সেক্সের সাতকাহন

কোন মন্তব্য নেই

অধ্যাপক ডাঃ এএইচ মোহামমদ ফিরোজ
এফসিপিএস এমআরসিপি এফআরসিপি
যৌন উদ্দীপক বস্তু
যৌনতাকে উদ্দীপিত করতে অনেক বস্তু রয়েছে যাদেরকে এক কথায় এফ্রোডাইসিয়াক্স বলা হয়ে থাকে। এগুলো যৌন সপৃহা বাড়ায়। যৌনতায় নতুন আমেজ সৃষ্টি করে। যুগ যুগ ধরেই মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে এসব জিনিসের সন্ধান করেছে ও গবেষণা করেছে। অনেক কিছুর মাঝে রয়েছে ওয়িন্টার জিনসেন গাছের শিকড়, ডাইনোসারের শিংয়ের গুঁড়া, প্রাণীর টেস্টিকল বা শুক্রাশয় এবং অনেক প্রাণীর ডিম্ব। তবে আশ্চর্য ব্যাপার হলেও সত্য এগুলো সত্যিই যৌনসুখকে বাড়ায় কি না তা নিয়ে সপষ্ট মেডিকেল স্বীকৃতি কিন্তু নেই।
যৌন উদ্দীপক বস্তু ও খাবার যৌন শিহরণ বাড়ায় তা কিভাবে মানুষ জানে সেটা রহস্যময়। এ ব্যাপারে যতটা না কথার ছড়াছড়ি ততটা সত্য ও যৌক্তিকতা কিন্তু্তু অনুপস্থিত। কখনো কখনো কেউ কারো কাছে শুনল অমুক জিনিস বা খাবার যৌনতাকে বাড়িয়ে তোলে। দেখা গেল সে ব্যক্তি অনেক খোঁজাখুঁজি আর কষ্ট করে তা সংগ্রহ করল। তার মনে কিন্তুসুপ্ত বাসনার বীজ আগেই রোপিত হয়েছিল-সে মনে আগেই ধারণা করেছিল এতে তার যৌন উৎকর্ষতা বাড়বে-এটিই সে যখন সেক্স করে তখন কাজ করে। কেননা তিনি ইতিবাচক ও সাবলীল দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সেক্সে অংশ নিয়েছিলেন।
যৌন উৎকর্ষতা বাড়াতে অনেকে অনেক ধরনের খাবার খোঁজে। এটা কখন হলো ওয়েস্টার। এটির রাসায়নিক বিশেস্নষণে দেখা গেছে যে, এতে আসলে রয়েছে পানি, সামান্য শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন বা আমিষ, সামান্য ফ্যাট বা চর্বি ও মিনারেল বা খনিজ লবণ। এসব উপাদানের মাঝে আলাদাভাবে এমন কিছু নেই যা আপনার যৌন উৎকর্ষতাকে বাড়াতে পারে। তবে এসব ক্ষেত্রে কাজ করে বিশ্বাস-যেহেতু আগে থেকেই প্রবল আত্মবিশ্বাস থাকে যে এগুলো যৌন আনন্দ বেড়ে যাবে তাই যৌনক্রিয়ায় আসলেই আনন্দ বেড়ে যায়। আসলে পুরো ব্যাপারটির অস্তিত্বটাই কিন্তু্তু আপনার মনে। তাই সাময়িকভাবে যৌন আনন্দ বেড়ে গেল আর আপনি এটিকে ধরে নিলেন-এটি খাবারের সাথে জড়িত। এগুলো এক ব্যক্তি থেকে আরেকজনে খুব  দ্রুত খবর হিসেবে বাহিত হয় সেও এটা বিশ্বাস করা আরম্ভ করে।
যৌন উৎকর্ষতা বাড়াতে আপনি যে খাবার সেবন করলেন তা যদি যৌনসুখ না বাড়ায় তথাপি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কিন্তু্তু নয়। আরো কপিতয় এফ্রোডাইসিয়াস বিদ্যমান যেমন সপ্যানিশ এক প্রকারের মাছি। এটি এক ধরনের বিটল থেকে তৈরি করা হয় যা সাউথ ইউরোপে পাওয়া যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে মাছিগুলোকে ড্রাই বা শুষক করা হয় এবং তাপ দিয়ে ক্রমান্ব্বয়ে ড্রাই পাউডারে পরিণত করা হয়। যখন এগুলোকে ব্যবহার করা হয় তখন মত্রাশয় বা ব্লাডার ও ইউরেথ্রা বা মত্রনালীতে প্রদাহ বা সামান্য জ্বালাপোড়া হতে পারে। সাথে সাথে সম্পর্কিত রক্তনালীসমূহ ফুলে যেতে পারে যার জন্য ব্যবহারকারী যৌন উদ্দীপনাবোধ করেন-এটি আসলে ভুল ধারণা। ড্রাগের সাহায্যেও ইনফেকশন হতে পারে-তবে এতে যৌন সপৃহার কোনো তারতম্য হয় না। তারপরে যদি আরো বেশি পরিমাণে নেয়া হয় তবে যে কেউ অসুস্থ হয়ে যেতে পারে-এমনকি মৃত্যু পর্যস্ত হওয়া অস্বাভাবিক নয়।
অনেকের আবার ধারণা রয়েছে যে, এ্যালকোহল সেবনে যৌন সাড়া বা যৌন তাড়নাবোধ বাড়ে। আসলে এ্যালকোহল সম্পর্কে নানা কালচারাল বা সংস্কৃতিগত বিশ্বাস বা ধারণা প্রচলিত যে এটা যৌন সাড়াকে বাড়িয়ে তোলে। টেলিভিশন, রেডিও নানা প্রিন্ট বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায় যে, এ্যালকোহলের অমুক ব্রান্ড সেবনে সেক্সের এই হয়, সেই হয়; এতে করে যারা এ্যালকোহল সেবন করে তারা ধারণা করে নেয়; এটি সেবনে প্রকৃত অর্থেই সেক্স বাড়ে। অনেক স্থানে এমন কালচারাল বিশ্বাস বিদ্যমান সেখানে স্কুল, কলেজে যারা পড়াশোনা করে তারা ভেবে বসেন এ্যালকোহল সেবনে যৌন সম্পর্ক সহজ সাবলীল হয়। তারা মনে করে তাদের যৌন অভিজ্ঞতার সুখ এ্যালকোহল সেবনে আগের চেয়ে অনেক বেড়ে যায়-তাই এ্যালকোহলের অস্তিত্বকে তারা অভিনন্দন জানায়। তবে প্রকৃত সত্য এই যে, এ্যালকোহল আসলে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে বিষণ্ন বা দুর্বল করে তোলে এবং যৌন সাড়াকে সাময়িকভাবে বাড়িয়ে পরবর্তীতে আবার দমন করে-এটি ইরেকশন বা লিঙ্গ উত্থান ও চরমপুলককে বাধাগ্রস্ত করে।
এবার আসি এলএসডি, হেরোইন, মরফিন, কোকেইন, এ্যামফেটামিন ও মারিজুয়ানা নিয়ে। ধারণা করা হয় যে, এগুলোও যৌন আবেদন, সাড়া ও যৌনসুখকে বাড়ায় এবং যৌনতায় নতুন আমেজ আনে। তবে এগুলো আসক্তির উদ্রেক করে যৌনতার উপরে পরবর্তীতে নেতিবাচকতার জন্ম দেয়। এগুলো সেবনে অন্যান্য নানা স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা হতে পারে। অ্যামাইন নাইট্রাইট নামে আরেকটি ড্রাগ রয়েছে। এটি সেবনে যৌন ইচ্ছা বাড়ে তা ঠিক নয় তবে যৌন অনুভূতিকে অনেক বেশি দীর্ঘায়িত করা যায়। অর্গাজম বা চরমপুলককে বাড়ানোর জন্য অনেকেই এটি সেবন করে থাকে। যারা হেমোসেক্সুয়াল বা সমকামী তারা এ পন্থ্থা বেশি অবলম্বন করে থাকে। নানা রকম বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রমাণ করে যে, এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এটি সেবনে মাথা ঘুরানো, মাথাব্যথা, এমনকি অনেকে অজ্ঞান পর্যস্ত হয়ে যেতে পারে।
আফ্রিকাতে ওহিমবাইন নামে এক প্রকারের গাছ আছে-এটি থেকে ওহিমবাইন নামে এক রাসায়নিক পদার্থ সংগৃহীত হয়। এটি পুরুষাঙ্গকে উদ্দীপিত করতে পারে। আফ্রিকাতে যাদের ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা উত্থানজনিত সমস্যা আছে তারা এটি ব্যবহার করে কিছুটা উপকার পায়। তবে এটিতেও যে যৌনসাড়া বা যৌন ইচ্ছা বাড়ে এরকম প্রমাণ খুব বেশি পাওয়া যায় না। বরং লিঙ্গ উত্থানের ওষুধ হিসেবে এটিকে ব্যবহার করা হয়।
এবার টেস্টোস্টেরনের কথায় আসি। টেস্টোস্টেরনের মাত্রা নির্ধারিত মাত্রা থেকে অনেক কমে গেলে যৌন ইচ্ছার ঘাটতি হতে পারে। তাই যাদের যৌন ইচ্ছা একেবারেই কম তাদেরকে অনেক সময় টেস্টোস্টেরন হরমোন দিয়ে অনেক ভালো ফল পাওয়া যায়; যদিও টেস্টোস্টেরন কোনো যৌন উদ্দীপক বস্তুর মাঝে পড়ে না। তবে এই হরমোন দিতে হলে তা অবশ্যই ভালো ফিজিশিয়ানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থেকে দিতে হবে।
একটা ব্যাপার কিন্তু সপষ্ট যে, যে ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ও অন্যান্য বস্তু যৌন আবেদনময়তা বা যৌনসাড়া বাড়াতে ব্যবহার করা হয় তা মস্তিষ্ক বা ব্রেনের উপরেও প্রভাব ফেলে। এত আলোচনার পরেও একটি ব্যাপার স্পষ্ট হয়ে দাঁড়ায় সেটি হচ্ছে যৌন আচরণের উপর এগুলোর প্রভাব মোটেও ইতিবাচক নয়-এতে নেতিবাচকতা বেশি কাজ করে। এসব খাবার ও যৌনসাড়া বাড়াতে তেমন উলেস্নখযোগ্য কোনো ভূমিকা রাখে না। কাজেই এফ্রোডাইসিয়াক্স মলত বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির উপরে প্রতিষ্ঠিত নয়-অনেকটা অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের উপর প্রতিষ্ঠিত।
যৌনক্রীড়া বা ফোরপেস্ন
যৌন আচরণের আসল আদিম চেহারা হলো যৌনসঙ্গম বা সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স। যৌনমিলনের পূর্বে নর-নারী ইন্টারকোর্স ব্যতীত যে যে যৌনদ্দীপক যৌনক্রীড়া দিয়ে যৌনতাকে পরিপূর্ণ করে থাকেন সেগুলোকে একত্রে যৌনক্রীড়া বা ফোরপেস্ন বলা যেতে পারে। তবে এগুলো কিন্তু্তু যৌন সঙ্গমের বিকল্প নয় বরং সঙ্গমকে আনন্দময় করতে বেশ সহায়ক। এখন এইডস রোগটির ভয়ে যৌন আচরণের এ দিকটাতে অনেক বেশি জোর দিয়ে দেখা হয়। কেননা যৌনরোগ মলত ইন্টারকোর্স বা সঙ্গমের সাহায্যে আক্রাস্ত ব্যক্তি থেকে সেক্সপার্টনারে পরিবাহিত হয়ে থাকে। যৌন আচরণের সামগ্রিক এ রূপকে অনেকে আউটারকোর্স বা সঙ্গম বহির্ভত যৌন আচরণ বলে থাকেন কেননা ফোরপেস্নতে পেনিসকে যোনিতে ঢুকানো হয় না।
যৌনক্রীড়ার দৌড় কতটুকু তা যৌনভাবে সক্ষম দম্পতি বা যৌনকর্মীরা সহজেই উপলব্ধি করতে পারেন। অনেকে এটিকে সেক্সের অতি প্রয়োজনীয় অংশ হিসেবে মনে করেন যা তাদেরকে অর্থাৎ তাদের শরীর ও মনকে আসল মিলনের জন্য শক্তভাবে প্রস্তুত করে। চরমপুলকের আগেই এ যেন অন্য রকম সেক্স সাগরে ডুব দেয়া। সপর্শের যৌন আবেদনময়ী ক্ষমতা সম্পর্কে বেশি বলার তেমন প্রয়োজন নেই। আমাদের শরীরের চামড়া বা ত্বকে অনেক স্নায়ুবস্তু রয়েছে যাদেরকে আমরা রিসেপ্টার বা আজ্ঞাবাহী কোষ বলে থাকি। সপর্শের সুখসুখ অনুভূতি স্নায়ু বা নার্ভ দিয়ে একেবারে মস্তিষ্কে চলে যায়। শরীরের কতক অংশের কথা এবার বলা হচ্ছে যাতে সবচেয়ে বেশি স্নায়ুপ্রাস্ত থাকে ও যে অংশগুলো সবচেয়ে সংবেদনশীল। এগুলো হলো নারীর ক্লাইটোরিস বা ভগাঙ্কুর, পুরুষের পেনিস, নিপল বা স্তনের বোটা, আঙ্গুলের শেষাংশ বা প্রাস্ত, হাতের পাতা, ঠোঁট ও জিহ্বা। এগুলোকে যৌন সংবেদনশীল এলাকা বা ইরোজেনাস জোন বলা হয়ে থাকে। বৃহৎ অর্থে যদি বলি তাহলে বলতে হয় পুরো শরীরের ত্বক সেক্সে ভরপুর কেননা ত্বকের সাহায্যে সুখসুখ অনুভূতি মস্তিষেক পৌঁছায়।
ফোরপেস্নতে আসলে নারী-পুরুষ একে অপরকে উষ্ণ সপর্শ, মৃদু সপর্শ, জোরে আলিঙ্গন, আস্তে জোরে শরীরের নানা অংশে চাপ্পড় মারা বা সঙ্গিনীর হাত সপর্শ করে থাকে। সবই সামগ্রিক অর্থে যৌনক্রিয়া বা ফোরপেস্ন-এর অংশ বিশেষ। শারীরিকভাবে একে অপরের অস্তরঙ্গ হওয়া যৌনক্রিয়ারই বিশেষ অংশ। অনেকে আবার শরীরে মৃদু সপর্শ বা সুড়সুড়ি দিলে অনেক বেশি মাত্রায় উদ্দীপিত হয়। অনেকে আবার নারী শরীরের পেছনের অংশকে হাত দিয়ে আলতভাবে ঘষে থাকে-এতে বিশেষ রকম পিচ্ছিলকারক তেল ব্যবহার করে ম্যাসেজ করে নারীকে আনন্দ দিয়ে থাকে এমন সংখ্যা অনেক। এগুলো খুবই ইরোটিক। যৌন সংবেদনশীল বা এরোজেনাস অংশগুলোতে হাত দিয়ে সপর্শ করে ও জোরে টিপে বা চাপ দিয়ে অনেকে যৌন শিহরণ অনুভব করে থাকে।
যৌন সংবেদনশীলতা নারী-পুরুষে কম বেশ হতে পারে। এক গবেষণা সমীক্ষায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, গলার ত্বক অনেকের কাছে অত্যস্ত যৌন সংবেদনশীল এলাকা-এতে নারী-পুরুষযৌনানন্দের অনুভূতি ও যৌন উত্তেজনবোধ করে থাকেন। অনেক নর-নারী একে অপরের আঙ্গুলকে চুষে বা চুমু দিয়ে পুলকিত হয়। বেশিরভাগ গবেষকদের ধারনা চুম্বনই হলো যৌনক্রীড়ার প্রধান দিক। চুম্বনের মাত্রা নর-নারী ইচ্ছা আর যৌন সাড়া ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। এক ধরনের চুম্বনকে ফরাসী চুম্বন বলে। এটি গভীর প্রকৃতির চুম্বন এতে চুমু ঠোঁট ছাড়িয়ে জিহ্বাকে পর্যস্ত সপর্শ করে। চুম্বন নারী-পুরুষের যৌনতার সম্পর্কে অনেক সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে-এতে নর-নারী সাধারণত একজন আরেকজনের দিকে মুখ করে থাকে। মুখ, ঠোঁট ও জিহ্বার আবরণী বা মিউকাস মেমব্রেন খুব বেশি মাত্রায় যৌন সংবেদনশীল যাতে অনেক ঘন স্নায়ুপ্রাস্ত এসে ভিড় করে। অনেকের আবার কান, উরুর ভেতরের দিক বা পেটের নিচের দিক অত্যস্ত যৌন সংবেদনশীল থাকে।
এবার আসি স্তন ও স্তনের বোঁটার সংবেদনশীলতা নিয়ে। স্তনে সপর্শ, মর্দন বা মুখ দিয়ে (জিহ্বা) দিয়ে চুষা ও স্তনকে, স্তনবৃস্তকে জিহ্বা দিয়ে আলতো সপর্শ যৌনতার আনন্দকে অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়। তবে নারী দেহের যত যৌন এলাকার কথায় বলি না কেন অনেক পুরুষই তাদের পিউবিক অঞ্চল বা যোনি অঞ্চলে হাত দিয়ে বা মুখ দিয়ে সপর্শ করে যৌন আনন্দ পেয়ে থাকে।
এবার পুরুষের যৌন এলাকা নিয়ে আসি। এগুলো হলো পেনিস বা লিঙ্গ, অন্ডথলি বা স্তেক্রাটাম এবং অন্ডথলি ও পায়ুর মাঝের জায়গা যাকে পেরিনিয়াম বলা হয়। এগুলোকেও হাত ও মুখ দিয়ে উত্তেজনা দেয়া ও মুখ দিয়ে চুষা ও জিহ্বা দিয়ে আদর করাকেও ওরাল সেক্স বলে। নারীদের ক্লাইটোরিস, যোনিদ্বার ও আশপাশের এলাকা অত্যস্ত সংবেদনশীল। এগুলোকেও মুখ ও জিহ্বা দিয়ে যৌনভাবে উদ্দীপিত করা যায়। এতে চরমপুলক পাওয়া গেলে তাকে কানিলিংগাস বলা হয়। নারী যোনির ভেতরে অত্যস্ত সংবেদনশীল কোনো এলাকা আছে কি না তা নিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক গবেষণা হয়েছে। যৌনবিজ্ঞানী আর্নেস্ট গ্রাফেনবার্গ এরিকম একটি ছোট এলাকা যোনিদেশে আবিষকার করে। এটি যোনির সামনের দিকের দেয়ালে পাওয়া যায়। এটি পিউবিক অস্থির পেছনে অবস্থান করে। তার নামানুসারে এটিকে ‘জি সপট’ নামকরণ করা হয়েছে। এটিকে উদ্দীপিত করা হলে নারীর নিকট যোনি একটু ভেজা ভেজা লাগে ও যৌনসুখ অনুভূত হয়। ধারণা করা হয় এ এলাকার পাশ থেকে যৌন সুখকর বীর্যের মতো কোনো তরল নির্গত হয় অবশ্য এ ধারণাটি এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
অনেক সময় বলা হয়ে থাকে যে, সবচেয়ে যৌন সংবেদনশীল এলাকা হলো মন নিজে। কাজেই যৌনক্রিয়া মানেই যে শারীরিক উদ্দীপনা তা ঠিক নয় বরং এটি মানসিক ও আবেগজনিত উদ্দীপনাও বটে। যৌনতার ব্যাপারে রুচির পার্থক্য হবে এটিই স্বাভাবিক। অনেকেরই যৌনতার ব্যাপারে ব্যক্তিগত যৌন ফ্যান্টাসি কাজ করে; তাই এ ব্যাপারে সবচেয়ে ভালো হলো পার্টনারের সাথে যৌনতার ব্যাপারে সাবলীল সম্পর্ক বজায় রাখুন-আপনার নিজের যৌন সংবেদনশীল এলাকা নিয়ে তাকে বলুন এবং তারটিও জানুন-এটিই প্রকৃত যৌনতা।
যৌন সংবেদনশীল এলাকা
শরীরের যে যে অংশকে উদ্দীপিত করলে আমরা যৌনভাবে শিহরিত হই সেগুলোকে এরোজেনাম জোনস বা যৌন সংবেদনশীল এলাকা বলা হয়ে থাকে। তবে যৌনতার ধারণাটি যেহেতু ব্যাপক তাই এটিও লোক ভেদে নানা এলাকায় হতে পারে। এটি আসলে ব্যক্তিগত যৌন সংবেদনশীলতার উপর নির্ভর করে। জেনিটালস বা যৌনাঙ্গ/জননেন্দ্রিয় নিঃসন্দেহে যৌন সংবেদনশীলতার কেন্দ্রবিন্দু। তবে যৌন প্রজননের সাথে সম্পর্ক নেই এমন অনেক এলাকাও যৌন সংবেদনশীল হতে পারে। মানব মানবীদের সবচেযে বড় সংবেদী অঙ্গ হলো তার ত্বক (স্কিন); বিশেষত উরুর পেছনের দিকের ত্বক, হাঁটুর উপরের দিকের ত্বক, নেক বা গলার ত্বক, স্তন, স্তনের বোঁটা ও পেরিনিয়াম। অন্যান্য যৌন সংবেদনশীল এলাকাগুলো হলো চোখের পাতা, কান ও বাহু। অনেকে অবশ্য সঙ্গমের সময় পা দিয়ে পা ঘষে থাকে এটিও যৌনতৃপ্তির সহায়ক। যৌন সংবেদনশীল এলাকায় চুমু, আদর-সোহাগ, সপর্শ, মৃদু চাপ্পড় সবই যৌনতাকে অনেক বেশি অনবদ্য করে তোলে।
নারী-পুরুষের মুখমন্ডল একে অপরের কাছে খুবই ইরোটিক বা যৌন সংবেদনশীল বিশেষত ঠোঁট ও জিহ্বা। চুমু ও অন্যান্য সুখ সপর্শ দিয়ে এসব এলাকাকে যৌনভাবে উদ্দীপিত করা যায়। এনাস বা পায়ু বাটক বা পুচ্ছদেশ ও মলাশয় ও কিন্তু্তু যৌনভাবে অত্যস্ত সংবেদনশীল এলাকা। এনাস বা পায়ু সপর্শের প্রতি মারাত্মক সংবেদনশীল এবং এতে আঙ্গুল, কোনো বস্তু বা পেনিস ঢুকিয়ে অনেকে যৌনানন্দ পেয়ে থাকে। মলাশয়কে অনেকেই যৌনক্রিয়ার অংশ ভেবে থাকেন। বাটক বা পুচ্ছদেশে মৃদু চাপ্পড় বা হাল্কা আলতো আদর অনেকেরই যৌনভাবে শিহরিত করে থাকে।
আপনি ও আপনার যৌন পার্টনার যদি যৌনতাকে পুরোমাত্রায় উপভোগ করতে চান তবে কে কিসে পুলকিত হোন তা আগেই পার্টনারকে খুঁজে নিতে বলুন। মাথা থেকে পায়ের আঙ্গুল পর্যস্ত মৃদুভাবে বুলিয়ে যান। এক্ষেত্রে সিল্কের স্কার্ফ, নরম ব্রাশ বা পাখির পালক আপনাকে নতুন ইরোজেনাস জোনস বা যৌন এলাকা বের করতে সহায়তা করবে।
লিবিডো বা যৌন ইচ্ছা/ যৌন তাড়না
সাইকোএনালাইসিস তত্ত্বের সাড়া জাগানো মনোবিজ্ঞানী সিগমন্ড ফ্রয়েড যৌন তাড়না বা যৌনবোধকে বোঝাতে লিবিডো শব্দটি প্রয়োগ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যৌন তাড়না বা যৌন ইচ্ছার মাত্রা আস্তে আস্তে বেড়ে তুঙ্গে ওঠে, তারপর ধুম করে যৌন উত্তেজনার উপশম হয়। মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েড তার রোগীদের মাঝে এ ব্যাপারগুলো খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করেছিলেন। তিনি এটিকে অন্যান্য মৌলিক জৈবিক ব্যাপার যেমন আহার করা, পান করা, মত্রত্যাগ করা বা মলত্যাগ করার সাথে তুলনা করেছেন। তবে তিনি এগুলোকেও যৌনতার অংশ বলে আখ্যায়িত করেছেন। মানব লিবিডো বা যৌন তাড়নাবোধ কিভাবে বিকাশ লাভ করে সে সম্পর্কে তিনি বেশ আগ্রহান্ব্বিত ছিলেন এবং এটিকে তিনি খুব শক্তিশালী মানবীয় যৌন ইচ্ছা বলে মনে করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন লিবিডোর বিকাশে বেশ সপষ্ট কতক ধাপ রয়েছে-
  • শৈশবকালীন লিবিডো-শিশুদের লিবিডো বা মল যৌন তাড়নাবোধ তাদের মুখকে কেন্দ্র করে যা দিয়ে তারা কোনো কিছু চুষে আনন্দ পায়। লিবিডো বিকাশে এটিকে ওরাল স্টেজ বলে অভিহিত করা হয়। শিশুদের বয়স ২-৩ বছর হলে তারা টয়লেট ট্রেনিং-এ অভ্যস্ত হয়ে পড়ে-তখন তারা তাদের পায়ু বা রেক্টাল তৎসম্পর্কীয় এলাকা সপর্শ করে আনন্দ পেয়ে থাকে। এ সময় শিশু মলত্যাগ করেও আনন্দ পেয়ে থাকে। এ ধাপটিকে বলা হয় ‘এনাল স্টেজ’।
  • বয়ঃসন্ধিকালে তাদের লিবিডোর কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায় নিজেদের যৌনাঙ্গ বা সেক্স অর্গান। লিবিডো বিকাশের এ পর্যায়টিকে বলা হয়েছিল ‘ফ্যালিক স্টেজ’ এরপর লিবিডো যখন আরো বিকশিত হয় তখন শিশুটি যদি পুরুষ হয় তবে মায়ের দিকে যৌনাকর্ষণবোধ করে। শিশুটি মেয়ে হলে পিতার প্রতি আকর্ষণবোধ করে। এসব নানা কমপেস্নক্স (ইডিপাস ও ইলেক্ট্রা কমপেস্নক্স) নিয়ে ইতিপূর্বে মনোজগতের অনেক সংখ্যায় আমরা লিখেছি। তারা অতি সত্বর বুঝে ফেলে যে, তাদের আবেদনে কেউ সাড়া দিচ্ছে না। অধিকন্তু্তু অস্বীকৃতি হয়েছে। তখনই তাদের মনোজগতে আরেক ধরনের পরিবর্তন ঘটে-তাদের মনে তিনটি ব্যাপার প্রধান্য বিস্তার করে ফেলে এগুলো হলো ইউ ইগো ও সুপার ইগো। ইউ হলো মনের একেবারে আদিম অংশ। এটির আসল ভিত্তি হলো আনন্দ। ইউ আমাদেরকে কোনো কিছু শুরু করতে প্রেরণা যোগায়। এট কোনো নিয়ম-নীতি মানে না বরং এটি সমাজের অনেক কিছুর জন্য আক্রমণাত্মক মনোভাবকে পছন্দ করে থাকে। অতএব কোনো কিছু শুরুকরার জন্য মানসিক শক্তি দান করে ইউ। ইগোকে অনেকটা কার্যকারণ ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত বলে বিবেচনা করা হয়। এটি সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য ও নিজের যোগ্যতা অনুসারে যা প্রাপ্য তাদের মাঝে সামঞ্জস্য বিধান করে আমাদেরকে কাজের স্বীকৃতি বা পূর্ণতা দান করে। সুপার ইগো মলত শিক্ষণ ও অস্তর্নিহিত আদর্শে সামাজিক আচরণের উপর প্রতিষ্ঠিত। এটি সামাজিক ও আইনগত বিধিনিষেধ সম্পর্কে মনে সচেতনতা সৃষ্টি করে।
সুন্দর একটি উদাহরণ দিয়ে ইউ ইগো ও সুপার ইগো ব্যাপারটা পরিষকার করা যাক। ধরুন আপনি দেখলেন আপনার সামনে ১০,০০০ টাকা পড়ে আছে। ইউ মনের এমন এক অবস্থা যা চাইবে স্বভাবতই আপনি যেন টাকাটা নেন। ইউ পরবর্তীতে কি হতে পারে তা নিয়ে মাথা ঘামায় না। এই মুহর্তে সুপার ইগো কাজ করা শুরুকরে। ব্যক্তিটি তখন চারপাশে তাকাবে-খুব ভালোভাবে চারপাশ পর্যবেক্ষণ করবে যখন বুঝবে টাকাটা নিলে কেউ দেখতে পাবে না তখন তার মন সায় দেবে। সেই মুহর্তে মনের ভেতর থেকে সুপার ইগো মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে ও লোকটি তখন ভাববে যে কেউ না দেখলেও এটি নৈতিকতার পরিপন্থ্থী অর্থাৎ কাজটি করা ঠিক না।
আমরা যখন সজাগ স্তরে থাকি তখন এই তিন স্তরের মাঝে সপষ্ট পার্থক্য করতে পারি; কিন্তু্তু যখন আমরা ঘুমস্ত অবস্থায় থাকি ও কল্পনা করি বা যৌন ফ্যান্টাসিতে সময় কাটায় তখন এ তিনের মাঝে পার্থক্যের কোনো সীমারেখা থাকে না। আবার যখন আমরা মনের সচেতন অবস্থায় গমন করি তখন মনে হয় একটু আগে যেসব কল্পনা আর ফ্যান্টাসিতে ভুগছিলাম বাস্তবে তা কতই না লজ্জার বা দোষের। ফ্রয়েড আরো বিশ্বাস করেন যে, মানব পার্সোনালিটি বা ব্যক্তিত্ব একেবারে শৈশবে গড়ে উঠে এবং তা গড়ে উঠতেও এসব মল যৌন তাড়না ও অন্যান্য সামাজিক ইনমস্টিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিভিন্ন বিষয়ে যেসব নামী মনোবিশ্লেষক এসেছেন তাদের অনেকেই ফ্রয়েডের লিবিডো তত্ত্বের সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে ফ্রয়েড লিবিডোকে ধরতে গেলে কেবল বায়োলজিক্যাল বা জীব বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করেছেন। এতে লিবিডোর উপর কালচারাল বা সাংস্কৃতিক, সামাজিক ফ্যাক্টর, যৌনভঙ্গি ও যৌনাভ্যাসকে মোটেও জোর দিয়ে বিবেচনা করা হয়নি। অথচ এগুলোর ভমিকা কোনো অংশে কম নয়।
সুইজারল্যান্ডের সাইকিয়াট্রিস্ট ও মনোবিশেস্নষক কার্ল জাং লিবিডো সম্পর্কে ফ্রয়েডের ধারণাকে সম্পর্ণ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন যে, শৈশবকালীন যৌন অভিজ্ঞতাই পরবর্তীকালে অর্থাৎ বয়সকালে আবেগজনিত সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কার্ল জাং আস্তঃমুখী ও বহিঃমুখী পার্সোনালিটি বা ব্যক্তিত্বকে এ থিওরি দিয়ে ব্যাখ্যা করেছিলেন। যারা বহির্মুখী পার্সোনালিটির অধিকারী তারা নিজেদের প্রতি বেশি গুরুত্ব না দিয়ে অন্যান্যদের সাথে বেশি মিশে থাকে। তারা সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে খুব স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকে। যারা অস্তর্মুখী চরিত্রের অধিকারী তারা নিজেরদকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করে ও সামাজিক নানা অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলতে পছন্দ করেন।
ক্লাইটোরিস বা ভগাঙ্কুর
ক্লাইটোরিস নারীর যৌনাঙ্গের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এটি লেবিয়া মাইনরাতে অবস্থান করে। লেবিয়া মাইনরা হলো ভেতরের দিকের যৌন ভাঁজ ঠোঁটের মত অংশ। এটির দুটি অংশ আছে। গোলাকার এলাকাকে গস্ন্যান্স বা মাথা বলা যেতে পারে-লম্বা অংশটিকে শ্যাফট বলা হয়। ভেতরের ভাঁজের কোষ কলাগুলো ভগাঙ্কুরকে আবৃত করে রাখে। এটি একটি হুড বা প্রিপিউস এর মতো আবরণী তৈরি করে ক্লাইটোসিকে সংরক্ষণ করে। ক্লাইটোরিসের এ দৃশ্যমান অংশটুকু হলো এর মাথা বা গস্ন্যান্স। এটিকে অনেকটা উজ্জ্বল বাদামের বিচি বা বোতামের মতো লাগে। ক্লাইটোরিসকে কেন্দ্র করে অনেক সংবেদী স্নায়ু বিদ্যমান তাই এটি অত্যস্ত সংবেদনশীল।
ক্লাইটোরিস বা ভগাঙ্কুরকে সপর্শ করলে বা চাপ দিলে নারীতে তীব্র কামের সচনা হয়। যৌন সুখের মল অস্তিত্ব এটিতে নিহিত। এটির অন্য কোনো কাজ শরীরে আছে কিনা এ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। যারা বুদ্ধিমান পুরুষ তারা এটিকে আঙ্গুল দিয়েই নারীর কামভাবকে পুলকিত করে তোলে। গর্ভবতী হওয়ার জন্য বা মাসিক ঋতুস্রাব বা প্রস্রাব হওয়ার ক্ষেত্রে ক্লাইটোরিসের তেমন কোনো ভূমিকা নেই।
নারী দেহ-মনে যখন যৌনসুখের ও সুখ স্পর্শের বন্যা বয়ে যায় তখন ক্লাইটোরিসের মাথা ও দস্ত বা শ্যাফট দুটিতেই রক্ত প্রবাহ বেড়ে যায়-এটি আকারে আগের চেয়ে বড় হয়ে যায়। এ সময় এটির আকার স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে। এরপরও যখন যৌনক্রীড়া আর যৌন আমেজ অব্যাহত থাকে তখন নারী যৌন চরমপুলক অনুভব করে-আস্তে আস্তে ক্লাইটোরিস তার স্বাভাবিক আকৃতি ফিরে পায়। তবে ক্লাইটোরিসকে আবৃত করে যে টিস্যু বা কোষকলা থাকে তা অত্যস্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ক্লাইটোরিসকে সরাসরি সংঘর্ষ থেকে রক্ষা করে। পুরো ক্লাইটোরিসে সরাসরি সংঘর্ষ হলে হয়ত যৌনাঙ্গের পরিবর্তে তা নারীর জন্য এক অস্বস্তিকর অবস্থা হতে পারত। চরমপুলক অনুভূতি উপভোগের মিনিট দশেকের ভেতর ক্লাইটোরিস তার আগের আকৃতি ফিরে পায়। কেননা যৌন উত্তেজনার সময় যে রক্ত এখানে জমা হয়েছিল উত্তেজনা প্রশমনের পর রক্ত আবার শরীরের অন্যত্র পরিবাহিত হয়। তবে এখানে আরো একটা ব্যাপার রয়েছে। নারীটি যদি অর্গাজম বা চরমপুলক অনুভূতি না লাভ করে থাকে তবে তার ক্লাইটোরিসের একটু ফোলা অবস্থা কয়েক ঘন্টা পর্যস্ত স্থায়ী হতে পারে। অনেক নারীই এ অবস্থাকে অস্বস্তিকর বলে দাবী করেন।
নারীর যৌন কাম সংবেদনশীল এ অংশটিকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে উত্তেজিত করা যেতে পারে। যোনির ভেতরে যখন বারংবার পেনিস ঢুকানো হয় তখন তা যে আসনেই করা হোক না কেন তা লেবিয়া মাইনরাকে আন্দোলিত করে-এটা পরোক্ষভাবে ক্লাইটোরিসকে ভেতর দিক থেকে ঠেলা দেয়-আস্তে আস্তে নারী অর্গাজম বা চরমপুলক লাভ করে। এটি হলো পরোক্ষপদ্ধতি। তবে ক্লাইটোরিসে সরাসরি স্পর্শ সেটা আঙ্গুল দিয়ে। ভাইব্রেটর দিয়ে বা জিহ্বা দিয়ে করা হলে তা যেন অসহনীয় মাত্রায় না করা হয়। এতে নারী যৌনান্দের পরিবর্তে অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়তে পারে। এসব নারীদের বেলায় মৃদু পরোক্ষ স্পর্শ কাম জাগিয়ে তোলে। আবার অনেক নারী রয়েছে যারা সরাসরি ক্লাইটোরিসে সপর্শ সুখকেই বেশি প্রধান্য দিয়ে থাকে। তাই যে নারী যেটিকে উপভোগ করতে পারে তাকে সেভাবেই স্পর্শ করা উচিত।
যৌনমিলন বা যৌন সঙ্গম
জীব বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে ইন্টারকোর্স বা যৌন সঙ্গম হলো প্রজননের উদ্দেশ্যে বা ভবিষ্যত বংশধর সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পুরুষের পেনিস নারীর যোনিতে ঢুকিয়ে তাতে বীর্যপাত ঘটানো। এটি যে কেবল মানব যৌনতার অংশ তা ঠিক নয়। সকল স্তন্যপায়ী প্রাণী যৌনমিলনের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে থাকে। যৌন সঙ্গমকে তথ্যগতভাবে যৌনতার আদিম ও অকৃতিম অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সৃষ্টির একেবারে লগ্ন থেকে নর-নারী যৌনমিলন করে এসেছে। এটি সকল যৌন সংসর্গের বাস্তব রূপ। তবে এখন যৌনতার অর্থ অনেক বিস্তৃত এবং ব্যাপক হয়েছে। এটি কেবল তার প্রথাগত সঙ্গমের পর্যায়ে নেই।
যৌনমিলন বা যৌন সঙ্গম এখন মানব প্রেষণা ও মানব মানবীর আবেদনময়তার সাথে সংশিস্নষ্ট। যৌনমিলনকে গতানুগতিকের চেয়ে অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্য ও সাবলীল করার জন্য যুগে যুগে যৌন গবেষক, সক্ষম দম্পতি, সেক্স পার্টনার/পার্টনারী, যৌন কর্মী সবাই সেক্স এর নানাদিক খতিয়ে দেখেছেন। সেক্স যেন কেবলি দেহ বা শরীর সর্বস্ব হয়ে না পড়ে সেজন্য তারা সেক্স বা যৌনমিলনে নতুন দিক ও নতুন কোনো আসন আবিষকারে উন্মুখ ছিল।
