যুবকের মৃত্যু - শিক্ষণীয় বিষয়
যুবকের কথাবার্তা শুনে ইবনে দীনারঅবাক হন। তিনি বুঝতে পারেন যে, এই
যুবক সাধারণ কোন যুবক নয়, বরং বড়
ধরণের ওলী আল্লাহ। তাই
তিনি তাকে একটি কুর্তা হাদিয়া স্বরূপ
পেশ করেন। কিন্তু যুবক
হাদিয়া গ্রহণে অসম্মতি প্রকাশ
করে বলে যে, হে বৃদ্ধ! জড়
জগতে কুর্তা পরিধান
না করে খালি শরীরে থাকাই ভালো।
কেননা হাশরের ময়দানে হালাল বস্তুর
হিসাব দিতে হবে, আর হারাম বস্তুর
জন্য কঠোর আযাবে আক্রান্ত
হতে হবে।
যুবকের মুনাজাত
ইবনে দীনার যুবকের নছীহত
শুনে আশ্চার্যান্বিত হয়ে যান এবং তার
আচার-আচরণ গভীরভাবে অবলোকন
করতে থাকেন। তিনি দেখেন যে রাতের
আধারে যুবকটি অত্যন্ত দীনতা-
হীনতার সাথে মুনাজাত শুরু
করেছে এবং বলছে, হে মহান আল্লাহ!
আপনি বান্দার ইবাদতে খুশী হন।
বান্দার গোনাহের দ্বারা আপনার কোন
ক্ষতি হয় না, তবে বান্দার বিরাট
ক্ষতি হয়। তাই আপনি আমাকে এমন
আলেমের তওফীক দিন, যে আমলের
দ্বারা আপনি খুশী হন। আমাকে নেক
আমলের তওফীক দিন। আর
যে আমলের দ্বারা আপনার কোন
ক্ষতি নাই, অথচ আমার বিরাট
ক্ষতি হয়ে যায় অর্থাৎ গোনাহের
আমলগুলোকে ক্ষমা করুন
এবং তা থেকে আমাকে বাঁচিয়ে রাখুন।
যুবকের অন্তরে আল্লাহর ভয়
সকালে অন্য হাজীগণ ইহরামের
প্রস্তুতি গ্রহণ করতঃ তাবলিয়া পাঠ
করে ইহরাম পরিধান করে। কিন্তু
যুবকটি নীরবে বসে থাকে। ইবনে দীনার
তাকে জিজ্ঞাসা করেন যে,
“তুমি দেখি তাবলিয়া পাঠ করছ না,
কি ব্যাপার?” যুবক বললঃ আমার ভয়
হচ্ছে যে, আমি যদি লাব্বাইকা বলি আর
আল্লাহর পক্ষ থেকে উত্তর আসে যে,
‘লা-লাব্বাইকা লা-সাদাইকা’ অর্থাৎ
তোমার লাব্বাইকা ও সাদাইক আমার
নিকট গ্রহণীয় নয়, আমি তোমার
কথা শুনতে সম্মত নই, তোমার
প্রতি আমার করুণার দৃষ্টি নিবদ্ধ
হবে নাÑ এই ভয়ে আমি চুপচাপ
বসে আছি।
যুবকের কবিতা
এরপর যুবক সেখান
থেকে উঠে চলে যায়। রাস্তায় আর
কোথাও তাকে দেখা যায় নি।
অবশেষে ইবনে দীনার
মিনাতে তাকে একটি কবিতা পাঠরত
অবস্থায় দেখতে পান। সে কবিতাটির
ভাবার্থ এইঃ
ঐ প্রেমাস্পদ, যার কাছে আমার
রক্তের প্রবাহ ভালো লাগে, আমার
রক্ত তার জন্য হরম শরীফের ভিতরে-
বাইরে উভয় স্থানেই বৈধ।
আল্লাহ পাকের কসম! যদি আমার
আত্মা অবহিত হতে পারে যে, কোন
পবিত্র সত্ত্বার সাথে সে আবদ্ধ
হয়ে আছে, তাহলে পায়ের উপর
দাঁড়িয়ে নয় বরং নতশীরে তার
দরবারে হাজির হবে।
হে ভর্ৎসনাকারীগণ!
তোমরা আমাকে তার প্রেমের
কারণে ভর্ৎসনা করো না,
আমি যা দেখি যদি তোমরা তা দেখতে
তাহলে অবশ্যই ভর্ৎসনা করতে না।
মানুষ স্বশরীরে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ
করে থাকে। যদি তারা আল্লাহর
সত্ত্বার চারপাশে তাওয়াফ
করতে সক্ষম হতো তাহলে বায়তুল্লাহর
তাওয়াফের প্রয়োজন হতো না।
মানুষ ঈদের দিন ভেড়া-
বকরী কুরবানী করেছে, আর আমার
প্রেমাস্পদ সেদিন আমার জানের
কুরবানী গ্রহণ করেছেন।
লোকেরা হজ্জ্ব করেছে, আর আমার
হজ্জ্ব হচ্ছে আমার মনের শান্তির
বস্তুকে নিয়ে।
মানুষ সেদিন অনেক কুরবানী করেছে,
আর আমি আমার রক্ত ও জানের
কুরবানী করছি।
শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব ।প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন
Next Post আল্লাহর প্রতি ঈমান ও ভরসা - যুবকের আকীদা
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন