এইড্‌স প্রতিরোধে বিয়ে

1 টি মন্তব্য

আরিফ মাহমুদ সাহাবুল
কারণ বিয়ের মাধ্যমে মানুষ তার মনকে নতুনত্বের স্বাদ দিতে পারে-দিতে পারে দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা দূর করে মনের প্রফুল্লতা। বিয়ে হচ্ছে পরিবার ও সমাজের বুনিয়াদ। কেবল বিয়ের মাধ্যমেই যে কোনো মানুষ তার লজ্জা স্থানের শক্তি, সামর্থ্য, সক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখতে পারে...
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, ৩৫ বছরের পর থেকে নারী-পুরুষ স্বাভাবিক যৌণক্ষমতা, উত্তেজনা ও যৌন আকাঙ্ক্ষা কমতে শুরু করে। দেখা দেয় যৌবনে ভাটা। গবেষণায় দেখা গেছে, ৩৫ বছরের বেশি বয়সের নারীদের অন্তত ৫ শতাংশ কখনই চূড়ান্ত যৌনসুখ (অর্গাজম) আস্বাদনে সক্ষম হন না। ফলে দেহমনে দেখা দেয় ক্লান্তির ছায়া। নানা প্রকার মানসিক চাপ। তাই আদর্শ বয়সে বিয়ে করাটা হবে আদর্শ বুদ্ধিমানের কাজ।
বিয়ের রেজিস্ট্রিকরণ
১৯৬১ ও ১৯৭৪ সালের অর্ডিন্যান্সের বিধান অনুযায়ী প্রতিটি বিয়ের রেজিস্ট্রি হতে হবে। কাজেই প্রতিটি নারী-পুরুষেরই এ বিষয়ে সজাগ সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন যাতে বিয়েতে আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রি করা হয়। কারণ এতে করে বিয়ে হবে পাকাপোক্ত আরো মজবুত গ্রহণযোগ্য।
বিয়েতে স্বামী নির্বাচনে মেয়েদের অধিকার
মেয়ে তা সে অবিবাহিত হোক বা তালাকপ্রাপ্ত হোক কিংবা বিধবা হোক সে তার বিয়ের জন্য উত্থাপিত যে কোনো প্রস্তাব গ্রহণ বা প্রত্যাখানের ব্যাপারে পুরো স্বাধীন। কোনো মেয়ে বা মহিলাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেয়ার অধিকার তার পিতা-মাতা, ভাই-বোন, ভগ্নিপতি, চাচা-চাচী, মামা-মামী বা কোনো দায়িত্বশীল অভিভাবক কারোরই নেই।
কারণ সংসার করবে যে মেয়ে সেই তার পছন্দমত জীবন সঙ্গী নির্বাচন করবে। এটাই স্বাভাবিক এটাইতো বাঞ্ছনীয় হওয়া প্রয়োজন। বিয়ের সময় মেয়ের কাছে যদি অনুমতি চাওয়া হয় এবং সে যদি তাতে চুপ করে থাকে এবং কোনোরূপ বাধা বা কোনো রকমের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ না করে তবে সেটাকে তার অনুমতি হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। কিন্তু বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত মেয়ের বিয়ে যদি তার পরামর্শ ও স্পষ্ট ভাষায় অনুমতি ছাড়া করে দেয়া হয় তাহলে সে বিয়ে বাতিল হয়ে যায়। অন্যদিকে অবিবাহিত বা কুমারী মেয়ের থেকে যদি স্পষ্ট অনুমতি না নেয়া হয়ে থাকে তবে বিয়ের পর সেই বিয়েকে ভঙ্গ করা অথবা ঠিক রাখার ব্যাপারে ইসলামে তার স্বাধীনতা রয়েছে।
অবিবাহিত জীবন বা বৈরাগ্যবাদ
