বিদ’আতের অর্থ এবং তার কুপ্রভাব / পাতা ১

কোন মন্তব্য নেই
প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না
বিদ’আতের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে “নযীরহীনভাবে কিছু নব আবিস্কার করা ।” যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেছেন : “তিনি (নযীরবিহীন) আসমান ও যমীনের স্রষ্টা” সূরা বাকারাহ /১১৭
পারিভাষিক অর্থে বিদ’আত বলা হয় : “ধর্মের মধ্যে যে নবাবিস্কৃত ইবাদাত , বিশ্বাস ও কথার সমর্থনেকুরআন ও সুন্নাহের মধ্যে কোন দলীল মিলে না অথচ তা ছাওয়াবের উদ্দেশ্যে করা হয় তাকেইবিদ’আত বলা হয় ।”
ব্যক্তি , সমাজ , ধর্মীয় মাসআলা মাসায়েলের উপর বিদ’আতের কুপ্রভাব অত্যন্ত ভয়ানক । তবে বিদ’আতের স্তর রয়েছে । স্তরভেদে বিদ’আতের ক্ষতিকর কুপ্রভাবগুলো প্রযোজ্য । একটি কথা মনে রাখতে হবে ক্ষেত্র বিশেষে বিদ’আতকে যত ছোটই ভাবা হোক , তা রাসূল (সাঃ) এর এ (শরী’আতের মাঝে প্রত্যেক নবাবিস্কারই বিদ’আত আর প্রত্যেক বিদ’আত ভ্রষ্টতা আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম) বাণীর আওতা হতে কোন অবস্থাতেই বের হবে না । অতএব বিদ’আতের ভয়ানক ক্ষতিকর কুপ্রভাবগুলো আমাদের জানা দরকার । এ করণেই নিম্নে সংক্ষেপে সেগুলো উল্লেখ করা হলঃ
আল্লামাহ শাতেবী (রহঃ) সহ অন্যান্য ইসলামী বিশেষজ্ঞগণ বিদ’আতের যেসব কুপ্রভাব উল্লেখ করেছেন সেগুলো নিম্নরুপঃ
১. বিদ’আতীর কোন আমল কবুল করা হবে না : রাসূল (সাঃ) বলেছেন : “যে ব্যক্তি দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু আবিস্কার করবে বা কোন নবাবিস্কারকারীকে আশ্রয় দিবে তার উপর আল্লাহ এবং সকল ফেরেশতাও মানুষের অভিশাপ……. তার ফরয ইবাদাত বা তাওবাহ , নফল ইবাদাত বা ফিদইয়া কবুল করা হবে না….।” বুখারী , কিতাবুল জিযিয়াহ , হা/৩১৮০ ।

ইমাম আওযা’ঈ বলেন কোন কোন বিশেষজ্ঞ আলেম বলেছেন : বিদ’আতীর সালাত, সিয়াম , সাদাকাহ , জিহাদ , হাজ্জ , উমরাহ , কোন ফরয ইবাদাত বা তাওবাহ , নফল ইবাদাত বা ফিদইয়া গ্রহণযোগ্য হবে না । অনুরুপ কথা হিশাম ইবনু হাস্সানও বলেছেন ।
আইউব আস-সুখতিয়ানী বলেন: বিদ’আতী তার প্রচেষ্টাযতই বৃদ্ধি করবে আল্লাহর নিকট হতে তার দূরত্ব ততই বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া যে বিদ’আতকে পছন্দ করে তার ধারনা শরীয়ত পূর্ণ নয় , অথচ আল্লাহ তা’আলা বলেছেন : “আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করে দিয়েছি” সূরা মায়েদা/২ । কারণ তার নিকট যদি দ্বীন পরিপূর্ণ হয়ে যেয়েই থাকে তাহলে সে শরীয়তের মধ্যে নতুন কিছুর প্রবেশ ঢুকাবে কেন বা তাকে অবহিত করার পরেও কেনই বা বিদ’আতের উপর আমল করবে ।
২. বিদ’আত পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত বিদ’আতীর কোন প্রকারতওবাহ করার সুযোগ জুটবে না : “আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক বিদ’আতির বিদ’আতকে পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তওবার পথ রুদ্ধকরে দিয়েছেন” – সহীহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১/১৩০পৃ হাদীস নং ৫৪ ।
৩. বিদ’আতী নবী (সাঃ) এর হাওযে কাওসারের পানি পান করা হতে বঞ্চিত হবে : আবু হাসেম হতে বর্ণিত , তিনিবলেন আমি সাহালকে বলতে শুনেছি তিনি রাসূল (সাঃ) কে বলতে শুনেছেন , “আমি তোমাদের পূর্বেই হাওযে কাওসারের নিকট পৌঁছে যাব । যে ব্যক্তি সেখানে নামবে এবং তার পানি পান করবে সে আর কখনও পিপাসিত হবে না । কতিপয় লোক আমার নিকট আসতে চাইবে , আমি তাদেরকে চিনি আর তারাও আমাকে চেনে । অতঃপর আমার ও তাদের মধ্যে পর্দা পড়ে যাবে । রাসূল (সাঃ) বলবেন : তারা তো আমার উম্মাতের অন্তর্ভুক্ত । তাকে বলাহবে আপনি জানেন না আপনার পরে তারা কি আমল করেছে । তখন যে ব্যক্তি আমার পরে (দ্বীনকে) পরিবর্তন করেছে তাকে আমি বলবো : দূর হয়ে যা , দূর হয়ে যা” সহীহ মুসলিম হা/৪২৪৩ ।
৪. বিদ’আতী অভিশপ্ত : কারণ রাসূল (সাঃ) বলেছেন : “যে ব্যক্তি দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু আবিস্কার করবে বা কোন নবাবিস্কারকারীকে আশ্রয় দিবে তার উপর আল্লাহ এবং সকল ফেরেশতাও মানুষের অভিশাপ ।” বুখারী , কিতাবুল জিযিয়াহ , হা/৩১৮০ ।

আরো পড়ুন........বিদ’আতের অর্থ এবং তার কুপ্রভাব-----পাতা ২

কোন মন্তব্য নেই :