বস্তুর আকর্ষণ সফলতার জন্য বাধা - দূরদর্শিতা ও শিক্ষাগ্রহণ

কোন মন্তব্য নেই
বস্তুর আকর্ষণ সফলতার জন্য বাধা
কোন সৃষ্টিই উদ্দেশ্যবিহীন নয়,
হতে পারে না। সুতরাং মানুষের মত
উত্তম সৃষ্টিও উদ্দেশ্যবিহীন নয়। এই
সৃষ্টির পিছনে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র্য
উদ্দেশ্য রয়েছে। কিন্তু উদ্দেশ্য
বাস্তবায়নের পথে বস্তুর আকর্ষণ ও
আবরণের কারণে মানুষ বাধাপ্রাপ্ত
হয়। তার স্বভাব-চেতনা সঠিক দিক
নির্দেশনা দিতে অক্ষম। এমতাবস্থায়
সে সৃষ্টির উদ্দেশ্য অনুধাবনে ব্যর্থ
হয়ে নিজেকে জন্তু-জানোয়ারের
কাঁতারে দাঁড় করায় এবং পশুদের মত
অস্থায়ী জগতকেই প্রাধান্য
দিয়ে থাকে। অপরাধপ্রবণ
হয়ে পাপাচারিতায় লিপ্ত হয়।
পক্ষান্তরে মৃত্যুর স্মরণ
মানুষকে সাফল্যের পথে পরিচালিত
করে। মৃত্যু তাকে বুঝাতে সক্ষম হয়
যে, মানুষ এই পৃথিবীতে চিরকাল
থাকতে পারে না। আজ হোক কাল হোক
তাকে যেতেই হবে এবং খালি হাতে একাই
যেতে হবে। মাটির নীচে সাড়ে তিন হাত
গর্তে স্থান হবে। সেখানে কেউ
সাথে যাবে না, সাহায্যও
করতে পারে না। দেহ পচে-গলে যায় বটে,
কিন্তু বিলুপ্ত হয় না। বরফ যেমন
পানিতে অস্তিত্ব নিয়ে বিদ্যমান থাকে,
তেমনি মানুষের দেহও মাটির
সাথে মিশেও অস্তিত্ব নিয়ে বহাল
থাকে। তার সাথে আত্মা সম্পৃক্ত
হয়ে কর্মফল হিসেবে প্রাপ্য ভালো-
মন্দ, শান্তি-অশান্তি উপভোগ করে।
এই অনুভূতিই মানুষকে বস্তু আকর্ষণ
থেকে মুক্ত করে আখেরাতের
প্রতি ধাবিত করে থাকে। এজন্যই
পবিত্র কুরআনে মৃত্যুর প্রতি বার
বার মানুষের মনোযোগ আকৃষ্ট
করা হয়েছে। রাসূল বলেছেন-
“তোমরা মূলতঃ পথিক, সুতরাং বস্তু
জগতে পথিক হয়েই থেক
এবং স্থায়ী ঠিকানার সামগ্রী সংগ্রহ
করে নিয়ো। আর অধিক
হারে মৃত্যুকে স্মরণ কর। তাহলে বস্তুর
স্বাদ ও আকর্ষণ মিটে যাবে, বাদশাহীও
তুচ্ছ মনে হবে। যারা এই ধ্রুব সত্য
অনুধাবনে সক্ষম হয়েছে, তারাই
জীবনে উৎকর্ষ সাধনে সক্ষম
হতে থাকবে। এই যুবকের আধ্যাত্মিক
সাধনা ও সাফল্যের পিছনে মৃত্যুর
অনুভূতি ও কবরে ভয়াবহ অবস্থার
উপলব্ধি বিরাট ভূমিকা পালন করেছে।
বাহলুলের প্রতি তার নছীহতসমূহ এর
বাস্তব প্রমাণ।
দূরদর্শিতা ও শিক্ষাগ্রহণ
আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন,
“আমি আসমান ও
যমীনকে সৃষ্টি করেছি। রাত আসে দিন
যায় এবং রাত-দিন ছোট বড় হয়।
এতে জ্ঞানী ও দূরদর্শীদের জন্য
রয়েছে শিক্ষণীয় বিষয়। যারা জ্ঞানী ও
চিন্তাশীল তারা আল্লাহর
প্রতিটি সৃষ্টি থেকেই শিক্ষা গ্রহণ
করে এবং সঠিক সত্য
অনুধাবনে সক্ষম হয়। এর বাস্তব
প্রমাণ হচ্ছে নবী বংশের এই যুবকের
আদর্শ জীবন। বাহলুল
তাকে বলেছিলেন, হে যুবক! তোমার
বয়স অতি অল্প, তাই তুমি এতে ভীত
কেন? অল্প বয়সের সুবাদে আজ অনেক
যুবকই উদাসীন। কেবল যুবকরাই নয়,
অনেক বৃদ্ধও এরূপ উদাসীনতার
মধ্যে থাকে। আর উদাসীনতার পরিণাম
সবসময়ই খারাপ হয়ে থাকে। কিন্তু এই
যুবক উদাসীন ছিল না, ছিল অত্যন্ত
দূরদর্শী। তাই বাহলুলের
উত্তরে বলেছিল, আমি আমার মা-
জননীকে দেখেছি ছোট
লাকড়িগুলোকে প্রথমে আগুনে নিক্ষেপ
করতে। অনুরূপ ছোট বয়সের মানুষেরও
মৃত্যু হতে পারে এবং আল্লাহর
বিচারে প্রথমেই সে অগ্নিদগ্ধ
হতে পারে। সুতরাং যুবক বয়সের
সুবাদে উদাসীন হওয়া ঠিক নয়। যুবকের
এরূপ উক্তি একদিকে যেমন তার
দূরদর্শীতার পরিচয় বহন করে,
তেমনি তার শিক্ষা-গ্রহণের মন-
মানসিকতাও প্রতিও ইঙ্গিত বহন
করে। বস্তুতঃ এই গুণটি জান্নাতের
পথে পথ চলায় যুবককে সহায়তা দান
করেছে।


শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান ।এটা আপনার আমার সকলের দ্বায়িত্ব ।প্রকাশক ও সম্পাদক সৈয়দ রুবেল উদ্দিন

কোন মন্তব্য নেই :