যৌনতা নিয়ে যারা গবেষণা করেন তারা ও সাধারণ মানুষেরা যৌনকর্মকে মোটামুটি তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন। প্রথমটিকে বলা হয় যোনি সঙ্গম। এতে পুরুষ তার পেনিস নারীর যোনিতে প্রবিষ্ট করিয়ে নারীও নিজে যৌনসুখ লাভ করে। এতে যোনির ভেতরেই ইজাকুলেশন বা বীর্যস্খলন ঘটে। বীর্য স্খলনের ঠিক পূর্বে পুরুষটি চরমপুলক অনুভূতি লাভ করে। অবশ্য নারীদের বেলায় চরমপুলক সুখের ব্যাপারটি একটু ভিন্ন। এ সময় তাদের জরায়ু, যোনির সার্ভিক্স, তৎসংলগ্ন পেশির ছন্দীয় সংকোচন নারী যৌন সুখের সাগরে অবগাহন করে। যৌনতার অপর ব্যাপারটিকে বলা হয় ওরাল সেক্স বা ওরাল ইন্টারকোর্স। যাতে নারী পুরুষের পেনিসকে মুখে নিয়ে আদর সোহাগ করে কেন না নারীদের ঠোঁটের ত্বক ও জিহ্বার আবরণী খুবই যৌন সংবেদনশীল। উপরস্ত পুরুষের পেনিসের ত্বকও যৌনভাবে খুবই সংবেদনশীল। অথবা এতে পুরুষটি তার ঠোঁট, মুখ বা জিহ্বা নারীর যৌনাঙ্গে স্পর্শ সুখ দিয়ে থাকে। এতে করেও নারী-পুরুষ চরমপুলক অনুভূতি লাভ করতে পারে। এবার আসি যৌনতার তৃতীয় দিকটি নিয়ে। এটিকে বলা হয় এনাল ইন্টাল কোর্স বা পায়ুসঙ্গম। এতে পুরুষের পেনিস নারীর পায়ু পথে প্রবিষ্ট করিয়ে উভয়ে যৌনসুখ লাভ করে থাকে। শেষের যে দুই প্রকার সেক্সের কথা বলা হলো প্রকৃত অর্থে এগুলো ফোরপেস্ন বা যৌন সাড়ার আওতায় পড়ে। যৌনস্ম বা যৌনমিলন ব্যাপারটি কেননা বিপরীত লিঙ্গের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। যেমন সমকামীদের কথায় আসা যাক-তারা আড়াল বা পায়ুপথে উদ্দীপনা দিয়ে সঙ্গম করে থাকে। অনেক লেখক আবার বলেছেন ডিজিটাল ইন্টারকোর্সের কথা। এটিতে নর-নারীর একে অপরের যোনিতে, পায়ুতে বা অন্যান্য যৌন সঙ্গমশীল এলাকায় আঙ্গুলের স্পর্শ, মুখ দিয়ে যৌনসুখবোধ করে। এটিকে কেউ কেউ আবার পারসপরিক হস্তমৈথুন বা যৌথ হস্তমৈথুন বলে অভিহিত করেছেন।
সেক্সের বা যৌনতার বিভিন্ন রূপ নিয়ে বা যৌনতার নানা আচার নিয়ে যৌন গবেষক ও থেরাপিস্টরা বের করেছেন যে, শুধুমাত্র যৌনসুখ লাভের জন্য নর-নারী এটা করে থাকে না। এটি একে অপরের খুব অন্তরঙ্গ, খুব বেশি কাছের এ ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করে। অনেকে আবার যৌন সঙ্গম করে তাদের বর্ধিত যৌনচাপকে আনন্দে রূপ দেয় ও আবেগজনিত যৌন তৃপ্তি লাভ করে।
আমরা এতক্ষণ যৌনসঙ্গমের যে সব দিক নিয়ে বললাম তার প্রত্যেকটিতেই নর-নারীর চরমপুলক বা অর্গাজম এর অনুভূতি লাভ করতে পারে। অর্গাজম হলো শরীর ও মনের আবেগের এমন একটি সুখকর অবস্থা যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এটা কয়েক সেকেন্ড থেকে ১ মিনিটের কাছাকাছি সময় স্থায়ী থাকতে পারে। এই সময়ে শরীর ও মনের আবেগজনিত অবস্থা বেশি শিথিল হয়ে আসে।
এখন আমরা আসি পুরুষের চরমপুলক ও নারীর চরমপুলকের মাঝে পার্থক্য নিয়ে। পুরুষের অর্গাজম বা চরমপুলকের সাথে জড়িত ব্যাপারগুলো হলো পেনিস দিয়ে নারীর যোনিতে উষ্ণ সপর্শ দিয়ে প্রোস্টেট গস্ন্যান্ড ও পেনিসের পেশি ছন্দময় সংকোচন। টেস্টিকল বা শুক্রাশয় উপরে উঠে পড়া এবং পেনিস থেকে বীর্যস্খলন। বীর্যস্খলনের ঠিক আগে পুরুষটি তেপাস্তরে সেই যৌন সুখের অনুভূতি লাভ করে। আর নারীদের চরমপুলকের সাথে কোনো রকম ঘরনের সম্পর্ক নাও থাকতে পারে। এতে তাদের জরায়ু বা যোনি দেয়ালে বা যোনি প্রাচীরে আনন্দদায়ক সংকোচন ঘটে যা নারীর পুরো শরীরে কয়েক সেকেন্ড ধরে আন্দোলিত জোয়ার বয়ে নেয়।-Post By: নারী পুরুষের যৌন সমস্যা ও সমাধান

শেয়ার করে আপনার বন্ধুদেরকে জানান । তাদের কে জানতে দিন অজানা বিষয় গুলি। ফেসবুকে যোগাযোগ করুণ ব্লগারের সাথে ফেসবুকে যোগাযোগ করুণ

কোন মন্তব্য নেই :