প্রাচীন সমাজে যৌন সম্পর্ক স্থাপনকারী ব্যক্তিকে আধ্যাত্মিকভাবে অপূর্ণ মনে করা হত এবং তাকে প্রভুর নৈকট্য লাভের অযোগ্য মনে করা হত। সুতরাং সে যুগের সাধু ব্যক্তিরা আধ্যাত্মিক পূর্ণতা লাভের জন্য সংসার ধর্ম বর্জনকে জরুরি মনে করতো। তারা সবরকমের পার্থিব তৎপরতা থেকে নিজেকে পৃথক করে নিয়ে ধ্যানে মগ্ন হয়ে পড়তো। এই জন্যে তপ্‌জপ্‌কারী ব্যক্তি বিয়ে শাদীর ঝামেলায় পড়তে চাইতো না কেননা তাদের মতে এতে করে মানুষের আবেগ উজ্জীবিত হয়ে উঠে এবং মানুষ সংসারমুখী হয়ে পড়ে। কিন্তু্তু প্রাচীন অন্ধকার যুগের সেই বাতিল ও ভুল ধারণাকে সমলে প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে ধর্ম এবং বিয়েকে পবিত্রতা ও আত্মশুদ্ধি অর্জনের সুন্দর মাধ্যম বলে অভিহিত করা হয়েছে। বিজ্ঞান ও বৈরাগ্যবাদকে সমর্থন করে না। করে না উৎসাহিত।
কারণ বিয়ের মাধ্যমে মানুষ তার মনকে নতুনত্বের স্বাদ দিতে পারে-দিতে পারে দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা দূর করে মনের প্রফুলস্নতা। বিয়ে হচ্ছে পরিবার ও সমাজের বুনিয়াদ। কেবল বিয়ের মাধ্যমেই যে কোনো মানুষ তার লজ্জা স্থানের শক্তি, সামর্থ্য, সক্ষমতা অক্ষুণ্ন রাখতে পারে। বিয়েকে অস্বীকার করা মানেই হচ্ছে মানবতার মল অস্তিত্ব ও তার বিকাশকেই অস্বীকার করা। বন্ধ করে দেয়া নতুন মেহমানের আগমন পৃথিবীর বুকে। যা কারোরই কাম্য হওয়া উচিত নয়। সুতরাং বৈরাগ্যবাদ নয় বিয়েই হোক অস্তিত্ব রক্ষাকারী মল হাতিয়ার।
বিয়ে এবং যৌনতা
যৌনতার প্রতি নারী-পুরুষের আকর্ষণ একেবারে প্রাকৃতিক, স্বাভাবিক। বিয়ের ফলে একজন নারী যৌন জীবনে প্রবেশ করে। বিয়ে হচ্ছে একটি সামাজিক বন্ধন-ভালোবাসার বন্ধন-দাম্পত্যের বন্ধন। একজন পুরুষ ও একজন নারীর একত্রে সহাবস্থানের অঙ্গিকারকে বিয়ে বলা যেতে পারে। নারীর জীবনে বিয়ের ফুল শয্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। অনেক নারীই এটিকে ভয় পায়। বিশেষ করে যারা নানা রকম কুসংস্কার দ্বারা আচ্ছন্ন থাকে তারা। বিয়ের প্রথম রজনীতে বিভিন্ন রকমের অপ্রীতিকর কর্মকান্ড ঘটতে পারে। আমাদের এই উপমহাদেশে বিয়ের সময় নানা রকমের অনুষ্ঠানের আড়ম্বরপূর্ণ ব্যবস্থা থাকলেও বিয়ের পরবর্তী যৌন জীবনের ওপর পারিবারিক কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা নারীকে দেয়া হয় না। নারীর বিয়ে পরবর্তী যৌন জীবনে বহু রকমের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই জাতীয় সমস্যাগুলো জেনেটিক বা বংশগত কারণেও হতে পারে। আবার অনেক সময় এর কারণ নিতান্তই অজ্ঞানতা হয়ে থাকে। তবে যৌন জীবনে যে কোনো প্রকার সমস্যাই নারী এবং পুরুষ উভয়কেই ভাবিয়ে তুলতে পারে সমানভাবে। যা কিনা পরবর্তী জীবনেও কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সবাইকে জানার চেষ্টা করতে হবে বিয়ের সাথে সেক্সের কি সম্পর্ক রয়েছে। জানতে হবে কিভাবে নারী-পুরুষ একে অপরের সাথে গভীরভাবে মিশে যায় একাকার হয়ে যায়। আর এই জানার মাধ্যমেই অনেক অজানা রহস্য উদঘাটিত হবে, প্রকাশিত হবে মানব-মানবীর বিয়ের মল রহস্য।
