পীরের মুরীদ হওয়া কতটুকু জরুরী?
অনেকে
প্রায়ই প্রশ্ন করে থাকেন পীরের মুরীদ হওয়া নিয়ে। কেউ কেউ বলেন-তারা শুনেছেন
পীরের মুরীদ হওয়া ছাড়া বেহেশতে যাওয়া যাবে না। এজন্য তাদের কাছে কুরআন ও
হাদীস থেকে বিষয়টা ক্লিয়ার করা দরকার।
আসলে পীর শব্দটা আরবী ভাষার নয়। কুরআন হাদিসের কোথাও রাসুল (সাঃ)ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তির নির্দেশ সর্বাবস্থায় বিনাপ্রশ্নে মেনে নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি।তাকে অনুসরণ কিংবা তার নির্দেশ বাস্তবায়ন করা যাবে শুধুমাত্র সে সকল ক্ষেত্রে যখন তা কুরআন ও হাদিসের অনুকুলে হয়।
আসলে পীর শব্দটা আরবী ভাষার নয়। কুরআন হাদিসের কোথাও রাসুল (সাঃ)ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তির নির্দেশ সর্বাবস্থায় বিনাপ্রশ্নে মেনে নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি।তাকে অনুসরণ কিংবা তার নির্দেশ বাস্তবায়ন করা যাবে শুধুমাত্র সে সকল ক্ষেত্রে যখন তা কুরআন ও হাদিসের অনুকুলে হয়।
পীরকে
অনুসরণ কিংবা তার কথা শোনা যাবে ততটুকুই যতটুকু কুরআন ও হাদিসের অনুকুলে
হয়।তবে,কোন পীর যদি ইসলাম সম্বন্ধে জ্ঞানী হন তাহলে,শিক্ষাগ্রহণের জন্য তার
কাছে যাওয়া যেতে পারে।
কোন পীরের কাছে যাওয়ার পরিবর্তে অন্য কোন আলেমের কাছেও শিখতে যাওয়া যেতে পারে।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:”তোমরা যদি না জেনে থাক তাহলে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা কর।”(সুরা নাহল:৪৩)
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:”তোমরা যদি না জেনে থাক তাহলে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা কর।”(সুরা নাহল:৪৩)
আর
এ কাজটা যেকোন জ্ঞানী আলেমের কাছে গেলেই হবে।হোকনা সে পীর কিংবা অন্য কোন
আলেম।তবে,যে পীর প্রকাশ্যে ইসলামবিরোধী কাজ করেন তাকে কস্মিনকালেও যে
অনুসরণ করা যাবে না;এ কথাটা বলাই বাহুল্য।
অনেকে
বলে থাকে “যার পীর নেই তার পীর শয়তান”।আসলে এ ধরণের কথা হয়ত কোন পীরভক্তের
আবেগ প্রসুত কথা হতে পারে যার সাথে কুরআন হাদীসের কোন সম্পর্ক নেই।
অথচ,কুরআন শরীফে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:
১. وَمَن يُطِعِ اللّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
১. وَمَن يُطِعِ اللّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
অর্থাৎ,যে
আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সাঃ)এর অনুগত্য করবে,তাকে আল্লাহ তায়ালা এমন
জান্নাতে প্রবেশ করাবেন,যার নিচ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হবে,সেখানে তারা
থাকবে চিরকাল।আর এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য। (সুরা নিসা: ১৩)
২.আল্লাহ বলেন:
وَمَن يُطِعِ اللّهَ وَالرَّسُولَ فَأُوْلَـئِكَ مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللّهُ عَلَيْهِم مِّنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاء وَالصَّالِحِينَ وَحَسُنَ أُولَـئِكَ رَفِيقاً
وَمَن يُطِعِ اللّهَ وَالرَّسُولَ فَأُوْلَـئِكَ مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللّهُ عَلَيْهِم مِّنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاء وَالصَّالِحِينَ وَحَسُنَ أُولَـئِكَ رَفِيقاً
অর্থাৎ,যে
আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করবে তারা নবী,সিদ্দীক,শহীদ ও সৎকর্মশীল তথা
যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা পুরস্কৃত করেছেন তাদের সাথী হবে। এরা কতই না চমৎকার
সংগী।(সুরা নিসা: ৬৯)
৩.
وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَخْشَ اللَّهَ وَيَتَّقْهِ
فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ অর্থাৎ,যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের হুকুম
মেনে চলে,আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর নাফরমানী করা থেকে দূরে থাকে,ওরাই
সফলকাম। (সুরা নুর: ৫২)
৪.
وَمَن يُطِعْ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزاً عَظِيماً
অর্থাৎ,আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালা ও তার রাসুলের আনুগত্য করবে সে নিশ্চিত
সফলকাম হয়েছে। (সুরা আহযাব: ৭১)
৫.
وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن
تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَن يَتَوَلَّ يُعَذِّبْهُ عَذَاباً أَلِيماً
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে,আল্লাহ তায়ালা তাকে
এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন,যার নিম্নদেশে ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবাহমান
থাকবে।আর যে মুখ ফিরিয়ে নেবে আল্লাহ তাকে মর্মান্তিক আযাব দেবেন। (সুরা
ফাতহ:১৭)
উপরের
আয়াতগুলো থেকে আমরা শিক্ষাগ্রহণ করতে পারি যে,কারও মুরীদ হোক বা না হোক
কুরআন ও হাদীসানুযায়ী আমল করলেই দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা পাওয়া যাবে
ইনশাল্লাহ।
কিয়ামতের
দিনটা হবে অত্যন্ত ভয়াবহ এটা আমাদের সবারই জানা।অনেক পীর সাহেব নাকি
মুরীদদেরকে বলে থাকেন:আমার কাছে মুরীদ হও।তাহলে,আমি তোমাদেরকে হাত ধরে ধরে
বেহেশতে নিয়ে যাব।
আমার
প্রশ্ন হল- যে পীর সাহেব মুরীদকে বেহেশতে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন সে পীর সাহেব
নিজে যে বেহেশতে যাবেন এর কোন গ্যারান্টি কি তার কাছে আছে? তিনি কোথায় এ
ধরণের কথা বলার অথরিটি পেলেন?
আসুন! দেখে নিই কুরআনের আলোকে পীর সাহেবের এ কথাটা কতটুকু কুরআন- হাদিস সম্মত?
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:
فَالْيَوْمَ لَا يَمْلِكُ بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ نَّفْعاً وَلَا ضَرّاً وَنَقُولُ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا ذُوقُوا عَذَابَ النَّارِ الَّتِي كُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ
অর্থাৎ, আজকে (কিয়ামতের দিন) তোমাদের কেউ কাউকে উপকার কিংবা ক্ষতি করতে পারবে না। আর আমি অপরাধীদেরকে বলব-জাহান্নামের আগুনের স্বাদ গ্রহণ কর দুনিয়ায় যাকে তোমরা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছ। (সুরা সাবা: ৪২)
فَالْيَوْمَ لَا يَمْلِكُ بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ نَّفْعاً وَلَا ضَرّاً وَنَقُولُ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا ذُوقُوا عَذَابَ النَّارِ الَّتِي كُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ
অর্থাৎ, আজকে (কিয়ামতের দিন) তোমাদের কেউ কাউকে উপকার কিংবা ক্ষতি করতে পারবে না। আর আমি অপরাধীদেরকে বলব-জাহান্নামের আগুনের স্বাদ গ্রহণ কর দুনিয়ায় যাকে তোমরা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছ। (সুরা সাবা: ৪২)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন:
يَوْمَ لَا يُغْنِي مَوْلًى عَن مَّوْلًى شَيْئاً وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
অর্থাৎ, সেটি এমন দিন যেদিন কোন নিকটতম প্রিয়জনও কোন নিকটতম প্রিয়জনের কাজে আসবে না। আর তাদেরকে সাহায্যও করা হবে না। (সুরা দুখান:৪১)
يَوْمَ لَا يُغْنِي مَوْلًى عَن مَّوْلًى شَيْئاً وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
অর্থাৎ, সেটি এমন দিন যেদিন কোন নিকটতম প্রিয়জনও কোন নিকটতম প্রিয়জনের কাজে আসবে না। আর তাদেরকে সাহায্যও করা হবে না। (সুরা দুখান:৪১)
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
يَوْمَ لَا تَمْلِكُ نَفْسٌ لِّنَفْسٍ شَيْئاً وَالْأَمْرُ يَوْمَئِذٍ لِلَّهِ
يَوْمَ لَا تَمْلِكُ نَفْسٌ لِّنَفْسٍ شَيْئاً وَالْأَمْرُ يَوْمَئِذٍ لِلَّهِ
অর্থাৎ,
সেদিন এমন একটি দিন যখন কারও জন্য কোন কিছু করার সাধ্য থাকবে না। ফায়সালার
ভার সেদিন একমাত্র আল্লাহ তায়ালার হাতেই থাকবে। (সুরা ইনফিতার:১৯)
অতএব,
এ আয়াতগুলো থেকে বুঝা যায় যে সমস্ত পীররা এ রকম দাবী করে থাকেন তাদের দাবী
সম্পুর্ণ অযৌক্তিক, ও অগ্রহনযোগ্য। সবাইকে এসমস্ত লোকদের সংস্পর্শে আসার
ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত।
কষ্ট করে পোষ্টটি পড়ার জন্য আন্তরিক মোবারকবাদ। জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।
লিখেছেন: ইসমাইল জাবীহুলাহআল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়, মিশর।শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান । তাদের কে জানতে দিন অজানা বিষয় গুলি। এই পোস্টি আপনার ফেসবুক পেইজে,আপনার ওয়ালে শেয়ার করুণ। প্রকাশক ও সম্পাদক ব্লগার_সৈয়দ রুবেল লেখকজানার আছে অনেক কিছু
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন