মূত্রনালির কিছু সমস্যা ও সমাধান

কোন মন্তব্য নেই

শরীর থেকে বর্জ্য নিঃসরণ কিডনি ও
মূত্রতন্ত্রের মূল কাজ।
শরীরে পানি ও লবণের
মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও
কিডনি মূত্রতন্ত্র রাখে বিশেষ
অবদান। বর্জ্য
নিঃসরণে মূত্রতন্ত্রের অপর্যাপ্ত
ক্ষমতা বা অক্ষমতায় এসব বর্জ্য
শরীরে জমা হয়ে আমাদের শরীরের সুস্থ
আবহকে বিঘ্নিত করে।
স্বাভাবিক প্রস্রাবের অভ্যাস কেমন?
একজন মানুষ ২৪ ঘণ্টায় সাধারণত ২
দশমিক ৫ থেকে তিন লিটার
পানি বা পানীয় পান করে থাকে।
কিডনির কাজ করার
ক্ষমতা স্বাভাবিক থাকলে,
পারিপার্শ্বিক আবহাওয়ার খুব বড়
তারতম্য না হলে প্রতি ২৪ ঘণ্টায়
এক হাজার ৫০০ সিসি প্রস্রাব
কিডনি তৈরি করে থাকে। আমাদের
শরীর থেকে কিছু পানি ঘাম আকারে,
কিছু পানি শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে,
কিছু পানি মলের সঙ্গে বের হয়ে যায়।
যেহেতু আমাদের প্রস্রাবের থলির
স্বাভাবিক ধারণক্ষমতা ৩০০ সিসি,
তাই স্বাভাবিকভাবে একজন মানুষ ২৪
ঘণ্টায় পাঁচবার প্রস্রাব করে থাকে।
সাধারণত দিনে চারবার আর
রাতে একবার।
তবে নানাবিধ স্বাভাবিক
বা অস্বাভাবিক কারণে বারবার
প্রস্রাবের প্রবণতা দেখা দিতে পারে,
আবার কমেও যেতে পারে।
যদি আমরা অতিরিক্ত
পানি বা তরলজাতীয় খাবার খাই,
তবে প্রস্রাবের পরিমাণ বেশি হয়,
বারবার প্রস্রাব হয়। বারবার
প্রস্রাব হয় ডায়াবেটিসেও।
অন্যদিকে পুরুষের ক্ষেত্রে বয়োবৃদ্ধির
সঙ্গে বয়সজনিত স্বাভাবিক
পরিবর্তন হিসেবেই
বৃদ্ধি ঘটে প্রোস্টেট গ্রন্থির।
প্রোস্টেট গ্রন্থি প্রস্রাব
প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে।
ফলে প্রস্রাবের থলি সব সময় সম্পূর্ণ
খালি হয় না। আর
বৃদ্ধি পাওয়া প্রোস্টেট
সৃষ্টি করে প্রস্রাবের থলির মুখে এক
ধরনের অস্বস্তি।
বয়োবৃদ্ধির কারণে নারী-
পুরুষনির্বিশেষে সবার প্রস্রাবের
থলিরই ধারণক্ষমতা কমে যায়।
বারবার প্রস্রাব করার
প্রবণতা বেড়ে যায়।
প্রস্রাব করা বা না করার এই
নিয়ন্ত্রণ কি সব সময়
রক্ষা করা সম্ভব?
না। তবে অবশ্যই তা স্বাভাবিক নয়।
নানা ধরনের স্নায়ুবিক অসুস্থতা,
প্রস্রাবের থলির কার্যক্রম
নিয়ন্ত্রণ করে যেসব স্নায়ু তার
বৈকল্য বা সমন্বয়হীনতা, প্রস্রাব
প্রদাহে, হরমোনের
ভারসাম্যহীনতা বৃদ্ধি ও প্রস্রাবের
থলির নানাবিধ অসুস্থতায় এ
নিয়ন্ত্রণ সাময়িক
বা স্থায়ীভাবে বিঘ্নিত হতে পারে।
ব্যক্তি যখন এ নিয়ন্ত্রণ হারায়,
তখন সে আর পারে না নিজ
ইচ্ছানুসারে প্রস্রাব করতে।
কখনো কখনো কারও কারও
ক্ষেত্রে ঘটে অনভিপ্রেত
অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজের
অজান্তে প্রস্রাব ঝরে যাওয়ার
মতো বিব্রতকর ঘটনা, যা কেবল
অসুস্থতাই নয়,
সামাজিকভাবে বিব্রতকরও বটে।
তবে এসবই নিয়ন্ত্রণযোগ্য ও
নিরাময়যোগ্য। প্রয়োজন শুধু সঠিক
সময়ে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
স্বাভাবিক প্রস্রাব কেমন?
স্বাভাবিক প্রস্রাব পরিষ্কার, রংহীন
বা হলুদাভ। প্রস্রাব পরিত্যাগের
প্রক্রিয়াটি বাধাহীন, ব্যথাশূন্য
সম্পূর্ণই স্বস্তিকর। প্রক্রিয়াটি শুরু
করা যায় নিজ ইচ্ছায়, প্রয়োজন হয়
না কোনো চাপ দেওয়ার।
গতি থাকে একটানা, শেষ হয় ২০
সেকেন্ডে।
প্রক্রিয়াটি শেষ করে অনুভব করা যায়
এক স্বাভাবিক পরিতৃপ্তি।
যদি প্রস্রাব হয় ঘোলা, অতিরিক্ত
ফেনাযুক্ত বা অস্বাভাবিক
দুর্গন্ধযুক্ত, প্রক্রিয়াটি যদি হয়
ব্যথা, জ্বালা-যন্ত্রণাপূর্ণ,
তাহলে এটি স্বাভাবিক নয়।
এমনটা হতে পারে প্রস্রাবের প্রদাহসহ
নানাবিধ অসুস্থতায়। এ
ক্ষেত্রে প্রয়োজন সঠিক প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা গ্রহণ। প্রস্রাবের
রং যদি লাল হয় বা থাকে, তাতে রক্তের
অস্তিত্বের
বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনায়
নেওয়া জরুরি। ব্যথাশূন্য প্রস্রাব
পরিত্যাগ-প্রক্রিয়ায়
যদি প্রস্রাবে রক্ত থাকে,
তবে তা নিতে হবে অতীব জরুরি ও
ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্যসমস্যা হিসেবে।
সামান্য কালক্ষেপণও এ
ক্ষেত্রে হতে পারে অসামান্য ক্ষতির
কারণ। অথচ
সময়োপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ,
রোগনির্ণয় ও উপযুক্ত চিকিৎসায় এ
ধরনের
জীবনঘাতী অসুস্থতা নিয়ন্ত্রণ নয়
শুধু, অনেক ক্ষেত্রেই নিরাময় সম্ভব।
কাজী রফিকুল আবেদীন
সহকারী অধ্যাপক, ইউরোলজি,
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব
কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি




সূত্রঃ বাংলা হেলথ ।শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের কে জানার সুযোগ দিন ।আপনি জেনেছেন হয়তো সে জানেনা ।আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।সাথে থাকুন সব সময় ।আল্লাহ্ হাফেজ ।

কোন মন্তব্য নেই :