মঙ্গলবারে স্বামী-স্ত্রীর মিলন ক্ষতিকর, এ ধারণা অমূলক
প্রশ্ন -
শুনেছি
যে, মঙ্গলবারে সহবাস না করা আবশ্যক, কেননা সেদিন একটি জিনিস আগমন করে, যে
প্রত্যেক সহবাসকারীকে অভিসম্পাত করে। মনে করা হয়, এর ফলে ভবিষ্যতে তারা
ক্ষতির সম্মুখিন হবে।
উত্তর-
আল-হামদুলিল্লাহ
আল্লাহ
আমাকে ও আপনাকে সত্য বুঝার তাওফিক দান করুন। যা বললেন তা একান্তই
কুসংস্কার এবং নব আবিষ্কৃত বিষয়। কুরআন ও হাদিসে এর কোন দলিল নেই, বরং এসব
হল পথভ্রষ্ট ও বিপথগামীদের প্রচারণা। যেমন তারা বলেছে : চাদ যখন
বৃশ্চিকরাশি, অথবা রশ্মির নিচে, অথবা চাদ যখন পুরোপুরি আলোকরহিত পর্যায়ে
পৌঁছে, চাদের এজাতীয় ক্ষণে সহবাস করা তারা মাকরুহ বলেছে। দেখুন : রায়েদ
সাবরি, মুজামুল বিদায়ি: ৬৫৬
আল্লাহ তাআলা কিছু স্থান ও সময় ব্যতীত সব সময় ও সকল স্থানে স্ত্রী সহবাস হালাল করেছেন, যেমন :
এক.
রমযানের দিনে সহবাস করা। আল্লাহ তাআলা বলেন :
أُحِلَّ
لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَى نِسَائِكُمْ هُنَّ لِبَاسٌ
لَكُمْ وَأَنْتُمْ لِبَاسٌ لَهُنَّ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُمْ كُنْتُمْ
تَخْتَانُونَ أَنْفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنْكُمْ فَالْآَنَ
بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ
সিয়ামের
রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে। তারা
তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে,
তোমরা নিজদের সাথে খিয়ানত করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের তাওবা কবূল করেছেন
এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং
আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান কর। বাকারা : (১৮৭)
দুই.
হায়েজ ও নিফাসের সময় সহবাস করা। আল্লাহ তাআলা বলেন :
وَيَسْأَلُونَكَ
عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ
وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّى يَطْهُرْنَ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ
مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّهُ
আর
তারা তোমাকে ঋতুস্রাব সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, তা কষ্ট। সুতরাং তোমরা
ঋতুস্রাবকালে স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত
তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। অতঃপর যখন তারা পবিত্র হবে তখন তাদের নিকট আস,
যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। (বাকারা : ২২২)
তিন.
মসজিদে সহবাস করা: আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنْتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَقْرَبُوهَا
আর
তোমরা মাসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না। এটা আল্লাহর
সীমারেখা, সুতরাং তোমরা তার নিকটবর্তী হয়ো না। (বাকারা : ১৮৭) মুহরিম
থাকা অবস্থায়ও স্ত্রী সহবাস হারাম। আর উপরের অমূলক কথার পক্ষে কোনো দলিল
খোঁজে পাওয়া যাবে না। বরং এসব হচ্ছে বাতিল, গর্হিত ও অপছন্দনীয় জিনিস, যা
ব্যাপক প্রচারণার ফলে কারো কারো নিকট মূল বিশ্বাসে পরিণত হয়েছে, তারা এ
থেকে বিরত হচ্ছে না। এমন অনেক মানুষ রয়েছে, যারা মঙ্গলবার স্ত্রী সহবাস করে
সুস্থ্য সন্তানের পিতা হয়েছে, এবং এ কারণে তাদের বা তাদের সন্তানদের কোন
ক্ষতি হয়নি। আল্লাহ আমাকে ও আপনাকে অপছন্দনীয় বিষয় থেকে রক্ষা করুন।
আল্লাহ-ই ভাল জানেন।
শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান । তাদের কে জানতে দিন অজানা বিষয় গুলি। এই পোস্টি আপনার ফেসবুক পেইজে,আপনার ওয়ালে শেয়ার করুণ। প্রকাশক ও সম্পাদক ব্লগার_সৈয়দ রুবেল লেখকজানার আছে অনেক কিছু
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন