রাজধানীতে ১৫০০ মধুকুঞ্জ
কোন মন্তব্য নেই
তোহুর আহমদ:
মডেল ও চিত্রনায়িকাদের নামে রাজধানীতে চলছে ১৫০০ মধুকুঞ্জ। এসব মধুকুঞ্জের বেশির ভাগই রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান ও বনানীতে। চলচ্চিত্র ব্যবসায় মন্দার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠিত নায়িকাও মধুকুঞ্জ খুলে সেক্স ব্যবসা জমিয়ে বসেছেন। এদের মধ্যে মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করা মডেলদের সংখ্যাই বেশি। তবে শীর্ষস্থানীয় ক’জন চলচ্চিত্র নায়িকা ও টিভি অভিনেত্রীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আছে। গত এক সপ্তাহে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন দুই চিত্রনায়িকা কেয়া ও সিলভি। কেয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭ জন সোসাইটি গার্লের সঙ্গে। সিলভি গ্রেপ্তার হয়েছেন খদ্দেরের সঙ্গে। সূত্র জানিয়েছে, এসব চিত্রনায়িকা ও মডেল নিয়মিত ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের শয্যাসঙ্গিনী হচ্ছেন। সংগোপনে বোরকা পরে তারা ঢুকছেন ৫ তারকা হোটেল বা ব্যবসায়ীদের বিশেষ ফ্ল্যাটে। এছাড়া এফডিসিকেন্দ্রিক একশ্রেণীর দালাল গড়ে উঠেছে। তারা উঠতি নায়িকা ও মডেলদের সরবরাহ করে বিভিন্ন মধুকুঞ্জে। রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান ও বনানীতে এসব মধুকুঞ্জে সুখ ও আনন্দের সকল উপকরণ মজুত। কোন কোন মধুকঞ্জে আছে ফুলের নির্যাস দিয়ে গোসলের ব্যবস্থা। আছে দামি মদ, ইয়াবা ও শিশাসহ সকল ধরনের নেশার উপকরণ। যৌনশক্তি বর্ধক পানীয় সরবরাহের ব্যবস্থাও আছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, নায়িকা বা মডেল নামধারী অনেককেই তারা নেশার উপকরণসহ অসামাজিক কার্যকলাপের সময় গ্রেপ্তার করেছেন। তবে অনেককে ইচ্ছা করলেও গ্রেপ্তার করা যায় না। আবার অনেককে গ্রেপ্তার করলে চাকরি যাওয়ার ভয় থাকে। আর পুলিশ অনেক নায়িকা ও মডেলের মধুকুঞ্জথেকে নিয়মিত মোটা অঙ্কের মাসোহারা বলে জানিয়েছে সূত্র। গুলশান ২-এ একটি গেস্ট হাউজ সবচেয়ে অভিজাতমধুকুঞ্জ হিসেবে পরিচিত। এ গেস্ট হাউজে অতিথিদের মনোরঞ্জনের জন্য সব ধরনেরবিলাসবহুল উপকরণ রয়েছে। প্রতিটি রুম বাথটাব, এসি, ফ্রিজ, টেলিভিশন, ভিসিডি ওদামি পারফিউম দিয়ে সাজানো। এখানে নিয়মিত পরিচিত চিত্রনায়িকা ও মডেলদের আনাগোনা। এই গেস্ট হাউজটির মালিক রাজধানীর নারী ব্যবসার একগডফাদার। রাজধানীতে অন্তত ২০০ মধুকুঞ্জ চালাচ্ছেন তিনি। সমপ্রতি তার এ ব্যবসা মধ্যপ্রাচ্যও মালয়েশিয়ায় সমপ্রসারিত করেছেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব। তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একাধিকবার গ্রেপ্তার করলেও জেলে আটকে রাখা যায়নি। গুলশান ১-এর একটি হোটেল রাজধানীর অভিজাত মধুকুঞ্জ হিসেবে বহুল পরিচিত। এখানে কুখ্যাত সন্ত্রাসী, রাজনৈতিক নেতানামধারী ব্যক্তি, পুলিশ কর্মকর্তা নিয়মিত অতিথি হয়ে যান। এখানে অনুমোদিতভাবে মিনি মদের বার স্থাপন করা হয়েছে। হোটেলটিতে নামী নায়িকা ও মডেলদের আনাগোনা গভীর রাতপর্যন্ত। প্রকাশ্যেই চলছে সবকিছু। গুলশান ২-এরএকটি বাড়িতে প্রকাশ্যেই এসব কার্যকলাপ চলছে। এ বাড়িতে একটি পার্লার ব্যবহৃত হচ্ছে সাইনবোর্ড হিসেবে। বাড়িটি গুলশান পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন। এখানে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করে থাইল্যান্ড, পাকিস্তান ও ভারতীয় যুবতীরা। গুলশান ১-এর নিকেতন আবাসিক এলাকার ২নংরোডের একটি বাড়ি পুরোটাই অভিজাত মধুকুঞ্জ হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে বিলাসী রাত কাটাবার সব উপকরণ রয়েছে। এটি চলছে একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে। নিকেতনের ১২নং রোডের একটিবাড়িতে মধুকুঞ্জ খুলেছেন কথিত এক ড্যান্স ডিরেক্টর। নাটকের, চলচ্চিত্র নায়িকা ও মডেলদের নিয়মিত যাতায়াত এখানে। বাড়িটির সামনে দামি গাড়ির লাইন লেগেই থাকে।
গুলশান ও বনানী এলাকা র‌্যাব ১-এর আওতাধীন। বেশকয়েকজন র‌্যাব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মধুকুঞ্জগুলো থেকে নিয়মিত মোটা অঙ্কের মাসোহারা নেয়ারও অভিযোগ আছে। র‌্যাব ১-এর অধিনায়কলে. কর্নেল রাশিদুল আলম বলছেন, গুলশান ১-এ অবস্থিত গেস্ট হাউজটিতে একাধিকবার রেইড দেয়া হয়েছে। মডেলনামধারী যৌনকর্মী ও খদ্দেরদের ধরেগণমাধ্যমের সামনে হাজিরও করা হয়েছে। তারা আবারও সেটি চালু করেছে কিনা সে সম্পর্কে খোঁজ নেয়া হবে। রাশিদুল আলম বলেন, গুলশান-বনানী এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ করতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। র‌্যাব কর্মকর্তাদের মাসোহারা নেয়ার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে ওইকর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বিন্দুমাত্র বিলম্ব হবে না। গুলশান বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আশরাফুল আজিম বলছেন, যৌন ব্যবসা বা সেক্স ট্রেড থেকে পুলিশের টাকা নেয়ার অভিযোগ মোটেও সঠিক নয়। গুলশান এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ কেউ দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

♥♥♥♥সমাপ্ত♥♥♥♥
প্রকাশক : সৈয়দ রুবেল উদ্দিন
www.facebook.com/sayed.rubel3
এই সংবাদ সম্পর্কে আপনার মতামত দিন send to
Email: syedrubelsylhetbd@ovi.com

কোন মন্তব্য নেই :