পরিণত বয়সে বিয়ে না হওয়া
ছেলে-মেয়েদের পরিণত বয়স কি এর সঠিক উত্তর দেয়া সহজ নয়। কেননা অবস্থাভেদে পারিপার্শ্বিক আবহাওয়ার ওপর ছেলে মেয়েদের শরীরে যৌন চেতনা আসে। সাধারণত ছেলেদের চরম যৌবন ও উত্তেজনারকাল হল সাধারণত ২০-২৫ বছর বয়সে। আর মেয়েদের চরম যৌবনের ও উত্তেজনার কাল ১৬-২২ বছর বয়সের মধ্যে (তবে মেয়েদের সাধারণত ৩০ বছর বয়সের পর যৌন চেতনা দারুণভাবে পূর্ণতা প্রাপ্ত হতে দেখা যায় এবং এ সময় তাদের যৌন তৃষ্ণা মারাত্মকভাবে বেড়ে ওঠে) এই সময়ের মধ্যে ছেলে ও মেয়েদের শরীরের যে প্রবল যৌবনের জোয়ার আসে তা কোনো কবি সাহিত্যেক বা দার্শনিকই তাদের ভাষায় ও বোঝাতে পারবেন না। এ জোয়ার হল আষাঢ়ের পাগলা জোয়ার। সমমুখে যা পায় ভেঙ্গে চুরে চুরমার করে রেখে যায়। জ্ঞান থাকে না, ধর্ম থাকে না, হুঁশ থাকে না। কোনো নৈতিকতার চিন্তা-ভাবনা থাকে না, থাকে শুধু উচ্ছ্বাসিত বেগে প্রবাহিত হবার দুর্বার গতি। এ গতির মুখে বাঁধ দিলে আটকায় না ভেঙ্গে যায় সবকিছু তেমনি ছেলে-মেয়েদের জীবনেও ঠিক তাই ঘটে। ছেলে-মেয়ে লেখা পড়া শেষ করে চাকরির নেশায় থাকে। যারা লেখা পড়া করে না তারা থাকে ভালো কাজের আশায় ভালো উপার্জনের আশায়। এই ভালো কাজ উপার্জন ও চাকরি পাবার পর চিন্তা করে সুন্দর বাড়ি ঘর করতে হবে ছোটদেরকে মানুষ করতে হবে, বাবা-মাকে সন্তুষ্টু করতে হবে তাই লজ্জা ও দায়িত্বের খাতিরে ছেলে মেয়ে বিয়ে থেকে বিরত থাকে। অনেক সময় বাবা-মার ওপর ভরসা করে করে লজ্জায় মুখ বুজে থাকে। কিন্তু বাবা-মা বোঝে না যে তাদের প্রিয় সন্তানটি আদরের দুলাল মানিক রতনটি যৌবনে পা দিয়েও পিছলে পড়ে যাচ্ছে। ভরা যৌবনে ভাটা পড়ে যাচ্ছে। এ সময় ছেলেদের স্নায়ুমন্ডলী যৌন উত্তেজনায় বারবার উত্তেজিত হতে হতে দেহ মন নিস্তেজ হয়ে আসে। আর বেচারা মা-বাবা বুঝতে পারে না কিংবা বুঝেও বোঝে না অবুঝ হয়। যখন ছেলের যৌবনে ভাটা পড়ে যৌবনের উন্মাদনা উত্তেজনা কমে যায় তখনই হয়তো এক ষোড়শী মেয়ের সঙ্গে পুত্রটিকে সাধ করে বিয়ে দেন। এতে করে বয়সের হয় বিশাল তারতম্য। ছেলে মেয়ের যৌন তৃষ্ণায় তখন হয় বয়সের কারণে অসামঞ্জস্য আর মানসিক চিন্তার বিরাট পার্থক্য। ফলে দেখা দেয় অশান্ত দাম্পত্য জীবন। দেখা দেয় অশান্তি মনোমালিন্য স্বামী-স্ত্রীর যৌন জীবনে।
 
 বিষয়ঃ নারী পুরুষের যৌন সমস্যা সমাধান , যৌন শিক্ষা/যৌন মিলন/জন্মনিয়ন্ত্রন    , মাসিক মনোজগত  মনোজগত : জুলাই, ২০০৪
 ফেসবুকে  ব্লগারের সাথে ফেসবুকে যোগাযোগ করুণ 


আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুণ। এই ব্লগে পড়তে কি সমস্যা হয়?আপনার কি টাকা বেশি খরচ হয়ে যায়?

1 টি মন্তব্য :

নামহীন বলেছেন...

ভালো তথ্য কিন্তু বিষয়ের সাথে বর্ণনার কোন মিল নেই