আমার স্বামীকে কি করে মুখ দেখাবো! ধর্ষিতার বধূর আর্তনাদ ।

কোন মন্তব্য নেই
রাশিদুল ইসলাম, খুলনা থেকে: স্যার
আমার একটি সুন্দর সংসার আছে,
এটাকে শেষ করবেন না।
আপনি আমাকে বোন ডেকেছেন আবার
কেন সর্বনাশ করবেন? জেল
থেকে আমার স্বামী বের
হলে তাকে কি করে মুখ দেখাবো! এসব
কথা বলার পর
ওসি আমাকে জাপটে ধরে। এরপর
আমার সব...শেষ করে দিয়েছে। গতকাল
দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে এসব
কথা বলে হাউমাউ করে কেঁদে দিলেন
তেরখাদা থানার ওসি মামুন-অর
রশিদের লালসার শিকার গৃহবধূ।
ওসি কর্তৃক গৃহবধূ ধর্ষণের
ঘটনা অনুসন্ধান
করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে আরও
একাধিক যুবতী ও গৃহবধূর সর্বনাশের
লোমহর্ষক কাহিনী। এমনকি তার হাত
থেকে রক্ষা পায়নি পুলিশ কনস্টেবলের
স্ত্রীরাও। এদিকে খুলনা জেলা পুলিশ
ঘটনার তদন্তে এক সদস্য বিশিষ্ট
একটি কমিটি গঠন করেছে। গত
মঙ্গলবার বিকালে খুলনার
তেরখাদা থানার
সরকারি কোয়ার্টারে ওসি’র স্ত্রীর
অনুপস্থিতিতে তেরখাদা উপজেলার
কাটেংগা গ্রামের ওই গৃহবধূ তাদের
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল সংক্রান্ত
একটি অভিযোগ নিয়ে মামলা করার
জন্য থানায় আসেন। ওই সময় মামুন
তার কক্ষের বাইরে বসে ছিলেন।
গৃহবধূর সঙ্গে কথা বলার
একপর্যায়ে শহীদুল নামক এক
ব্যক্তি ওসিকে ৩টি মাছ ও
একটি মুরগি ঘুষ দিতে আসে। এ সময়
তিনি ওই গৃহবধূকে ছোট বোন সম্বোধন
করে মাছগুলো কেটে দিতে বলেন। তার
স্ত্রী খুলনা শহরের বাসায় থাকার
সুযোগে ওসি মামুন গৃহবধূ রুমের
বাইরে বসে মাছ কাটতে চাইলেও
নানা অজুহাতে তার বাসায়
যেয়ে কাটতে অনুরোধ করেন। মাছ
কাটা শেষ হলে তিনি তাকে জোর
করে তুলে বিছানায় নিয়ে ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনায় ধর্ষিতা গৃহবধূ মানবাধিকার
বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা জেলা কো-
অর্ডিনেটর এডভোকেট মোমিনুল
ইসলামের কাছে লিখিতভাবে জানান,
তার স্বামীকে একটি মামলায়
তেরখাদা থানা পুলিশ গ্রেপ্তার
করে জেল হাজতে পাঠায়। এই
সুযোগে প্রতিপক্ষরা তার স্বামীর
মালিকানাধীন দোকানপাট লুটপাট
করে নিয়ে যায়। এই অভিযোগ দিতে গত
মঙ্গলবার থানায়
গেলে কৌশলে ওসি তাকে সরকারি কোয়ার্টারে নিয়ে ধর্ষণ
করে এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে তার
স্বামীর বড় ধরনের
ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেয়।
এদিকে ধর্ষিতা গৃহবধূ ওসি’র হুমকির
কারণে এলাকা ত্যাগ
করে বর্তমানে খুলনা শহরে অবস্থান
করছেন। কারাগারে আটক স্বামীর
মুক্তির অপেক্ষায় গতকাল
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত
জেলগেটে বসে ছিলেন।
অপরদিকে তেরখাদা থানায় কর্মরত
একাধিক পুলিশ সদস্য জানান, ওসি’র
বাসার ব্যক্তিগত কাজ করার জন্য
অনেক গৃহবধূকেই সময় দিতে হয়। আর
এর প্রতিবাদ করায়
বদলি হতে হয়েছে অনেক সদস্যকে।
অভিযোগ রয়েছে, কিছুদিন আগে আবদুল
হক হত্যা মামলায় চান মিয়া নামের এক
ব্যক্তিকে একদিন থানায় আটক
রেখে উৎকোচের বিনিময়ে ছেড়ে দেন
ওসি। খাসি, হাঁস-মুরগি থেকে শুরু
করে এমন কোন উপঢৌকন নেই
যা ওসি ঘুষ হিসেবে নেয় না।
মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার
খুলনা জেলা কো-অর্ডিনেটর এডভোকেট
মোমিনুল ইসলাম জানান, ওসি’র
বিরুদ্ধে মামলার সকল
প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ধর্ষিতার
স্বামী কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার
পরই মামলা করা হবে। তেরখাদা থানার
ওসি মামুন-অর রশিদ ধর্ষিতার নাম
উল্লেখ করে বলেন, মহিলাটি সহজ সরল
এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু
পুলিশ কর্মকর্তা আমার
বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
ষড়যন্ত্রকারীরাই এই অপপ্রচার
চালাচ্ছে। খুলনা জেলা পুলিশ সুপার
তানভির হায়দার
চৌধুরী মানবজমিনকে জানান,
তেরখাদা থানার ওসি’র ঘটনাটি শোনার
পর এক সদস্যের একটি তদন্ত
কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে তার
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। news @manob zamin

কোন মন্তব্য নেই :