সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি বাগেরহাটের ১৫ গ্রামের মানুষ

কোন মন্তব্য নেই
বাগেরহাটের চিতলমারী ও সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী ডুমুরিয়া-উজলপুর এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে ১৫ গ্রামবাসী। ক্ষমতাসীন প্রভাবশালী মহলের মদতপুষ্ট এ সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে এলাকার সাধারণ মানুষ এমনকি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও জিম্মি হয়েপড়েছে। কুখ্যাত মশিউর-দুলাল-ইজাবুল বাহিনীর প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি, অপহরণ, হামলা, জমি দখলসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ১৫টি গ্রামের ৬ হাজারের বেশি সংখ্যালঘু পরিবারসহ ১০ হাজারের বেশি মানুষ। এ বাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতন আর ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত শত শত হিন্দু পরিবারের মানুষ ভিটেমাটি ছেড়ে দেশত্যাগ করেছে বলে মানববন্ধনে অংশ নেয়া মানুষেরা অভিযোগ জানান।
এলাকাবাসী জানায়, বাগেরহাটের একজন প্রভাবশালী সংসদ সদস্যেরব্যক্তিগত সহকারী রজত কান্তির পৃষ্ঠপোষকতায় এ বাহিনীর সন্ত্রাসীরা সম্প্রতি স্থানীয় ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্ণব বিশ্বাসকে বেপরোয়া কুপিয়ে মারাত্মকজখম করেছে। শনিবার বিকালে সন্ত্রাসী বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে এবং আওয়ামী লীগ নেতা অর্ণব বিশ্বাসের ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে ১৫টি গ্রামের মানুষ মানববন্ধন পালন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় ডুমুরিয়া বাজারেএলাকার কয়েক হাজার নারী-পুরুষ এ মানববন্ধনেঅংশ নেন। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তৃতা করেন চিতলমারী উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দাউদুল ইসলামলিন্টু খান, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার খালেদুর রহমান টিটো, স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথ রানা, অসীম বিশ্বাস, বাবুল মণ্ডল, দিপ্তী রানী বিশ্বাস, সুনীল বাড়ৈ, মনীন্দ্রনাথ মণ্ডল, বিজয় বিশ্বাস, মনীন্দ্রনাথ বিশ্বাস, প্রমানন্দ মণ্ডল প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, চরমপন্থী সন্ত্রাসী মশিউর রহমান, দুলাল ও ইজাবুল দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় এমপিসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসীকর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীরঅত্যাচারে ডুমুরিয়া, শ্রীরামপুর, খিলিগাতি, পার ডুমুরিয়া, ঝালোডাঙ্গা, রায়গ্রাম, আড়ুলিয়া, খুড়িয়া, কালশিরা, ভেন্নাবাড়ি, সোনাখালী, রুইয়ারকুল, শুড়িগাতি, করাতেরদিয়াসহ ১৫টি গ্রামের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। এ সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছে না। থানা পুলিশে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ।
ফলে এই বাহিনী নির্বিঘ্নে চাঁদাবাজি, অত্যাচার-নির্যাতন, জমি-ঘের দখলসহ অপহরণের মাধ্যমে অর্থ আদায় করছে। এই বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে তারা স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছেও অভিযোগ করেছেন। সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ কিছুই বলতে গেলে তাকে হামলা, মামলা ওঅত্যাচার-নির্যাতন ভোগ করতে হয়। এছাড়া ডুমুরিয়া গ্রামের সুব্রত বিশ্বাস ও নিপ্পন বিশ্বাসকে অপহরণ এবং ২৫/৩০ জনকে মারধর করেছে। এদের হাত থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্থানীয় এমপিসহ পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

কোন মন্তব্য নেই :