দুআ-মুনাজাত : কখন ও কিভাবে দুআ কবুলের অনুকূল অবস্থা ও সময়ঃ

কোন মন্তব্য নেই
দুআ কবুলের অনুকূল অবস্থা ও সময়ঃ
1- মুসলিম ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার
জন্য দুআ করাঃ
আল-কুরআনুল কারীম ও হাদীসে সকল
মুসলিমের জন্য দুআ করতে উৎসাহিত
করা হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্বের
বিভিন্ন স্থানে বিপদগ্রস্ত মুসলিমদের
জন্য দুআ করা আমাদের দায়িত্ব।
হাদীসে এসেছে :
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺍﻟﺪﺭﺩﺍﺀ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ
ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ ﻛﺎﻥ ﻳﻘﻮﻝ : ﺩﻋﻮﺓ ﺍﻟﻤﺮﺀ
ﺍﻟﻤﺴﻠﻢ ﻷﺧﻴﻪ ﺑﻈﻬﺮ ﺍﻟﻐﻴﺐ
ﻣﺴﺘﺠﺎﺑﺔ، ﻋﻨﺪ ﺭﺃﺳﻪ ﻣﻠﻚ ﻣﻮﻛﻞ،
ﻛﻠﻤﺎ ﺩﻋﺎ ﻷﺧﻴﻪ ﺑﺨﻴﺮ، ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻤﻠﻚ
ﺍﻟﻤﻮﻛﻞ ﺑﻪ: ﺁﻣﻴﻦ ﻭﻟﻚ ﺑﻤﺜﻞ.
)ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ 2733 (
আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলতেন : মুসলিম ব্যক্তি তার মুসলিম
ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দুআ
করলে তা কবুল করা হয়। দুআকারীর
মাথার কাছে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত
ফিরিশতা থাকে। যখনই তার ভাইয়ের
জন্য কল্যাণের দুআ করে,
দায়িত্বপ্রাপ্ত ফিরিশতা তার দুআ
শুনে আমীন
বলতে থাকে এবং বলে তুমি যে কল্যাণের
জন্য দুআ করলে আল্লাহ অনুরূপ কল্যাণ
তোমাকেও দান করুন। (সহীহ্ মুসলিম)
এ হাদীস দ্বারা যেমন আমরা দুআ
কবুলের বিষয়টি বুঝেছি,
এমনিভাবে অপর মুসলমান ভাইদের জন্য
দুআ করার বিষয়টিও গুরুত্ব দেয়ার
কথা শিখেছি। এতে যার জন্য দুআ
করা হবে তার যেমন কল্যাণ হবে,
তেমনি যিনি দুআ করবেন তিনি লাভবান
হবেন দুদিক দিয়ে, প্রথমত তিনি দুআ
করার সওয়াব পাবেন। দ্বিতীয়ত
তিনি যা দুআ করবেন তা নিজের জন্যও
লাভ করবেন।
2- সিয়ামপালনকারী, মুসাফির, মজলুমের
দুআ এবং সন্তানের বিরুদ্ধে মাতা-
পিতার দুআ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :
ﺛﻼﺙ ﺩﻋﻮﺍﺕ ﻣﺴﺘﺠﺎﺑﺎﺕ ﻻ ﺷﻚ
ﻓﻴﻬﻦ: ﺩﻋﻮﺓ ﺍﻟﻮﺍﻟﺪ ﻋﻠﻰ ﻭﻟﺪﻩ،
ﻭﺩﻋﻮﺓ ﺍﻟﻤﺴﺎﻓﺮ، ﻭﺩﻋﻮﺓ
ﺍﻟﻤﻈﻠﻮﻡ) . ﺃﺧﺮﺟﻪ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ﻓﻲ
ﺍﻷﺩﺏ ﺍﻟﻤﻔﺮﺩ ﻭﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ
ﻭﻭﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﺔ ﻭﺻﺤﺤﻪ
ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺠﺎﻣﻊ 3032 (
তিনটি দুআ কবুল হবে;
এতে কোনো সন্দেহ নেই। সন্তানের
বিপক্ষে মাতা-পিতার দুআ, মুসাফিরের
দুআ এবং মজলুম বা অত্যাচারিত
ব্যক্তির দুআ। (বুখারী-আল আদাবুল
মুফরাদ, আবু দাউদ, তিরমিজী)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মুআজ ইবনু
জাবালকে ইয়েমেনে গভর্নর করে পাঠান
তখন তাকে কয়েকটি নির্দেশ দেন। তার
একটি ছিল :
ﻭﺍﺗﻖ ﺩﻋﻮﺓ ﺍﻟﻤﻈﻠﻮﻡ، ﻓﺈﻧﻪ ﻟﻴﺲ
ﺑﻴﻨﻬﺎ ﻭﺑﻴﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺣﺠﺎﺏ) . ﺭﻭﺍﻩ
ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ﻭﻣﺴﻠﻢ)
সাবধান থাকবে মজলুম বা অত্যাচারিত
ব্যক্তির দুআ হতে। জেনে রেখ! তার
দুআ ও আল্লাহর মধ্যে কোনো অন্তরায়
নেই। (বুখারী ও মুসলিম)
মজলুমের বদ দুআ
থেকে নিজেকে বাঁচাতে হবে সর্বদা। এর
অর্থ এটা নয় যে, মজলুমকে দুআ
করতে দেয়া যাবে না। বরং রাসূলের
বাণীর উদ্দেশ্য হল,
কখনো কাউকে সামান্যতম অত্যাচার
করা যাবে না। নিজের কাজ-কর্ম,
কথা দ্বারা কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত
না হয়, এটার প্রতি সতর্ক থাকা হল
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর এ হাদীসের
উদ্দেশ্য। যদি আমার দ্বারা কেউ
ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে সে হবে মজলুম
বা অত্যাচারিত। সে আমার
বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে দুআ
করলে তা অবশ্যই কবুল হবে। এটা ভয়
করে চলতে পারলে এ হাদীস স্বার্থক
হবে আমাদের জন্য।


Next post প্রশ্নঃ লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ কি এবং এর গুরুত্ব কতখানি?

প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল Syed Ru߀£ব্লগের প্রকাশিত পোস্ট গুলি ফেসবুকে শেয়ার করে আমাদের চলার পথকে আরো গতিময় করে তুলুন । আমরা দিন রাত খাটিয়ে পোস্ট গুলি লেখি । ব্লগে প্রকাশ করে আপনাদেরকে উপহার দেয় । আপনারা যদি শেয়ার না করেন?তাহলে আমরা তো সামনে এগিয়ে যেতে পারবোনা । আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ । সাথে থাকুন সব সময় । আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :