“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্”র ক্ষমতা →পাতা ২←
প্রথম পাতার পর ।[২] শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জন:
যে সমাজ “ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ” এর শিক্ষায় বিশ্বাসী এবং এর শিক্ষাকে বাস্তবে রূপ দেয় সেই সমাজে বিরাজ করে শুধুই শান্তি ও নিরাপত্তা। এমন সমাজের প্রতিটি মানুষই কেবলমাত্র সেইকাজের ব্যপারে যত্নশীল হবে যাআল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন তাদের জন্য হালাল বা বৈধ ঘোষণা করেছেন। পক্ষান্তরে, তারা সেই সমস্ত কাজ পরিহার করে চলবে যা তিনি হারাম বা অবৈধ ঘোষণা করেছেন। সমাজের প্রতিটি মানুষই তখন তাদের এক ও অভিন্ন আকীদাহ্ তথা ধর্ম ীয় বিশ্বাসকে অনুসরণ করে সকলকাজ-কর্ম সম্পাদন করবে। কারণ “ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ” এর দাবী হল, যে কেউ এই কথার মৌখিক স্বীকৃতি দেবে তাকে এর সত্যতা বাস্তবায়ন করতে হবে কর্মের মাধ্যমে। কর্মহীন মৌখিক ঐ স্বীকৃতি একটি অন্তঃসার শূন্য স্লো গান ছাড়াকিছুই নয়। কাজেই কালিমার শিক্ষায় বিশ্বাসী এবং সেই শিক্ষাকে মেনে চলে এমন সমাজেরলোকদেরকে দ্বারা কখনও জুলুম-অত্যাচার, অন্যায়, পারস্পারিক হানাহানি ইত্যাদি সংঘটিত হতে পারেনা। এমন সমাজের লোকেরা গভীর ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সৎকর্ম সম্পাদনের জন্যে পরস্পরকে সহযোগিতা করবে এবং ভালবাসবে। আর তাদের এই পারস্পারিক সহযোগিতা ও ভালবাসা হবে কেবলমাত্র আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের জন্যে, তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে। আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেনঃ
“ মু ’ মিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। ” [সূরা হুজুরাত; ৪৯:১০]
বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত সে সবআরবদের জীবন ে যারা একসময় ইসলাম মেনে চলত না। অথচ “ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ” এর পরশে তাদের জীবনে এসেছিল আমূলপরিবর্তন। ইসলাম পূর্ব সময় ে তাদের জীবন ছিল পারস্পারিক মারামারি, কাটাকাটি, হানাহানি,দ্বন্দ্ব-সংঘাত, খুনাখুনি, লুটতরাজ ইত্যাদিতে জর্জরিত। সেই মানুষগুলোই যখন গ্রহণ করলতখন সব কিছু বদলে গেল। যারা রক্তের বদলে রক্ত চাইত তারা ইসলামের কারনেই শান্তি সৌহার্দ আর সম্প্রীতির এক অমায়িক বন্ধনে আবদ্ধ হল। যারা ছিল চরম শত্রু তারাই হল পরম বন্ধু । এই হল ইসলাম তথা “ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ” এর ক্ষমতা। আল্লাহ ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেনঃ
“ মুহাম্মাদ ( সা) আল্লাহ্ র রাসূল; আর যারা এর সাথে আছে তারা কাফিরদের বিরুদ্ধে কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরে সহানুভূতিশীল…। ” [সূরা ফাত্হ; ৮৪:২৯]
“ …এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র যে নেয়ামত রয়েছে তা স্মরণ কর, যখন তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে তখন তিনিই তোমাদের অন্তঃকরণে প্রীতি স্থাপন করেছিলেন, তৎপরে তোমরা তাঁর অনুগ্রহে ভ্রাতৃ ত্বে আবদ্ধ হলে…। ” [সূরা আল-ইমরান; ৩:১০৩]
[৩] সুমহান লক্ষ্য অর্জন:
প্রকৃত সুখ-শান্তি অর্জন, পৃথিবীতে খেলাফাত (ইসলামিক কর্তৃত্ব ও শাসন ব্যবস্থা) প্রতিষ্ঠা, ইসলামের বিশুদ্ধ চর্চা এবং সমস্ত রকম বাতিল ও শয়তান ি অপশক্তির আক্রমণের বিরুদ্ধে ধৈর্য এবং নিষ্ঠার সাথে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া-এসবের একটিও সম্ভব নয় “ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ” এর বাস্তবিক প্রয়োগ ছাড়া। আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেনঃ
“ তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ্ তাদেরকে প্রতিশ্ রুতি দিয়েছেন যে, তিনি তাদেরকে পৃথিবীতে খেলাফাত ( প্রতিনিধিত্ব) অবশ্যই দান করবেন, যেমন তিনি ( প্রতিনিধিত্ব) দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই সুদ ৃঢ় করবেন তাদের দ্বীনকে যা তিনি তাদের জন্যে মনোনীত করেছেন এবং তাদের ভয় - ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্ যই নিরাপত্তা দান করবেন; তারা শুধু আমার ইবাদত করবে, আমার সাথে কাউকে শরীক করবেনা, অতঃপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে তারা তো সত্যত্যাগী ( ফাসিক) । ” [সূরা নূর; ২৪:৫৫]
কাজেই আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন উল্লেখিত সুমহান লক্ষ্যসমূহের অর্জনকে আমাদের জন্য শর্তসাপেক্ষ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ, আমরা এগুলো কেবল মাত্র তখনই অর্জন করতে সমর্থ হব যখন আমরা শুধু মাত্র এবং কেবলমাত্র তাঁরই ইবাদত এবং আনুগত্য করব, তাঁর দেয়া বিধানকে প্রশ্নাতীতভাবে মেনে চলব এবং তাঁর সাথে কোন শরীক স্থাপন করব না। আর এটাই হল “ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ” এর নিহিত মর্মার্থ।
আল-ইস্তিক্কামাহ্, ইস্যুনং-১
পাদটীকাঃ
[১] লা ইলাহা ইল্লালাহ্, মা ’ নাহা, মাকানাতুহা ওয়া ফাদ্লুহা (পৃষ্ঠা নং :৩৬-৩৯) হতে সংক্ষেপিত ও পরিমার্জিত।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন