবনের আশীর্বাদ আর বরমালা দুই-ই তার ভাগ্যে জোটে। সব সময় হাসিখুশি থাকলে নিজের জীবনটা যেমন স্বস্তিদায়ক হয়, তেমনি চারপাশের পরিবেশও আনন্দপূর্ণ হয়ে ওঠে। এখানেই যৌবনের সার্থকতা।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার তালিকা
ফল
ক্যারোটিনসমৃদ্ধ ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যেমন-পাকা কলা, পাকা পেঁপে, পাকা আম, পাকা পেয়ারা ইত্যাদি।
দুগ্ধজাত খাবার
দই, ছানা, দুধ, ডিম ইত্যাদি।
টাটকা শাকসবজি
আমাদের পরিচিত শাকসবজি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের এক অপূর্ব ভাণ্ডার। যেমন-পালংশাক, লাউশাক, ঢেঁড়স, গাজর, বাঁধাকপি, পাকা কুমড়া, টমেটো, তরমুজ ইত্যাদি। ক্যান্সার প্রতিরোধকারী লাইকোপিন নামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় টমেটো এবং তরমুজে। ত্বকের সুস্থতা এবং সজীবতা ধরে রাখতে টাটকা শাকসবজি এক অব্যর্থ ওষুধ।
-সংকলিত

আরও পোস্ট দেখুন
 শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান । তাদের কে জানতে দিন অজানা বিষয় গুলি।  প্রকাশক ও সম্পাদক ব্লগার_সৈয়দ রুবেল লেখকজানার আছে অনেক কিছু

কোন মন্তব্য নেই :