বিবাহের প্রস্তাবের নিয়ম

কোন মন্তব্য নেই
মহিলাদের স্বভাবগত শরম লজ্জার
প্রতি খেয়াল করে পাত্রী এবং পাত্রীর
অভিভাবকদের পরিবর্তে পাত্র
অথবা পাত্র পক্ষ থেকে প্রস্তাব পেশ
করাই উত্তম। এমনিভাবে প্রস্তাব
সরাসরি পাত্রীর নিকট
না করে পাত্রীর অভিভাবকের নিকট
প্রস্তাব পেশ করবে। তাদের পক্ষ
থেকে যদি সামান্য অনীহা প্রকাশ পায়
তাতে প্রস্তাবকারীর মনক্ষুণœ
হওয়ার কিছু নেই। একটু
চিন্তা করলে বিষয়টি অনুধাবন
করা যায় যে, রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশেষ
এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ছিলেন। অথচ
হযরত আয়েশা হযরত
উম্মে সালমা এবং হযরত
উম্মে হাবীবাসহ অনেকের
বিবাহে তিনি স্বয়ং প্রস্তাব
পাঠিয়েছেন। অবশ্য বিশেষ
মূহূর্তে এবং বিশেষ
প্রয়োজনে মেয়েপক্ষ থেকে প্রথম
প্রস্তাব করতে কোন প্রকার
বাধা নেই। হাদীস শরীফে এর নজীর
বিরল নয়। এ সম্পর্কে ইমাম
বুখারী রহ. সহীহ বুখারীতে ভিন্ন
শিরোনামে এক অধ্যায় কায়েম
করে হযরত উমরের ঘটনার
উদ্ধৃতি দিয়েছেন যে, হযরত
হাফসা বিধবা হওয়ার পর তিনি প্রথম
হযরত উসমানের নিকট বিবাহ দেয়ার
প্রস্তাব করেন। কিন্তু হযরত উসমান
কয়েকদিন পর অসম্মতি প্রকাশ
করেন। এরপর হযরত আবু বকরের
নিকট বিবাহ দেয়ার জন্য প্রস্তাব পেশ
করেন। কিন্তু হযরত আবু বকর
সিদ্দীক চুপ থাকেন। হ্যাঁ,
অথবা না কোন প্রকার উত্তর
দেয়া থেকে বিরত থাকেন। কারণ হযরত
হাফসার বিবাহের ব্যাপারে রাসূলে পাক
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
ইচ্ছা সম্পর্কে হযরত আবু বকর
সিদ্দিক অবগত ছিলেন। ইমাম
বুখারী রহ. স্বীয় কিতাবে (২/৭৬৭)
উত্তম ব্যক্তির নিকট বিবাহ দেয়ার
ইচ্ছায় মেয়েপক্ষের প্রস্তাব শিরোনাম
অধ্যায় কায়েম করেও হাদীস পেশ
করেছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, স্থান-
কাল এবং পাত্র বিশেষে মেয়েপক্ষও
প্রথম প্রস্তাব
করতে পারে এবং করার নজীরও আছে।
অথচ ঐ যুগেও মেয়েপক্ষের প্রথম
প্রস্তাব করাকে লজ্জাজনক
মনে করা হতো। হাদীসে পাকে আছে এক
মেয়ে হযরত রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট
এসে সরাসরি নিজের বিবাহের প্রস্তাব
দেয়। একথা হযরত
আয়েশা সিদ্দীকা শুনার পর বলেছেন,
ﺃﻣﺎ ﺗﺴﺘﺤﻲ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺃﻥ ﺗﻬﺐ
ﻧﻔﺴﻬﺎ ﻟﻠﺮﺟﻞ
“নিজের বিবাহের প্রস্তাব পেশ
করা লজ্জার ব্যাপার নয় কি?”
অন্য এক মহিলা মন্তব্য করেছিল,
ﻣﺎ ﺃﻗﻞ ﺣﻴﺎﺀﻫﺎ ﻭﺍﺳﻮﺀﺗﺎﻩ
ﻭﺍﺳﻮﺀﺗﺎﻩ এই
মহিলাটি কতইনা নির্লজ্জ! তার
প্রস্তাব কতইনা খারাপ!
(বুখারী ২/৭৬৭)
প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব
প্রস্তাবের ব্যাপারে রাসুলে পাক
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
একটি গুরুত্বপূর্ণ আদেশ এই করেছেন
যে,
ﻻ ﻳﺨﻄﺐ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﻋﻠﻲ ﺧﻄﺒﺔ
ﺍﺧﻴﻪ ﺣﺘﻲ ﻳﻨﻜﺢ ﺍﻭ ﻳﺘﺮﻙ)ﻣﺘﻔﻖ
ﻋﻠﻴﻪ )
অর্থাৎ যদি কোন মেয়ের ব্যাপারে কেউ
প্রস্তাব করে থাকে আর প্রস্তাব
প্রত্যাখ্যাত হয়নি। এমতাবস্থায় এই
মেয়ের জন্য কারো প্রস্তাব
করা জায়েয নেই। কেননা এতে প্রথম
প্রস্তাবকারীর মনে কষ্ট অনুভূত
হবে এবং তার অধিকারে হস্তক্ষেপ
বলে গণ্য করা হবে, যার পরিণাম
ক্ষতিকর। পরিশেষে এটি শত্র“তার
আকার ধারণ করতে পারে।
ইদ্দত অবস্থায় বিবাহের প্রস্তাব
এমনিভাবে তালাকপ্রাপ্তা মহিলাকে
ইদ্দতাবস্থায় বিবাহের প্রস্তাব করার
অনুমতি নেই। যে মহিলার
স্বামী মৃত্যুবরণ
করেছে এবং ইদ্দতে আছে তাকে বিবাহের
প্রস্তাব দেয়া অথবা বিবাহের
সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করা পবিত্র
কুরআনের মাধ্যমে অকাট্যভাবে নিষেধ
করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ
হয়েছে-
ﻭَﻟَﺎ ﺗَﻌْﺰِﻣُﻮﺍ ﻋُﻘْﺪَﺓَ ﺍﻟﻨِّﻜَﺎﺡِ ﺣَﺘَّﻰٰ
ﻳَﺒْﻠُﻎَ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏُ ﺃَﺟَﻠَﻪُ
অবশ্য ইশারা ইঙ্গিতের
মাধ্যমে বিবাহের
ইচ্ছা প্রকাশে বাধা নেই। পবিত্র
কুরআনে বলা হয়েছে-
ﻭَﻟَﺎ ﺟُﻨَﺎﺡَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻓِﻴﻤَﺎ ﻋَﺮَّﺿْﺘُﻢْ ﺑِﻪِ
ﻣِﻦْ ﺧِﻄْﺒَﺔِ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀ )ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ )
বিবাহ প্রস্তাবের জন্য শরীয়ত
কর্তৃক বিশেষ কোন রেওয়াজ
এবং প্রথার অথবা বিশেষ কোন
বিধি বিধান নির্ধারিত হয়নি।
বরং সাহাবায়ে কেরাম,তাবেয়ীন
এবং তাবেতাবেয়ীন ও
আইম্মায়ে মুজতাহিদীনের
ঘটনাবলী দ্বারা প্রমাণিত হয় যে,
সরাসরি অভিভাবকদের
সাথে সরলভাবে আলোচনা করে বিবাহের
ইচ্ছার কথা জানিয়ে দেয়াই প্রস্তাবের
জন্য যথেষ্ট।

সূত্রঃ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তরদাওয়াতি সংগঠন মজলিসে দাওয়াতুলহক। এর মৌল উদ্দেশ্য মানব জীবনেসকল ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত ওআদর্শের প্রতিফলন ঘটানো।কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের ইত্তিবা-অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলারইবাদত আনুগত্যের দাবি পূরণ করাই হলএকজন মুসলমানের ইহকালীন জীবনেরমূল উদ্দেশ্য।।শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :