ত্রিশের পর যাঁরা মা হতে চান

কোন মন্তব্য নেই

বর্তমান সময়ে মেয়েদের জীবনযাত্রার
পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে গর্ভধারণের
বিষয়ে চিন্তাভাবনারও পরিবর্তন
এসেছে।
লেখাপড়া শেষে কর্মক্ষেত্রে একটু
স্থিতিশীল হয়ে, সচ্ছলতার মুখ
দেখতে দেখতে বয়স ৩০ পার হয়ে যায়
অনেক সময়ই। ঘরে-বাইরে ব্যস্ত
নারীর গর্ভধারণ এবং সন্তান পালনের
জন্য যথেষ্ট সময় বের করাও
হয়ে ওঠে কঠিন।
কখনো কখনো এটা ৩৫, এমনকি ৪০-
এও ছুঁয়ে যাচ্ছে।
৩৫ বছরের পর
বাচ্চা নিতে চাইলে কী ধরনের ঝুঁকির
মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে,
সে বিষয়গুলো মাথায়
রেখে পরিকল্পনা করা ভালো।
প্রথমত, বয়স বাড়ার
সঙ্গে সঙ্গে সন্তান
ধারণক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
দ্বিতীয়ত, ৩৫-এর পর কিছু সমস্যা,
যেমন: গর্ভকালীন ডায়াবেটিস,
গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ, প্রসব-
পূর্ব রক্তক্ষরণ, বাচ্চা নষ্ট হওয়ার
অধিকতর ঝুঁকি ও প্রসবকালীন
জটিলতা বেড়ে যায়। এসবের
সঙ্গে আরেকটি সমস্যা যুক্ত হওয়ার
আশঙ্কা থাকে, তা হলো জন্মগত
ত্রুটিযুক্ত সন্তানের জন্মদান।
তৃতীয়ত, বিভিন্ন জটিলতার
পরিণতিতে অপরিপক্ব শিশুর জন্মহার
যেমন বেড়ে যায়, সে সঙ্গে স্বাভাবিক
প্রসবের পরিবর্তে সিজারিয়ান
অপারেশনের মাধ্যমে শিশুর জন্মহারও
বেড়ে যায় অনেক গুণ।
চতুর্থত, প্রথম সন্তান ত্রিশোর্ধ্ব
বা পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব বয়সে হলে দ্বিতীয়
সন্তান নেওয়ার আগে যে দুই বা তিন
বছর বিরতি দিতে হয়, সে সুযোগটাও
থাকে না, যা মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য
অত্যন্ত জরুরি। শত ব্যস্ততা,
ক্যারিয়ার ভাবনা, মানসিক প্রস্তুতি,
অর্থনৈতিক সচ্ছলতা—এসব
নানামুখী ভাবনা থাকার পরও মেয়েদের
বয়স ৩০ পার হওয়ার আগেই অন্তত
প্রথম সন্তান ধারণ করা নিরাপদ মা ও
সন্তান উভয়ের জন্যই,
তবে কোনোভাবেই বিশের আগে নয়।
পঁয়ত্রিশের পর
মা হতে চাইলে প্রস্তুতি হিসেবে উচিত
হবে আগেই
কোনো প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞের
সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রয়োজনীয়
পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন
করে গর্ভধারণ করা,
যাতে পরবর্তী সময়ে সঠিক
দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়, কখন
কী করতে হবে এ ব্যাপারে এবং অহেতুক
দুশ্চিন্তা না করতে হয়।
বেশি বয়সে সন্তান ধারণের কিছু
সুবিধা যে নেই, তা কিন্তু নয়। পরিণত
মায়েরা নিজেদের ও সন্তানদের
প্রতি অধিকতর দায়িত্বশীল ও
যত্নশীল হয়ে থাকেন। পারিবারিক
সম্পর্ক স্থিতিশীল থাকে বলে স্বামীর
কাছ থেকেও
সহযোগিতা বেশি পেয়ে থাকেন।
অর্থনৈতিক সচ্ছলতার
কারণে চিকিৎসকের পরামর্শ
নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় সেবা গ্রহণের
সুযোগ পান।
পঁয়ত্রিশের পর সন্তান নিলে বেশির
ভাগ ক্ষেত্রে সন্তানটি নেওয়া হয়
পরিকল্পনা করে, অর্থাৎ অত্যন্ত
কাঙ্ক্ষিত শিশু।
তাই পারিবারিক এবং মানসিক সাহায্যও
পেয়ে থাকেন বেশি। এসব মা-বাবা শিশুর
প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং প্রয়োজন
অনুযায়ী অন্যান্য চাহিদা পূরণেও
সক্ষম হয়ে থাকেন। তাই ত্রিশোর্ধ্ব
বয়সে সন্তান নিতে মানা নেই, শুধু
মেনে চলুন সঠিক নিয়ম।
রওশন আরা খানম
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ
ছবিটি প্রতীকী- ৩০ পার হওয়ার
আগেই অন্তত প্রথম সন্তান ধারণ
করা নিরাপদ—মা ও সন্তান উভয়ের
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো,



শেয়ার করে আপনার প্রিয় বন্ধু-বান্ধবীদের পড়ার সুযোগ দিন।
আপনি জেনেছেন....হয়তো সে জানেনা ।আল্লাহ আপনাকে ভাল রাখুক --আমিন ।

কোন মন্তব্য নেই :